রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী | RABINDRANATH TAGORE


RABINDRANATH TAGORE :
Date of birth : 8.5.1861; Place of birth : Jorasanko in Kolkata ; Parents : Maharshi Debendranath Tagore and Sarada Devi ; Literary works : Poems, songs, novels, dramas, short stories, essays etc.; Nobel Prize : For Geetanjali in 1913 : Educationist : Founded Visva-Varati ; Patriot : Renounced Knighthood protesting against the massacre at Jallianwallabag in Punjab in 1919 ; Passed away : 7.8.1941.


✥ রবীন্দ্রনাথের উদ্দেশে শরৎচন্দ্র লিখেছিলেন—“কবিগুরু তোমার প্রতি চাহিয়া আমাদের বিস্ময়ের সীমা নাই।” বাস্তবিকই, রবীন্দ্র-প্রতিভা এক পরম বিস্ময়। একাধারে তিনি কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, নাট্যপরিচালক, অভিনেতা, গীতিকার, চিত্রশিল্পী, প্রাবন্ধিক, শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এবং আরও অনেক কিছু। তাঁর সৃজনশীলতার বহু বিচিত্র ধারা কেবল দেশবাসীকে নয়, বিশ্ববাসীর মনকেও প্লাবিত করেছে। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ মে (১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ) কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে রবীন্দ্রনাথের জন্ম। পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মাতা সারদা দেবী। পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর ছিলেন সেকালের বিখ্যাত ধনী ব্যক্তি। তাঁর রাজকীয় জীবনযাপন দেখে ইংরেজরা তাঁকে ‘প্রিন্স’ আখ্যা দিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন পিতা-মাতার চতুর্দশ সন্তান। বালক রবীন্দ্রনাথের ছাত্রজীবন শুরু হয় ‘ওরিয়েন্টাল সেমিনারি'তে এতদিন পর্যন্ত এই মতটিই প্রচলিত ছিল। প্রচলিত এই ধারণার প্রতি সংশয় প্রকাশ করেছেন একালের প্রখ্যাত রবীন্দ্রজীবনীকার অধ্যাপক প্রশান্তকুমার পাল। তাঁর মতে ‘ওরিয়েন্টাল সেমিনারি’ নয়, রবীন্দ্রনাথের ছাত্রজীবন যেখানে শুরু হয়, সেই প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘ক্যালকাটা ট্রেনিং একাডেমি'।

সে যাই হোক, এর পরে তিনি নর্মাল স্কুল ক্যালকাটা  গভঃর্মেন্ট পাঠশালা বেঙ্গল অ্যাকাডেমি, সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে পাঠ গ্রহণ করেন। কিন্তু প্রচলিত শিক্ষাপদ্ধতিতে বালক রবীন্দ্রনাথের মন বসত না। সেজন্য বারবার বিদ্যালয় পরিবর্তন করলেও বিদ্যালয়ের পড়া তিনি শেষ করেননি। প্রথাবদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অসমাপ্ত থাকলেও বালক রবীন্দ্রনাথের বিদ্যাচর্চায় কোনো ত্রুটি ঘটেনি। বাড়িতে যোগ্য গৃহশিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে তিনি বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ গ্রহণ করেছিলেন। গুণমানের বিচারে তাঁর গৃহশিক্ষা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অপেক্ষা কোনো অংশে কম তো ছিলই না, বরং অনেক ব্যাপারে এগিয়ে ছিল। রবীন্দ্রনাথের পারিবারিক পরিবেশও ছিল শিক্ষায় ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ। কেবল লেখাপড়া নয়, ঠাকুর পরিবারে সাহিত্য, শিল্প ও সংগীতচর্চার যে অনুকূল আবহাওয়া ছিল, রবীন্দ্রনাথ তার মধ্যেই ধীরে ধীরে বড়ো হয়ে উঠেছিলেন।

অল্প বয়সেই রবীন্দ্রনাথ কবিতা লিখতে শুরু করেন। তাঁর কবিতা রচনা কীভাবে শুরু হল, সে বিষয়ে ‘জীবনস্মৃতি' গ্রন্থে তিনি বলেছেন—“আমার বয়স তখন সাত-আট বছরের বেশি হইবে না। আমার এক ভাগিনেয় শ্রীযুক্ত জ্যোতিঃপ্রকাশ আমার চেয়ে বয়সে বেশ একটু বড়ো। তিনি তখন ইংরেজি সাহিত্যে প্রবেশ করিয়া খুব উৎসাহের সঙ্গে হ্যামলেটের স্বগত উক্তি আওড়াইতেছেন। আমার মতো শিশুকে কবিতা লেখাইবার জন্য তাঁহার হঠাৎ কেন যে উৎসাহ হইল তাহা আমি বলিতে পারি না। একদিন দুপুরবেলা তাঁহার ঘরে ডাকিয়া লইয়া বলিলেন, ‘তোমাকে পদ্য লিখিতে হইবে।' বলিয়া পয়ারছন্দে চৌদ্দ অক্ষর যোগাযোগের রীতিপদ্ধতি আমাকে বুঝাইয়া দিলেন।” এর আগে বালক রবীন্দ্রনাথ কবিতা-রচনা ব্যাপারটিকে একটি অসম্ভব কাণ্ড বলে মনে করতেন। কিন্তু জ্যোতিঃপ্রকাশের অনুপ্রেরণা এবং সহায়তায় তাঁর সেই ধারণার পরিবর্তন ঘটে। 'জীবনস্মৃতি' লিখেছেন—“গোটাকয়েক শব্দ নিজের হাতে জোড়াতাড়া দিতেই যখন তাহা পয়ার হইয়া উঠিল, তখন পদ্যরচনার মহিমা সম্বন্ধে মোহ আর টিকিল না।” শিশু রবীন্দ্রনাথের জীবনে এইভাবে যে কবিতাচর্চার সূচনা ঘটেছিল তাতে আর কখনও বিরতি ঘটেনি।

রবীন্দ্রনাথের বয়স এবং অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কবিতা রচনার পাশাপাশি প্রবন্ধ, গান, নাটক, উপন্যাস, ছোটোগল্প প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাঁর অসাধারণ প্রতিভার বিকাশ ঘটতে থাকে। ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে, রবীন্দ্রনাথের বয়স যখন ১৭ বছর, তখন তিনি ইংল্যান্ডে যান। সেটাই তাঁর প্রথম বিলাত যাত্রা। পরের বছর ভরতি হন লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু পিতা দেবেন্দ্রনাথের নির্দেশে ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দেই তিনি দেশে ফিরে আসেন। ‘য়ুরোপ প্রবাসীর পত্র’ তাঁর প্রথমবার বিলাত বাসের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রচিত। ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে যশোরের বেণীমাধব রায়চৌধুরীর কন্যা ভবতারিণী দেবীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের বিবাহ হয়। ঠাকুর বাড়িতে ভবতারিণীর নতুন নামকরণ হয় মৃণালিনী। ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথের দাদা জ্যোতিরিন্দ্র নাথের স্ত্রী কাদম্বরী দেবী আত্মহত্যা করেন। কাদম্বরী দেবীর মৃত্যুতে রবীন্দ্রনাথ দারুণভাবে আহত হন। কাদম্বরী দেবী রবীন্দ্রনাথকে যেমন স্নেহ করতেন, তেমনি তাঁকে সাহিত্যচর্চাতেও উৎসাহিত করতেন। রবীন্দ্রনাথ আমৃত্যু এই স্নেহময়ী রমণীর কথা মনে রেখেছিলেন। তাঁর বহু রচনায় কাদম্বরী দেবীর স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। ১৮৮৪-তেই পিতার নির্দেশে রবীন্দ্রনাথকে জমিদারি দেখাশোনার ভার গ্রহণ করতে হয়। জমিদারি পরিদর্শনের সূত্রে তিনি বেশ কিছুকাল পদ্মাতীরবর্তী শিলাইদহ, সাজাদপুর প্রভৃতি অঞ্চলে বসবাস করেন। এইসব অঞ্চলের উন্মুক্ত প্রকৃতি এবং সাধারণ মানুষের সান্নিধ্য তাঁর সৃষ্টিকর্মকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করেছে।

১৯০১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে ‘ব্ৰষ্মচর্য বিদ্যালয়' প্রতিষ্ঠা করেন। মাত্র পাঁচজন ছাত্র নিয়ে শুরু হয় বিদ্যালয়ের কাজ। রবীন্দ্রনাথ এই বিদ্যালয়টিকে প্রাচীন ভারতের গুরুগৃহের আদর্শে তৈরি করতে চেয়েছিলেন। পরবর্তীকালে এই প্রতিষ্ঠানটি পরিণত হয় ‘বিশ্বভারতী’ বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে দেশের মধ্যে যে রাজনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়, রবীন্দ্রনাথ তাতেও জড়িয়ে পড়েন। এই উপলক্ষ্যে রচনা করেন ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গানটি। রবীন্দ্রনাথ শুধু সাহিত্য-শিল্পের চর্চা করেননি, যখনই প্রয়োজন পড়েছে দেশ ও জাতির জন্য চিন্তা করেছেন, মানবতা বিরোধী যে-কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি ‘নাইট’ উপাধি ত্যাগ করেন। রবীন্দ্রনাথের স্বনামে প্রকাশিত প্রথম কবিতাটির নাম ‘হিন্দুমেলায় উপহার’। ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বিভাষিক ‘অমৃতবাজার’ পত্রিকায় এটি প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থের নাম ‘কবি-কাহিনী'। প্রকাশকাল ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দ।

রবীন্দ্রনাথের প্রথম পর্বের রচনায় অন্যের রচনার প্রভাব লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে বিহারীলাল চক্রবর্তীর অনুসরণ অনেক ক্ষেত্রে বেশ স্পষ্ট। ১৮৮২-তে প্রকাশিত ‘সন্ধ্যাসংগীত’ নামের কাব্যটি থেকেই তিনি নিজস্ব রচনাশৈলীর সন্ধান পেয়েছিলেন। স্বয়ং বঙ্কিমচন্দ্রও এই কাব্যটির প্রশংসা করে ছিলেন। বলা যায়, এই সময় থেকেই রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যে তাঁর নিজের স্থানটি অধিকার করেনিয়ে ছিলেন। তাঁর কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল : ‘মানসী’, ‘সোনার তরী’, ‘চিত্রা’, ‘কল্পনা, ‘ক্ষণিকা’, ‘নৈবেদ্য’, ‘খেয়া’, ‘গীতাঞ্জলি’, ‘গীতিমাল্য’, ‘গীতালি’, ‘বলাকা’, ‘মহুয়া’, ‘পুনশ্চ’, ‘পত্রপুট’, ‘আকাশ', প্রদীপ’, ‘নবজাতক’, ‘জন্মদিনে’, ‘শেষ লেখা’ প্রভৃতি। রবীন্দ্রনাথ রচিত প্রথম নাটকটির নাম ‘রুদ্রচণ্ড'। প্রথম গীতিনাট্য ‘বাল্মীকি প্রতিভা'। ‘রাজা ও রাণী’, ‘বিসর্জন’, ‘শারদোৎসব’, ‘ডাকঘর’, ‘ফাল্গুনী’, ‘মুক্তধারা’, ‘রক্তকরবী. প্রভৃতি তাঁর উল্লেখযোগ্য নাটক। বঙ্কিমচন্দ্রের পরে বাংলা উপন্যাস রবীন্দ্রনাথের হাতে নতুন ধারায় প্রবাহিত হয়। তাঁর ‘চোখের বালি’, ‘গোরা’, ‘চতুরঙ্গ’ ‘যোগাযোগ’, ‘শেষের কবিতা’, ‘চার অধ্যায়’ প্রভৃতি উপন্যাস বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। বাংলা ছোটোগল্পের যথার্থ রূপটিও গড়ে উঠেছিল রবীন্দ্রনাথের হাতে নব্বইটিরও বেশি ছোটোগল্প রচনা করে ছিলেন তিনি।

বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ছোটোগল্পকারদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথের নাম সসম্মানে উচ্চারিত হয়ে থাকে। চিন্তাশীল প্রবন্ধ
রচনার ক্ষেত্রেও রবীন্দ্রনাথ তুলনাহীন। ‘চারিত্রপূজা’, ‘সাহিত্য’, ‘সাহিত্যের পথে’, ‘স্বদেশ’, ‘সমাজ’, ‘শিক্ষা', ‘মানুষের ধর্ম’, ‘কালান্তর’, ‘সভ্যতার সংকট’ প্রভৃতি তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থ। এ ছাড়া পত্রসাহিত্য ও ভ্রমণ সাহিত্যের মধ্য দিয়েও রবীন্দ্র প্রতিভার আশ্চর্য দীপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর পত্র-সংকলন ‘ছিন্নপত্রাবলী’ তো গদ্যকাব্যের পর্যায়ে উন্নীত। তাঁর ‘গীতাঞ্জলি’র স্ব-অনূদিত ইংরাজি কাব্যগ্রন্থ Song Offerings-এর জন্য ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এই পুরস্কার তাঁকে বিশ্বজনের কাছে পরিচিত করে তোলে। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ আগস্ট (১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ) এই মহামানবের দেহাবসান ঘটে। কিন্তু এ শুধু তাঁর মরদেহেরই অবসান। তাঁর সৃষ্টিকর্মের মধ্যে তিনি অমর হয়ে রয়েছেন। আমাদের চলার পথে তাঁর রচনাবলি আজও অন্যতম অনুপ্রেরণা।



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জি.কে । জেনারেল নলেজ। কুইজঃ 

🔴 জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ কোন উপাধি ত্যাগ করেন?
উঃ নাইট উপাধি
🔴 গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদ বা "SONG OFFERINGS' কবে প্রকাশিত হয়?
উঃ ১৯১১ সালে।
🔴 ১৯১৩ সালের অক্টোবর মাসে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় একটি পুরস্কার লাভ করেন, তার নাম কী?
উঃ নোবেল পুরস্কার 
🔴 কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথকে ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করেন কত সালে?
উঃ ১৯১৪ সালে।
🔴 মুসােলিনীর আমন্ত্রণে রবীন্দ্রনাথ কবে ইতালিতে গিয়েছিলেন? সেখানে কাদের সঙ্গে তিনি পরিচিত হন?
উঃ ১৯২৬ সালে। সেখানে শিল্পতত্ত্ববিদ বেনেদোত্তাক্রোচে ও ফরাসী মনীষী রােম্যা রলার সঙ্গে পরিচিত হন।
🔴  বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে কত সালে মহাত্মাগান্ধী তাকে ৬০ হাজার টাকা সাহায্য করেন?
উঃ ১৯৩৬ সালে। এই সময় কবি বৃদ্ধ বয়েসে শান্তিনিকেতনের অর্থাভাব মেটাতে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে সারাভারতে নৃত্যনাট্য দেখিয়ে অর্থ সংগ্রহ করছিলেন।
🔴  বিশ্বকবিকে কে “কবি গুরু আখ্যা দেন ?
উঃ মােহনদাস করমচাঁদ গান্ধী।
🔴  অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কত সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথকে ডক্টরেট উপাধি দেবার জন্য শান্তি নিকেতনে সমাবর্তন উৎসব করেন?
উঃ ১৯৪০ সালের ৭ আগস্ট।
🔴  বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ পিতার কত তম সন্তান ছিলেন?
উঃ চতুদর্শতম সন্তান কিন্তু পুত্রদের মধ্যে অষ্টম।
🔴  কবি গুরু রবীন্দ্রনাথের মাতার নাম কি?
উঃ সারদাদেবী।
🔴  বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের কত বছর বয়সে তার মাতা পরলােক গমন করেন?
উঃ রবীন্দ্রনাথের বয়স যখন তেরাে বছর দশ মাস তখন তার মাতা পরলােক গমন করেন।
🔴 রবীন্দ্রনাথের প্রথম সন্তান মাধবীলতার জন্ম হয় কবে?
উঃ ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দে।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী মৃণালিনী দেবী পরলােক গমন করেন কত সালে?
উঃ ১৯০২ সালের ২৩ নভেম্বর।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উঃ ১২৬৮ সালের ২৫শে বৈশাখ (ইং ১৮৬১ সালের ৭মে)।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম কোথায় হয়? পিতার নাম কি?
উঃ কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্ম। পিতার নাম মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ।
🔴 কবিগুরু রবীন্দ্রনাথকে ছােটবেলায় যে সমস্ত স্কুলে বিদ্যাশিক্ষার জন্য পাঠানাে হয়েছিল ঐ স্কুলগুলির নাম কী কী?
উঃ ওরিয়েন্টাল সেমিনারী, নর্মাল স্কুল, বেঙ্গল অ্যাকাডেমী, সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল প্রভৃতি।
🔴 ব্যারিস্টারী পড়ার জন্য কত বছর বয়সে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বিলেত পাঠানাে হয়?
উঃ ১৭ বছর কিন্তু দেড় বছর পর পিতার আদেশে দেশে ফিরে আসেন।
🔴 স্বনামে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত কবিতাটির নাম কী?
উঃ হিন্দু মেলার উপহার।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের প্রথম গদ্য প্রবন্ধ কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উঃ জ্ঞানাঙ্কুর।
🔴 কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত ছােট গল্পটির নাম কী?
উঃ ভিখারিনী।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস কোনটি?
উঃ “করুণা”।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ কত বছর বয়সে বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করেন?
উঃ ২২ বছর।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের বিয়ে কবে হয়? কাকে তিনি বিয়ে করেন?
উঃ রবীন্দ্রনাথের বিয়ে হয় ৯.১২.১৮৮৩ তারিখে। নিজেদের জমিদারী সেরেস্তার এক কর্মচারীর একাদশ বর্ষীয়া কন্যা ভবতারিণী দেবীকে (পরিবর্তীতে নামকরণ হয় মৃণালিনী) তিনি বিয়ে করেন।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ কবে বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে একটি শােভাযাত্রা পরিচালনা ও রাখী উৎসব প্রচলন করেন?
উঃ ১৯০৫ সালে ১৬ অক্টোবর।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু হয় কত সালে?
উঃ ১৯০৫ সালের ১৯ জানুয়ারি।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ছােট ছেলে শমীন্দ্র মারা যায় কত সালে?
উঃ ১৯০৭ সালের নভেম্বর মাসে।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের গােরা উপন্যাসটি প্রথম বই আকারে কত সালে প্রকাশিত হয়?
উঃ ১৯১০ সালে।
🔴 'Rabindranath Tagore his Life and Work' বইটি কে লিখেছেন?
উঃ এডওয়ার্ড টমসন।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ মােট কতগুলি উপন্যাস লিখেছেন?
উঃ তেরােটি। করুণা, বউ-ঠাকুরাণীর হাট, রাজর্ষি, চোখের বালি, নৌকাডুবি, গােরা,চতুরঙ্গ, ঘরে-বাইরে, যােগাযােগ, শেষের কবিতা, দুই বােন, মালঞ্চ এবং চার অধ্যায়।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের রচনা প্রথম ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ কে করেন?
উঃ বিপিনচন্দ্র পাল।।
🔴 ‘জন-গণ-মন-অধিনায়ক' কোন সালে জাতীয় সংগীত হিসেবে গৃহীত হয়?
উঃ ১৯৫০ সালের ২৪ জানুয়ারি।
🔴 জ'ন-গণ-মন-অধিনায়ক' গানটি কি নামে প্রথম কোন্ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উঃ ভারতবিধাতা’ নামে “তত্ত্ববােধিনী পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তাঁর তাসের দেশ’ নাটকটি কাকে উৎসর্গ করেন?
উঃ নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুকে।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ শেষবারের মতাে শান্তিনিকেতন ছেড়ে আসেন কবে?
উঃ ১৯৪১ সালের ২৫ জুলাই।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের কোন গল্পটি প্রথম চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়?
উঃ মানভঞ্জন। পরিচালক ছিলেন নরেশ মিত্র।
🔴 কবিগুরু রবীন্দ্রনাথকে বিশ্বকবি’ সম্মানে ভূষিত করেন কে?
উঃ ব্রহ্মবান্ধক উপাধ্যায়।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের প্রথম কাব্যগ্রন্থটি কোন সালে প্রকাশিত হয়?
উঃ ১৮৭৮ সালে।
🔴 প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থটির নাম কি?
উঃ কবিকাহিনী।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ শেষ কবিতাটি কোন তারিখে ও কোন সালে রচনা করেন?
উঃ ৩০ জুলাই ১৯৪১ সালে।
🔴 বাঙলা সাহিত্যের একজন কবির একটি কবিতা বিষয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তাকে বলেছিলেন—"আমি মুগ্ধ হয়েছি তােমার কবিতা শুনে। তুমি যে বিশ্ববিখ্যাত কবি হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।” কার কবিতা? কবিতাটির নাম কি?
উঃ কাজী নজরুল ইসলাম। কবিতাটির নাম "বিদ্রোহী'।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের সঞ্চয়িতা প্রথম সংকলিত হয় কত সালে?
উঃ ১৩৩৮ বঙ্গাব্দে।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ‘গােরা' উপন্যাসের প্রকাশকাল কোন সালে?
উঃ ১৯১০ সালে।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ‘ডাকঘর নাটকটির প্রকাশকাল কোন সালে?
উঃ ১৯২৯ সালে।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের “বাল্মীকি প্রতিভা"-র প্রকাশিত হয় কত সালে?
উঃ ১৮৮১ সালে।
🔴 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তাঁর কোন কাব্য গ্রন্থটির নামকরণ করে যেতে পারেন নি? কবে, কে, কী নামকরণ করেন?
উঃ শেষ লেখা। এই নামকরণ কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথ করেন।
🔴 কত সালে বিশ্বকবি মহাজাতি সদনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন?
উঃ ১৯৪০ সালে।
🔴 কবি গুরু রবীন্দ্রনাথের কত সালে তিরােভাব ঘটে?
উঃ ইংরেজি ১৯৪১ সালে (বাংলা ১৩৪৮ সালের ২২ শ্রাবণ)।
----------------------------


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা :

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা :
সবুজের অভিযান

ওরে নবীন, ওরে আমার কাঁচা
ওরে সবুজ, ওরে অবুঝ
আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা 
রক্ত আলাের মদে মাতাল ভােরে
আজকে যে যা বলে বলুক তােরে
সকল তর্ক হেলায় তুচ্ছ করে
পুচ্ছটি তাের উচ্চে তুলে নাচা
আয় দুরন্ত, আয় রে আমার কাঁচা।

খাঁচাখানা দুলছে মৃদু হওয়ায় 
আর তাে কিছুই নড়ে না রে
ওদের ঘরে, ওদের ঘরের দাওয়ায়
ওই যে প্রবীণ, ওই যে পরম পাকা
চক্ষু কর্ণ দুইটি ডানায় ঢাকা
ঝিমায় যেন চিত্রপটে আঁকা
অন্ধকারে বন্ধ করা খাচায়
আয় জীবন্ত, আয় রে আমার কাঁচা

বাহিরপানে তাকায় না যে কেউ
দেখে না যে বান ডেকেছে
জোয়ার-জলে উঠছে প্রবল ঢেউ
চলতে ওরা চায় না মাটির ছেলে
মাটির পরে চরণ ফেলে ফেলে,
আছে অচল আসনখানা মেলে
যে যার আপন উচ্চ বাঁশের মাচায়
আয় অশান্ত, আয় রে আমার কাঁচা

তােরে হেথায় করবে সবাই মানা
হঠাৎ আলাে দেখবে যখন
ভাববে, এ কী বিষম কান্ডখানা
সংঘাতে তাের উঠবে ওরা রেগে
শয়ন ছেড়ে আসবে ছুটে বেগে
সেই সুযােগে ঘুমের থেকে জেগে
লাগবে লড়াই মিথ্যা এবং সাঁচায়
আয় প্রচণ্ড, আয় রে আমার কাঁচা

শিকল-দেবীর ওই যে পূজাবেদি
চিরকাল কি রইবে খাড়া
পাগলামি, তুই আয় রে দুয়ার ভেদি
ঝড়ের মাতন, বিজয়-কেতন নেড়ে
অট্টহাস্যে আকাশখানা ফেড়ে
ভােলানাথের ঝােলাঝুলি ঝেড়ে
ভুলগুলাে সব আন রে বাছা বাছা
আয় প্রমত্ত, আয় রে আমার কাঁচা

আন্ রে টেনে বাঁধা-পথের শেষে
বিবাগী কর অবাধপানে
পথ কেটে যাই অজানাদের দেশে
আপদ আছে জানি আঘাত আছে
তাই জেনে তো বক্ষে পরান নাচে
ঘুচিয়ে দে ভাই পুঁথি-পােড়াের কাছে
পথে চলার বিধিবিধান যাচা
আয় প্রমুক্ত আয় রে আমার কাঁচা

চিরযুবা তুই যে চিরজীবী
জীর্ণ জরা ঝরিয়ে দিয়ে
প্রাণ অফুরান ছড়িয়ে দেদার দিবি
সবুজ নেশায় ভাের করেছিস ধরা
ঝড়ের মেঘে তােরই তড়িৎ ভরা
বসন্তের পরাস আকুল করা
আপন গলার বকুল-মাল্যগাছা
আয় রে অমর, আয় রে আমার কাঁচা


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট নাটক । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাটক : পাপ পুন্য 

     পাপ পুন্য 
 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

পঞ্চকঃ ও কী ও! কান্না শুনি যে! এ নিশ্চয়ই সুভদ্র। আমাদের এই আয়তনে ওর চোখের জল আর শুকোল না। ওর কান্না আমি সইতে পারি নে। বালক সুভদ্রকে লইয়া পঞকের পুনঃপ্রবেশ
পঞ্চকঃ তাের কোনাে ভয় নেই ভাই, কোনাে ভয় নেই। তুই আমার কাছে বল,কী হয়েছে বল।
সুভদ্রঃ আমি পাপ করেছি।
পঞ্চকঃ পাপ করেছিস? কী পাপ।
সুভদ্রঃ সে আমি বলতে পারব না! ভয়ানক পাপ! আমার কী হবে?
পঞ্চকঃ তাের সব পাপ আমি কেড়ে নেব, তুই বল।
সুভদ্রঃ আমি আমাদের আয়তনের উত্তর দিকের
পঞ্চকঃ উত্তর দিকের?
সুভদ্রঃ হাঁ, উত্তর দিকের জানলা খুলে
পঞ্চকঃ জানলা খুলে কী করলি?
সুভদ্রঃ বাইরেটা দেখে ফেলেছি।
পঞ্চকঃ দেখে ফেলেছিস? শুনে লােভ হচ্ছে যে!
সুভদ্রঃ হাঁ পকদাদা। কিন্তু বেশিক্ষণ না একবার দেখেই তখনই বন্ধ করে ফেলেছি। কোন প্রায়শ্চিত্ত করলে আমার পাপ যাবে?
পঞ্চকঃ ভুলে গেছি ভাই। প্রায়শ্চিত্ত বিশ-পঁচিশ হাজার রকম আছে। আমি যদি এই আয়তনে না আসতুম তা হলে তার বারাে আনাই কেবল পুঁথিতে লেখা থাকত, আমি আসার পর প্রায় তার সবকটাই ব্যবহারে লাগাতে পেরেছি, কিন্তু মনে রাখতে পারি নি।
                                                                                             বালকদলের প্রবেশ ...

প্রথম বালকঃ অ সুভদ্র! তুমি বুঝি এখানে?
দ্বিতীয় বালকঃ জানাে পঞ্চক দাদা, সুভদ্র কী ভয়ানক পাপ করেছে।
পঞ্চকঃ চুপ চুপ! ভয় নেই সুভদ্র। কাদছিস কেন ভাই? প্রায়শ্চিত্ত করতে হয় তাে করবি। প্রায়শ্চিত্ত করতে ভারি মজা। এখানে রােজই একঘেয়ে রকমের দিন কাটে, প্রায়শ্চিত্ত না থাকলে তাে মানুষ টিকতেই পারত না।
প্রথম বালকঃ (চুপি চুপি) জানাে পঞ্চক দাদা, সুভদ্র উত্তর দিকের জানলা—
পঞ্চকঃ  আচ্ছা আচ্ছা, সুভদ্রের মতাে তােদের অমন সাহস আছে?
দ্বিতীয় বালকঃ আমাদের আয়তনের উত্তর দিকটা যে একজটা দেবীর।
তৃতীয় বালকঃ সে দিক থেকে আমাদের আয়তনে যদি একটুও হাওয়া ঢোকে তা হলে যে সে-
পঞ্চকঃ তা হলে কী?
তৃতীয় বালকঃ সে যে ভয়ানক ?
পঞ্চকঃ কী ভয়ানক, শুনিই না।
তৃতীয় বালকঃ জানি নে, কিন্তু সে ভয়ানক।
সুভদ্রঃ পঞ্চক দাদা, আমি আর কখনও খুলব না পঞ্চক দাদা। আমার কী হবে?
পঞ্চকঃ শােন বলি সুভদ্র, কিসে কী হয় আমি ভাই কিছুই জানি নে। কিন্তু যাই হােক-না, আমি তাতে একটুও ভয় করি নে।
সুভদ্রঃ ভয় কর না? সকল ছেলে। ভয় কর না?
পঞ্চকঃ না। আমি তাে বলি, দেখিই না কী হয়।। সকলে (কাছে ঘেঁষিয়া) আচ্ছা দাদা, তুমি বুঝি অনেক দেখেছ?
পঞ্চকঃ দেখেছি বই কি। ও মাসে শনিবারে যেদিন মহাময়ুরী দেবীর পূজা পড়ল সেদিন আমি কাঁসার থালায় ইদুরের গর্তের মাটি রেখে তার উপর পাঁচটা শেয়ালকাটার পাতা আর তিনটে মাষকলাই সাজিয়ে নিজে আঠারাে বার ফুঁ দিয়েছি। সকলে। আঁ! কী ভয়ানক! আঠারাে বার!
সুভদ্রঃ পঞ্চক দাদা, তােমার কী হল?
পঞ্চকঃ তিনদিনের দিনে যে সাপটা এসে আমাকে নিশ্চয় কামড়াবে কথা ছিল। সে আজ পর্যন্ত আমাকে খুঁজে বের করতে পারে নি।
প্রথম বালকঃ কিন্তু ভয়ানক পাপ করেছ তুমি।।
দ্বিতীয় বালকঃ মহাময়ূরী দেবী ভয়ানক রাগ করেছেন।
পঞ্চকঃ তার রাগটা কীরকম সেইটে দেখবার জন্যেই তাে এ কাজ করেছি।
সুভদ্রঃ কিন্তু পঞ্চকদাদা, যদি তােমাকে সাপে কামড়াত।
পঞ্চকঃ তা হলে এ সম্বন্ধে মাথা থেকে পা পর্যন্ত কোথাও কোনাে সন্দেহ থাকত না।
প্রথম বালকঃ  কিন্তু পঞ্চকদাদা, আমাদের উত্তর দিকের জানলাটা—
পঞ্চকঃ সেটাও আমাকে একবার খুলে দেখতে হবে স্থির করেছি।
সুভদ্রঃ তুমিও খুলে দেখবে?
পঞ্চকঃ হাঁ ভাই সুভদ্র, তা হলে তুই তাের দলের একজন পাবি।।
প্রথম বালকঃ  না পঞ্চকদাদা, পায়ে পড়ি পঞ্চকদাদা, তুমি
পঞ্চকঃ কেন রে, তােদের তাতে ভয় কী।
দ্বিতীয় বালকঃ  সে যে ভয়ানক!
পঞ্চকঃ ভয়ানক না হলে মজা কিসের?
তৃতীয় বালকঃ সে যে ভয়ানক পাপ।।
প্রথম বালকঃ মহা পঞ্চকদাদা আমাদের বলে দিয়েছেন, ওতে মাতৃহত্যার পাপ হয়; কেন না উত্তর দিকটা যে একজটা দেবীর।
পঞ্চকঃ মাতৃহত্যা করলুম না অথচ মাতৃহত্যার পাপটা করলুম, সেই মজাটা কিরকম দেখতে আমার ভয়ানক কৌতূহল।
প্রথম বালকঃ তোমার ভয় করবে না ?
পঞ্চকঃ কিছু না ভাই সুভদ্র, তুই কী দেখলি বল দেখি।
দ্বিতীয় বালকঃ না, না, বলিস নে।।
তৃতীয় বালকঃ না, সে আমরা শুনতে পারব না— কী ভয়ানক!
প্রথম বালকঃ আচ্ছা, একটু, খুব একটুখানি বল ভাই।
সুভদ্রঃ আমি দেখলুম— সেখানে পাহাড়, গােরু চরছে— বালকগণ (কানে আঙুল দিয়া) ও বাবা! না না, আর শুনব না আর বােলােনা  সুভদ্র ওই যে উপাধ্যায়মশায় আসছেন। চল চল— আর না।
পঞ্চকঃ কেন! এখন তােমাদের কী।।
প্রথম বালকঃ বেশ, তাও জানাে না বুঝি। আজ যে পূর্বফাল্গুনী নক্ষত্র
পঞ্চকঃ তাতে কী।
দ্বিতীয় বালকঃ আজ কাকিনী সরােবরের নৈঋত কোণে ঢোঁড়াসাপের খােলস খুঁজতে হবে না?
পঞ্চকঃ কেন রে?
প্রথম বালকঃ তুমি কিছু জানাে না পঞ্চকদাদা! সেই খােলস কালাে রঙের ঘােড়ার লেজের সাতগাছি চুল দিয়ে বেঁধে পুড়িয়ে ধোঁয়া করতে হবে যে।
দ্বিতীয় বালকঃ আজ যে পিতৃপুরুষেরা সেই ধোঁয়া ঘ্রাণ করতে আসবেন।
পঞ্চকঃ তাতে তাদের কষ্ট হবে না?
প্রথম বালকঃ পুণ্য হবে যে, ভয়ানক পুণ্য।   ☞ [বালকগণের প্রস্থান]

☞ উপাধ্যায়ের প্রবেশ ...

উপাধ্যায়ঃ পঞ্চককে শিশুদের দলেই প্রায় দেখতে পাই।
পঞ্চকঃ এই আয়তনে ওদের সঙ্গেই আমার বুদ্ধির একটু মিল হয়। ওরা একটু বড়াে হলেই আর তখন— 
উপাধ্যায়ঃ কিন্তু তােমার সংসর্গে যে ওরা অসংযত হয়ে উঠছে। সেদিন পটুবর্ম  আমার কাছে এসে নালিশ করেছে, শুক্রবারের প্রথম প্রহরেই উপতিষ্য তার গায়ের উপর হাই তুলে দিয়েছে।
পঞ্চকঃ তা দিয়েছে বটে। আমি স্বয়ং সেখানে উপস্থিত ছিলুম।
উপাধ্যায়ঃ সে আমি অনুমানেই বুঝেছি, নইলে এতবড়াে আয়ুক্ষয়কর আনয়মটা ঘটবে কেন। শুনেছি, তুমি নাকি সকলের সাহস বাড়িয়ে দেবার জন্য পটুবর্মকে ডেকে তােমার গায়ের উপর একশাে বার হাই তুলতে বলেছিলে?
পঞ্চকঃ আপনি ভুল শুনেছেন।
উপাধ্যায়ঃ ভুল শুনেছি ?
পঞ্চকঃ একলা পটুবর্মকে নয়, সেখানে যত ছেলে ছিল প্রত্যেককেই আমার গায়ের উপর অন্তত দশটা করে হাই তুলে যাবার জন্যে ডেকেছিলুম পক্ষপাত করি নি।
উপাধ্যায়ঃ প্রত্যেককেই ডেকেছিলে ?
পঞ্চকঃ প্রত্যেককেই। আপনি বরঞ্চ জিজ্ঞাসা করে জানবেন। কেউ সাহস করে এগােল না। তারা হিসেব করে দেখলে, পনেরাে জন ছেলেতে মিলে দেড়শাে হাই তুললে তাতে আমার সমস্ত আয়ু ক্ষয় হয়ে গিয়েও আরও অনেকটা বাকি থাকে, সেই উদবৃত্তটাকে নিয়ে যে কী হবে তাই স্থির করতে না পেরে তারা মহাপঞ্চক দাদাকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে গেল, তাতেই তাে আমি ধরা পড়ে গেছি।
উপাধ্যায়ঃ দেখাে, তুমি মহাপঞকের ভাই বলে এতদিন অনেক সহ্য করেছি, কিন্তু আর চলবে না। আমাদের গুরু আসছেন শুনেছ?
পঞ্চকঃ গুরু আসছেন? নিশ্চয় সংবাদ পেয়েছেন?
উপাধ্যায়ঃ হাঁ। কিন্তু এতে তােমার উৎসাহের তাে কোনাে কারণ নেই।
পঞ্চকঃ আমারই তাে গুরুর দরকার বেশি, আমার যে কিছুই শেখা হয় নি।
                                                                                                         সুভদ্রের প্রবেশ ....

সুভদ্রঃ উপাধ্যায়মশায় ?
পঞ্চকঃ আরে, পালা পালা। উপাধ্যায়মশায়ের কাছ থেকে একটু পরমার্থতত্ত্ব শুনছি, এখন বিরক্ত করিস নে, একেবারে দৌড়ে পালা।।
উপাধ্যায়ঃ কী সুভদ্র, তােমার বক্তব্য কী শীঘ্র বলে যাও।
সুভদ্রঃ আমি ভয়ানক পাপ করেছি।
পঞ্চকঃ ভারি পণ্ডিত কিনা! পাপ করেছি! পালা বলছি।।
উপাধ্যায়ঃ (উৎসাহিত হইয়া) ওকে তাড়া দিচ্ছ কেন। সুভদ্র, শুনে যাও।
পঞ্চকঃ আর রক্ষা নেই, পাপের একটুকু গন্ধ পেলে একেবারে মাছির মতাে ছােটে।।
উপাধ্যায়ঃ কী বলছিলে ?
সুভদ্রঃ আমি পাপ করেছি।
উপাধ্যায়ঃ পাপ করেছ? আচ্ছা বেশ। তা হলে বােসাে। শােনা যাক।
সুভদ্রঃ আমি আয়তনের উত্তর দিকের— 
উপাধ্যায়ঃ বলাে, বলাে, উত্তর দিকের দেওয়ালে আঁক কেটেছ?
সুভদ্রঃ না, আমি উত্তর দিকের জানলায়— 
উপাধ্যায়ঃ বুঝেছি, কনুই ঠেকিয়েছ। তা হলে তাে সেদিকে আমাদের যতগুলি যজ্ঞের পাত্র আছে সমস্তই ফেলা যাবে। সাত মাসের বাছুরকে দিয়ে ওই জানলা না চাটাতে পারলে শােধন হবে না।
পঞ্চকঃ এটা আপনি ভুল বলছেন। ক্ৰিয়াসংগ্রহে আছে ভূমিকুম্মাণ্ডের বোঁটা দিয়ে একবার-
উপাধ্যায়ঃ  তােমার তাে স্পর্ধা কম দেখি নে। কুলদত্তের ক্রিয়াসংগ্রহের অষ্টাদশ অধ্যায়টি কি কোনােদিন খুলে দেখা হয়েছে?
পঞ্চকঃ (জনান্তিকে) সুভদ্র, যাও তুমি। কিন্তু কুলদত্তকে তাে আমি— 
উপাধ্যায়ঃ কুলদত্তকে মান না? আচ্ছা, ভরদ্বাজ মিশ্রের প্রয়ােগপ্রজ্ঞপ্তি তাে মানতেই হবে— তাতে
সুভদ্রঃ উপাধ্যায়মশায়, আমি ভয়ানক পাপ করেছি।
পঞ্চকঃ  আবার ! সেই কথাই তাে হচ্ছে। তুই চুপ কর।
উপাধ্যায়ঃ সুভদ্র, উত্তরের দেয়ালে যে আঁক কেটেছ সে চতুষ্কোণ, না গােলাকার ?
সুভদ্রঃ আঁক কাটি নি। আমি জানলা খুলে বাইরে চেয়েছিলুম।
উপাধ্যায়ঃ (বসিয়া পড়িয়া) আঃ সর্বনাশ। করেছিস কী। আজ তিনশাে পঁয়তাল্লিশ বছর ওই জানলা কেউ খােলে নি তা জানিস?
সুভদ্রঃ আমার কী হবে।
পঞ্চকঃ  (সুভদ্রকে আলিঙ্গন করিয়া) তােমার জয়জয়কার হবে সুভদ্র। তিনশাে পঁয়তাল্লিশ বছরের আগল তুমি ঘুচিয়েছ। তােমার এই অসামান্য সাহস দেখে উপাধ্যায়মশায়ের মুখে আর কথা নেই।
                                                                                 ☞  [সুভদ্রকে টানিয়া লইয়া প্রস্থান

উপাধ্যায়ঃ জানি নে কী সর্বনাশ হবে। উত্তরের অধিষ্ঠাত্রী যে একজটা দেবী। বালকের দুই চক্ষু মুহূর্তেই পাথর হয়ে গেল না কেন তাই ভাবছি। যাই, আচার্যদেবকে জানাই গে।
                                                                                                          ☞  [প্রস্থান

☟☟☟ ❝ আরো পড়ুনঃ মাস্টারদা সূর্যসেন 


মাস্টারদা সূর্যসেন জি.কে । জেনারেল নলেজ। কুইজঃ
মাস্টারদা সূর্যসেন জি.কে । জেনারেল নলেজ। কুইজঃ 

🔴 সূর্য সেনের জন্ম কত সালে?
উঃ ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ। সূর্য সেনের সঠিক জন্ম তারিখ সম্বন্ধে কিছুটা বিভ্রান্তি রয়েছে। অনেকে বলেন ১৮৯৩ সালের ২৫ অক্টোবর, আবার কারও মতে ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ। তবে বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ রমেশচন্দ্র মজুমদার দ্বিতীয় তারিখটি সমর্থন করেছেন।
🔴 সূর্য সেনের পিতা ও মাতার নাম কী?
উঃ পিতার নাম রাজমণি সেন ও মাতার নাম শশিবালা দেবী।
🔴 সূর্য সেন কত বছর বয়সে পিতৃহারা হন?
উঃ মাত্র পাঁচ বছর বয়সে।
🔴 পিতৃবিয়ােগ হবার পর তিনি কার তত্ত্বাবধানে বড় হয়ে ওঠেন?
উঃ তার কাকার তত্ত্বাবধানে।
🔴 তার কাকার নাম কী?
উঃ গৌরমণি সেন।
🔴 সূর্য সেন কোন বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন?
উঃ গ্রামেরই দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে।
🔴 তিনি কত সালে কোন স্কুল থেকে এন্ট্রাস পাস করেন?
উঃ ১৯১২ সালে হরিশ দত্তের জাতীয় স্কুল থেকে।
🔴 তার কলেজ জীবন শুরু হয় কোন কলেজে?
উঃ চট্টগ্রাম কলেজে।
🔴 এই কলেজে তার অধ্যয়নকালে একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে ঘটনাটি কী?
উঃ ১৯১৪ সালে কলেজের বার্ষিক পরীক্ষায় নকল করার অভিযােগে তাকে কলেজ থেকে বিতাড়িত করা হয়।
🔴 সত্যিই কি তিনি নকল করেছিলেন?
উঃ না। পরীক্ষক তাকে সন্দেহবশত নকল করার অভিযােগে অভিযুক্ত করেন।
🔴 সূর্য সেন শেষপর্যন্ত কোন কলেজ থেকে বি.এ. পাস করেন?
উঃ ১৯১৭ সালে বহরমপুর কলেজ থেকে।
🔴 বহরমপুর কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কাদের সংস্পর্শে আসেন?
উঃ গুপ্ত বিপ্লবী আন্দোলনের কর্মীদের সংস্পর্শে।
🔴 সূর্য সেন কোন বিদ্যালয়ে পাঠকালে বিপ্লবী মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছিলেন?
উঃ নােয়াপাড়া জাতীয় বিদ্যালয়ে।
🔴 সূর্য সেনকে বিপ্লবী মন্ত্রে দীক্ষিত করেছিলেন কে?
উঃ নােয়াপাড়া জাতীয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেমেন্দ্রলাল মুখােটি।
🔴 হেমেন্দ্রলাল মুখােটি কোন্ মামলার আসামী ছিলেন?
উঃ বরিশাল ষড়যন্ত্র মামলার পলাতক আসামী।
🔴 হেমেন্দ্রলাল নােয়াপাড়া জাতীয় বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার আগে কোন বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন?
উঃ দুর্গাপুর হাই স্কুলে।
🔴 কার সংস্পর্শে সূর্য সেন বিপ্লবী ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হন?
উঃ বিশিষ্ট বিপ্লবী নেতা সতীশ চক্রবর্তী।
🔴 বিপ্লবী নেতা সতীশ চক্রবর্তীর পরিচয় কী?
উঃ বহরমপুর কলেজের অধ্যাপক।
🔴 সূর্য সেন কলেজের পাঠ সাঙ্গ করে কোন পেশার সঙ্গে যুক্ত হন?
উঃ শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত হন।
🔴 তিনি প্রথম কোন বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদে যােগদান করেন?
উঃ উমাতারা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে।
🔴 তিনি কোন বিষয়ে শিক্ষকতা করতেন?
উঃ অঙ্ক।
🔴 বিদ্যালয়ে তিনি ছাত্রদের অঙ্ক শেখানাের পাশাপাশি আর কী শেখাতেন?
উঃ স্বদেশীকতা।
🔴 ছাত্র তৈরি করার পাশাপাশি সূর্য সেন আর কী করতেন?
উঃ সমাজসেবা।
🔴 এই সমাজ সেবার উদ্দেশে ছাত্রদের নিয়ে তিনি একটি আশ্রম গড়ে তােলেন; আশ্রমটির নাম কী?
উঃ সাম্য আশ্রম।
🔴 এই আশ্রমের উদ্দেশ কী?
উঃ সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের সাহায্য করা ও দুগর্তদের সেবা করা।
🔴 সাম্য আশ্রম গড়ে তােলার সময় সূর্য সেন অনুগামী হিসেবে কোন কোন দেশপ্রেমিককে পেয়ে ছিলেন?
উঃ অম্বিকা চক্রবর্তী, চারুবিকাশ দত্ত, গিরিজাশঙ্কর, রাজেন দাস, অনন্ত সিংহ, নির্মল সেন, রাখাল দে, সুখেন্দু দত্ত, যতীন রক্ষিত প্রমুখদের।
🔴 সূর্য সেন কোন সালে চট্টগ্রামে একটি গুপ্ত বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তােলেন?
উঃ ১৯১৭ সালে।
🔴 তার এই সংগঠন কোন কোন গুপ্ত বিপ্লবী সংগঠনের আদর্শে গড়ে তােলা হয়?
উঃ যুগান্তর এবং অনুশীলন সমিতির আদর্শে গড়ে তােলা হয়।
🔴 সূর্য সেনের এই গুপ্ত বিপ্লবী সংগঠনের বিপ্লবী কমিটিতে কারা কারা ছিলেন?
উঃ অনুরূপ সেন, নগেন সেন, চারুবিকাশ দত্ত, অম্বিকা চক্রবর্তী ও সূর্য সেন।
🔴 ১৯১৮ সালে এই দলের সঙ্গে আর কোন কোন সদস্য যুক্ত হন?
উঃ উপেন ভট্টাচার্য, নির্মল সেন, প্রমােদ চৌধুরী, আশরাফ উদ্দিন, নন্দলাল সিং ও তাঁর ছােটভাই অনন্তলাল সিং।


🔴 পরে অনন্তলাল সিং দলের সঙ্গে আর কাকে যুক্ত করেন?
উঃ গণেশ ঘােষকে।
🔴 সূর্য সেনের স্ত্রীর নাম কী?
উঃ পুষ্পকুলা দেবী।
🔴 সূর্য সেনের গড়া তরুণ বিপ্লবীরা কোথায় হানা দিয়ে সংগ্রহ করলেন ১৭ হাজার টাকা?
উঃ অসম-বাংলা রেলওয়ে কোম্পানির অফিসে।
🔴 ১৯২৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর নাগরখানার যুদ্ধে সূর্য সেনের সঙ্গে আর কে ধরা পড়েন?
উঃ অম্বিকা চক্রবর্তী।
🔴 কত সালে সূর্য সেন চট্টগ্রাম কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন?
উঃ ১৯২৬ সালে।
🔴 সূর্য সেন তরুণ বিপ্লবী যােদ্ধাদের নিয়ে একটি সংগঠন গড়ে তােলেন; সংগঠনটির নাম কী?
উঃ ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চট্টগ্রাম শাখা।
🔴 উক্ত সাংগঠনিক দলটি কোন দলের অনুকরণে তৈরি হয়েছিল?
উঃ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রামীদল আইরিশ রিপাবলিকান আর্মির অনুকরণে।
🔴 ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি গড়ে তােলার পেছনে সূর্য সেনের কোন পরিকল্পনা কাজ করছিল?
উঃ চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুঠ করার পরিকল্পনা।
🔴 সূর্য সেনের নেতৃত্বে কবে নাগাদ ব্রিটিশ শাসকের ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন হয়?
উঃ ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল।
🔴 উক্ত দিনটি আরও একটি বিপ্লবের সঙ্গে যুক্ত ছিল; বিপ্লবটি কী?
উঃ আয়ারল্যান্ডের ইস্টার বিদ্রোহ।
🔴 সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম শহর কতক্ষণের জন্য ব্রিটিশ শাসন মুক্ত ছিল?
উঃ ৪৮ ঘণ্টা বা দুদিনের জন্য।
🔴 ব্রিটিশ সৈন্যদের দৃষ্টি থেকে সূর্য সেনকে আড়াল করার জন্য বিপ্লবীরা টানা তিন বছর কী করে ছিলেন?
উঃ গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে ছিলেন।
🔴 ব্রিটিশ সেনারা কত সালে, কোন্ গ্রাম থেকে সূর্য সেনকে গ্রেপ্তার করেন?
উঃ ১৯৩৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি, চট্টগ্রামের গইরালা গ্রাম থেকে।
🔴 কার বিশ্বাসঘাতকতায় ব্রিটিশ সেনারা সূর্য সেনের সন্ধান পেয়েছিলেন?
 উঃ নেত্র সেন নামে তার এক জ্ঞাতি ভাইয়ের।
🔴 সূর্য সেনকে গ্রেপ্তারকারী পুলিশের নাম কী?
উঃ মাখনলাল।
🔴 নেত্র সেন ও মাখললালকে বিপ্লবীরা কী শাস্তি দিয়েছিল?
উঃ গুলি করে হত্যা করেছিল।
🔴 ব্রিটিশ সরকারের আদালত সূর্য সেনকে বিচার করে কোন শাস্তি দিয়েছিল?
উঃ মৃত্যুদণ্ড।
🔴 বীর বিপ্লবী সূর্য সেনের ফাঁসি হয়েছিল কবে?
উঃ ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি।
🔴 ফাঁসির দড়ি গলায় দেবার আগের মুহূর্তে সূর্য সেন দেশবাসীর উদ্দেশে কী বলে যান?
উঃ ❝ আমার মাথার উপর ঝুলছে ফাঁসির দড়ি, মৃত্যু আমার শিয়রে দাঁড়িয়ে আছে। মৃত্যুকে বন্ধুর মতাে আলিঙ্গন করার এই তাে উপযুক্ত সময়। আমার পরাধীন ভাইবােন তােমাদের সবার উদ্দেশে বলছি, আমার বৈচিত্র্যহীন (কারাগারের) জীবনের একঘেয়েমিকে তােমরা ভেঙে দাও, আমাকে উৎসাহ দাও। এই আনন্দময়, পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমি তােমাদের জন্য কী রেখে গেলাম, শুধু একটি মাত্র জিনিস, তা হল আমার স্বপ্ন। একটি সােনালি স্বপ্ন। এক শুভ মুহূর্তে আমি প্রথমে স্বপ্ন দেখেছিলাম। উৎসাহে সারা জীবন তার পেছনেউন্মত্তের মতাে ছুটেছিলাম। জানি না, এই স্বপ্নকে কতটুকু সফল করতে
পেরেছি। ....

আমার আসন্ন মৃত্যুর স্পর্শ যদি তােমাদের মনকে এতটুকু স্পর্শ করে, তবে আমার সাধনাকে তােমরা তােমাদের অনুগামীদের মধ্যে ছড়িয়ে দাও। যেমন আমি দিয়েছিলাম তােমাদের মধ্যে। বন্ধুগণ, এগিয়ে চলাে; কখনও পিছিয়ে যেও না। দাসত্বের দিন চলে যাচ্ছে স্বাধীনতার লগ্ন আগত। ওঠো। জাগাে। জয় আমাদের সুনিশ্চিত।❞



Related Tags, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্প,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মজার গল্প,রবীন্দ্রনাথ,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প,,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের গল্প,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনাবলী,কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্প,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর উপন্যাস,পাঠ শিরোনামঃ সুভা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্প,রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনের গোপন প্রেমের গল্প

Type Here ....

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন