মাধ্যমিক লেভেল এর সংক্ষিপ্ত ভূগোল কোশ্চেন সেট সারাজীবন ভূগোল ছাত্র ও ছাত্রীদের এই প্রশ্নও উত্তর গুলি কাজে লাগবে
🟊 প্রশ্ন : নেপালের পর্যটন শিল্প উন্নত কেন?
উত্তর : নেপালের প্রাকৃতিক দৃশ্য অতি মনােরম। নেপালের রাজধানী (Kath Mando) শহরটি সুরম্য
অট্টালিকা, বড় বড় রাজপথ, উদ্যান প্রভৃতির দ্বারা সুসজ্জিত। এখানকার পশুপতিনাথ মন্দির, ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়, দরবার গৃহ, নতুন বাজার, বৌদ্ধমন্দির দেখার জন্য দেশ বিদেশ থেকে বহু ভ্রমণকারী এসে থাকেন। ভাট গাঁও পুরাকীর্তির জন্য বিখ্যাত। নেপালের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর পােখরা থেকে হিমাদ্রীর তুষারাবৃত শৃঙ্গগুলির দৃশ্য অতি মনােরম এবং এগুলিও দেখার জন্য বহু বিদেশী ভ্রমণকারী ভিড় করেন। ভ্রমণকারীদের থাকা ও খাওয়ার জন্য এখানে নানারকমের হােটেল ব্যবসা গড়ে উঠেছে।
অট্টালিকা, বড় বড় রাজপথ, উদ্যান প্রভৃতির দ্বারা সুসজ্জিত। এখানকার পশুপতিনাথ মন্দির, ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়, দরবার গৃহ, নতুন বাজার, বৌদ্ধমন্দির দেখার জন্য দেশ বিদেশ থেকে বহু ভ্রমণকারী এসে থাকেন। ভাট গাঁও পুরাকীর্তির জন্য বিখ্যাত। নেপালের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর পােখরা থেকে হিমাদ্রীর তুষারাবৃত শৃঙ্গগুলির দৃশ্য অতি মনােরম এবং এগুলিও দেখার জন্য বহু বিদেশী ভ্রমণকারী ভিড় করেন। ভ্রমণকারীদের থাকা ও খাওয়ার জন্য এখানে নানারকমের হােটেল ব্যবসা গড়ে উঠেছে।
🟊 প্রশ্ন : নেপালের প্রধান প্রধান রপ্তানী ও আমদানিকৃত দ্রব্যগুলির নাম কর?
উত্তর : নেপালের প্রধান প্রধান আমদানিকৃত দ্রব্য হল কার্পাস-সূতা ও বস্ত্র, তৈলবীজ, তামাক,চা,ঔষধপত্র, লৌহ ও ইস্পাত, যন্ত্রপাতি, কাগজ, বাের্ড, চুন, সিমেন্ট ও গৃহনির্মাণ সামগ্রী, ডাল, ময়দা, চিনি, বনস্পতি, জুতা প্রভৃতি। নেপালের প্রধান প্রধান রপ্তানীকৃত দ্রব্য হল চাল, তৈলবীজ, পাট, কাঠ, চামড়া, ফল, সাবাই
ঘাস, মশলা, পশম, মাখন, বাদাম, রং, চর্বি ইত্যাদি। ভারতের সঙ্গে নেপালের বৈদেশিক বাণিজ্য বেশী হয়।
🟊 প্রশ্ন : নেপালের স্বাভাবিক উদ্ভিদ কি কি?
উত্তর : প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে এদেশের তরাই অঞ্চলে গভীর বনভূমির সৃষ্টি হয়েছে। এই বনভূমি তরাই বনভূমি নামে পরিচিত। তরাই অঞ্চলে শাল, সেগুন, শিশু প্রভৃতি মূল্যবান বৃক্ষের বনভূমি এবং বাঁশ, বেত এবং দীর্ঘ সাবাই ঘাস প্রচুর পরিমাণে জন্মায়। উত্তরের নাতিশীতােষ্ণ বনভূমিতে ওক ও ম্যাপল বৃক্ষ এবং পার্বত্য অঞ্চলের আরও উচ্চস্থানে রুপােলি ফার, নীল পাইন এবং বার্চ গাছ জন্মায়।
উত্তর : প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে এদেশের তরাই অঞ্চলে গভীর বনভূমির সৃষ্টি হয়েছে। এই বনভূমি তরাই বনভূমি নামে পরিচিত। তরাই অঞ্চলে শাল, সেগুন, শিশু প্রভৃতি মূল্যবান বৃক্ষের বনভূমি এবং বাঁশ, বেত এবং দীর্ঘ সাবাই ঘাস প্রচুর পরিমাণে জন্মায়। উত্তরের নাতিশীতােষ্ণ বনভূমিতে ওক ও ম্যাপল বৃক্ষ এবং পার্বত্য অঞ্চলের আরও উচ্চস্থানে রুপােলি ফার, নীল পাইন এবং বার্চ গাছ জন্মায়।
🟊 প্রশ্ন : বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ কি কি?
উত্তর : খনিজ সম্পদ বাংলাদেশে খুবই কম পাওয়া যায়। চট্টগ্রামে সামান্য কয়লা ও শ্রীহট্টে পাথর পাওয়া যায়। রাজশাহী জেলায় কয়লা ও চুনাপাথর পাওয়া যায়। প্রাকৃতিকগ্যাস বাংলাদেশের একটি উল্লেখযােগ্য সম্পদ। শ্রীহট্ট, হরিপুর, ছাতক ও তিতাস গ্যাস উৎপাদক কেন্দ্র হিসাবে বিখ্যাত।
🟊 প্রশ্ন : বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও?
উত্তর : বাংলাদেশে যাতায়াতের প্রধান বাহন নদনদী (৪,৮৩০ কিলােমিটার)। এখানে প্রচুর নাব্য নদনদী থাকায় নৌকা, স্টীমার বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত ও মালপত্র আদান-প্রদান করা হয়।
এছাড়া বর্তমানে অনেক সড়ক পথ (৪৬,০০০ কিলােমিটার) নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু স্থানে স্থানে নদীর উপর সেতুর অভাবে একস্থান থেকে অন্যস্থানে সড়কপথে যােগাযােগের অসুবিধা হয়। এছাড়া অতিরিক্ত বর্ষার জন্য রাস্তা-ঘাট অচিরেই ব্যবহারের অনুপযােগী হয়ে পড়ে। এখানে প্রায় ২,৭০০ কিলােমিটার রেলপথআছে, এতে যাতায়াত ও মাল পরিবহন করা হয়। বিমানপথের ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে।
এছাড়া বর্তমানে অনেক সড়ক পথ (৪৬,০০০ কিলােমিটার) নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু স্থানে স্থানে নদীর উপর সেতুর অভাবে একস্থান থেকে অন্যস্থানে সড়কপথে যােগাযােগের অসুবিধা হয়। এছাড়া অতিরিক্ত বর্ষার জন্য রাস্তা-ঘাট অচিরেই ব্যবহারের অনুপযােগী হয়ে পড়ে। এখানে প্রায় ২,৭০০ কিলােমিটার রেলপথআছে, এতে যাতায়াত ও মাল পরিবহন করা হয়। বিমানপথের ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে।
🟊 প্রশ্ন : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও?
উত্তর : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক চুক্তির ফলে বাংলাদেশ পাট, মৎস্য, চর্ম, কাগজ,সুপারী, তুলা, হাঁস-মুরগীর ডিম, চামড়া, নিউজপ্রিন্ট, তামাক ইত্যাদি ভারতে রপ্তানী ও ভারত থেকে কয়লা, যন্ত্রপাতি, ইস্পাত, মােটরগাড়ি, রেল-ইঞ্জিন, খনিজ তৈল, রাসায়নিক দ্রব্য, খাদ্য-শস্য, কার্পাস-বস্তু, লবণ, চিনি, ঔষধপত্র, চা ইত্যাদি আমদানী করে।
উত্তর : বাংলাদেশের সুন্দরবন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বনজ সম্পদে সমৃদ্ধ। দক্ষিণের সুন্দরবনের বনভূমির সুন্দরী, গরাণ, হেতাল, গেওয়া প্রভৃতি কাঠ থেকে নৌকা ও বাক্স প্রস্তুত করা হয়। তাছাড়া এই কাঠ জ্বালানি ও গৃহ নির্মাণের কাজেও লাগান হয়। দিনাজপুর ও মধুপুরের বনভূমির মূল্যবান কাঠ (শাল) থেকে আসবাবপত্র প্রস্তুত করা হয়। বাঁশ ও বেত বিভিন্ন কুটীর-শিল্পে ব্যবহৃত হয়। বাঁশ কাগজ প্রস্তুতেও ব্যবহৃত হয়। সুন্দরবন থেকে প্রচুর পরিমাণে মধু সংগৃহীত হয়।
🟊 প্রশ্ন : মায়ানমারের প্রধান শিক্ষগুলি ও শিল্পকেন্দ্রের উল্লেখ কর?
উত্তর : কয়লার অভাবে ব্রহ্মদেশে বৃহদায়তন শিল্প গড়ে ওঠেনি। চাল কল, করাত কল, তৈল শােধনাগার, সিমেন্ট কারখানা, চুষ্ট ও দেশলাইয়ের কারখানা, চিনি কল এই দেশের প্রধান শিল্প। সম্প্রতি এখানে লৌহ ও ইস্পাত কারখানা, কাপাস বয়ন শিল্প ও পাটকল স্থাপিত হয়েছে। মােটর গাড়ীর টায়ার, রং, প্লাইউড প্রভৃতি এই দেশের অন্যান্য শিল্পজাত দ্রব্য। উল্লেখযােগ্য শিল্পকেন্দ্র : ইয়াঙ্গন (রেঙ্গুন), মান্দালয়, আকিয়াব, মৌলমেন, মিইনসিয়ান, থায়েটমিও, জিনিসের জন্য মায়ানমারের খ্যাতি রয়েছে। এর মধ্যে চুরুট শিল্প (বার্মার চুরুট জগদ্বিখ্যাত), সিরিয়াম, নামটু প্রভৃতি এই দেশের উল্লেখযােগ্য শিল্পকেন্দ্র। নানা রকম কুটিরশিল্প ও হস্তশিল্পজাত। তাঁতশিল্প, হাতির দাঁত ও কাঠের কাজ এবং রেশম শিল্প প্রধান।
🟊 প্রশ্ন : শ্রীলঙ্কার প্রধান আমদানী ও রপ্তানী দ্রব্য কি কি?
উত্তর : শ্রীলঙ্কা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চা, কোকো, কফি, অপরিশ্রুত রবার, গ্রাফাইট, নারকেল ও নারকেলের ছােবড়া, নানা রকম মশলা, মুক্তো এবং মূল্যবান রত্ন রপ্তানী করে। বস্ত্র, চা এবং রবার হল শ্রীলঙ্কার প্রধান রপ্তানীযােগ্য দ্রব্য। শ্রীলঙ্কার আমদানীকৃত জিনিসের মধ্যে চাল, চিনি, বস্ত্র, সার, ইস্পাত, যন্ত্রপাতি, কয়লা, রাসায়নিক দ্রব্য, মােটরগাড়ি, রেল ইঞ্জিন, পাটজাত দ্রব্য, বিড়িরপাতা প্রভৃতি উল্লেখযােগ্য।
🟊 প্রশ্ন : নিম্নলিখিত নগরগুলি কি জন্য বিখ্যাত বল?
(১) কলম্বাে (২) কাণ্ডি (৩) অনুরাধাপুর
উত্তর : (১) কলম্বাে : কলম্বাে শ্রীলঙ্কার রাজধানী, প্রধান শহর, বন্দর ও শিল্প বাণিজ্যকেন্দ্র। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি কৃত্রিম পােতাশ্রয় অবস্থিত। বন্দরটি পৃথিবী বিখ্যাত এখানে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর আছে। এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। শহরটি দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে রাজপথ, রেলপথ ও বিমানপথে যুক্ত।
(২) কাণ্ডি : শ্রীলঙ্কার মধ্যভাগের উচ্চ- ভূমিতে অবস্থিত।
(৩) অনুরাধাপুর : শ্রীলঙ্কার প্রাচীন রাজধানী ও বৌদ্ধ তীর্থস্থান।
🟊 প্রশ্ন : শ্রীলঙ্কার প্রধান প্রধান কৃষিজ ফসল কি কি?
উত্তর : শ্রীলঙ্কার প্রধান প্রধান কৃষিজাত ফসল হল : (১) ধান, (২) নারকেল, (৩) সুপারি, (৪) ভুট্টা, (৫) মিলেট, (৬) চা, (৭) কফি, (৮) কোকো, (৯) রাবার, (১০) সিঙ্কোনা, (১১) তামাক, (১২) এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, জায়ফল প্রভৃতি নানান রকম মশলা, (১৩) কলা প্রভৃতি নানান রকম ফল।
🟊 প্রশ্ন : শ্রীলঙ্কার প্রধান খনিজ দ্রব্য কি কি?
উত্তর : শ্রীলঙ্কার প্রধান খনিজ দ্রব্য হল : (১) গ্রাফাইট, (২) চুনী, নীলা, পােখাজ, গােমেদ। প্রভৃতি মূল্যবান রত্ন, (৩) অল্প পরিমানে আকরিক লােহা ও বক্সাইট এবং (৪) টাইটেনিয়াম, মানাজাইট প্রভৃতি পারমাণবিক পদার্থ।
🟊 প্রশ্ন : ভারতের প্রধান প্রাকৃতিক বিভাগ কি কি?
উত্তর : ভূ-প্রকৃতিগত বৈচিত্র অনুসারে ভারতকে আটটি অংশে বিভক্ত করা যায়, যথা :
(১) উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল
(২) উত্তর-পূর্ব পাহাড়ী অঞ্চল ও মেঘালয় মালভূমি
(৩) সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমভূমি এবং ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকা
(৪) মরু অঞ্চল
(৫) মধ্য ও পূর্ব-ভারতের উচ্চভূমি
(৬) দাক্ষিণাত্যের মালভূমি
(৬) দাক্ষিণাত্যের মালভূমি
(৭) উপকূলের সমভূমি
(৮) দ্বীপপুঞ্জ
🟊 প্রশ্ন : প্রস্থ বরাবর হিমালয় পর্বর্তকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায়? বিভাগগুলির নাম কর?
উত্তর : প্রস্থ বরাবর হিমালয় দক্ষিণ থেকে উত্তরে চারটি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণীর সমন্বয়ে গঠিত।
যথা : (১) শিবালিক, (২) হিমাচল (৩) হিমাদ্রি ও (৪) টেথিস হিমালয়।
🟊 প্রশ্ন : হিমালয়ের উল্লেখযােগ্য হিমবাহগুলাের নাম কি?
উত্তর : হিমালয় পর্বতমালার বিখ্যাত হিমবাহগুলাের মধ্যে কারাকোরাম পর্বতের সিয়াচেন (ভারতের দীর্ঘতম হিমবাহ, এর দৈর্ঘ্য ৯০ কি.মি.) । বালটোরা (৬০ কি.মি.) । বিয়াফো (৬০ কি.মি.) । হিসপার (৬২ কি.মি.) । কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী (দৈর্ঘ্য ৩৯ কি.মি., এটি থেকে গঙ্গা নদীর উৎপত্তি হয়েছে) ।মিলাম এবং দার্জিলিং হিমালয়ের জেমু (দৈর্ঘ্য ২৬ কি. মি.) এটি থেকে তিস্তা নদীর উৎপত্তি হয়েছে) বিশেষ উল্লেখযােগ্য।
🟊 প্রশ্ন : কোন্ অঞ্চলকে পূর্বাচল বলে?
উত্তর : উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অংশে মেঘালয় বাদে ভারত ও মায়ানমার সীমান্ত বরাবর উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত অনেকগুলি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণী রয়েছে। এদের একত্রে উত্তর-পূর্ব পাহাড়ী অঞ্চল বা পূর্বাচল বলে।
উত্তর : উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অংশে মেঘালয় বাদে ভারত ও মায়ানমার সীমান্ত বরাবর উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত অনেকগুলি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণী রয়েছে। এদের একত্রে উত্তর-পূর্ব পাহাড়ী অঞ্চল বা পূর্বাচল বলে।
🟊 প্রশ্ন : ভারতীয় মরুস্থলী কাকে বলে?
উত্তর : আরাবল্লী পর্বত এবং সিন্ধু ও শতদ্রু বিধৌত সমভূমি অঞ্চলের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত মরুভূমিকে মরুস্থলী বলা হয়। রাজস্থান রাজ্যের জয়সলমীর, বিকানীর ও যােধপুর জেলা এই মরুস্থলীর অন্তর্গত।
উত্তর : আরাবল্লী পর্বত এবং সিন্ধু ও শতদ্রু বিধৌত সমভূমি অঞ্চলের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত মরুভূমিকে মরুস্থলী বলা হয়। রাজস্থান রাজ্যের জয়সলমীর, বিকানীর ও যােধপুর জেলা এই মরুস্থলীর অন্তর্গত।
🟊 প্রশ্ন : ডেকান ট্রাপ কাকে বলে?
উত্তর : দাক্ষিণাত্যের লাভা মালভূমি অঞ্চলটি ডেকানট্রাপ নামে পরিচিত। এই অঞ্চলটি পৃথিবীর সুপ্রাচীন ভূ-খণ্ড গণ্ডোয়ানাল্যাণ্ডের অন্তগর্ত একটি মালভূমি। আজ থেকে প্রায় ৬-৭ কোটি বছর আগে ভূ-ত্বকের প্রশস্ত ফাটল পথে ভূ-গর্ভস্থ লাভা নিঃসৃত হয়ে এই অঞ্চলটিকে চাদরের মত ঢেকে দেয়। লাভানিঃসরণের ঘটনা বারবার থেমে থেমে ঘটায় এখানকার লাভা স্তরে স্তরেসজ্জিত ।
এবং স্থান বিশেষ ১৫০ মিটার থেকে ২,০০০ মিটার গভীর। পরবর্তীকালে বৃষ্টি, বায়ু প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয়িত লাভা স্তরের পার্শ্বদেশ সিড়ির মতন ধাপে ধাপে উপর থেকে নীচে নেমে গেছে। এইজন্য এই লাভায় ঢাকা মালভূমি অঞ্চলটিকে ডেকানট্রাপ [ Deccan (দাক্ষিণাত্যে) Trap (সুইডিশ শব্দ, অর্থ সিডি বা ধাপ)] বলে।
দাক্ষিণাত্যের লাভাজাত মৃত্তিকা কৃষ্ণবর্ণের, তাই এই অঞ্চলের অন্য নাম দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চল। কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলের প্রধানত ৩টি ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য দেখা যায়, যথা : (১) পুরাে কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ধাপে ধাপে নেমে গেছে এবং (২) ধাপগুলাের মাথা সমতল কিন্তু পার্শ্বদেশ একেবারে খাড়া এবং (৩) এই অঞ্চলের পাহাড়গুলাের মাথা সমতল বা চ্যাপ্টা; (৪) এই সামগ্রিক অঞ্চলটিকে দেখতে টাপ বা সিঁড়ির মত, তাই একে ডেকানট্রাপ বলা হয়।
🟊 প্রশ্ন : মালাবার সমভূমি বলতে কি বােঝ?
উত্তর : কর্ণাটক রাজ্যের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে কেরল রাজ্যের উপকূল হয়ে তামিলনাড়ু রাজ্যের কন্যাকুমারী জেলা পর্যন্ত প্রসারিত উপকূলের সমভূমি মালাবার উপকূল সমভূমি নামে পরিচিত। মালাবার উপকূল, কঙ্কণ উপকূল ও কর্ণাটক উপকূলের তুলনায় অনেক বেশী চওড়া হওয়ায় মালাবার উপকূলে অসংখ্য বালিয়াড়ি, জলাভূমি, হ্রদ, উপহ্রদ বা লেগুন দেখতে পাওয়া যায়।
উত্তর : কর্ণাটক রাজ্যের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে কেরল রাজ্যের উপকূল হয়ে তামিলনাড়ু রাজ্যের কন্যাকুমারী জেলা পর্যন্ত প্রসারিত উপকূলের সমভূমি মালাবার উপকূল সমভূমি নামে পরিচিত। মালাবার উপকূল, কঙ্কণ উপকূল ও কর্ণাটক উপকূলের তুলনায় অনেক বেশী চওড়া হওয়ায় মালাবার উপকূলে অসংখ্য বালিয়াড়ি, জলাভূমি, হ্রদ, উপহ্রদ বা লেগুন দেখতে পাওয়া যায়।
🟊 প্রশ্ন : হিমালয় পর্বতে আরােহণকারীরা কেন অক্সিজেন সিলিণ্ডার ব্যবহার করেন?
উত্তর : হিমালয় সহ যে কোন পর্বতে যত উঁচুতে যাওয়া যায়, ততই বায়ুর ঘনত্ব কমতে থাকে। ঘনত্ব কমলে স্বাভাবিকভাবে বায়ুর ওজন কমে যায় এবং ওজন কমলে বায়ুর চাপও কমে যায়। এইভাবে প্রতি ১০০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুর চাপ ১ সেন্টিমিটার কমে যায়। বায়ুর ঘনত্ব কমার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুতে উপস্থিত অক্সিজেনের পরিমাণও কমতে থাকে, এর ফলে পর্বতের উচ্চ অংশে নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। এইজন্য পর্বত আরােহণকারীরা অক্সিজেন ব্যবহার করেন।
🟊 প্রশ্ন : অন্তবাহিনী নদী কাকে বলে?
উত্তর : যে সমস্ত নদীর প্রবাহ পথ কোন দেশ বা মহাদেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ অর্থাৎ যে সব নদী স্থলভাগের বাইরে কোনও সাগর বা জলভাগে না পড়ে স্থলভাগের মধ্যেই কোন হ্রদ বা জলাশয়ে পতিত হয় অথবা স্থলভাগেই বিলীন হয়ে যায়, সেইসব নদীকে অন্তর্বাহিনী নদী বলে। উদাহরণ : লুনী, ইম্ফল, ঘাগর প্রভৃতি নদী হল ভারতের উল্লেখযােগ্য অন্তর্বাহিনী নদী।
🟊 প্রশ্ন : উত্তর ভারতের নদীগুলিতে সারা বৎসর জল থাকে কিন্তু দক্ষিণ ভারতের নদীগুলিতে গ্রীষ্মকালে সেরূপ জল থাকে না কেন?
উত্তর : উত্তর ভারতের নদ-নদীগুলি প্রধানত হিমালয়ের বিভিন্ন হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়েছে ফলে এই সমস্ত নদ-নদীতে সারা বছরই জল থাকে। কিন্তু দক্ষিণ ভারতের নদ-নদীগুলাে কোন হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়নি, ঐগুলাে বৃষ্টির জল বা বর্ষার জলে পুষ্ট, তাই বর্ষাকাল ছাড়া অন্য সময় এগুলােতে জল প্রায় থাকে না বললেই চলে।
🟊 প্রশ্ন : উত্তর ভারতের নদ-নদীগুলাের নদীখাতের ঢাল সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় কেন?
উত্তর : উত্তর ভারতের নদনদীগুলাে অনেক ক্ষেত্রেই পর্বতকে আড়াআড়িভাবে অতিক্রম করে নিম্নভূমিতে অবতরণ করেছে, তাই এদের উৎস থেকে মােহনা পর্যন্ত নদীখাতের ঢাল সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাছাড়া উত্তর ভারতের নদীগুলি নবীন; সুতরাং নদীগুলাে নদীখাতের সামঞ্জস্যপূর্ণ ঢাল করে নিতে এখনও যথেষ্ট সময় পায়নি।
🟊 প্রশ্ন : দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির নদীখাতের ঢাল সামঞ্জস্যপূর্ণ কেন?
উত্তর : বহুদিনের ক্ষয়কার্যের ফলে দক্ষিণ ভারতের নদ-নদীগুলি উৎস ও মােহনার ঢালকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তুলেছে।
🟊 প্রশ্ন : উত্তর ভারতের নদ-নদীগুলাে তুলনামূলকভাবে দক্ষিণ ভারতের নদনদী গুলাে অপেক্ষা জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে উপযােগী নয় কেন?
উত্তর : উত্তর ভারতের নদ-নদীগুলাে উচ্চপ্রবাহ ছাড়া মন্দস্রোতা হওয়ায় সমভূমি অংশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুপযুক্ত। কিন্তু দক্ষিণ ভারতের নদ-নদীগুলি খরস্রোতা হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের পক্ষে সুবিধাজনক। উত্তর ভারতের নদনদীগুলি বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপযােগী উৎস অঞ্চল অপেক্ষাকৃত দুর্গম এবং লােকালয় থেকে বহুদূরে অবস্থিত হওয়ার জন্যও সেরূপভাবে উৎস অঞ্চলকে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে লাগানো হয় না।
🟊 প্রশ্ন : দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ নদী পূর্ব বাহিনী কেন?
উত্তর : দক্ষিণ ভারতের ভূমির ঢাল পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ নদী পূর্ব বাহিনী, দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি কেবলমাত্র বৃষ্টির জল বা ঝর্ণার জলে পুষ্ট। নদীগুলি হিমবাহ পুষ্ট না হওয়ায় সারা বৎসর পর্যাপ্ত পরিমাণে জল থাকে না। বর্ষাকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে প্রচুর বৃষ্টি হয় কিন্তু পূর্ব ঢালে সেরূপ বৃষ্টি না
উত্তর : দক্ষিণ ভারতের ভূমির ঢাল পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ নদী পূর্ব বাহিনী, দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি কেবলমাত্র বৃষ্টির জল বা ঝর্ণার জলে পুষ্ট। নদীগুলি হিমবাহ পুষ্ট না হওয়ায় সারা বৎসর পর্যাপ্ত পরিমাণে জল থাকে না। বর্ষাকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে প্রচুর বৃষ্টি হয় কিন্তু পূর্ব ঢালে সেরূপ বৃষ্টি না
হওয়ায় দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ নদীতে বর্ষার সময় জলের যােগান সেরূপ হয় না। এবং নদীপথের ঢালও বেশী হওয়ায় সহজেই জল প্রবাহিত হয়ে যেতে পারে।
🟊 প্রশ্ন : নর্মদা ও তাপ্তি নদী পশ্চিমবাহিনী কেন?
উত্তর : দাক্ষিণাত্যের স্বাভাবিক ঢাল পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে হলেও তাপ্তি এবং নমর্দা নদী দুটি গ্রস্ত উপত্যকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার জন্য পশ্চিমবাহিনী হয়েছে।
🟊 প্রশ্ন : ভারতের অধিকাংশ পূর্ব-বাহিনী নদী বদ্বীপ সৃষ্টি করেছে কেন?
উত্তর : পূর্ব-বাহিনী নদী ব-দ্বীপ সৃষ্টির কারণ :
(১) পূর্ববাহিনী নদীগুলাের স্রোতের বেগ কম থাকায়
(২) ভারতের পূর্ব উপকূল ক্রমাগত উঁচু হতে থাকায় এবং
(৩) অ-গভীর বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন নদীর প্রচুর পলি সঞ্চয়ের ফলে, ভারতের বিভিন্ন পূর্ববাহিনী নদী যেমন : গঙ্গা, গােদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী, মহানদী প্রভৃতি নদীগুলাে মােহনায় ব-দ্বীপ সৃষ্টি করেছে।
🟊 প্রশ্ন : প্রত্যাবর্তনকারী মৌসুমী বায়ু কাকে বলে?
উত্তর : অক্টোবর-নভেম্বর মাসে সূর্য মকরক্রান্তীয় অঞ্চলে লম্বভাবে কিরণ দেওয়ায় ভারত মহাসাগরের জলভাগ ভারতের স্থলভাগ অপেক্ষা অধিক উত্তপ্ত হয়। ফলে ভারতের স্থলভাগ থেকে উচ্চচাপের বায়ু ভারত মহাসাগরের নিম্নচাপের দিকে ধাবিত হয়। উত্তর পূর্ব দিক থেকে আগত এই বায়ু দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুকে পশ্চাৎ অপসরণে বাধ্য করে বলে এই বায়ুকে প্রত্যাবর্তনকারী মৌসুমী বায়ু বলে।
উত্তর : অক্টোবর-নভেম্বর মাসে সূর্য মকরক্রান্তীয় অঞ্চলে লম্বভাবে কিরণ দেওয়ায় ভারত মহাসাগরের জলভাগ ভারতের স্থলভাগ অপেক্ষা অধিক উত্তপ্ত হয়। ফলে ভারতের স্থলভাগ থেকে উচ্চচাপের বায়ু ভারত মহাসাগরের নিম্নচাপের দিকে ধাবিত হয়। উত্তর পূর্ব দিক থেকে আগত এই বায়ু দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুকে পশ্চাৎ অপসরণে বাধ্য করে বলে এই বায়ুকে প্রত্যাবর্তনকারী মৌসুমী বায়ু বলে।
🟊 প্রশ্ন : কালবৈশাখী ঝড় কাকে বলে?
উত্তর : এপ্রিল-মে মাস প্রখর সূর্যকিরণে ভূ-পৃষ্ঠ উত্তপ্ত হওয়ায় মধ্যভারত ও উত্তর পশ্চিম ভারতে নিম্নচাপের কেন্দ্রের সৃষ্টি হয় এবং পার্শ্ববর্তী সমুদ্রের শীতল ও উচ্চচাপের বায়ু প্রবলবেগে ঐ দিকে ধাবিত হয়। এর ফলে স্থানীয় ভাবে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূল অঞ্চলে ঝড় ও বৃষ্টি হয়। এই ঝড় কেই স্থানীয়ভাবে কালবৈশাখী ঝড় বলে।
🟊 প্রশ্ন : শিলং অপেক্ষা মেসিনরামে বৃষ্টিপাত বেশী কেন?
উত্তর : দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখাটি মায়ানমার-আরাকান উপকূলে ধাক্কা খেয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে পূর্ব ভারতে প্রবেশ করে। মেঘালয়ের খাসি পাহাড়ে বাধা পেয়ে ঐ বায়ুপ্রবাহ হঠাৎ অনেক উঁচুতে উঠে যায় এবং প্রবল শৈত্যে ঘণীভূত হয়ে খাসি পাহাড়ের দক্ষিণভাগে চেরাপুঞ্জীর নিকটবর্তী মৌসিনরাম অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটায়। আদ্ৰবায়ু পাহাড়ে বাধা পেয়ে প্রতিবাত ঢালে বৃষ্টিপাত করার পর আর জলীয়বাষ্প থাকে না। ঐ শুদ্ধ বায়ু পাহাড় অতিক্রম করে পাহাড়ের অপরদিকে (অনুবাত ঢালে) গেলে সেখানে আর বৃষ্টিপাত হয় না। পাহাড়ের অপর দিকের ঐ বর্ষণ বঞ্চিত প্রায় বৃষ্টিহীন স্থানকে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলে। চেরাপুঞ্জীর নিকটবর্তী মেঘালয়ের রাজ্যগুলি শিলং বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় এখানকার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই কম।
🟊 প্রশ্ন : ভারতে শীতকাল শুষ্ক হওয়ার কারণ কি?
উত্তর : ভারতে ডিসেম্বর-জানুয়ারী মাসে শীতকাল লক্ষ করা যায়। এই সময় সূর্য দক্ষিণ গােলার্ধে মকরক্রান্তি রেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। তখন উত্তর ভারতের তাপমাত্রার পরিমাণ যথেষ্ট হ্রাস পায়। এসময় উত্তর ভারতে উচ্চচাপের এবং দক্ষিণে সমুদ্রের ওপর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। স্বভাবতই স্থলভাগ থেকে জলভাগের দিকে ধাবিত বাতাস উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয় যাকে উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু বলে। স্থলভাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে এই বায়ুতে জলীয় বাষ্প থাকে না, ফলে শীতকালে ভারতে বৃষ্টিপাত হয় না। এই কারণে ভারতে শীতকাল শুষ্ক হয়ে থাকে। কেবলমাত্র চেন্নাই উপকূলে ডিসেম্বর মাসে কিছুটা বৃষ্টিপাত হয়।
🟊 প্রশ্ন : ভারতে প্রায়ই খরা ও বন্যার প্রাদুর্ভাব ঘটে কেন?
উত্তর : ভারতে মৌসুমী বায়ুপ্রবাহের ফলেই প্রধানত বৃষ্টিপাত ঘটে। দেশের মােট বৃষ্টিপাতের প্রায় ৯০ শতাংশ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমীবায়ুর দ্বারা সংঘটিত হয়। কিন্তু এই মৌসুমীবায়ু খুবই অনিশ্চিত। কারণ প্রতি বছর এই মৌসুমীবায়ু সমপরিমাণে জলীয় বাষ্প নিয়ে আসে না। আবার এই মৌসুমীবায়ুর আগমন ও প্রত্যাগমন প্রতি বছর একই সময় ঘটে না। এর ফলে কোন বছর কম জলীয় বাষ্প আমদানি ও দেরীতে আসার ফলে ভারতে অনাবৃষ্টি বা খরা দেখা দেয়। আবার কোন বছর অধিক জলীয় বাষ্প আমদানি এবং দেরিতে প্রত্যাগমনের ফলে ভারতে অতি বৃষ্টি বা বন্যা লক্ষ্য করা যায়।
🟊 প্রশ্ন : থর মরুভূমি সৃষ্টির কারণ কি?
উত্তর : থর মরুভূমির ভৌগােলিক অবস্থান এই অঞ্চলে মরুভূমি সৃষ্টি করতে সাহায্য করেছে। আর সাগর থেকে জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা, পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটানাের পরে সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছের উপকূল অতিক্রম করে মরু অঞ্চলের ওপর দিয়ে যখন প্রবাহিত হয়, তখন এই বায়ুতে জলীয় বাষ্প বিশেষ থাকে না। এছাড়া এই অঞ্চলে এই বায়ুপ্রবাহকে বাধা দেওয়ার জন্য কোন উঁচু পর্বত থাকায় এবং এই অঞ্চলের একমাত্র পর্বত আরাবল্লী উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত হওয়ায় এই অঞ্চলে বৃষ্টি হয় খুবই কম (বছরে ২৫ সেন্টিমিটারেরও কম)।কোন কোন বছর থর মরুভূমিতে বৃষ্টিপাত একেবারেই হয় না। এত কম বৃষ্টিপাতের ফলে থর মরুভূমি সৃষ্টি হয়েছে।
🟊 প্রশ্ন : মেঘালয় রাজ্যের এরূপ নামকরণের কারণ কি?
উত্তর : মেঘালয় কথার অর্থ মেঘের আলয় বা মেঘের দেশ? মেঘালয় রাজ্যের বিশেষ ভৌগলিক ও জলবায়ুগত অবস্থানের জন্য বঙ্গোপসাগর থেকে আগত জলীয় বাষ্পপূর্ণ আর্দ্র বায়ু বাংলাদেশের সুরমা উপত্যকা পার হয়ে মেঘালয় রাজ্যের গারাে-খাসি-জয়ন্তিয়া পাহাড়ের খাড়া ঢালে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হঠাৎ অনেক উঁচুতে উঠে যায় এবং প্রবল শৈত্যের ঘনীভূত হয়ে প্রচুর মেঘ ও বৃষ্টিপাতের সৃষ্টি করে। ফলে বছরের অধিকাংশ সময়ে এই রাজ্যের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে। এবং প্রায় সারা বছরই প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে বৃষ্টিবহুল অঞ্চল চেরাপুঞ্জি- মৌসিনরাম এই রাজ্যেই অবস্থিত। প্রায় সারা বছর ধরে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের জন্য মেঘালয় রাজ্যের এইরূপ নামকরণ করা হয়েছে।
🟊 প্রশ্ন : ভারতের জলবায়ুকে ‘মৌসুমী জলবায়ু’ বলা হয় কেন?
উত্তর : গ্রীষ্মকালীন দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু এবং শীতকালীন উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু, এই দুই বায়ুপ্রবাহের প্রভাবে ভারতের ঋতু পরিবর্তন হয়। মৌসুমী বায়ুর দ্বারা প্রভাবিত হওয়ায় ভারতকে মৌসুমী জলবায়ুর দেশ বলে।
🟊 প্রশ্ন : স্বাভাবিক উদ্ভিদ বলতে কি বােঝায়? এর প্রয়ােজন কেন?
উত্তর : যে সমস্ত গাছ বা উদ্ভিদ কোন স্থানের জলবায়ু ও মৃত্তিকাসহ স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশে মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই জন্মায় ও বর্ধিত হয়, তাকে স্বাভাবিক উদ্ভিদ বলে। স্বাভাবিক উদ্ভিদ যে কোন দেশের পক্ষে একটি বিশেষ সম্পদ এবং স্বাভাবিক উদ্ভিদের অভাবে দেশ মরু অঞ্চলে পরিণত হয়।
উত্তর : যে সমস্ত গাছ বা উদ্ভিদ কোন স্থানের জলবায়ু ও মৃত্তিকাসহ স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশে মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই জন্মায় ও বর্ধিত হয়, তাকে স্বাভাবিক উদ্ভিদ বলে। স্বাভাবিক উদ্ভিদ যে কোন দেশের পক্ষে একটি বিশেষ সম্পদ এবং স্বাভাবিক উদ্ভিদের অভাবে দেশ মরু অঞ্চলে পরিণত হয়।
🟊 প্রশ্ন : ভারতের বিভিন্ন স্বাভাবিক উদ্ভিদ অঞ্চলের নাম লেখ?
উত্তর : ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু ও মৃত্তিকার বিভেদ অনুসারে চম্পিয়ান ও পুরী ভারতের বনভূমিকে ৫টি প্রধান ও ১৬টি অপ্রধান শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন। কিন্তু সাধারণভাবে ভারতের বনভূমিকে নিম্নলিখিত ছটি ভাগে বিভক্ত করা যায়, যথা :
(১) হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের বনভূমি
(২) চিরহরিৎ বৃক্ষের বনভূমি
(৩) পর্ণমােচী বৃক্ষের বনভূমি
(৪) গুল্ম ও তৃণ অঞ্চল
(৫) মরু উদ্ভিদ এবং
(৬) ম্যানগ্রোভ বনভূমি
🟊 প্রশ্ন : সামাজিক বনসৃজন কাকে বলে?
উত্তর : সমাজের মঙ্গলের জন্য, অর্থাৎ পরিবেশের সুস্থতা, জীব জগতের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং জনসাধারণের চাহিদা পূরণের জন্য জনগণের সহায়তায় বনসৃজন করা হলে, তাকে সামাজিক বন সূজন বলে। ভারতে সামাজিক বনসৃজনের ঘােষিত কর্মসূচীগুলাে হল :
(১) পতিত ও অব্যবহৃত জমিতে গাছ লাগানাে,
(২) গ্রামবাসীদের রান্না ও অন্যান্য প্রয়ােজনে ব্যবহার্য কাঠ সরবরাহকারী বৃক্ষরােপণ,
(৩) জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কের দুপাশে ছায়াপ্রদায়ী বৃক্ষরােপণ,
(৪) রেললাইন, খাল, হ্রদ ও পুকুরের ধারে ধারে বৃক্ষরােপণ এবং
(৫) জনসাধারণের দৃষ্টিনন্দন গাছ লাগানাে।
🟊 প্রশ্ন : ভারতে অতি আর্দ্র চিরহরিৎ গাছের বনভূমি কোথায় দেখা যায় ও এদের বৈশিষ্ট্য?
উত্তর : ভারতের যে সমস্ত অঞ্চলের বার্ষিক বৃষ্টিপাত, ২০০ সেন্টিমিটারেরও বেশী এবং তাপমাত্রাও যথেষ্ট তীব্র, সেইসব অঞ্চলে নিরক্ষীয় অঞ্চলের মত অতি আর্দ্র চিরহরিৎ বৃক্ষের বনভূমি দেখা যায়। এখানে শিশু, গর্জন, রােজউড, মেহগনি, চাপলাস, নাহার, লােহাকাঠ ইত্যাদি বৃক্ষ দেখা যায়। মধ্যে মধ্যে রাবার, বাঁশ ও আবলুস বৃক্ষও চোখে পড়ে। পশ্চিমঘাট ও পূর্বঘাট পর্বতমালা, পূর্বাচল, অরুণাচল, আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ওড়িশার বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে এই বনভূমি দেখা যায়। অতি আর্দ্র চিরহরিৎ গাছের বৈশিষ্ট্য হল এই যে, এই সব অঞ্চলের গাছপালাগুলাে বছরের কোন সময়েই পত্রহীন হয় না।
🟊 প্রশ্ন : ভারতে পর্ণমােচী বৃক্ষের বনভূমি কোথায় দেখা যায়?
উত্তর : ভারতের যে সমস্ত স্থানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১০০-২০০ সেন্টিমিটার সেখানে এই বনভূমি দেখা যায়। এখানের প্রধান বৃক্ষগুলি হল, শাল, সেগুন, জারুল, মহুয়া, পলাশ, শিরীষ, বট, অশ্বথ, আম, কাঁঠাল ইত্যাদি। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমঘাট পর্বতমালা প্রভৃতি অঞ্চলে এই বনভূমি দেখা যায়।
🟊 প্রশ্ন : ম্যানগ্রোভ বনভূমি কাকে বলে? এই বনভূমি ভারতের কোথায় দেখা যায়?
উত্তর : নদীর ব-দ্বীপ অঞ্চলে ও অন্যান্য নিম্নস্থানে যেখানে সাগরের লােনা জল প্রবেশ করে সে সমস্ত অঞ্চলে যে বনভূমি সৃষ্টি হয় তাকে ম্যানগ্রোভ বনভূমি বলে। এখানের বৃক্ষগুলির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল বৃক্ষের শিকড় নদীর জোয়ারের সময় শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার জন্য মাটি খুঁড়ে উপরে ওঠে এবং কাণ্ডকে সােজাভাবে ধরে রাখার জন্য ঠেস-মূলও দেখা যায়। ভারতের গঙ্গা, মহানদী, গােদাবরী, প্রভৃতি নদীর ব-দ্বীপ অঞ্চলে ও কাম্বে উপসাগরের নিম্ন হােগলা, গােলপাতা প্রভৃতি উল্লেখযােগ্য।
🟊 প্রশ্ন : ব-দ্বীপের লবণাক্ত মাটিতে “ম্যানগ্রোভ" অরণ্য দেখা যায় কেন?
উত্তর : সমুদ্রোপকূলবর্তী বা নদীর ব-দ্বীপ অঞ্চলের লবণাক্ত মাটিতে খনিজ লবণের পরিমাণ বেশী থাকায় ঐ মাটিতে অক্সিজেন সরবরাহ খুবই কম হয়। তাই সাধারণ উদ্ভিদ ঐ জাতীয় লবণাক্ত মাটিতে জন্মাতে পারে না। এছাড়া এই অঞ্চলের মাটি এঁটেল, কর্দমাক্ত এবং খনিজ লবণযুক্ত হওয়ায় ঐ মাটিতে যথেষ্ট পরিমাণ জল থাকলেও সাধারণ গাছ তা গ্রহণ করতে পারে না। এইজন্য ব-দ্বীপের লবণাক্ত মাটিতে ম্যানগ্রোভ অরণ্য দেখা যায়। ম্যানগ্রোভ জাতীয় উদ্ভিদের কিছু শাখামূল অভিকর্ষের বিপরীত দিকে ধাবিত হয়ে মাটির উপর উঠে আসে। এইসব মূলের উপরভাগে অসংখ্য সূক্ষ্ম ছিদ্র থাকে যাদের মাধ্যমে মূলগুলাে বায়ু থেকে সরাসরি অক্সিজেন শােষণ করে এইরকম মূলকে শ্বাসমূল বলে।