M.A 1st Semester History Note in Bengali || U.G.B
Paper Name - (INTERNATIONAL RELATION)
Paper Code - Hist/C/102Q. Discuss the role UNO mentoring place security in the world?
口 সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল লীগ অব নেশনস এর ব্যর্থতার পর এবং 1947 সাল থেকেই ঠান্ডা লড়াই শুরু হলে নিরাপত্তা পরিষদ যাতে বিবাদী বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারে এ কারণে রাশিয়া বারংবার ভোট প্রদান করে।রাশিয়া চীনের কমিউনিস্ট সরকারকে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পদ প্রদানের প্রস্তাব দিলে মার্কিন ভোটের ফলে এই প্রস্তাবনা নাকচ হয়ে পড়ে এবং এর প্রতিবাদে রাশিয়া UNO সকল সভা ও কমিটি বর্জন করে তার পাশাপাশি সদস্য পদ ত্যাগ করেন।
কোরিয়ার যুদ্ধে জাতিপুঞ্জো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল। এই যুদ্ধের ফলে জাতিপুঞ্জের চাপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনা দল ও ভারতে একটি মেডিকেল মিশন পাঠাতে বাধ্য হয়। কোরিয়ার যুদ্ধ অবসানের জন্য UNO 1950 সালে UniTetor Place প্রস্তাব পাস করে। জাতিপুঞ্জের ভূমিকা UNO এর মর্যাদা বৃদ্ধি করেছিল। কিন্তু ভিয়েতনাম যুদ্ধে জাতিপুঞ্জো একের দর্শকের ভূমিকা গ্রহণ করে এবং তারা আপস নীতির উপর জোর প্রদান করেছিলেন ঠিক এই সময় UNO এক সংকটময় পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল।
1960 খ্রিস্টাব্দে সুয়েজ সংকটের সময় ব্রিটেন ও ফ্রান্স মিলে মিশর আক্রমণের প্রস্তুত হয়। 1950 সালে পাস হওয়া UniTetor Place প্রস্তাব অনুযায়ী সুয়েজ সমস্যা UNO র সাধারণ সভার নজরে আনা হয়। সাধারণ সভায় তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো মিশর আক্রমনকে তীব্র ভাষায় নিন্দা করে। আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে ইজরায়েল, ব্রিটেন ও ফ্রান্সমিশর ত্যাগ করে।সুয়েজ সংকট এ UNO মর্যাদা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে কঙ্গোর গৃহযুদ্ধ থামাতে ও UNO চরম ভূমিকা গ্রহণ করেছিল।
1956 খ্রিস্টাব্দে হাঙ্গেরির জাতীয় কমিউনিস্টরা আধিপত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী UNO এর সহায়তা চান । কিন্তু সাধারণ সভায় UNO রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উপস্থাপন করে এবং UnCharter অমান্য করার জন্য ধিক্কার জ্ঞাপন করা ছাড়া আর কোনো কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে পারেনি। এবং পরবর্তীতে হাঙ্গেরির ঘটনায় UNO র মর্যাদা হানি ঘটে। তবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করাই ছিল সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের প্রধান উদ্দেশ্য। কিন্তু ঠান্ডা লড়াই চলাকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরোধের ফলে রাষ্ট্রসঙ্ঘের যৌথ নিরাপত্তা নীতি ব্যাহত হয়। ঠান্ডা যুদ্ধ চলাকালীন দুই বৃহৎ শক্তি কে অগ্রাহ্য করে জাতিপুঞ্জ এককভাবে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। জাতিপুঞ্জো স্থাপনের কাজে পর্যবেক্ষণকারী প্রতিনিধি দল অথবা সশস্ত্র শান্তিরক্ষা বাহিনী প্রেরণ করে থাকে। কিন্তু 1949 খ্রিস্টাব্দে কাশ্মীরের বিবাদমান ভারত ও পাকিস্তানকে সংযত করার লক্ষ্যে পর্যবেক্ষণ গোষ্ঠী মোতায়েন করা হয়েছিল। 1958 খ্রিস্টাব্দের লেবানন, 1963 খ্রিস্টাব্দে ইয়েমেন, 1988 খ্রিস্টাব্দে পাক-আফগান সীমান্তে এবং ইরান ইরাক যুদ্ধে, 1989 খ্রিস্টাব্দে অ্যাঙ্গলো ও নামিবিয়ায় জাতিপুঞ্জের পর্যবেক্ষক দল প্রেরিত হয়েছিল। 1992 খ্রিস্টাব্দে রোমানিয়া, যুগোস্লাভিয়া এবং 1992 খ্রিস্টাব্দে কম্বোডিয়ায় জাতিপুঞ্জের বাহিনী প্রেরিত হয়েছিল।
শান্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে জাতিপুঞ্জের শান্তিরক্ষা বাহিনীর ব্যর্থতা চোখে পড়ে বিগত শতাব্দীর শেষ দিকে সোমালিয়ায় গৃহযুদ্ধ কে দমন করতে জাতিপুঞ্জ ব্যর্থ হয়েছিল। এবং জাতিপুঞ্জ ব্যাপক পরিমাণে অর্থনৈতিক, কারিগরি ও পরামর্শ গত সাহায্য প্রদানের মাধ্যমে নানা ধরনের উন্নয়ন প্রকল্পে (United Nations Development Program - UNDP) প্রতিবছর যেভাবে লক্ষ লক্ষ ডলার ব্যয় করে তাতে বিশ্বের অনেক দেশ বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলো যথেষ্ট উপকৃত হয়েছে। জাতিপুঞ্জ সাম্রাজ্যবাদ ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে এবং বর্ণবৈষম্যবাদ এর অবসান ঘটানোর জন্য Apartheid এর বিরুদ্ধে জাতিপুঞ্জ সংগ্রাম চালিয়ে ছিল। এই উদ্দেশ্যে UNO 1973 খ্রিস্টাব্দে ICSPCA নামে একটি শাখা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিল । ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসবাদের মোকাবেলায় জাতিপুঞ্জ তৎপরতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
একাবিংশ শতাব্দীতেও রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে বৈষম্য দূর করতে এবং দুর্বল রাষ্ট্র গুলির উপর অন্যায় হস্তক্ষেপ জাতিপুঞ্জো বন্ধ করতে পারেনি। জাতিপুঞ্জ কে সামনে রেখে আমেরিকা বিশ্বজুড়ে তার আধিপত্য স্থাপন করতে আগ্রাসী ভূমিকা গ্রহণ করে এবং জাতিপুঞ্জের আর্থিক অভাব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি নির্ভরশীল করে তুলেছে। জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র গুলির মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা সংহতি ও সমন্বয়ের অভাব থাকার কারণে জাতিপুঞ্জ কে অনেকটা দুর্বল করে তুলেছিল।
[i] Traditional View :- রক্ষণশীল ভাষ্য ঐতিহাসিকদের মতবাদ ঠান্ডা লড়াই মূলত সমাজতন্ত্রবাদ ও গণতন্ত্র বাদের আদর্শের দ্বন্দ্ব বলে মনে করা হয়। তবে ঠান্ডা লড়াই এর জন্য কার্যত ভাবে সোভিয়েত রাশিয়ায় দায়ী ছিলেন। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে নাৎসিদের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত পোল্যান্ড ,চেকোস্লাভিয়া, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, পূর্ব জার্মানি ইত্যাদির রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে দেয়নি। এই গোষ্ঠীর ঐতিহাসিকদের মতবাদ এর ফলে দেখা যায় পূর্ব ইউরোপের ব্যাপারে স্থানীয় মনোভাব গ্রহণ করার ফলেও পশ্চিমে শক্তিগুলির মধ্যে সোভিয়েত রাশিয়ার সম্পর্কে এক সন্দেহ, ভিত্তি, আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। এর ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়ার সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যায় এবং ঠান্ডা লড়াই অনিবার্য হয়ে পড়ে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনে সোভিয়েত ইউনিয়নের আচার আচরণ সম্পর্কে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। একনায়কতন্ত্র ও সাম্যবাদী রাষ্ট্র রূপে সোভিয়েত রাশিয়ার সম্প্রসারণশীল দৃষ্টিভঙ্গি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সংকুচিত করে তোলে এবং মার্কিন সচিব জেমস করেস্টাল 1945 সালের জুন মাসে তার ডায়রিতে লিখেছেন সাম্যবাদী সোভিয়েত রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতির গণতান্ত্রিক দেশ গুলির মুক্তপথ পররাষ্ট্রনীতির চেয়ে পৃথক। যার ফলে চার্চিল তার -’The Second World War’ গ্রন্থে এবং জজ কেন্নান এর - ‘American Diplomacy’ গ্রন্থে সোভিয়েত বিস্তার নীতি কে ঠান্ডা লড়াইয়ের উন্মেষের জন্য দায়ী করেছেন।
[ii] Revisionist View :- ঠান্ডা লড়াইয়ের চরিত্র দ্বান্দ্বিক সমস্যা নিয়ে সংশোধনবাদী ব্যাখ্যা বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।পশ্চিমে জোটের সহযোগিতায় পশ্চিম জার্মানিতে প্রতিষ্ঠিত হয় 1949 খ্রিস্টাব্দে আগস্ট মাসে জার্মান প্রজাতান্ত্রিক সরকার (FRG) আর পূর্ব জার্মানিতে রুশ সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয় 1949 খ্রিস্টাব্দে অক্টোবর মাসে জার্মান গণতান্ত্রিক সরকার (GDR) এভাবেই জার্মানির দুই অংশে একদিকে পুঁজিবাদী রাষ্ট্র জোট অন্যদিকে সাম্যবাদী রাষ্ট্র জোটের প্রভাব ঠান্ডা লড়াই এর সৃষ্টি করে।
গাব্রিয়েল ক্লকো Gabriel Kolko তার গ্রন্থে - ‘The politics of war: The world and United states foreign policy’ (1943-45) ঠান্ডা লড়াই এর চরিত্র সম্পর্কে অর্থনৈতিক ব্যাখ্যায় দেখান যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রধান শক্তিতে পরিণত হতে চেয়েছিল। এছাড়াও অধ্যাপক অল্ক বলেন- 1943 খ্রিস্টাব্দের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যের ভিত্তিতে অর্থনীতিকে বেঁধে হাতের মুঠোয় করে নিতে চেয়েছিল। তাই সংশোধন বাদীদের মতে সমগ্র বিশ্বে মার্কিন আধিপত্যবাদের লাগামহীন অগ্রগতি ঠান্ডা লড়াই এর অন্তর্নিহিত কারণ ছিল।
[iii] Realist View :- রক্ষণশীল ও সংশোধনবাদী ঐতিহাসিক পরস্পরবিরোধী ধ্যান-ধারণা কে ব্যাক্ত করেছেন এবং এই দুইয়ের মধ্যবর্তী তে অবস্থান গ্রহণ করেছেন বাস্তববাদী ব্যাখ্যার প্রবক্তাগণ।তারা জাতীয় স্বার্থের সংঘাত এ শক্তির প্রতিদ্বন্দিতায় শক্তিসাম্য নীতির দৃষ্টিকোণ থেকে ঠান্ডা লড়াই এর মধ্যে দুই পক্ষ দায়ী ছিল কিংবা কেউই ছিলনা এমন মন্তব্য উত্থাপিত করেন। যার ফলে অধ্যাপক লুই যে হালে কৌতুক করে লিখেছেন যে -’এ যেন একটি বোতলে বিষাক্ত বিষেয় মাকড়সা আবদ্ধ হয়ে একে অন্যের সঙ্গে লিপ্ত’।
তিনি আরো বলেন যে , ঠান্ডা লড়াই ছিল মূলত ক্ষমতার রাজনীতি ও শক্তিসাম্য থেকে উদ্বুদ্ধ চিরাচরিত ক্ষমতার পুনরাবৃত্তি। তবে সংশোধনবাদী ভাষ্য বিশ্লেষণ করে বলা যায় যে ঠান্ডা লড়াই এর উৎস দুই পরস্পর শক্তির বিরুদ্ধে বিরোধী স্বার্থে যতটা অন্তর্নিহিত বা ঘনিষ্ঠ ছিল তার থেকে বেশি র্নিহিত ছিল তাদের পারস্পরিক ভুল-বোঝাবুঝির উপর। সাম্প্রদায়িক ঐতিহাসিকদের মধ্যে মার্কিন লেখক তথা অধ্যাপক গ্যাডিস দীর্ঘ শান্তির যুগ বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে ছবির নাম মার্কিন জোর কম বেশি দায়ী হলেও অধিকাংশ ইতিহাসবিদ ঠান্ডা লড়াই সৃষ্টির জন্য এই দুই দেশের মতান্তরে ক্ষমতা বিস্তার নীতি কি ব্যাপক ভাবে দায়ী করেছেন এইভাবে সমগ্র বিশ্ব অর্থাৎ পৃথিবী দুটি পরস্পর বিরোধী জোটে বিভক্ত হয়ে পড়ে। কেবলমাত্র ইউরোপে নয় ঠান্ডা লড়াই এর পরিধি কোরিয়া, আরব দুনিয়া, কঙ্গো, ভারতসহ অন্যান্য দেশেও সর্বত্রই সম্প্রসারিত হয়।
কোরিয়ার যুদ্ধে জাতিপুঞ্জো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল। এই যুদ্ধের ফলে জাতিপুঞ্জের চাপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনা দল ও ভারতে একটি মেডিকেল মিশন পাঠাতে বাধ্য হয়। কোরিয়ার যুদ্ধ অবসানের জন্য UNO 1950 সালে UniTetor Place প্রস্তাব পাস করে। জাতিপুঞ্জের ভূমিকা UNO এর মর্যাদা বৃদ্ধি করেছিল। কিন্তু ভিয়েতনাম যুদ্ধে জাতিপুঞ্জো একের দর্শকের ভূমিকা গ্রহণ করে এবং তারা আপস নীতির উপর জোর প্রদান করেছিলেন ঠিক এই সময় UNO এক সংকটময় পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল।
1960 খ্রিস্টাব্দে সুয়েজ সংকটের সময় ব্রিটেন ও ফ্রান্স মিলে মিশর আক্রমণের প্রস্তুত হয়। 1950 সালে পাস হওয়া UniTetor Place প্রস্তাব অনুযায়ী সুয়েজ সমস্যা UNO র সাধারণ সভার নজরে আনা হয়। সাধারণ সভায় তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো মিশর আক্রমনকে তীব্র ভাষায় নিন্দা করে। আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে ইজরায়েল, ব্রিটেন ও ফ্রান্সমিশর ত্যাগ করে।সুয়েজ সংকট এ UNO মর্যাদা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে কঙ্গোর গৃহযুদ্ধ থামাতে ও UNO চরম ভূমিকা গ্রহণ করেছিল।
1956 খ্রিস্টাব্দে হাঙ্গেরির জাতীয় কমিউনিস্টরা আধিপত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী UNO এর সহায়তা চান । কিন্তু সাধারণ সভায় UNO রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উপস্থাপন করে এবং UnCharter অমান্য করার জন্য ধিক্কার জ্ঞাপন করা ছাড়া আর কোনো কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে পারেনি। এবং পরবর্তীতে হাঙ্গেরির ঘটনায় UNO র মর্যাদা হানি ঘটে। তবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করাই ছিল সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের প্রধান উদ্দেশ্য। কিন্তু ঠান্ডা লড়াই চলাকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরোধের ফলে রাষ্ট্রসঙ্ঘের যৌথ নিরাপত্তা নীতি ব্যাহত হয়। ঠান্ডা যুদ্ধ চলাকালীন দুই বৃহৎ শক্তি কে অগ্রাহ্য করে জাতিপুঞ্জ এককভাবে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। জাতিপুঞ্জো স্থাপনের কাজে পর্যবেক্ষণকারী প্রতিনিধি দল অথবা সশস্ত্র শান্তিরক্ষা বাহিনী প্রেরণ করে থাকে। কিন্তু 1949 খ্রিস্টাব্দে কাশ্মীরের বিবাদমান ভারত ও পাকিস্তানকে সংযত করার লক্ষ্যে পর্যবেক্ষণ গোষ্ঠী মোতায়েন করা হয়েছিল। 1958 খ্রিস্টাব্দের লেবানন, 1963 খ্রিস্টাব্দে ইয়েমেন, 1988 খ্রিস্টাব্দে পাক-আফগান সীমান্তে এবং ইরান ইরাক যুদ্ধে, 1989 খ্রিস্টাব্দে অ্যাঙ্গলো ও নামিবিয়ায় জাতিপুঞ্জের পর্যবেক্ষক দল প্রেরিত হয়েছিল। 1992 খ্রিস্টাব্দে রোমানিয়া, যুগোস্লাভিয়া এবং 1992 খ্রিস্টাব্দে কম্বোডিয়ায় জাতিপুঞ্জের বাহিনী প্রেরিত হয়েছিল।
শান্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে জাতিপুঞ্জের শান্তিরক্ষা বাহিনীর ব্যর্থতা চোখে পড়ে বিগত শতাব্দীর শেষ দিকে সোমালিয়ায় গৃহযুদ্ধ কে দমন করতে জাতিপুঞ্জ ব্যর্থ হয়েছিল। এবং জাতিপুঞ্জ ব্যাপক পরিমাণে অর্থনৈতিক, কারিগরি ও পরামর্শ গত সাহায্য প্রদানের মাধ্যমে নানা ধরনের উন্নয়ন প্রকল্পে (United Nations Development Program - UNDP) প্রতিবছর যেভাবে লক্ষ লক্ষ ডলার ব্যয় করে তাতে বিশ্বের অনেক দেশ বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলো যথেষ্ট উপকৃত হয়েছে। জাতিপুঞ্জ সাম্রাজ্যবাদ ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে এবং বর্ণবৈষম্যবাদ এর অবসান ঘটানোর জন্য Apartheid এর বিরুদ্ধে জাতিপুঞ্জ সংগ্রাম চালিয়ে ছিল। এই উদ্দেশ্যে UNO 1973 খ্রিস্টাব্দে ICSPCA নামে একটি শাখা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিল । ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসবাদের মোকাবেলায় জাতিপুঞ্জ তৎপরতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
একাবিংশ শতাব্দীতেও রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে বৈষম্য দূর করতে এবং দুর্বল রাষ্ট্র গুলির উপর অন্যায় হস্তক্ষেপ জাতিপুঞ্জো বন্ধ করতে পারেনি। জাতিপুঞ্জ কে সামনে রেখে আমেরিকা বিশ্বজুড়ে তার আধিপত্য স্থাপন করতে আগ্রাসী ভূমিকা গ্রহণ করে এবং জাতিপুঞ্জের আর্থিক অভাব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি নির্ভরশীল করে তুলেছে। জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র গুলির মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা সংহতি ও সমন্বয়ের অভাব থাকার কারণে জাতিপুঞ্জ কে অনেকটা দুর্বল করে তুলেছিল।
Q. Write a note "Historiography Of Cold War". And Which side is to blame for this war?
口 দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে পুঁজিবাদী আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও সাম্যবাদী সোভিয়েত রাশিয়া যে আদর্শগত সংঘাতে লিপ্ত হয় তা ‘ঠান্ডা লড়াই’ নামে পরিচিত। বিখ্যাত সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টে কয়েকটি ধারাবাহিক প্রবন্ধের মাধ্যমে ‘Cold War’ কথাটি জনপ্রিয় করে তোলেন মার্কিন সাংবাদিক ওয়াল্টার লিপম্যান (Walter Lippman)। অধ্যাপক F.H. Hartmann এর মতে - ‘দুই মহাশক্তির দৃষ্টিভঙ্গি ও তত্ত্বগত পার্থক্য ঠান্ডা লড়াই এর উদ্ভব ঘটায়।’
অনেক ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে এই ঠান্ডা লড়াই সম্পর্কে। ঠান্ডা লড়াই এর প্রধান দুই প্রতিপক্ষ হলো আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের শেষে বিজয়ী মিত্রশক্তি বর্গ পরস্পরবিরোধী দুই রাষ্ট্র জোট এ ভাগ হয়ে যায়। এই রাষ্ট্র জোটের একদিকে থাকে সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি আর অন্য দিকে থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমী ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি। তবে দুই রাষ্ট্র জোটের মধ্যে বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক ও সামরিক আধিপত্য গড়ে তোলার জন্য যে অন্তর্লীন লড়াই শুরু হয় তার ঠান্ডা যুদ্ধ নামে পরিচিত। যাইহোক সোভিয়েত বিদেশ মন্ত্রী (Litvinov) ম্যাক্সিম লিটভিনব এর মধ্যে ঠান্ডা লড়াই ছিল পারস্পরিক বিরোধী আদর্শগত সংঘাত থেকেই সৃষ্ট এক দ্বন্দ্ব।
ঠান্ডা লড়াইয়ের পেক্ষাপটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতায় নামলেও উভয়ের মধ্যে কখনো সরাসরি সংঘর্ষ বাধে নি। ভিয়েতনাম সমস্যা, সুয়েজ সংকট ,তুরস্ক বিরোধ, গ্রীস সমস্যা ইত্যাদি কে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষ পরোক্ষভাবে সংঘর্ষে মদত দিলেও সামনা-সামনি সংঘর্ষে রূপান্তরিত হয় নি। অর্থাৎ ঠান্ডা লড়াই দ্বিমেরুকরণ রাজনীতির উদ্ভব ঘটায় যার ফলে দুই মহাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়ার উদয় ঘটেছিল,তাতে অন্য কোনো শক্তির ভূমিকা ছিল না। তবে এইসব বিষয়ে ঐতিহাসিকদের মনে অনেক বিতর্ক আছে সেগুলি নিচে আলোচনা করা হলো
অনেক ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে এই ঠান্ডা লড়াই সম্পর্কে। ঠান্ডা লড়াই এর প্রধান দুই প্রতিপক্ষ হলো আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের শেষে বিজয়ী মিত্রশক্তি বর্গ পরস্পরবিরোধী দুই রাষ্ট্র জোট এ ভাগ হয়ে যায়। এই রাষ্ট্র জোটের একদিকে থাকে সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি আর অন্য দিকে থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমী ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি। তবে দুই রাষ্ট্র জোটের মধ্যে বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক ও সামরিক আধিপত্য গড়ে তোলার জন্য যে অন্তর্লীন লড়াই শুরু হয় তার ঠান্ডা যুদ্ধ নামে পরিচিত। যাইহোক সোভিয়েত বিদেশ মন্ত্রী (Litvinov) ম্যাক্সিম লিটভিনব এর মধ্যে ঠান্ডা লড়াই ছিল পারস্পরিক বিরোধী আদর্শগত সংঘাত থেকেই সৃষ্ট এক দ্বন্দ্ব।
ঠান্ডা লড়াইয়ের পেক্ষাপটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতায় নামলেও উভয়ের মধ্যে কখনো সরাসরি সংঘর্ষ বাধে নি। ভিয়েতনাম সমস্যা, সুয়েজ সংকট ,তুরস্ক বিরোধ, গ্রীস সমস্যা ইত্যাদি কে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষ পরোক্ষভাবে সংঘর্ষে মদত দিলেও সামনা-সামনি সংঘর্ষে রূপান্তরিত হয় নি। অর্থাৎ ঠান্ডা লড়াই দ্বিমেরুকরণ রাজনীতির উদ্ভব ঘটায় যার ফলে দুই মহাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়ার উদয় ঘটেছিল,তাতে অন্য কোনো শক্তির ভূমিকা ছিল না। তবে এইসব বিষয়ে ঐতিহাসিকদের মনে অনেক বিতর্ক আছে সেগুলি নিচে আলোচনা করা হলো
- i. Traditional View ( রক্ষণশীল ভাষ্য )
- ii. Revisionist View ( সংশোধনবাদ ব্যাখ্যা )
- iii. Realist View ( বাস্তববাদী ব্যাখ্যা )
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনে সোভিয়েত ইউনিয়নের আচার আচরণ সম্পর্কে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। একনায়কতন্ত্র ও সাম্যবাদী রাষ্ট্র রূপে সোভিয়েত রাশিয়ার সম্প্রসারণশীল দৃষ্টিভঙ্গি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সংকুচিত করে তোলে এবং মার্কিন সচিব জেমস করেস্টাল 1945 সালের জুন মাসে তার ডায়রিতে লিখেছেন সাম্যবাদী সোভিয়েত রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতির গণতান্ত্রিক দেশ গুলির মুক্তপথ পররাষ্ট্রনীতির চেয়ে পৃথক। যার ফলে চার্চিল তার -’The Second World War’ গ্রন্থে এবং জজ কেন্নান এর - ‘American Diplomacy’ গ্রন্থে সোভিয়েত বিস্তার নীতি কে ঠান্ডা লড়াইয়ের উন্মেষের জন্য দায়ী করেছেন।
[ii] Revisionist View :- ঠান্ডা লড়াইয়ের চরিত্র দ্বান্দ্বিক সমস্যা নিয়ে সংশোধনবাদী ব্যাখ্যা বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।পশ্চিমে জোটের সহযোগিতায় পশ্চিম জার্মানিতে প্রতিষ্ঠিত হয় 1949 খ্রিস্টাব্দে আগস্ট মাসে জার্মান প্রজাতান্ত্রিক সরকার (FRG) আর পূর্ব জার্মানিতে রুশ সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয় 1949 খ্রিস্টাব্দে অক্টোবর মাসে জার্মান গণতান্ত্রিক সরকার (GDR) এভাবেই জার্মানির দুই অংশে একদিকে পুঁজিবাদী রাষ্ট্র জোট অন্যদিকে সাম্যবাদী রাষ্ট্র জোটের প্রভাব ঠান্ডা লড়াই এর সৃষ্টি করে।
গাব্রিয়েল ক্লকো Gabriel Kolko তার গ্রন্থে - ‘The politics of war: The world and United states foreign policy’ (1943-45) ঠান্ডা লড়াই এর চরিত্র সম্পর্কে অর্থনৈতিক ব্যাখ্যায় দেখান যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রধান শক্তিতে পরিণত হতে চেয়েছিল। এছাড়াও অধ্যাপক অল্ক বলেন- 1943 খ্রিস্টাব্দের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যের ভিত্তিতে অর্থনীতিকে বেঁধে হাতের মুঠোয় করে নিতে চেয়েছিল। তাই সংশোধন বাদীদের মতে সমগ্র বিশ্বে মার্কিন আধিপত্যবাদের লাগামহীন অগ্রগতি ঠান্ডা লড়াই এর অন্তর্নিহিত কারণ ছিল।
[iii] Realist View :- রক্ষণশীল ও সংশোধনবাদী ঐতিহাসিক পরস্পরবিরোধী ধ্যান-ধারণা কে ব্যাক্ত করেছেন এবং এই দুইয়ের মধ্যবর্তী তে অবস্থান গ্রহণ করেছেন বাস্তববাদী ব্যাখ্যার প্রবক্তাগণ।তারা জাতীয় স্বার্থের সংঘাত এ শক্তির প্রতিদ্বন্দিতায় শক্তিসাম্য নীতির দৃষ্টিকোণ থেকে ঠান্ডা লড়াই এর মধ্যে দুই পক্ষ দায়ী ছিল কিংবা কেউই ছিলনা এমন মন্তব্য উত্থাপিত করেন। যার ফলে অধ্যাপক লুই যে হালে কৌতুক করে লিখেছেন যে -’এ যেন একটি বোতলে বিষাক্ত বিষেয় মাকড়সা আবদ্ধ হয়ে একে অন্যের সঙ্গে লিপ্ত’।
তিনি আরো বলেন যে , ঠান্ডা লড়াই ছিল মূলত ক্ষমতার রাজনীতি ও শক্তিসাম্য থেকে উদ্বুদ্ধ চিরাচরিত ক্ষমতার পুনরাবৃত্তি। তবে সংশোধনবাদী ভাষ্য বিশ্লেষণ করে বলা যায় যে ঠান্ডা লড়াই এর উৎস দুই পরস্পর শক্তির বিরুদ্ধে বিরোধী স্বার্থে যতটা অন্তর্নিহিত বা ঘনিষ্ঠ ছিল তার থেকে বেশি র্নিহিত ছিল তাদের পারস্পরিক ভুল-বোঝাবুঝির উপর। সাম্প্রদায়িক ঐতিহাসিকদের মধ্যে মার্কিন লেখক তথা অধ্যাপক গ্যাডিস দীর্ঘ শান্তির যুগ বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে ছবির নাম মার্কিন জোর কম বেশি দায়ী হলেও অধিকাংশ ইতিহাসবিদ ঠান্ডা লড়াই সৃষ্টির জন্য এই দুই দেশের মতান্তরে ক্ষমতা বিস্তার নীতি কি ব্যাপক ভাবে দায়ী করেছেন এইভাবে সমগ্র বিশ্ব অর্থাৎ পৃথিবী দুটি পরস্পর বিরোধী জোটে বিভক্ত হয়ে পড়ে। কেবলমাত্র ইউরোপে নয় ঠান্ডা লড়াই এর পরিধি কোরিয়া, আরব দুনিয়া, কঙ্গো, ভারতসহ অন্যান্য দেশেও সর্বত্রই সম্প্রসারিত হয়।
Tropic |
Click Now |
What is History? |
( আরো পড়ুন ) |