Geography Question ক্লাস- ৯ ভূগোল সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর


🟊 প্রশ্ন : খাদার ও ভাঙ্গর মৃত্তিকা কাকে বলে?
 উত্তর : ভারতের বিশাল সমভূমি অঞ্চলের পলি মৃত্তিকাকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়, যথা : খাদার ও ভাঙ্গর। খাদার নবীন পলি দ্বারা গঠিত নদীর প্লাবনভূমিতে দেখা যায়। অপর পক্ষে নদীর দূরবর্তী প্রাচীন পলি দ্বারা গঠিত উচ্চভূমিতে ভাঙ্গর মৃত্তিকা দেখা যায়। খাদার মৃত্তিকায় বালির ভাগ বেশী থাকে কিন্তু ভাঙ্গর মৃত্তিকায় কাদার ভাগ বেশী। খাদার মৃত্তিকা প্রতিবছর পলি আচ্ছাদিত হয় বলে এর উর্বরতা ভাঙ্গর মৃত্তিকার থেকে বেশী সাধারণত গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও অন্যান্য নদী তীরবর্তী অঞ্চলে খাদার মৃত্তিকা দেখা যায়। পশ্চিমবঙ্গের রাঢ় অঞ্চলে ও অসমের কোন কোন অংশে ভাঙ্গর মৃত্তিকা দেখা যায়।

🟊 প্রশ্ন : কৃষ্ণমৃত্তিকা কাকে বলে? এই মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য কি?
উত্তর :  দাক্ষিণাত্যের ডেকান ট্রাপ বা লাভা মালভূমি অঞ্চলে কালাে রঙের যে মৃত্তিকা দেখা যায় তাকে কৃষ্ণমৃত্তিকা বা রেগুর মৃত্তিকা বলে। আজ থেকে প্রায় ৬/৭ কোটি বছর আগে ভূত্বকের প্রশস্ত ফাটল পথে ভূ-গর্ভস্থ লাভা নিঃসৃত হয়ে এই অঞ্চলটি চাদরের মত ঢেকে দেয়। 

এই মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য, লাভাগঠিত কালাে রঙের ব্যাসল্ট শিলা থেকে উৎপন্ন হয়েছে বলে এই মৃত্তিকার রঙকালাে। কৃষ্ণমৃত্তিকায় চুন ও কাদার ভাগ বেশী। তাই এই মৃত্তিকার জলধারণ ক্ষমতাও অত্যন্তবেশী গ্রীষ্মে এই মৃত্তিকা শুকিয়ে গেলে গভীর ফাটলের সৃষ্টি হয়। কার্পাস এই মৃত্তিকার প্রধান উৎপন্ন দ্রব্য বলে এই মৃত্তিকাকে কৃষ্ণ-কার্পাস মৃত্তিকাও  বলে।

🟊 প্রশ্ন : কৃষ্ণ মৃত্তিকা ভারতের কোন অঞ্চলে দেখা যায়?
উত্তর :  ভারতের প্রায় ১৭% স্থান জুড়ে বিস্তৃত প্রায় সমগ্র মহারাষ্ট্র মালভূমি ও গুজরাট (ব্রোচ, বরােদা ও সুরাট জেলা) এবং উত্তর কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও মধ্যপ্রদেশের (নর্মদা উপত্যকা) কয়েকটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত দাক্ষিণাত্যের লাভা গঠিত মালভূমি অঞ্চলে দেখা যায়।

🟊 প্রশ্ন : ল্যাট্রেইট মৃত্তিকা কাকে বলে? ভারতের কোন অঞ্চলে ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা দেখা?
উত্তর :  লােহিত মৃত্তিকার একটি বিশেষ শ্রেণী হল ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা। সাধারণ গ্রানাইট শিলার আবহৰিকারের ফলে এই মৃত্তিকার সৃষ্টি হয়। ইটের মত শক্ত ও লাল রঙের বলে এই মৃত্তিকার নাম ল্যাটেরাইট। কর্ণাটক, কেরালা, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, অসম ও বিহারের ছােটনাগপুরের মালভূমিতে এই বিশেষ ধরনের মৃত্তিকা দেখা যায়। এই মৃত্তিকা অত্যন্ত অনুর্বর এবং এখানে কৃষিকাজ হয় না বললেই চলে।

🟊 প্রশ্ন : বালুকাময় মৃত্তিকা ভারতের কোন স্থানে দেখা যায়? এ মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য কি?
উত্তর : রাজস্থান, গুজরাট ও কচ্ছের অংশ বিশেষে এই মৃত্তিকা দেখা যায়। এই মৃত্তিকায় বালি ও নুড়ির ভাগ বেশী কিন্তু জৈব পদার্থের ভাগ কম। ফলে মৃত্তিকা সেরূপ উর্বর নয়। এখানে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় মৃত্তিকার উপরের খনিজ লবণ দ্রবীভূত হয়ে নীচে নেমে যায় না। ফলে মৃত্তিকায় লবণের ভাগ উল্লেখযােগ্য পরিমাণে বেশী। বালির ভাগ বেশী হওয়ায় এই মৃত্তিকার জলধারণ ক্ষমতাও কম।

🟊 প্রশ্ন : আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য কি কি?
উত্তর :  আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে প্রধানত দু'রকমের মৃত্তিকা দেখতে পাওয়া যায়, 
যথা : (১) ল্যাটেরাইট জাতীয় লােহিত মৃত্তিকা এবং (২) সমুদ্রোপকূলের লবণাক্ত মৃত্তিকা আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মৃত্তিকার, বৈশিষ্ট্যগুলাে হল : (১) ভূ-প্রকৃতিতে প্রধানত পর্বতময়, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মৃত্তিকা অগভীর ও প্রস্তরময়; (২) এই অঞ্চলের বেশীভাগ মৃত্তিকা ল্যাটেরাইট জাতীয়; (৩) কোন কোন অঞ্চলে লােহিত মৃত্তিকাও দেখা যায়; (৪) আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সমুদ্রোপকূল অঞ্চলে লবণাক্ত মৃত্তিকা দেখা যায়; (৫) এই দ্বীপপুঞ্জের বনভূমি অঞ্চলে অনুর্বর হিউমাস মৃত্তিকা দেখা যায়; (৬) সামগ্রিকভাবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মৃত্তিকা অনুর্বর।

🟊 প্রশ্ন : কৃষিকাজের জন্য ভারতে জলসেচের প্রয়ােজন হয় কেন?
অথবা, ভারতে জলসেচের গুরুত্ব কি?

উত্তর : পৃথিবীর সবচেয়ে বৃষ্টিবহুল অঞ্চল মওসীরাম (চেরাপুঞ্জী) ভারতে অবস্থিত হলেও কৃষিকাজে ভারতে জলসেচের প্রয়ােজন হয়, কারণ : (1) মৌসুমী বৃষ্টিপাতের সময়ের অনিশ্চয়তা, (2) মৌসুমী বৃষ্টিপাতের পরিমানের অনিশ্চয়তা, শীতকালীন বৃষ্টিপাতের অভাব, (3) বৃষ্টিপাতের অসম বন্টন ও আঞ্চলিক বৃষ্টিপাতের তারতম্য , (4) অতিরিক্ত বাষ্পীভবনের ফলে ভারতের নদীগুলােতে গ্রীষ্মকালে জলের অভাব ,(5) সেচ নির্ভর উচ্চফলনশীল শস্য ও রবি শস্যের চাষ, (6) ভারতের বিভিন্ন স্থানে মৃত্তিকার জলধারণ ক্ষমতার বিভিন্নতা ও মাটির সিক্ততা অক্ষুন্ন রাখা, (7) বিভিন্ন শস্যের জলের চাহিদার বিভিন্নতা, সীমাবদ্ধ জমির ওপর কৃষির চাপ এবং (8) একই জমিতে বছরে বহুবার ফলনের ক্ষেত্রে জলসেচ প্রয়ােজন হয়। ভারতে সাধারণত তিনটি পদ্ধতিতে যথা : (i) কুপ বা নলকুপ, (ii) জলাশয় এবং (iii) সেচখালের সাহায্যে জলসেচ করা হয়।

🟊 প্রশ্ন : বহুমুখী নদী পরিকল্পনা কাকে বলে?
উত্তর : যে পরিকল্পনার সাহায্যে নদীগুলাের ওপর বাঁধ দিয়ে একই সঙ্গে বিভিন্ন উদ্দেশ্য সাধন করে বিশেষ করে নদীর অববাহিকা অঞ্চলের অধিবাসীদের জীবনযাত্রার মানের সর্বাঙ্গীণ উন্নতির জন্য নদী প্রবাহকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়, তাকে “বহুমুখী নদী পরিকল্পনা বলে। উদাহরণ : দামােদর নদী পরিকল্পনা।

🟊 প্রশ্ন : বহুমুখী নদী-পরিকল্পনার উদ্দেশ্য কি কি?
উত্তর : বহুমুখী নদী পরিকল্পনায় নদীগুলাের ওপর বাঁধ দিয়ে জলাশয় বা কৃত্রিম হ্রদ সৃষ্টি করা হয়। বহুমুখী নদী পরিকল্পনার মাধ্যমে নিম্নলিখিত বিভিন্ন উদ্দেশ্য সাধন করা হয়, যেমন :
(১) এই জলাশয়গুলাে থেকে খাল কেটে জলসেচের ব্যবস্থা করা হয়
(২) জলাশয়গুলাে থেকে সুড়ঙ্গের মধ্যে জল ছেড়ে ঐ জলের প্রচণ্ড গতিবেগকে কাজে লাগিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়
(৩) কৃত্রিম হ্রদে মৎস্যচাষ করা হয়
(৪) নদীতে বাঁধ দেওয়ার ফলে জলের গতি নিয়ন্ত্রিত হয়ে বন্যা নিবারণ সহজসাধ্য হয়
(৫) বাঁধ অঞ্চলে বৃক্ষ রােপণ, রাস্তা নির্মাণ প্রভৃতির জন্য ভূমিক্ষয় নিবারিত হয়
(৬) বাঁধগুলাে নদীর ওপর সেতুর কাজ করে এছাড়া বিভিন্ন জলাশয়, খাল প্রভৃতির সাহায্যে লােক সমাজের আমােদ-প্রমােদ, যাতায়াত ব্যবস্থা প্রভৃতির উন্নতি হয়ে থাকে।

🟊 প্রশ্ন : নিত্যবহ ও প্লাবন খাল কাকে বলে? 
উত্তর : সারা বছর ব্যাপী জল দ্বারা পুষ্ট নদী থেকে খনিত খালকে নিত্যবহ খাল বলা হয়। নদীতে বাঁধ দিয়ে জল উচু করে রাখার ফলে এইসকল খালে সবসময়েই জল থাকে এবং এই জল সেচের কাজে লাগান হয় । পাঞ্জাব , রাজস্থান ,ও পশ্চিম বঙ্গে নিত্যবহ খালের সাহায্যে জল সেচ করা হয়। 

যে সমস্তু খাল কেবলমাত্র বন্যার অতিরিক্ত জল নিকাশের কাজে ব্যবহার করা হয় তাদের প্লাবনখাল বলে । প্লাবন খালে বছরের সবসময় জল থাকে না। কারণ যে নদী থেকে খালে জল আসে সেই নদীর জল গ্রীষ্মকালে নীচে নেমে যায় অথবা শুকিয়ে যায়। নদীতে জল বাড়লে কিংবা প্লাবন হলে খালে জল আসে । বন্যা নিয়ন্ত্রণে এই জাতীয় খাল বিশেষ উপযােগী। তামিলনাড়ু ,ওড়িশা ,উত্তরপ্রদেশ এ প্লাবন খাল দেখা যায়। 

🟊 প্রশ্ন : খারিফ শস্য বলতে কি বােঝ?
উত্তর : এককথায় খারিফ শস্যের অর্থ হল 'বর্ষাকালীন ফসল'। বর্ষাকালে বৃষ্টির জলের ওপর নির্ভর করে যে সব ফসলের চাষ করা হয় সেই সব ফসলকে 'খারিফ শস্য' বলা হয়। ধান, পাট, ভুট্টা, আখ, জোয়ার, বাজরা, কার্পাস, সয়াবিন, চীনাবাদাম প্রভৃতি খারিফ শস্যের উদাহরণ।

🟊 প্রশ্ন : রবি শস্য বলতে কি বােঝ?
উত্তর : এককথায় রবিশস্যের অর্থহল শীতকালীন ফসল। প্রধানত জলসেচের উপর নির্ভর করে শীতকালে যেসব ফসলের চাষ করা হয়, সেইসব ফসলকে 'রবি শস্য’বলে। গম, যব, আলু, বিভিন্ন রকমের তৈলবীজ ও ডাল রবিশস্যের উদাহরণ।

🟊 প্রশ্ন : বাগিচা ফসল কাকে বলে?
উত্তর : একবার রােপনের পর যে সব গাছ থেকে দীর্ঘ দিন ধরে ফলন পাওয়া যায় তাদের বাগিচা ফসল বলে, যেমন : চা, কফি, তামাক প্রভৃতি বাগান ভিত্তিক ফসল এবং আম, জাম, নারিকেল প্রভৃতি নানা ধরনের ফল।

🟊 প্রশ্ন : অর্থকরী ফসল’ বলতে কি বােঝ?
উত্তর :  যে সব ফসল বিক্রি করে কৃষকদের অর্থাগমের সুযােগ রয়েছে, তাদের অর্থকরী ফসল বলে।যেমন : পাট, তুলা, ডাল প্রভৃতি। অবশ্য খাদ্যশস্য বা বাগিচা ফসল বিক্রি করেও অর্থাগম হয়।

🟊 প্রশ্ন : ভারতের তিনটি কয়লা খনি অঞ্চলের নাম কর?
উত্তর : ভারতের উল্লেখযােগ্য তিনটি কয়লা খনি অঞ্চল হল : (১) পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের দামােদর উপত্যকা, (২) ওড়িশা ও ছত্তিশগড় রাজ্যের মহানদী অববাহিকা এবং (৩) মধ্যপ্রদেশের শােন উপত্যকা অঞ্চল।

🟊 প্রশ্ন : ভারতের তিনটি খনিজ তেল উৎপাদক অঞ্চলের নাম কর?
উত্তর : ভারতের প্রধান তিনটি খনিজ তেল উৎপাদক অঞ্চল হল : (১) মহারাষ্ট্রের মুম্বই- হাই অঞ্চল; (২) অসমের নাহারকাটিয়া-ডিব্ৰুগড় অঞ্চল (৩) গুজরাটের আঙ্কলেশ্বর অঞ্চল।

🟊 প্রশ্ন : উত্তর-পূর্ব ভারতের তিনটি খনিজ তৈল উত্তোলন কেন্দ্রের নাম কর?
উত্তর : উত্তর-পূর্ব ভারতের তিনটি খনিজ তৈল উত্তোলন কেন্দ্রের নাম হল : আসাম রাজ্যের নাহার- কাটিয়া, ডিগবয় এবং ডিব্ৰুগড়।

🟊 প্রশ্ন : ভারতের তিনটি আকরিক লােহা উৎপাদক অঞ্চলের নাম লেখ?
উত্তর : (১) নবগঠিত ছত্তিশগড়ে মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের দুর্গ অঞ্চলের ডাল্লিরাজহারা ।
(২) কর্ণাটক রাজ্যের কেমানগুন্ডি এবং (৩) গােয়া রাজ্যের সিরগাঁও হল ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বক্সাইট উৎপাদক অঞ্চল।

 🟊 প্রশ্ন : উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুকূল ভৌগােলিক অবস্থার পাথক্য?
   
  ꪛ  উত্তর ভারত :-
(1) উত্তর ভারতের নদীগুলাে প্রধানতঃ হিমালয়ের বিভিন্ন হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হওয়ায় এই সব নদীতে সারাবছরই জল থাকে বলে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের পক্ষে সুবিধাজনক হয়।
(2) হিমালয় অঞ্চলে বর্ষার প্রাবল্যের জন্য এই সমস্ত নদ-নদী বরফগলা জল ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টির জল পায়। এই জন্য উত্তর ভারতের  নদীগুলােতে বর্ষাকালে বন্যা দেখা দেওয়ায় এইসব নদীতে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের অসুবিধা হয়।
(3) উত্তর ভারতের নদীগুলাের বেশীরভাগ অংশ সমভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এইসব নদীতে বাঁধ দিয়ে কৃত্রিম জলপ্রপাতের সৃষ্টি করে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হয়, যা অত্যন্ত ব্যয়সাধ্য।
(4) অত্যাধিক পলির জন্য উত্তর ভারতের নদীগুলােতে স্থাপিত জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির যন্ত্রপাতিগুলাের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ দক্ষিণের নদীগুলাের তুলনায় বেশি।
(5) উত্তর ভারতে কয়লা সহজলভ্য হওয়ায় উত্তর ভারতে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের বিশেষ সুবিধা রয়েছে। এবং উত্তর ভারতে খনিজ তেল পাওয়া যায় বলে এখানে ডিজেল বিদ্যুৎ উৎপাদন সহজসাধ্য হয়েছে।

 ꪛ  দক্ষিণ ভারত :-
(1) দক্ষিণ ভারতের নদনদীগুলাে কোন হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়নি। ঐ সব নদী বৃষ্টির জল বা ঝর্ণার জলে পুষ্ট। তাই বর্ষাকাল ছাড়া বছরের অন্য সময় এই সব নদীতে জল থাকে না বলে সারা বছর ধরে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের অসুবিধা হয়।
(2) দক্ষিণ ভারতের নদ-নদীগুলাের বন্যার প্রকোপ সীমিত, তাই এই সব নদীতে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের পক্ষে সুবিধাজনক।
(3) দক্ষিণ ভারতের নদ-নদীগুলাে প্রায়ই উঁচু-নিচু মালভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এবং খরস্রোতা হওয়ায় এখানকার নদীগুলাে থেকে স্বাভাবিক ভাবে এক তুলনামূলকভাবে কম খরচে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়।
(4) দক্ষিণ ভারতের নদীগুলাের জলে খুব বেশী পলি থাকে না বলে দক্ষিণ ভারতের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র- গুলির যন্ত্রপাতির রক্ষণাবেক্ষণ খরচ তুলনামূলকভাবে কম।
(5) তামিলনাড়ুর নিয়েভেলি কয়লা খনি ছাড়া দক্ষিণ ভারতের অন্যত্র কয়লা বিশেষ পাওয়া যায় বলে জলবি দ্যুৎ উৎপাদনের ওপরই বেশী গুরুত্ব দিতে হয়।এবং একমাত্র তামিলনাড়ু ছাড়া দক্ষিণ ভারতে
খনিজ তেল বিশেষ পাওয়া যায় না বলে জলবিদ্যুতের ওপর বেশি নির্ভর করতে হয়।

 🟊 প্রশ্ন :  দুর্গাপুরকে ভারতের রূঢ় বলা হয় কেন?
উত্তর : জার্মানির রূঢ় (Ruhur) শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে তুলনা করে দুর্গাপুরকে ভারতের রূঢ়’ অ্যাখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে, কারণ : জার্মানীর রাইনের উপনদী রুঢ়-এর অববাহিকায় প্রাপ্ত প্রচুর কয়লাকে কেন্দ্র করে রূঢ় শিল্পাঞ্চলে লৌহ-ইস্পাত, ইঞ্জিনিয়ারিংও রাসায়নিক শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। অন্যদিকে, দামােদর উপত্যকার রাণীগঞ্জ, আসানসােল ও ঝরিয়া কয়লাখনির কয়লার সাহায্যে দুর্গাপুরেও লৌহ- ইস্পাত ও ইঞ্জিনিয়ারিং শল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। এইজন্য দুর্গাপুরকে ভারতের রূঢ় বলা হয়। কিন্তু মনে রাখা দরকার ভারতের দুর্গাপুর ও জার্মানীর রূঢ় শিল্পাঞ্চলের পরিকাঠামাে একরকম নয়, 

কারণ : (১) রূঢ় শিল্পাঞ্চলের ডুসেলডর্ক, রূঢ়, আচেন প্রভৃতি শিল্প কেন্দ্রগুলাে কয়লাখনি অঞ্চলের
মধেই অবস্থিত হলেও দূর্গাপুরে কোন স্থানীয় কয়লাখনি নেই,কয়লার জন্য দুর্গাপুরকেরাণীগঞ্জ ঝরিয়া অঞ্চলের কয়লার ওপর নির্ভর করতে হয়; (২) দুর্গাপুরে কয়লা ভিত্তিক শিল্প তেমন গড়ে ওঠেনি; (৩) ইস্পাত উৎপাদনের পরিমানের দিক দিয়েও দুর্গাপুরের সঙ্গে রূঢ় শিল্পাঞ্চলের কোনো তুলনা চলে না, কেননা রূঢ় শিল্পাঞ্চলের ১ বছরের শিল্প উৎপাদন দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের ১০ বছরের উৎপাদনের চেয়ে অনেক বেশী; এবং (৪) রূঢ় শিল্পাঞ্চলের পরিকাঠামােও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের পরিকাঠামাের চেয়ে অনেক উন্নত।

Type Here ....

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন