মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক ইতিহাস অষ্টম শ্রেণি 2021 পার্ট -৬

   মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক

                                অষ্টম শ্রেণি

                                    ইতিহাস

          ______________________________


১. সঠিক তথ্য দিয়ে নীচের  ছকটি  পূরণ করো :


প্রতিষ্ঠান

প্রতিষ্ঠাতা

সময়কাল

জমিদার সভা

দ্বারকানাথ ঠাকুর

১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দ

ভারত সভা

সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় / আনন্দমোহন বসু

১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দ

ইন্ডিয়ান লিগ

শিশির কুমার ঘোষ

১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দ



২. সত্য বা মিথ্যা নির্ণয় করো :
২.১    ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে লর্ড নর্থব্রুক জারি করে নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন।
উত্তর : সত্য
২.২ ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর বাংলা বিভাজনের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হয়।
উত্তর : সত্য
২.৩ পাঞ্জাবে লালা লাজপত রায়ের নেতৃত্বে শিবাজী উৎসব চালু হয়।
উত্তর : মিথ্যা


৩. সংক্ষেপে উত্তর দাও (৩০-৪০ টি শব্দ) :

৩.১ অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ কী?
উত্তর : প্রথম দুই দশকের কার্যকলাপের নিরিক্ষে বিচার করলে কংগ্রেসের আদিপর্ব নেতৃত্ব কে নরমপন্থী বলে চিহ্নিত করা যায়। একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে নরমপন্থী জাতীয়তাবাদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। তা হলো ভারতের আর্থিক দুরবস্থা ব্রিটিশ শাসনের ভূমিকা নিয়ে নরমপন্থী নেতৃত্বে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন এই প্রক্রিয়াকে অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ বলা হয়। এই কাজে বিশেষ করে দাদাভাই নওরোজি, মহাদেব গোবিন্দ রানাডে, রমেশচন্দ্র দত্তের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদের মূল লক্ষ্য ছিল ভারতের দারিদ্র ও ব্রিটিশ শাসনের সম্পর্ক নির্ণয় করা।
অধিকাংশ লোক কৃষি নির্ভর হয়ে পড়ার ফলে কৃষির উপযুক্ত কাঠামো না থাকায় দেশের দারিদ্র আরও বেড়ে গিয়েছিল। এই নেতিবাচক বিষয়গুলির প্রতিকার করে একটি জাতীয় অর্থনীতি গড়ে তোলার ভাবনা অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদকে পুষ্ট করেছিল।

৩.২  ইলবার্ট বিল কে নিয়ে কেন বিতরকের সূচনা হয়েছিল?
উত্তর : কোন ভারতীয় বিচারকের ইউরোপীয়দের বিচার করার অধিকার ছিলনা। গভর্নর জেনারেল লর্ড রিপনের আইনসভার সদস্য সি.পি ইলবার্ট বিচারবিভাগীয় ক্ষেত্রে এই অসাম্য দূর করার চেষ্টা করেন। তার প্রস্তাবিত একটি বিলে ভারতীয় বিচারকদের ইউরোপীয়দের বিচার করার অধিকার দেওয়া হয়। এই বিলের প্রতিবাদে ইউরোপীয়রা সংগঠিত ভাবে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। শ্বেতাঙ্গদের এই আন্দোলনের ফলে এই বিল প্রত্যাহার করা হয়। ফলে ভারত সভার উদ্যোগে ভারতীয়রা আন্দোলন শুরু করে উভয়পক্ষের এই আন্দোলন ইলবার্ট বিল বিতর্ক নামে পরিচিত।

৪. নিজের ভাষায় লেখো (১২০-১৬০টি শব্দ) :

বিশ শতকের প্রথম দিকে বাংলায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন গুপ্ত সমিতির পরিচয় দাও।

উত্তর : স্বদেশী আন্দোলনের শেষ দিকে বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদের ধারণাটি বেশি করে দেখতে পাওয়া যায়। এই ধারার একটি প্রধান ভিত্তি ছিল বিভিন্ন সমিতি। সমিতির শরীর চর্চার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক উদ্যোগ নিত। বিশ শতকের প্রথম দিকে বাংলায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন গুপ্ত সমিতি গুলি হল---

⦿ অনুশীলন সমিতি : বাংলাদেশ শরীরচর্চার প্রতিষ্ঠানগুলিকে কেন্দ্র করে বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদি কার্যকলাপ সংঘটিত হতে শুরু করে। সতীশ চন্দ্র বসু জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন এখানকার স্কটিশ চার্চ কলেজ এর ব্যায়ামাগারে প্রথম গঠন করেন কাশীনাথ সাহিত্য সমিতি। এরপর প্রমথ নাথ মিত্রের সাহায্য নিয়ে কলকাতার ১২,মদন মিত্র লেনে প্রতিষ্ঠা করেন অনুশীলন সমিতি ১৯০২খ্রিস্টাব্দ, ২৪ শে মার্চ। অনুশীলন সমিতির প্রধান সংগঠক ও সভাপতি ছিলেন প্রমথনাথ মিত্র, সহ সভাপতি ছিলেন চিত্তরঞ্জন দাস।

অনুশীলন সমিতির সদস্যরা বিপ্লবী সংগ্রামের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ব্রিটিশ এর সঙ্গে সরাসরি সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হওয়ার প্রতিজ্ঞা নেয়। এখানকার সদস্যদের ফরাসি বিপ্লব, ইতালির মুক্তি আন্দোলন ইত্যাদি সংগ্রামের কাহিনী শুনে উদ্বুদ্ধ করা হতো এবং গীতা ও আনন্দমঠ ছিল সমিতির সদস্যদের কাছে অবশ্য প্রধান বিষয়।

⦿ ঢাকা অনুশীলন সমিতি : ঢাকা অনুশীলন সমিতি ছিল অনুশীলন সমিতির একটি শাখা। এটি তদানীন্তন পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে ১৯০৫ সালের নভেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। পুলিনবিহারী দাস এর নেতৃত্বে ৮০ জন সদস্য নিয়ে দল প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দলের প্রধান কার্যালয় ছিল ঢাকা শহরের মধ্যে। এই দল একাধিক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল।

⦿ যুগান্তর দল : অনুশীলন সমিতির আন্দোলন এর পদ্ধতিগত দিক থেকে দুটি ধারা ছিল --- (ক) নিষ্ক্রিয় প্রতিরোধ এবং (খ) সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে সন্ত্রাস ছড়ানো। বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষ ছিলেন সশস্ত্র আন্দোলন ও গুপ্তহত্যার পক্ষপাতী। ফলে অনুশীলন সমিতির মূল ধারার সঙ্গে বারীন্দ্রকুমার ঘোষ এর মত বিরোধ দেখা দেয়। ফলস্বরূপ ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে বাংলার বিপ্লবী নেতারা বারীন্দ্রকুমার ঘোষের নেতৃত্বে ‘যুগান্তর’ নামে একটি গোপন সমিতি গঠন করে। এই দলের সাপ্তাহিক মুখপাত্র যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত। এই যুগান্তর দল প্রথম বিপ্লবের আদর্শ প্রচার করতে থাকে এবং যুগান্তর দলের সদস্যরাই প্রথম বিদেশি শাসকদের বিরুদ্ধে বোমা, পিস্তল রাজনীতির অনুসরণ করেন।

উপসংহার হিসেবে বলা যায়, সমিতি গুলির লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাসবাদি কার্যকলাপ চালিয়ে ব্রিটিশ শাসন যন্ত্রকে অচল করে দেওয়া এবং ব্রিটিশ শাসকদের মনে প্রীতি ও সন্ত্রাসের আবহমান বিরাজ করা।

Type Here ....

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন