সিরিজ # 4 HS Bengali Completed Suggestion 2022 | বাংলা সাজেশন উচ্চ মাধ্যমিক
📢 PDf File ডাউনলোড করতে হলে এই পোস্টটির নিচে লিংক দেওয়া রয়েছে
⊙ বাঙালির চিত্রকলা সাজেশন প্রশ্নঃ
প্রশ্নঃ২ বাঙালির চিত্রকলা চর্চার ধারায় যামিনী রায়ের ভূমিকা বা অবদান কতখানি তা বুঝিয়ে দাও?
প্রশ্নঃ৩ বাঙালির চিত্রকলা চর্চার ধারায় গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের গুরুত্ব বা অবদান আলােচনা করাে?
প্রশ্নঃ৪ বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিঙ্কর বেইজের অবদান আলােচনা করাে?
প্রশ্নঃ৫ বাংলার চিত্রকলার ইতিহাসে নন্দলাল বসুর অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে?
⊙ বাঙালির চিত্রকলা সাজেশন উত্তর সেট :
ロ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতুস্পুত্র অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন নব্যবঙ্গীয় চিত্ররীতির জনক তথা আধুনিক ভারতীয় চিত্রকলার পথপ্রদর্শক। পাশ্চাত্য চিত্ররীতির প্রতি আকর্ষণে তিনি ইতালিয়ান শিল্পী গিলার্ডি, ইংরেজ শিল্পী পামার এবং জাপানি শিল্পী টাইকানের কাছে প্রথাগত ও নিয়মানুগ চিত্ররীতির শিক্ষাগ্রহণ করেন। শিল্পচর্চার প্রথম পর্যায়ে ড্রয়িং, প্যাস্টেল, অয়েল পেন্টিং, জল রং বিবিধ মাধ্যমে চিত্রাঙ্কন করেন। এরপর আইরিশ ইলুমিনেশন ও মুঘল মিনিয়েচারের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার ফলে তার শিল্পীসত্তার দোলাচলতা দেখা দেয়।
রবীন্দ্রনাথের পরামর্শে বৈষ্ণব পদাবলিকে বিষয় হিসেবে গ্রহণ করে তিনি আত্মবিকাশের পথ খুঁজে পান।
জল'রঙে ওয়াশ’ পদ্ধতিতে ছবি আঁকার মাধ্যমে প্রকাশ পায় তার শিল্পচর্চার দক্ষতা। তার ছবির মূল প্রাণশক্তি ছিল অনুভূতিগ্রাহ্যতা, যা শিল্পরীতির রঙের পেলব ব্যবহারে অনুভূতি জগতে এক আশ্চর্য
বৈশিষ্ট্য চিত্রধর্মিতা নিয়ে প্রতিফলিত হয়ে উঠেছে। বৈষ্ণব পদাবলিকেন্দ্রিক বিখ্যাত চিত্র শ্বেত- অভিসারিকা'-র পাশাপাশি কৃষ্ণলীলা সিরিজ’, কচ ও দেবযানী, ভারতমাতা’, ‘অশােকের রাণি’, ‘দেবদাসী’ প্রভৃতি চিত্রগুলিও তার উল্লেখযােগ্য সৃষ্টি।
প্রশ্নঃ২ বাঙালির চিত্রকলা চর্চার
ধারায় যামিনী রায়ের ভূমিকা বা অবদান কতখানি তা বুঝিয়ে দাও?
ロ বাঁকুড়া জেলার বেলিয়াতােড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন
শিল্পী যামিনী রায়। গ্রামে মাটির মূর্তি- শিল্পীদের সঙ্গে সময় কাটিয়েই তার
শিল্পীজীবনের সূচনা হয়। গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলে শিক্ষাগ্রহণ করার পর তিনি ফাইন
আর্ট বিভাগে ইউরােপীয় অ্যাকাডেমিক রীতির চিত্রবিদ্যা শেখেন।
১৯১৮-১৯ থেকে তার ছবি ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টের পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে। গ্রামবাংলার নিসর্গচিত্র, আদিবাসী জীবন ও জীবিকা, ধর্মীয় সম্প্রদায়িকতা ও ধর্মকাহিনিনির্ভর ছবি আর পটচিত্র অঙ্কনে তিনি ছিলেন অনবদ্য।
১৯১৮-১৯ থেকে তার ছবি ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টের পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে। গ্রামবাংলার নিসর্গচিত্র, আদিবাসী জীবন ও জীবিকা, ধর্মীয় সম্প্রদায়িকতা ও ধর্মকাহিনিনির্ভর ছবি আর পটচিত্র অঙ্কনে তিনি ছিলেন অনবদ্য।
১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে তার ছবি সর্বভারতীয় প্রদর্শনীতে ভাইসরয়ের স্বর্ণপদক লাভ করে।
১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি পদ্মভূষণ’ উপাধিতে ভূষিত হন। আর্ট স্কুলে গিলার্ডি
সাহেবের কাছে তেলরঙে আঁকায় অভ্যস্ত হয়ে উঠলেও পরবর্তীকালে যামিনী রায় জলরঙে
অসামান্য সব ছবি এঁকেছেন। কালীঘাটের পটুয়াদের শৈলীর দ্বারা তিনি বিশেষভাবে
প্রভাবিত হন। ফরাসি চিত্রধারার মধ্যে যাঁরা সরলরেখার পরিবর্তে ছবিতে ‘কার্ভ
ব্যবহার করেন, তাদের চিত্রকলা তাঁকে অনুপ্রাণিত করে। সেজান, ভ্যান গগ আর গগ্যাঁর
মতাে পােস্ট ইমপ্রেশনিস্ট শিল্পীদের ছবি দেখে তিনি আকৃষ্ট হয়েছেন। ছবি আঁকার
ক্ষেত্রে তার মূল লক্ষ্যটিকে তিনি নিজেই নির্দিষ্ট করেছেন, তা যেন অন্য সকলের
ছবির থেকে আলাদা হয়—তা সে ভালােই হােক বা মন্দই হােক। পরবর্তী শিল্পীদের অনেকেই
তার দেখানাে পথে নিজের নিজের চিত্রভাষা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।
প্রশ্নঃ৩ বাঙালির চিত্রকলা চর্চার ধারায় গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের গুরুত্ব বা অবদান আলােচনা করাে?
ロ গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ১৮ সেপ্টেম্বর কলকাতার জোড়াসাঁকোয় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের ছাত্র থাকাকালীন গগনেন্দ্রনাথ ছবি এঁকে পুরস্কৃত হন। আর্ট স্কুলের শিক্ষক হরিচরণ বসুর কাছে তিনি ছবি আঁকা শেখেন। পরিণত বয়সেই তিনি
প্রধানত ছবি আঁকার চর্চা করেছেন। ওকাকুরা প্রেরিত জাপানি শিল্পী টাইকান আর হিসিদার কাছে তিনি অবনীন্দ্রনাথের সঙ্গে জাপানি কালি-তুলি আর ওয়াশের কাজ শেখেন। ইউরােপীয় পদ্ধতির জলরঙের ব্যবহারেও তার দক্ষতা ছিল। বাস্তবধর্মী চিত্রশিল্পী গগনেন্দ্রনাথ এদেশে ফরাসি শিল্পভাষাগত উপাদান
প্রবর্তনের প্রচেষ্টায়ও অগ্রগণ্য। প্রবাসী’ ও ‘মডার্ন রিভিউ পত্রিকায় তিনি অজস্র কার্টুন বা ব্যঙ্গচিত্র এঁকেছেন। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি 'Indian Society for Oriental Art'-এর সম্পাদক হন। বাংলার কারুশিল্প প্রচারের জন্য ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে ‘Bengal Home Industries Association' স্থাপন করেন এবং তার
সম্পাদক হন। মঞ্চসজ্জা, দৃশ্যপট রচনার অভিনবত্বে, কাকের ছবি সম্বলিত ‘টুয়েলভ ইঙ্ক স্কেচেস’ অ্যালবাম তৈরিতে, চিত্রশিল্পের কাজে যথেষ্ট পারদর্শী ছিলেন।
তৎকালীন কলকাতার দুই শ্রেষ্ঠ সাময়িক পত্রিকা প্রবাসী ও মডার্ন রিভিউ’-তে
ব্যঙ্গচিত্র এঁকে গগনেন্দ্রনাথ সুনাম অর্জন করেন। নবহুল্লোড়’, ‘অদ্ভুতলােক’
প্রভৃতি গ্রন্থে তার বহু ব্যঙ্গচিত্র মুদ্রিত হয়। বলাবাহুল্য, গগনেন্দ্রনাথ
ঠাকুর আধুনিক ভারতীয় শিল্পের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন।
প্রশ্নঃ৪ বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিঙ্কর বেইজের অবদান আলােচনা করাে?
ロ প্রখ্যাত ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী রামকিঙ্কর বেইজ ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ২৫ মে
বাঁকুড়ার যুগীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। দারিদ্র্যের মধ্যে শৈশব অতিবাহিত হলেও
শিল্পের প্রতি ছিল রামকিঙ্করের গভীর অনুরাগ। দেব-দেবীর ছবি আঁকায়, ছুতাের-
কামারদের কাজে, পুতুল গড়ায়, পােস্টার লিখনে, থিয়েটারের মঞসজ্জায় তার সহজাত
ক্ষমতা ছিল। 'প্রবাসী' পত্রিকার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় তাকে ১৯২৫
খ্রিস্টাব্দে শান্তিনিকেতনে নিয়ে আসেন। সেখানে তিনি নন্দলাল বসুর সান্নিধ্য লাভ
করেন। শান্তিনিকেতনে তার সতীর্থদের মধ্যে ছিলেন রমেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী,
বিনােদবিহারী মুখােপাধ্যায় প্রমুখ। পরে তিনি শান্তি-নিকেতনের শিক্ষক হিসেবে
ভাস্কর্য বিভাগের প্রধানের পদ থেকে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে অবসর নেন।
তাঁর আঁকা অজস্র ছবি ও ভাস্কর্যের মধ্যে বিখ্যাত উৎসবী চোখ’, ‘শিলং সিরিজ,
'শরৎকাল’, নতুন শস্য’, ‘বিনােদিনী’, মহিলা ও কুকুর’, ‘গ্রীষ্মের দুপুর’, সুজাতা,
বুদ্ধদেব’, ‘গান্ধীজী’, হাটের সাঁওতাল পরিবার’, কাজের শেষে সাঁওতাল
রমণী’, প্রভৃতি। ভারতের নানা স্থানে তার ছবি ও মূর্তির প্রদর্শনী হয়েছে।
দেশের প্রধান সংগ্রহশালাগুলিতে তার শিল্পকর্ম মর্যাদার সঙ্গে স্থান পেয়েছে। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে রামকিঙ্কর ‘পদ্মভূষণ’ উপাধি পান। ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিশ্বভারতীর ‘এমেরিটাস প্রফেসর হন। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতী তাকে ‘দেশিকোত্তম’ উপাধিতে ভূষিত করেন। রামকিঙ্কর বেইজ ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের ২ আগস্ট
লােকান্তরিত হন।
প্রশ্নঃ৫ বাংলার চিত্রকলার ইতিহাসে নন্দলাল বসুর অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে?
ロ বিহারের মুঙ্গের জেলার হাভেলি খড়গপুরে জন্মগ্রহণ করেন নন্দলাল বসু। তিনি ছেলেবেলায় কুমােরদের দেখাদেখি মূর্তি গড়তেন। তাঁর পিসতুতাে ভাই অতুল মিত্র ছিলেন আর্ট কলেজের ছাত্র। তার পরামর্শে নিজের আঁকা ছবি নিয়ে নন্দলাল আর্ট কলেজে অবনীন্দ্রনাথ ও হ্যাভেল সাহেবের সঙ্গে দেখা
করেন ও আর্ট স্কুলে ছাত্র হিসেবে গৃহীত হন। ১৯০৬-১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তার আঁকা বিখ্যাত ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে- সিদ্ধিদাতা গণেশ’, ‘শােকার্ত সিদ্ধার্থ’, ‘সতী’, ‘শিবসতী’, ‘জগাই- মাধাই’, কর্ণ’, ‘গরুড়স্তম্ভতলে শ্রীচৈতন্য’, নটরাজের তাণ্ডব, ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা’, ‘জতুগৃহদাহ’, ‘অহল্যার শাপমুক্তি’,
‘পার্থসারথি’, ‘শিব মুখমণ্ডল’, ‘শিবের বিষপান’, যম ও নচিকেতা’, মহাপ্রস্থানের পথে যুধিষ্ঠির’, ‘উমার ব্যথা’, ‘উমার তপস্যা’, ‘প্রত্যাবর্তন’ প্রভৃতি। পৌরাণিক বিষয়কে ভিত্তি করে আঁকা তার এই ছবিগুলিতে রূপনির্মাণের বিশেষ ভঙ্গি ধরা পড়েছে।
দেশের প্রধান সংগ্রহশালাগুলিতে তার শিল্পকর্ম মর্যাদার সঙ্গে স্থান পেয়েছে। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে রামকিঙ্কর ‘পদ্মভূষণ’ উপাধি পান। ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিশ্বভারতীর ‘এমেরিটাস প্রফেসর হন। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতী তাকে ‘দেশিকোত্তম’ উপাধিতে ভূষিত করেন। রামকিঙ্কর বেইজ ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের ২ আগস্ট
লােকান্তরিত হন।
প্রশ্নঃ৫ বাংলার চিত্রকলার ইতিহাসে নন্দলাল বসুর অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে?
ロ বিহারের মুঙ্গের জেলার হাভেলি খড়গপুরে জন্মগ্রহণ করেন নন্দলাল বসু। তিনি ছেলেবেলায় কুমােরদের দেখাদেখি মূর্তি গড়তেন। তাঁর পিসতুতাে ভাই অতুল মিত্র ছিলেন আর্ট কলেজের ছাত্র। তার পরামর্শে নিজের আঁকা ছবি নিয়ে নন্দলাল আর্ট কলেজে অবনীন্দ্রনাথ ও হ্যাভেল সাহেবের সঙ্গে দেখা
করেন ও আর্ট স্কুলে ছাত্র হিসেবে গৃহীত হন। ১৯০৬-১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তার আঁকা বিখ্যাত ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে- সিদ্ধিদাতা গণেশ’, ‘শােকার্ত সিদ্ধার্থ’, ‘সতী’, ‘শিবসতী’, ‘জগাই- মাধাই’, কর্ণ’, ‘গরুড়স্তম্ভতলে শ্রীচৈতন্য’, নটরাজের তাণ্ডব, ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা’, ‘জতুগৃহদাহ’, ‘অহল্যার শাপমুক্তি’,
‘পার্থসারথি’, ‘শিব মুখমণ্ডল’, ‘শিবের বিষপান’, যম ও নচিকেতা’, মহাপ্রস্থানের পথে যুধিষ্ঠির’, ‘উমার ব্যথা’, ‘উমার তপস্যা’, ‘প্রত্যাবর্তন’ প্রভৃতি। পৌরাণিক বিষয়কে ভিত্তি করে আঁকা তার এই ছবিগুলিতে রূপনির্মাণের বিশেষ ভঙ্গি ধরা পড়েছে।
১৯১১য় আর্ট স্কুলের পাঠ শেষ করে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে জোড়াসাঁকোয় শিল্পচর্চা নন্দলাল বসুর এক অনন্য অভিজ্ঞতা। ভগিনী নিবেদিতার বইয়ের চিত্রসজ্জা রচনা করা ছাড়াও তিনি রবীন্দ্রনাথ ও অবনীন্দ্রনাথেরও বহু বইয়ের অলংকরণ করেন। লেডি হেরিংহ্যামের সহকারী হিসেবে তিনি অজন্তা
গুহাচিত্রের নকল করার কাজ করেন (১৯০৯)। তাঁর স্মরণীয় কীর্তির মধ্যে রয়েছে গােয়ালিয়রের বাগ গুহার ভিত্তিচিত্রের প্রতিলিপিগ্রহণ, জগদীশচন্দ্রের আহ্বানে বসু বিজ্ঞানমন্দির’ অলংকরণ, জোড়া-সাঁকোর বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত বিচিত্র ক্লাবে শিল্প শিক্ষকতা, মহাত্মা গান্ধির আহ্বানে লখনউ, ফৈজপুর ও হরিপুরা কংগ্রেস অধিবেশন উপলক্ষ্যে ভারতশিল্প প্রদর্শনী সংগঠন, হরিপুরাপট’ অঙ্কন ইত্যাদি। শিল্পচর্চা’ ও ‘রূপাবলী’ তার লেখা শিল্পসংক্রান্ত গ্রন্থ। তিনি রামায়ণ-মহাভারতের কাহিনিকে কালীঘাটের রঙিন পটের মতাে করে রূপদান করেন। ভারতীয় সংবিধান তারই আঁকা চিত্রে ও নির্দেশে অলংকৃত হয়।
⊙
বাংলা চলচ্চিত্রের কথা সাজেশন প্রশ্নঃ
প্রশ্নঃ২ বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ঋত্বিক ঘটকের অবদান আলোচনা করো?
প্রশ্নঃ৩ বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মৃণাল সেনের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে?
প্রশ্নঃ৪ বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সত্যজিৎ রায়ের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে?
⊙
বাংলা চলচ্চিত্রের কথা উত্তর সেট :
প্রশ্নঃ১ বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে
ম্যাডান থিয়েটারের গুরুত্ব তা লেখো?
ロ বাংলা চলচ্চিত্র বিকাশের ক্ষেত্রে যার নাম সর্বাগ্রে উল্লেখিত হয় তিনি
জামশেদজি ফ্রামজি ম্যাডান।তিনি বােম্বাইতে এলফিনস্টোন ড্রামাটিক ক্লাবে সহযােগীর
কাজ করতেন। পরবর্তীতে তিনি কলকাতায় এসে বায়ােস্কোপ দেখানোর কাজ শুরু করেন। ১৯০৫
খ্রিস্টাব্দে রয়েল বায়ােস্কোপ কোম্পানির সুসময়ে ম্যাডান সাহেব দুহাজার টাকা ধার
করে কলকাতা ময়দানে তাবু খাটিয়ে বায়ােস্কোপ প্রদর্শন শুরু করেন ব্যাবসায়িক এবং
সাংগঠনিক বুদ্ধিবলে কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বায়ােস্কোপের জগতে প্রবাদপুরুষে পরিণত
হন। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি ‘এলফিনস্টোন পিকচার প্যালেস' নামে একটি স্থায়ী
চিত্রগৃহ প্রতিষ্ঠা করেন।হিন্দি ভাষায় তৈরি ‘কালীয় মর্দন’ ফিল্মের স্বত্ব কিনে ম্যাডান তাতে বাংলা সাব-টাইটেল জুড়ে প্রচুর টাকা উপার্জন করেন। এরপর ম্যাডান কোম্পানির ম্যানেজার রুস্তমজি ধােতিয়ালা ভারতীয় ছবি তৈরির পরিকল্পনা করেন। তিনিই হলেন পরিচালক। জ্যোতিষচন্দ্র সরকার হলেন সিনেমাটোগ্রাফার তৈরি হল হিন্দি ভাষায় ‘মহাভারত’, ‘বিষু অবতার', ‘নল-দময়ন্তী’, এই সময় প্রিয়নাথ গাঙ্গুলির প্রস্তাবে ম্যাডান বাঙালি অভিনেতা- অভিনেত্রী নিয়ে ছবি তৈরি শুরু করে। পরিচালক রুস্তমজি ধােতিয়ালার হাতে
তৈরি প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের বাংলা কাহিনিচিত্র ‘ বিল্বমঙ্গল’ ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ৮ নভেম্বর মুক্তি পায়। তৎকালীন অনেক সৃজনশীল মানুষ ম্যাডান কোম্পানির সংস্পর্শে আসেন। যেমন—মধু বসু, শিশির-কুমার ভাদুড়ি, নরেশচন্দ্র মিত্র প্রমুখ। এঁদের সাহায্যে ম্যাডান কোম্পানি প্রায় শতাধিক নির্বাক
চিত্র নির্মাণ করে। যেমন—“জয়দেব’, ‘কৃষ্মকান্তের উইল’, ‘কপালকুন্ডলা', ‘সরলা’, ‘গিরিবালা’, ‘নৌকাডুবি’, ‘দুর্গেশনন্দিনী’ প্রভৃতি। কাননদেবী, অমৃতলাল বসু, অহীন্দ্র চৌধুরী, ইন্দু মুখার্জি, লীলাবতী প্রমুখ ম্যাডানের ছবিতে অভিনয় করেছেন। বর্তমান ইন্দ্রপুরী স্টুডিয়ােটি তৈরি করে ম্যাডান কোম্পানি । ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে ম্যাডান কোম্পানির উদ্যোগেই তৈরি হয় প্রথম বাংলা সবাক চিত্র ‘জামাইষষ্ঠী।
প্রশ্নঃ২ বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে
ঋত্বিক ঘটকের অবদান আলোচনা করো?
ロ বাংলা চলচ্চিত্রের বিস্ময়কর প্রতিভা ঋত্বিক ঘটক (৪.১১.১৯২৫.-৬.২.১৯৭৬)। ঢাকায় জন্ম নেওয়া ঋত্বিক ঘটকের কৈশাের ও প্রথম যৌবনে পদ্মাপারে কাটানাের অভিজ্ঞতা তার চলচ্চিত্র নির্মাণের জীবনকে প্রভাবিত করেছিল। বিমল রায়ের সহযােগী হিসেবে চলচ্চিত্র সৃষ্টিতে তার হাতে খড়ি। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে তৈরি হওয়া নাগরিক’ ছবিটি আর্থিক কারণে ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পায়। ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পাওয়া সুবােধ ঘােষের গল্প অবলম্বনে ‘অযান্ত্রিক' সিনেমায় যন্ত্রের সাথে মানুষের সম্পর্ককে যেভাবে
বিষয় হিসেবে ঋত্বিক তুলে ধরেন তা অভিনব প্রকাশ। সফল চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে তার পরিচালিত ছবির তালিকা—‘নাগরিক' (১৯৫২), ‘অযান্ত্রিক (১৯৫৭), বাড়ি থেকে পালিয়ে’ (১৯৫৯), 'মেঘে ঢাকা তারা' (১৯৬০), 'কোমল গান্ধার' (১৯৬১), সুবর্ণরেখা’ (১৯৬২), তিতাস একটি নদীর নাম' (১৯৭৩), ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো' (১৯৭৪)। সংখ্যায় খুবই অল্প তার পরিচালিত ছবির তালিকা, কিন্তু প্রতিটি ছবিই শিল্পনিষ্ঠ এবং নতুনত্বের সন্ধানী৷
ロ বাংলা চলচ্চিত্রের বিস্ময়কর প্রতিভা ঋত্বিক ঘটক (৪.১১.১৯২৫.-৬.২.১৯৭৬)। ঢাকায় জন্ম নেওয়া ঋত্বিক ঘটকের কৈশাের ও প্রথম যৌবনে পদ্মাপারে কাটানাের অভিজ্ঞতা তার চলচ্চিত্র নির্মাণের জীবনকে প্রভাবিত করেছিল। বিমল রায়ের সহযােগী হিসেবে চলচ্চিত্র সৃষ্টিতে তার হাতে খড়ি। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে তৈরি হওয়া নাগরিক’ ছবিটি আর্থিক কারণে ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পায়। ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পাওয়া সুবােধ ঘােষের গল্প অবলম্বনে ‘অযান্ত্রিক' সিনেমায় যন্ত্রের সাথে মানুষের সম্পর্ককে যেভাবে
বিষয় হিসেবে ঋত্বিক তুলে ধরেন তা অভিনব প্রকাশ। সফল চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে তার পরিচালিত ছবির তালিকা—‘নাগরিক' (১৯৫২), ‘অযান্ত্রিক (১৯৫৭), বাড়ি থেকে পালিয়ে’ (১৯৫৯), 'মেঘে ঢাকা তারা' (১৯৬০), 'কোমল গান্ধার' (১৯৬১), সুবর্ণরেখা’ (১৯৬২), তিতাস একটি নদীর নাম' (১৯৭৩), ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো' (১৯৭৪)। সংখ্যায় খুবই অল্প তার পরিচালিত ছবির তালিকা, কিন্তু প্রতিটি ছবিই শিল্পনিষ্ঠ এবং নতুনত্বের সন্ধানী৷
প্রশ্নঃ৩ বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মৃণাল সেনের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে?
ロ বাংলা সিনেমায় নতুন ধারা নিয়ে আসেন মৃণাল সেন। ১৯৫৫ থেকে চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে তার যাত্রা শুরু। আজ অবধি সেই ধারা বহমান রয়েছে। টেলিফিল্ম, শর্টফিল্ম, ডকুমেন্টারি ফিল্ম এবং পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি সব মিলিয়ে সংখ্যাটি প্রায় পঞ্চাশ ছাড়িয়েছে। তার প্রথম ছবি ‘রাতভাের' (১৯৫৫)। ওই একই বছর মুক্তি পেয়েছে ‘পথের পাঁচালী’। ‘রাতভাের’-এ ব্যর্থ হলেন পরিচালক মৃণাল সেন। কিন্তু সেই ব্যর্থতা তাকে দমাতে পারেনি। পরবর্তী ছবি ‘নীল আকাশের নীচে’ এবং তৃতীয় ছবি বাইশে শ্রাবণ’ এর মধ্যেই তিনি খুঁজেনিলেন নিজের চলার পথ। চলচ্চিত্র পরিচালনার আগে চলচ্চিত্র বিষয়ক লেখালেখি থেকেই মৃণাল সেনের ছবি তৈরির ভাবনা শুরু হয়। সত্যজিৎ রায় যেমন শুরু থেকেই ধ্রুপদি সাহিত্য অবলম্বনে ছবি তৈরি করেছেন, মৃণাল সেন তা করেননি। বরং তার বিপরীত অবস্থানটিই মৃণাল সেনের ছবির বৈশিষ্ট্য সত্যজিৎ রায় সেকথা স্বীকার করে বলেছেন—“দে স্টার্টেড অ্যাট অ্যাবাউট দ্য সেম টাইম অ্যাজ আই ডিড, ঋত্বিক অ্যান্ড মৃণাল, দে ওয়্যার মেকিং ফিল্ম ভেরি ডিফারেন্ট ফ্রম মাইন, ভেরি ডিফারেন্ট, বাট ভেরি পাওয়ারফুল, আই থিংক" মৃণাল সেন পরিচালিত উল্লেখযােগ্য ছবিগুলি হল—“নীল আকাশের
নীচে' (১৯৫৮), 'বাইশে শ্রাবণ' (১৯৬০), ‘আকাশ কুসুম' (১৯৬৫), সারা জীবনে পাল
সেন অসংখ্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন।
তাঁর নির্মিত তথ্যচিত্রগুলির মধ্যে রয়েছে ‘মুভিং পারসপেকটিভস্
(১৯৬৭), ত্রিপুরা প্রসঙা’ (১৯৮২), ক্যালকাটা মাই এলডােরাডাে' (১৯৮৯),
‘অ্যান্ড দি শাে গােজ অন’ (১৯৯৬)। এ ছাড়াও তিনি “তসবির আপনি আপনি"(১৯৮৪)
নামে একটি দূরদর্শন চিত্র, বহু দূরদর্শন ধারাবাহিকের চিত্রনাট্য রচনা করেন
(যেমন—'দশ সাল বাদ’, ‘আজনভি', ‘পাল’, ‘সালগিরা’,“দো বহেন’, ‘আজকাল’, ‘রবিবার’,
‘আয়না’, ‘স্বয়ম্ভব’, ‘কভি দূর কভি পাস’, ‘অপরাজিত')। রাজধানী থেকে' (১৯৫৮),
কানামাছি' (১৯৬১),
‘জোড়াদীঘির চৌধুরী পরিবার’ (১৯৬৬) এবং ‘কাচকাটা হীরে' (১৯৬৬)-র চিত্রনাট্যও মৃণাল সেনের রচনা।
রবীন্দ্রনাথের তিনটি ছােটোগল্প নিয়ে ‘তিনকন্যা', নষ্টনীড় উপন্যাস অবলম্বনে ‘চারুলতা’, পরবর্তীতে ‘ঘরেবাইরে' (১৯৮৪), এ ছাড়াও প্রভাতকুমার মুখােপাধ্যায়ের কাহিনি নিয়ে ‘দেবি', শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাহিনি নিয়ে ‘চিড়িয়াখানা', শঙ্করের উপন্যাস নিয়ে সীমাবদ্ধ' তৈরি করেন তিনি।
সত্যজিৎ রায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের দুটি উপন্যাস অরণ্যের দিনরাত্রি' এবং ‘প্রতিদ্বন্দ্বী' রও চলচ্চিত্রায়ণ করেন। নিজের কাহিনি নিয়ে ‘কাঞ্চনজঙ্” (১৯৬২), শাখা প্রশাখা’ (১৯৯০), 'আগন্তুক (১৯৯২), ছােটোদের জন্য ‘সােনার কেল্লা (১৯৭৪), ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন' (১৯৬৮) এবং ‘হীরক রাজার দেশে’ (১৯৮০) তৈরি করেন তিনি। বিশেষত শেষেরটি বক্তব্যের গভীরতায় বড়ােদেরও ভাবনার সিনেমা হয়ে ওঠে। সত্যজিৎ তার পরিচালিত সিনেমায় শুধু কাহিনি বা চিত্রনাট্য রচনাতেই নয়, সংগীত পরিচালনা -তেও সমান দক্ষতা দেখিয়েছেন। 'তিনকন্যা’, ‘নায়ক’ (১৯৬৬), 'চারুলতা’ ‘হীরক রাজার দেশে' ইত্যাদি ছবিতে তিনি সংগীত পরিচালনা করেন। সত্যজিৎ রায়ের তৈরি উল্লেখযােগ্য তথ্যচিত্র—রবীন্দ্রনাথ’, ‘সিকিম’, ‘ইনার আই', 'সুকুমার রায়' প্রভৃতি। তিনি ফ্রান্সের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান‘লিজিয়ন অব অনার’-এ ভূষিত হন। নিউ ইয়র্কের অ্যাকাডেমি অব মােশন পিকচার্স’ কর্তৃক ‘লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট’-এর জন্যে বিশেষ ‘অস্কার' সম্মান, ‘ভারতরত্ন' সম্মান সহ ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র থেকে তিনি শতাধিক পুরস্কার ও সম্মান পান।
১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে বি এসসি পরীক্ষায় উতীর্ণ হয়ে তিনি Conjugated Sulphates of
Copper Magnesium-group:Astudy of Isomorphous mixtures and Molecular
Combinations গবেষণায় নিয়ােজিত হন। এরপর ডক্টরেট লাভ করে তিনি ইউনিভার্সিটি
কেমিক্যাল সােসাইটির সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। প্রেসিডেন্সি কলেজে অস্থায়ী সহকারী
রসায়নের অধ্যাপকের পদে থাকাকালীন প্রফুল্লচন্দ্র ছাত্রদের চরম অধ্য-বসায়ের
সঙ্গে পড়িয়ে তাদেরকে তিনি কৌতুহলী করে তােলেন। ক্রমে তিনি তেলজাতীয় খাদ্যে এবং
দুধে ভেজাল নির্ধারণের পদ্ধতি আবিষ্কারে সাফল্য অর্জন করেন, বাঙালির
ব্যবসা-বিমুখতা দূর করতে তিনি ‘বেঙ্গল কেমিক্যালস’ গড়ে তুললেন। সারা ভারতে এত
বড়াে সালফিউরিক অ্যাসিড তৈরির কারখানা আর কোথাও ছিল না। এ ছাড়া তিনি ক্যালকাটা
পটারি, বেঙ্গল এনামেল, চক্রবর্তী-চ্যাটার্জি অ্যান্ড কোং ইত্যাদি স্থাপনে পরামর্শ
ও উৎসাহ দেন। ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি পারদঘটিত নতুন যৌগ মারকিউরাস নাইট্রেট
আবিষ্কার করেন। একদল ছাত্র-গবেষকের সাহায্যে প্রফুল্লচন্দ্র ভারতে একটি নব্য
রাসায়নিক গােষ্ঠী গড়ে তুলতে সমর্থ হন। সেই দলে ছিলেন—বিমানবিহারী দে, নীলরতন
ধর, রসিকলাল দত্ত, প্রিয়দারঞ্জন রায়, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, মেঘনাদ সাহা প্রমুখ।
১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিজ্ঞান কলেজে পালিত অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেন। ১৯৪৪
খ্রিস্টাব্দের ১৬ জুন তার জীবনাবসান হয়।
প্রশ্নঃ৪ বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের অবদান আলোচনা করো?
ロ আধুনিক রাশিবিজ্ঞানের জনক প্রশান্তিচন্দ্র মহলানবিশ ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুন কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুলে বাল্যশিক্ষার পর প্রেসিডেন্সি কলেজে তিনি শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর ইংল্যান্ডে কিংস কলেজে পড়াকালীন তিনি রাশিবিজ্ঞানের প্রতি কৌতূহলী হয়ে পড়েন। দেশে
ফিরে দীর্ঘকাল প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপনা করেন। রাশিবিজ্ঞান বিষয়ে তার প্রথম গবেষণা—Anthropological observation on the Anglo-Indians of Calcutta তিনি অ্যানথ্রোপােমেট্রিক পরিমাপ বিষয়ে গবেষণা করেন, আবিষ্কার করেন এই O2 সংখ্যায়ন সূত্র, যার থেকে মানুষের মধ্যে জাতিগত ভেদাভেদ আছে কিনা তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়। ১৯২২-২৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতীয় আবহ-বিজ্ঞানের পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত আবহবিদ হন। তার নির্দেশিত পথে ভারত সরকার হীরাকুদ বাঁধ নির্মাণ করেন। বরানগরে তার প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিকাল ইন্সটিটিউটে রাশিবিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে তিনি পরীক্ষা পদ্ধতির আমূল সংস্কার ঘটান।
প্রশ্নঃ৫ বাঙালির বিজ্ঞান ভাবনা ও বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির অবদান আলােচনা করাে?
ロ বাঙালির বিজ্ঞান ভাবনায় ও বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। সমাজসংস্কারের মাধ্যমে বিজ্ঞানমনস্কতার। প্রসারে উদ্যোগ নিয়েছিলেন দ্বারকানাথ ঠাকুর।
চিকিৎসাশিক্ষার ক্ষেত্রে যেমন তিনি প্রচুর অর্থ অনুদান দেন, তেমনি শবব্যবচ্ছেদ প্রবর্তনেও তিনি উদ্যোগী ভূমিকা নেন। দ্বারকানাথের পুত্র দেবেন্দ্রনাথের আগ্রহ ছিল জ্যোতির্বিদ্যায়। বিশ্বপরিচয় গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ পিতার এই বিশেষ দিকটিতে আলােকপাত করেছেন। স্বর্ণকুমারী দেবীর জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহও দেবেন্দ্রনাথের উৎসাহেই। ভূতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, জীবতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয়েও দেবেন্দ্রনাথের উৎসাহ ছিল। দেবেন্দ্রনাথের জ্যেষ্ঠপুত্র দ্বিজেন্দ্রনাথ গণিতে এক বিস্ময়কর প্রতিভা ছিলেন৷ ইউক্লিডের জ্যামিতি ছিল তার প্রিয় অধ্যয়নের বিষয়। মহেন্দ্রলাল সরকারের ইন্ডিয়ান সায়েন্স অ্যাসােসিয়েশন গঠনে দ্বিজেন্দ্রনাথ বিশেষভাবে সাহায্য করেন।
হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুর মেডিকেল কলেজে শিক্ষা নিয়েছিলেন। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের স্থুলমর্ম তার লেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ফ্রেনলজি বা শিরােমিতিবিদ্যার চর্চা করতেন।বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথও উল্লেখযােগ্য ভূমিকা নেন। বিশ্বপরিচয় গ্রন্থে ছড়িয়ে আছে তার বিজ্ঞান-নির্ভর রচনাসমূহ। গ্রহগণ জীবের আবাস- ভূমি, সামুদ্রিক জীব কীটাণু, বৈজ্ঞানিক সংবাদ, ইচ্ছামৃত্যু, মাকড়সা সমাজে স্ত্রীজাতির গৌরব ইত্যাদি রবীন্দ্রনাথের উল্লেখযােগ্য বিজ্ঞান-বিষয়ক রচনা। অনেকগুলি সমালােচনা মূলক বৈজ্ঞানিক নিবন্ধও রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন। তার মধ্যে উল্লেখযােগ্য সুবােধচন্দ্র মহলানবিশের জীবতত্ত্ব-এর সমালোচনা, বায়ুনভােবিদ্যার সমালােচনা, উপেন্দ্রকিশাের,রায়চৌধুরীর সৃষ্টির বিশালতত্ত্ব এর সমালােচনা।
প্রশ্নঃ১ বাঙালির ক্রীড়া ঐতিহ্যে ফুটবলের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছিল? এই পর্বের ফুটবলের সঙ্গে কোন বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের নাম জড়িয়ে আছে? বাংলার ফুটবলের কোন ঘটনা,কীভাবে ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে উজ্জীবিত করেছিল?
প্রশ্নঃ২ কলকাতায় বাঙালির প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা প্রথম স্বদেশি সার্কাসের নাম লেখো? সার্কাসে বাঙালির অবদানের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও?
প্রশ্নঃ৩ রামায়ণে বর্ণিত কাহিনি অনুসারে দাবা খেলার স্রষ্টা কে? এই খেলায় বাঙালির সাফল্যের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও?
প্রশ্নঃ১ বাঙালির ক্রীড়া ঐতিহ্যে
ফুটবলের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছিল? এই পর্বের ফুটবলের সঙ্গে কোন বিখ্যাত
ব্যক্তিত্বের নাম জড়িয়ে আছে? বাংলার ফুটবলের কোন ঘটনা,কীভাবে ভারতের
জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে উজ্জীবিত করেছিল?
ロ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমল থেকে বাংলায় ফুটবল প্রচলিত থাকলেও ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিলে ময়দানে প্রথম ফুটবল খেলা হয়। ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে গড়ে ওঠে শােভাবাজার, কুমােরটুলি,মােহনবাগান, মহামেডান ইত্যাদি ক্লাব। এই পর্বের ফুটবলের সঙ্গে ফুটবল-কারিগর নগেন্দ্র প্রসাদ সর্বাধিকারীর নাম জড়িয়ে আছে। পরাধীন ভারতবর্ষে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ইতিহাসে বাংলার ফুটবল খেলা জড়িয়ে পড়ে আইএহ এ শিল্ডকে কেন্দ্র করে। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে মােহনবাগানের এগারাে জন বাঙালি খেলােয়াড় অসীম সাহসিকতা, অসামান্য ক্রীড়ানৈপুণ্য দেখিয়ে খালি পায়ে বুটের বিরুদ্ধে উজ্জীবনকারী খেলে ইস্ট ইয়র্ক কোম্পানিকে হারিয়ে আইএফএ শিল্ড জেতে, যা ভারতবাসীকে উজ্জীবিত করেছিল।শিবদাস ভাদুড়ি, বিজয়লাল ভারতী প্রমুখের এই নাছােড়বান্দা জয়ের ঘটনা পরাধীন ভারতবাসীর মুক্তিসংগ্রামে অন্যতম প্রেরণা হয়ে ওঠায় তা ইংরেজদের বিরুদ্ধে জয়ের সূত্রপাত বলে মনে করা হয়। বলাবাহুল্য, এই ঘটনা জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে এক নতুন মাত্রার সূচনা করে।
প্রশ্নঃ২ কলকাতায় বাঙালির প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা প্রথম স্বদেশি সার্কাসের নাম লেখো? সার্কাসে বাঙালির অবদানের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও?
ロ কলকাতায় ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে নবগােপাল মিত্রের নিরলস প্রচেষ্টায় ন্যাশনাল সার্কাস’ নামে প্রথম স্বদেশি সার্কাস গড়ে ওঠে। উনিশ শতকের শেষভাগে নবগােপাল মিত্রের ব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা হিন্দুমেলা’ ব্যায়ামশালায় শরীরচর্চা বিকাশের মধ্যেই নিহিত ছিল বাঙালির সার্কাসের স্বপ্ন। কলকাতায় আগত ইউরােপীয় সার্কাস বাঙালি মননে সার্কাস সম্পর্কে উৎসাহ করে, তার ফলে নবগােপাল মিত্র ‘ন্যাশনাল সার্কাস’ প্রতিষ্ঠা করলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এরপরে গঠিত ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান সার্কাস’ বেশিদিন টেকেনি। পরবর্তী সময়ে ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান সার্কাস’, ‘ন্যাশনাল। সার্কাস-এর সাজসরঞ্জাম কিনে নিয়ে প্রিয়নাথ বসু গড়ে তােলেন ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস', যা সমগ্র ভারতে বিস্তৃত লাভ করে।
অর্থাৎ একসঙ্গে, ট্যাক্সিস’ মানে ক্রম। সিনট্যাক্স অর্থাৎ পদের ক্রম বা বিন্যাস। বাক্যতত্ত্বের সংজ্ঞা নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা ভাষাতাত্ত্বিকদের গুরুত্বপূর্ণ অভিমত আছে। কেউ বলছেন বাক্যতত্ত্ব ‘analysis of constructions', কেউ বলছেন শব্দবিন্যাস পদ্ধতি। বিশদভাবে বলা চলে—বাক্যের মধ্যে পদগুলাের
বাক্যতত্ত্ব বা বাক্যের গঠনপ্রণালীর আলােচ্য বিষয় পদক্রম ও পদের অন্বয়। বাংলা-সহ অন্যান্য আধুনিক ভাষায় বাক্যগঠন পদবিন্যাস ও রূপতত্ত্ব দুটি বিষয়ের উপরই নির্ভর করে। তাই এ দুটিই বাক্যগঠনের
মূল উপাদান, বাক্যতত্ত্বের প্রধান আলােচ্য বিষয়। পদক্রম বা পদসংস্থান, পদান্বয়, পদরূপ প্রাচীন
ভাষাবিজ্ঞান আলােচনায় বাক্যতত্ত্বের প্রধান বিষয় হলেও আধুনিক ভাষাতত্ত্বে রূপতত্ত্বকে (Morphology) ভাষাবিজ্ঞানের আলাদা শাখা বলে গণ্য করা হয়। পদের বিন্যাস ও অন্বয়কেই বাক্যতত্ত্বের প্রধান - আলােচ্য বলে গ্রহণ করা হয়।
প্রশ্নঃ২ গঠন অনুসারে বাক্যকে ক-টি ভাগে ভাগ করা যায় এবং কী কী? প্রত্যেক ভাগের একটি করে উদাহরণ দাও?
ロ গঠনগত দিক থেকে বাক্য তিন প্রকার। যথা—সরল বাক্য, যৌগিক বাক্য ও জটিল বাক্য।
সরল বাক্য : যে বাক্যে একটি মাত্র সমাপিকা ক্রিয়া উপস্থিত থাকে তাকে সরল বাক্য বলে। ভাষা চার্য সুনীতিকুমার বলেছিলেন, সরল বাক্যে উদ্দেশ্য পদ একাধিক থাকতে পারে, কিন্তু বিধেয় পদ (অর্থাৎ
বিধেয়ের মূল সমাপিকা ক্রিয়া) মাত্র একটিই থাকবে। যেমন—
জটিল বাক্য : যে বাক্যে একটি প্রধান বাক্যাংশ এবং এক বা একাধিক অপ্রধান বা আশ্রিত বাক্যাংশ থাকে তাকে জটিল বা মিশ্র বাক্য বলে। এই ধরনের বাক্যের গঠন যা-তা, যেমন - তেমন, যদি - তাহলে, ধরণের হয়। যেমন- যদি মেঘ করে তাহলে বৃষ্টি হবে।
মেঘ করে = আশ্রিত উপবাক্য || বৃষ্টি হবে = প্রধান উপবাক্য
সমাজ ভাষাবিজ্ঞান: ভাষা কীভাবে সমাজে কাজ করে, সমাজ কীভাবে ভাষার উপর প্রভাব বিস্তার করে, ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখা এসমস্ত বিষয় নিয়ে আলােচনা করে, তাকে বলে সমাজভাষাবিজ্ঞান (Socio Linguistics) . সমাজ - বিজ্ঞান আর ভাষাবিজ্ঞানের যৌথ ক্ষেত্রের নানা সূত্র ও ধারণা প্রয়ােগে দেখা যায় যে ভাষার পরিবর্তন, পরিমার্জনের ক্ষেত্রে সমাজ প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে প্রভাব ফেলে। অর্থাৎ ভাষা থেকে আগত উপভাষা, শ্রেণি উপভাষা, সমাজ উপভাষা ইত্যাদির দিকে লক্ষ রাখলে মানুষের সামাজিক চরিত্র ও অবস্থান নির্ণয় সহজতর হয়। তাই সমাজবিজ্ঞান ও ভাষাবিজ্ঞানের পারস্পরিক নির্ভরতায় গড়ে ওঠে সমাজ ভাষাবিজ্ঞান।
📢 Completed H.S Bengali Suggestion 2022 Downloading PDf File
‘জোড়াদীঘির চৌধুরী পরিবার’ (১৯৬৬) এবং ‘কাচকাটা হীরে' (১৯৬৬)-র চিত্রনাট্যও মৃণাল সেনের রচনা।
প্রশ্নঃ৪ বাংলা চলচ্চিত্রের
ইতিহাসে সত্যজিৎ রায়ের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে?
ロ ১৯৪৭-এ দেশ ভাগের পরে বাংলা চলচ্চিত্রের বাণিজ্যিক দুঃসময়ে সত্যজিৎ রায় (২.৫.১৯২১ - ২৩.৪.১৯৯২) এর আবির্ভাব বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তার হাতে একের পর এক ছবি আন্তর্জাতিক সম্মান অর্জন করে। বাংলা চলচ্চিত্রের সব্যসাচী সত্যজিৎ রায় শিল্প, সাহিত্য, সংগীত আর যন্ত্র এই চারটে জিনিসের মেলবন্ধন ঘটিয়ে সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের মুগ্ধ করে বাংলা চলচ্চিত্রে সাফল্য এনে দিয়েছেন।
১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দের ২৬ আগস্ট মুক্তি পাওয়া সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালী'র প্রথম প্রদর্শন হয় নিউ ইয়র্ক-এর মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্ট-এ। কলকাতায় সিনেমাটি বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘পথের পাঁচালি' পুরস্কৃত হয়। এরপর ‘অপরাজিত' (১৯৫৬), 'অপুর সংসার' (১৯৫৯) চলচ্চিত্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে অপু ট্রিলজি সম্পূর্ণ করেন সত্যজিৎ রায়। ‘অপরাজিত’ ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়। অপুর সংসার’-এ অভিনয়সুত্রেই বাংলা চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের।
‘অপরাজিত’ আর ‘অপুর সংসার'-এর মধ্যবর্তী সময়ে সত্যজিৎ রায় দুটি অসামান্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন—“জলসাঘর’ এবং “পরশপাথর'।
ロ ১৯৪৭-এ দেশ ভাগের পরে বাংলা চলচ্চিত্রের বাণিজ্যিক দুঃসময়ে সত্যজিৎ রায় (২.৫.১৯২১ - ২৩.৪.১৯৯২) এর আবির্ভাব বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তার হাতে একের পর এক ছবি আন্তর্জাতিক সম্মান অর্জন করে। বাংলা চলচ্চিত্রের সব্যসাচী সত্যজিৎ রায় শিল্প, সাহিত্য, সংগীত আর যন্ত্র এই চারটে জিনিসের মেলবন্ধন ঘটিয়ে সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের মুগ্ধ করে বাংলা চলচ্চিত্রে সাফল্য এনে দিয়েছেন।
১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দের ২৬ আগস্ট মুক্তি পাওয়া সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালী'র প্রথম প্রদর্শন হয় নিউ ইয়র্ক-এর মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্ট-এ। কলকাতায় সিনেমাটি বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘পথের পাঁচালি' পুরস্কৃত হয়। এরপর ‘অপরাজিত' (১৯৫৬), 'অপুর সংসার' (১৯৫৯) চলচ্চিত্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে অপু ট্রিলজি সম্পূর্ণ করেন সত্যজিৎ রায়। ‘অপরাজিত’ ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়। অপুর সংসার’-এ অভিনয়সুত্রেই বাংলা চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের।
‘অপরাজিত’ আর ‘অপুর সংসার'-এর মধ্যবর্তী সময়ে সত্যজিৎ রায় দুটি অসামান্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন—“জলসাঘর’ এবং “পরশপাথর'।
রবীন্দ্রনাথের তিনটি ছােটোগল্প নিয়ে ‘তিনকন্যা', নষ্টনীড় উপন্যাস অবলম্বনে ‘চারুলতা’, পরবর্তীতে ‘ঘরেবাইরে' (১৯৮৪), এ ছাড়াও প্রভাতকুমার মুখােপাধ্যায়ের কাহিনি নিয়ে ‘দেবি', শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাহিনি নিয়ে ‘চিড়িয়াখানা', শঙ্করের উপন্যাস নিয়ে সীমাবদ্ধ' তৈরি করেন তিনি।
সত্যজিৎ রায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের দুটি উপন্যাস অরণ্যের দিনরাত্রি' এবং ‘প্রতিদ্বন্দ্বী' রও চলচ্চিত্রায়ণ করেন। নিজের কাহিনি নিয়ে ‘কাঞ্চনজঙ্” (১৯৬২), শাখা প্রশাখা’ (১৯৯০), 'আগন্তুক (১৯৯২), ছােটোদের জন্য ‘সােনার কেল্লা (১৯৭৪), ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন' (১৯৬৮) এবং ‘হীরক রাজার দেশে’ (১৯৮০) তৈরি করেন তিনি। বিশেষত শেষেরটি বক্তব্যের গভীরতায় বড়ােদেরও ভাবনার সিনেমা হয়ে ওঠে। সত্যজিৎ তার পরিচালিত সিনেমায় শুধু কাহিনি বা চিত্রনাট্য রচনাতেই নয়, সংগীত পরিচালনা -তেও সমান দক্ষতা দেখিয়েছেন। 'তিনকন্যা’, ‘নায়ক’ (১৯৬৬), 'চারুলতা’ ‘হীরক রাজার দেশে' ইত্যাদি ছবিতে তিনি সংগীত পরিচালনা করেন। সত্যজিৎ রায়ের তৈরি উল্লেখযােগ্য তথ্যচিত্র—রবীন্দ্রনাথ’, ‘সিকিম’, ‘ইনার আই', 'সুকুমার রায়' প্রভৃতি। তিনি ফ্রান্সের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান‘লিজিয়ন অব অনার’-এ ভূষিত হন। নিউ ইয়র্কের অ্যাকাডেমি অব মােশন পিকচার্স’ কর্তৃক ‘লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট’-এর জন্যে বিশেষ ‘অস্কার' সম্মান, ‘ভারতরত্ন' সম্মান সহ ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র থেকে তিনি শতাধিক পুরস্কার ও সম্মান পান।
⊙ বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা সাজেশন প্রশ্নঃ
প্রশ্নঃ১ বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে
কাদম্বিনী বসুর অবদান আলোচনা করাে?
প্রশ্নঃ২ বাংলার বিজ্ঞানচর্চার
ইতিহাসে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান আলোচনা করাে?
প্রশ্নঃ৩ বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার
ইতিহাসে প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের অবদান আলােচনা করাে?
প্রশ্নঃ৪ বাংলার বিজ্ঞানচর্চার
ইতিহাসে প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের অবদান আলোচনা করো?
প্রশ্নঃ৫ বাঙালির বিজ্ঞান ভাবনা ও
বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির অবদান আলােচনা করাে?
⊙ বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা উত্তর সেট :
প্রশ্নঃ১ বাংলার বিজ্ঞানচর্চার
ইতিহাসে কাদম্বিনী বসুর অবদান আলোচনা করাে?
ロ অধুনা বিহারের অন্তর্গত ভাগলপুরে ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ১৮ জুলাই কাদম্বিনী বসু জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ব্রজকিশাের বসু। তিনি ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে ভাগলপুর গার্লস ইন্সটিটিউটে এবং ১৯৭৩-এ কলকাতার ‘ হিন্দু বাের্ডিং স্কুল’-এ ভরতি হন। দুবছর পর অর্থাৎ ১৮৭৫-এ তাঁকে ভরতি করা হয় বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয়ে। এরপর ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে কাদম্বিনী বেথুন স্কুলে ভরতি হন এবং এখান থেকেই তিনি এন্ট্রান্স পরীক্ষা দেন। ১৮৮০-তে এফ এ পাস করে পরের বছর মেডিক্যাল পড়তে চেয়ে আবেদন করেন তিনি। ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে কাদম্বিনী কলকাতাবিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক হন, সঙ্গে ছিলেন চন্দ্রমুখী বসু। এঁরাই
ভারতের প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েট।
ロ অধুনা বিহারের অন্তর্গত ভাগলপুরে ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ১৮ জুলাই কাদম্বিনী বসু জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ব্রজকিশাের বসু। তিনি ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে ভাগলপুর গার্লস ইন্সটিটিউটে এবং ১৯৭৩-এ কলকাতার ‘ হিন্দু বাের্ডিং স্কুল’-এ ভরতি হন। দুবছর পর অর্থাৎ ১৮৭৫-এ তাঁকে ভরতি করা হয় বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয়ে। এরপর ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে কাদম্বিনী বেথুন স্কুলে ভরতি হন এবং এখান থেকেই তিনি এন্ট্রান্স পরীক্ষা দেন। ১৮৮০-তে এফ এ পাস করে পরের বছর মেডিক্যাল পড়তে চেয়ে আবেদন করেন তিনি। ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে কাদম্বিনী কলকাতাবিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক হন, সঙ্গে ছিলেন চন্দ্রমুখী বসু। এঁরাই
ভারতের প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েট।
১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে দ্বারকানাথ গাগুলির সঙ্গে কাদম্বিনীর বিবাহ হয়। পরবর্তীকালে
১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে প্রথম ছাত্রী হিসেবে ভরতি হন।
কিন্তু অধ্যাপকদের অসন্তোষের জেরে তিনি মেডিসিন-এ উত্তীর্ণ হতে পারেননি তবে
অধ্যক্ষ প্রদত্ত জি বি এম সি (গ্র্যাজুয়েট অফ বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজ) উপাধি
লাভ করে চিকিৎসক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ১৮৯০
খ্রিস্টাব্দে লেডি ডাফরিন হাসপাতালে নিযুক্ত হন কাদম্বিনী। ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দেই তিনি রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশ নেন এবং পঞ্চম কংগ্রেসের অধিবেশনে যােগদান করেন। তিনি ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডে যান এবং ট্রিপল ডিপ্লোমা লাভ করেন। নেপালের রাজমাতার চিকিৎসার জন্য তিনি ১৮৯৫-৯৬ খ্রিস্টাব্দে নেপালে যান। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে কাদম্বিনী দেবী খনি শ্রমিকদের অবস্থা পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে বিহারে যান। এর দুবছর পর, ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ৩ অক্টোবর কলকাতায় তার মৃত্যু হয়।
প্রশ্নঃ২ বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান আলোচনা করাে?
ロ ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ১৩ নভেম্বর বর্তমান বাংলাদেশের বিক্রমপুর জেলার রাড়িখাল গ্রামে জগদীশচন্দ্র বসু জন্মগ্রহণ করেন। জগদীশচন্দ্র কলকাতায় এসে প্রথমে হেয়ার স্কুলে, পরে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে এন্ট্রান্স পাস করে ভরতি হন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। কলেজে পড়াকালীন সুখ্যাত অধ্যাপক ফাদার লাফোঁর সংস্পর্শে এসে তার কাছ থেকেই জগদীশচন্দ্র প্রকৃতি বিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞানের তত্ত্ব হাতেকলমে পরীক্ষার দ্বারা আয়ত্ত করেন। পিতার ইচ্ছানুসারে দেশসেবার জন্য জগদীশচন্দ্র বিজ্ঞানী হওয়ার সংকল্পে কেমব্রিজে গিয়ে ক্লাইস্টান কলেজে ভরতি হন। চার বছর বিলেতে
থেকেবি এসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ওউদ্ভিদবিদ্যায় ব্যুৎপত্তি অর্জন করে দেশে ফেরেন। প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনার সময় থেকেই তিনি বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে দেশীয় কারিগর দিয়ে নিজ ব্যয়ে যন্ত্রপাতি তৈরি করান। ক্রমে আকাশম্পন্দন ও আকাশসম্ভব জগৎ, বিদ্যুৎ
রশ্মির দিক পরিবর্তন, বিদ্যুৎ তরঙ্গ সৃষ্টি, বিনা তারে সংবাদপ্রেরণ, এক্স-রে, কাচ ও বায়ুর রশ্মিপথ পরিবর্তন করার শক্তি, জীব ও জড় পদার্থের উপর বিদ্যুৎ রশ্মিপাতের ফলের ক্ষমতা, জড় ও জীবের সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা প্রভৃতি বিচিত্র বিষয়ে পৃথিবীর নানা গবেষণাগারে মূল্যবান গবেষণা করেন।
খ্রিস্টাব্দে লেডি ডাফরিন হাসপাতালে নিযুক্ত হন কাদম্বিনী। ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দেই তিনি রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশ নেন এবং পঞ্চম কংগ্রেসের অধিবেশনে যােগদান করেন। তিনি ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডে যান এবং ট্রিপল ডিপ্লোমা লাভ করেন। নেপালের রাজমাতার চিকিৎসার জন্য তিনি ১৮৯৫-৯৬ খ্রিস্টাব্দে নেপালে যান। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে কাদম্বিনী দেবী খনি শ্রমিকদের অবস্থা পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে বিহারে যান। এর দুবছর পর, ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ৩ অক্টোবর কলকাতায় তার মৃত্যু হয়।
প্রশ্নঃ২ বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান আলোচনা করাে?
ロ ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ১৩ নভেম্বর বর্তমান বাংলাদেশের বিক্রমপুর জেলার রাড়িখাল গ্রামে জগদীশচন্দ্র বসু জন্মগ্রহণ করেন। জগদীশচন্দ্র কলকাতায় এসে প্রথমে হেয়ার স্কুলে, পরে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে এন্ট্রান্স পাস করে ভরতি হন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। কলেজে পড়াকালীন সুখ্যাত অধ্যাপক ফাদার লাফোঁর সংস্পর্শে এসে তার কাছ থেকেই জগদীশচন্দ্র প্রকৃতি বিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞানের তত্ত্ব হাতেকলমে পরীক্ষার দ্বারা আয়ত্ত করেন। পিতার ইচ্ছানুসারে দেশসেবার জন্য জগদীশচন্দ্র বিজ্ঞানী হওয়ার সংকল্পে কেমব্রিজে গিয়ে ক্লাইস্টান কলেজে ভরতি হন। চার বছর বিলেতে
থেকেবি এসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ওউদ্ভিদবিদ্যায় ব্যুৎপত্তি অর্জন করে দেশে ফেরেন। প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনার সময় থেকেই তিনি বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে দেশীয় কারিগর দিয়ে নিজ ব্যয়ে যন্ত্রপাতি তৈরি করান। ক্রমে আকাশম্পন্দন ও আকাশসম্ভব জগৎ, বিদ্যুৎ
রশ্মির দিক পরিবর্তন, বিদ্যুৎ তরঙ্গ সৃষ্টি, বিনা তারে সংবাদপ্রেরণ, এক্স-রে, কাচ ও বায়ুর রশ্মিপথ পরিবর্তন করার শক্তি, জীব ও জড় পদার্থের উপর বিদ্যুৎ রশ্মিপাতের ফলের ক্ষমতা, জড় ও জীবের সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা প্রভৃতি বিচিত্র বিষয়ে পৃথিবীর নানা গবেষণাগারে মূল্যবান গবেষণা করেন।
এ ছাড়াও তিনি দীর্ঘকাল উদ্ভিদ ও প্রাণীর পেশির তুলনামূলক গবেষণা করেন তার লেখা
বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থগুলি হল—Physiology of Ascent of Sap, Physiology of
Photosynthesis, Nervous Mechanism of Plants, Growth and Tropic Movements of
Plants ইত্যাদি। বাংলায় লেখা তাঁর বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ গুলি
অব্যক্ত গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে । প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অবসর নিয়ে তিনি বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়ােগ করেন। ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ নভেম্বর গিরিডিতে এই কর্মবীর বিজ্ঞানসাধকের মহাপ্রয়াণ ঘটে।
প্রশ্নঃ৩ বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের অবদান আলােচনা করাে?
ロ আচার্য প্ৰফুল্লচন্দ্র রায় ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ২ আগস্ট দক্ষিণবঙের কপােতাক্ষ নদী তীরবতী রাডুলি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অসুস্থতার জন্য তার প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশােনায় সাময়িক ছেদ ঘটলেও তিনি দেশ-বিদেশের ইতিহাস, ভাষা, পুরাতত্ত্বের পাঠ গ্রহণ করেন। পরে সুস্থ হয়ে এন্ট্রান্স পাস করে মেট্রোপলিটন
ইন্সটিটিউশনে পড়ার সময় প্রেসিডেন্সি কলেজের রসায়নের অধ্যাপক আলেকজান্ডার পেড়লার ও পদার্থবিদ জন এলিয়টের বক্তৃতা শুনে ক্রমশ তিনি রসায়নের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও প্রাণীবিদ্যার পাঠ গ্রহণ করেন। সেখানে রসায়নের
শিক্ষক হিসেবে তিনি পান আলেকজান্ডার ক্রাম ব্রাউন, ডঃ জন গিবসন, লিওনার্ড ডবিন ও পি জি টেইটকে।
অব্যক্ত গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে । প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অবসর নিয়ে তিনি বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়ােগ করেন। ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ নভেম্বর গিরিডিতে এই কর্মবীর বিজ্ঞানসাধকের মহাপ্রয়াণ ঘটে।
প্রশ্নঃ৩ বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের অবদান আলােচনা করাে?
ロ আচার্য প্ৰফুল্লচন্দ্র রায় ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ২ আগস্ট দক্ষিণবঙের কপােতাক্ষ নদী তীরবতী রাডুলি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অসুস্থতার জন্য তার প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশােনায় সাময়িক ছেদ ঘটলেও তিনি দেশ-বিদেশের ইতিহাস, ভাষা, পুরাতত্ত্বের পাঠ গ্রহণ করেন। পরে সুস্থ হয়ে এন্ট্রান্স পাস করে মেট্রোপলিটন
ইন্সটিটিউশনে পড়ার সময় প্রেসিডেন্সি কলেজের রসায়নের অধ্যাপক আলেকজান্ডার পেড়লার ও পদার্থবিদ জন এলিয়টের বক্তৃতা শুনে ক্রমশ তিনি রসায়নের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও প্রাণীবিদ্যার পাঠ গ্রহণ করেন। সেখানে রসায়নের
শিক্ষক হিসেবে তিনি পান আলেকজান্ডার ক্রাম ব্রাউন, ডঃ জন গিবসন, লিওনার্ড ডবিন ও পি জি টেইটকে।
প্রশ্নঃ৪ বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের অবদান আলোচনা করো?
ロ আধুনিক রাশিবিজ্ঞানের জনক প্রশান্তিচন্দ্র মহলানবিশ ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুন কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুলে বাল্যশিক্ষার পর প্রেসিডেন্সি কলেজে তিনি শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর ইংল্যান্ডে কিংস কলেজে পড়াকালীন তিনি রাশিবিজ্ঞানের প্রতি কৌতূহলী হয়ে পড়েন। দেশে
ফিরে দীর্ঘকাল প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপনা করেন। রাশিবিজ্ঞান বিষয়ে তার প্রথম গবেষণা—Anthropological observation on the Anglo-Indians of Calcutta তিনি অ্যানথ্রোপােমেট্রিক পরিমাপ বিষয়ে গবেষণা করেন, আবিষ্কার করেন এই O2 সংখ্যায়ন সূত্র, যার থেকে মানুষের মধ্যে জাতিগত ভেদাভেদ আছে কিনা তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়। ১৯২২-২৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতীয় আবহ-বিজ্ঞানের পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত আবহবিদ হন। তার নির্দেশিত পথে ভারত সরকার হীরাকুদ বাঁধ নির্মাণ করেন। বরানগরে তার প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিকাল ইন্সটিটিউটে রাশিবিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে তিনি পরীক্ষা পদ্ধতির আমূল সংস্কার ঘটান।
এছাড়াও তিনি Design of Experiment নিয়ে গবেষণা করে কৃষির উন্নতিকে
তরান্বিত করেন। ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে রাশিবিজ্ঞানের প্রচার ও প্রসারের জন্য তিনি
ষান্মাসিক পত্রিকা সংখ্যা প্রকাশ করেন। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় বিজ্ঞান
কংগ্রেস গণিত শাখার মধ্যে রাশিবিজ্ঞানকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রশান্তচন্দ্রকে গণিত
শাখার সভাপতি নির্বাচন করে। তিনি 'National Sample Survey'(১৯৫০)
এবং রাইটার্স বিল্ডিং-এ - 'State Statistical Bureau' প্রতিষ্ঠা
করেন। রবীন্দ্রনাথ-ঘনিষ্ঠ এই বিজ্ঞানী স্বদেশে ও বিদেশে ‘দেশিকোত্তম’
‘পদ্মভূষণ’ সহ বহু সম্মানে ভূষিত হন। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ২৮ জুন প্রশান্তচন্দ্র
পরলােক গমন করেন।
প্রশ্নঃ৫ বাঙালির বিজ্ঞান ভাবনা ও বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির অবদান আলােচনা করাে?
ロ বাঙালির বিজ্ঞান ভাবনায় ও বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। সমাজসংস্কারের মাধ্যমে বিজ্ঞানমনস্কতার। প্রসারে উদ্যোগ নিয়েছিলেন দ্বারকানাথ ঠাকুর।
চিকিৎসাশিক্ষার ক্ষেত্রে যেমন তিনি প্রচুর অর্থ অনুদান দেন, তেমনি শবব্যবচ্ছেদ প্রবর্তনেও তিনি উদ্যোগী ভূমিকা নেন। দ্বারকানাথের পুত্র দেবেন্দ্রনাথের আগ্রহ ছিল জ্যোতির্বিদ্যায়। বিশ্বপরিচয় গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ পিতার এই বিশেষ দিকটিতে আলােকপাত করেছেন। স্বর্ণকুমারী দেবীর জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহও দেবেন্দ্রনাথের উৎসাহেই। ভূতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, জীবতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয়েও দেবেন্দ্রনাথের উৎসাহ ছিল। দেবেন্দ্রনাথের জ্যেষ্ঠপুত্র দ্বিজেন্দ্রনাথ গণিতে এক বিস্ময়কর প্রতিভা ছিলেন৷ ইউক্লিডের জ্যামিতি ছিল তার প্রিয় অধ্যয়নের বিষয়। মহেন্দ্রলাল সরকারের ইন্ডিয়ান সায়েন্স অ্যাসােসিয়েশন গঠনে দ্বিজেন্দ্রনাথ বিশেষভাবে সাহায্য করেন।
হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুর মেডিকেল কলেজে শিক্ষা নিয়েছিলেন। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের স্থুলমর্ম তার লেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ফ্রেনলজি বা শিরােমিতিবিদ্যার চর্চা করতেন।বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথও উল্লেখযােগ্য ভূমিকা নেন। বিশ্বপরিচয় গ্রন্থে ছড়িয়ে আছে তার বিজ্ঞান-নির্ভর রচনাসমূহ। গ্রহগণ জীবের আবাস- ভূমি, সামুদ্রিক জীব কীটাণু, বৈজ্ঞানিক সংবাদ, ইচ্ছামৃত্যু, মাকড়সা সমাজে স্ত্রীজাতির গৌরব ইত্যাদি রবীন্দ্রনাথের উল্লেখযােগ্য বিজ্ঞান-বিষয়ক রচনা। অনেকগুলি সমালােচনা মূলক বৈজ্ঞানিক নিবন্ধও রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন। তার মধ্যে উল্লেখযােগ্য সুবােধচন্দ্র মহলানবিশের জীবতত্ত্ব-এর সমালোচনা, বায়ুনভােবিদ্যার সমালােচনা, উপেন্দ্রকিশাের,রায়চৌধুরীর সৃষ্টির বিশালতত্ত্ব এর সমালােচনা।
⊙ বাঙালির ক্রীড়া সংস্কৃতি সাজেশন প্রশ্নঃ
প্রশ্নঃ১ বাঙালির ক্রীড়া ঐতিহ্যে ফুটবলের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছিল? এই পর্বের ফুটবলের সঙ্গে কোন বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের নাম জড়িয়ে আছে? বাংলার ফুটবলের কোন ঘটনা,কীভাবে ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে উজ্জীবিত করেছিল?
প্রশ্নঃ২ কলকাতায় বাঙালির প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা প্রথম স্বদেশি সার্কাসের নাম লেখো? সার্কাসে বাঙালির অবদানের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও?
প্রশ্নঃ৩ রামায়ণে বর্ণিত কাহিনি অনুসারে দাবা খেলার স্রষ্টা কে? এই খেলায় বাঙালির সাফল্যের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও?
⊙ বাঙালির ক্রীড়া সংস্কৃতি উত্তর সেট :
ロ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমল থেকে বাংলায় ফুটবল প্রচলিত থাকলেও ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিলে ময়দানে প্রথম ফুটবল খেলা হয়। ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে গড়ে ওঠে শােভাবাজার, কুমােরটুলি,মােহনবাগান, মহামেডান ইত্যাদি ক্লাব। এই পর্বের ফুটবলের সঙ্গে ফুটবল-কারিগর নগেন্দ্র প্রসাদ সর্বাধিকারীর নাম জড়িয়ে আছে। পরাধীন ভারতবর্ষে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ইতিহাসে বাংলার ফুটবল খেলা জড়িয়ে পড়ে আইএহ এ শিল্ডকে কেন্দ্র করে। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে মােহনবাগানের এগারাে জন বাঙালি খেলােয়াড় অসীম সাহসিকতা, অসামান্য ক্রীড়ানৈপুণ্য দেখিয়ে খালি পায়ে বুটের বিরুদ্ধে উজ্জীবনকারী খেলে ইস্ট ইয়র্ক কোম্পানিকে হারিয়ে আইএফএ শিল্ড জেতে, যা ভারতবাসীকে উজ্জীবিত করেছিল।শিবদাস ভাদুড়ি, বিজয়লাল ভারতী প্রমুখের এই নাছােড়বান্দা জয়ের ঘটনা পরাধীন ভারতবাসীর মুক্তিসংগ্রামে অন্যতম প্রেরণা হয়ে ওঠায় তা ইংরেজদের বিরুদ্ধে জয়ের সূত্রপাত বলে মনে করা হয়। বলাবাহুল্য, এই ঘটনা জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে এক নতুন মাত্রার সূচনা করে।
প্রশ্নঃ২ কলকাতায় বাঙালির প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা প্রথম স্বদেশি সার্কাসের নাম লেখো? সার্কাসে বাঙালির অবদানের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও?
ロ কলকাতায় ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে নবগােপাল মিত্রের নিরলস প্রচেষ্টায় ন্যাশনাল সার্কাস’ নামে প্রথম স্বদেশি সার্কাস গড়ে ওঠে। উনিশ শতকের শেষভাগে নবগােপাল মিত্রের ব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা হিন্দুমেলা’ ব্যায়ামশালায় শরীরচর্চা বিকাশের মধ্যেই নিহিত ছিল বাঙালির সার্কাসের স্বপ্ন। কলকাতায় আগত ইউরােপীয় সার্কাস বাঙালি মননে সার্কাস সম্পর্কে উৎসাহ করে, তার ফলে নবগােপাল মিত্র ‘ন্যাশনাল সার্কাস’ প্রতিষ্ঠা করলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এরপরে গঠিত ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান সার্কাস’ বেশিদিন টেকেনি। পরবর্তী সময়ে ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান সার্কাস’, ‘ন্যাশনাল। সার্কাস-এর সাজসরঞ্জাম কিনে নিয়ে প্রিয়নাথ বসু গড়ে তােলেন ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস', যা সমগ্র ভারতে বিস্তৃত লাভ করে।
রেওয়ার মহারাজা এই সার্কাস দেখে খুশি হয়ে লক্ষ্মী’ ও ‘নারায়ণ’ নামে দুটি বাঘ
উপহার দেন। বাঘের খেলার জনপ্রিয় শিল্পী ছিলেন বাদল চাদ, সুশীলাসুন্দরী,
মৃন্ময়ী। জিমনাস্টিকসের সেরা খেলােয়াড়
ছিলেন কুমুদিনী। বিশ্বময় সার্কাসের খ্যাতি অর্জন করা প্রিয়নাথের সার্কাস জীবনের বিখ্যাত গ্রন্থ ‘প্রফেসর বােসের অপূর্ব ভ্রমণ-বৃত্তান্ত'। পুত্র অবনীন্দ্রকৃষ্ণ বসু বাবার কীর্তি নিয়ে লেখেন ‘বাঙালির সার্কাস'।
ছিলেন কুমুদিনী। বিশ্বময় সার্কাসের খ্যাতি অর্জন করা প্রিয়নাথের সার্কাস জীবনের বিখ্যাত গ্রন্থ ‘প্রফেসর বােসের অপূর্ব ভ্রমণ-বৃত্তান্ত'। পুত্র অবনীন্দ্রকৃষ্ণ বসু বাবার কীর্তি নিয়ে লেখেন ‘বাঙালির সার্কাস'।
প্রশ্নঃ৩ রামায়ণে বর্ণিত কাহিনি
অনুসারে দাবা খেলার স্রষ্টা কে? এই খেলায় বাঙালির সাফল্যের
সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও?
ロ রামায়ণ মহাকাব্যের কাহিনিসূত্র অনুযায়ী রাবণের স্ত্রী, মন্দোদরী দাবা
খেলার স্রষ্টা। ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে জন কখরেনের উদ্যোগে 'ক্যালকাটা চেস
ক্লাব’ তৈরি হয়। ভারতের প্রাচীনতম এই দাবা খেলার ক্লাব বাঙালির
দাবা চর্চাকে বিশ্বগামী করে। ওয়েস্ট বেঙ্গল চেস অ্যাসােসিয়েশন’ (১৯৫৯)
রাজ্য দাবার উন্নতির জন্য জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করে। ১৯৬১
খ্রিস্টাব্দে প্রথম প্রতিযােগিতাতেই প্রাণকৃষ্ণ কুণ্ডর জয় দাবার বাঙালির
স্বীকৃতির প্রবাহকে ধারাবাহিক করে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে ছয়জন
গ্র্যান্ডমাস্টার, নয়জন ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার, দুজন মহিলা
এ্যান্ডমাস্টার, একজন মহিলা ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার রয়েছেন। তিনবারের
জাতীয় চ্যাম্পিয়ন।
অর্জুন পুরস্কার প্রাপ্ত দিব্যেন্দু বড়ুয়া, মাত্র উনিশ বছরে গ্র্যান্ডমাস্টার
হওয়া সূর্যশেখর গাঙ্গলি যিনি টানা ছয়বার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে রেকর্ড
করেছেন, বিশ্বনাথন আনন্দের সহযােগী হয়ে বিশ্ব-চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযােগিতায়
কাজ করেছেন, সন্দীপন চন্দ, নীলােৎপল দাস, দীপ সেনগুপ্ত, সপ্তর্ষি রায়চৌধুরী,
মেরী অ্যান গােমস, সহেলি ধর বড়ুয়া, নিশা মেহেতা প্রমুখ দাবা খেলায় বিশ্বে
বাঙালির মুখােজ্জ্বল করেছেন।
⊙ ভাষা [বাক্যতত্ত্ব ] সাজেশন প্রশ্নঃ
প্রশ্নঃ১ বাক্যতত্ত্ব কী?
বাক্যতত্ত্বের আলােচ্য বিষয়গুলি উল্লেখ করো?
প্রশ্নঃ২ গঠন অনুসারে বাক্যকে ক-টি ভাগে
ভাগ করা যায় এবং কী কী? প্রত্যেক ভাগের একটি করে উদাহরণ দাও?
প্রশ্নঃ৩ বাক্যের অব্যহত উপাদান বলতে কী
বােঝায়? উদাহরণসহ বিষয়টি আলোচনা করো?
অথবা, বাক্যের গঠন ও গঠনগত উপাদানের তুলনা করে বাক্যের অন্যতম গঠনগত
উপাদান হিসেবে
‘অব্যবহিত-উপাদান’-এর স্বরূপ ব্যাখ্যা করাে?
‘অব্যবহিত-উপাদান’-এর স্বরূপ ব্যাখ্যা করাে?
⊙ ভাষা [বাক্যতত্ত্ব ] উত্তর সেট :
প্রশ্নঃ১ বাক্যতত্ত্ব কী? বাক্যতত্ত্বের আলােচ্য বিষয়গুলি উল্লেখ
করো?
ロ বাক্যে অবস্থিত শব্দগুলির বিন্যাস অর্থাৎ বাক্যের মধ্যে কোন শব্দ
কোথায় বসবে এবং তাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখায়
আলােচনা করা হয়, তাকে বলে বাক্যতত্ত্ব। বাক্য ভাষার একক, সহজভাবে বললে,
বাক্যগঠনের নিয়মাবলিই বাক্যতত্ত্ব। বাক্যতত্ত্ব’র ইংরেজি নাম ‘Syntax'।
সিন’অর্থাৎ একসঙ্গে, ট্যাক্সিস’ মানে ক্রম। সিনট্যাক্স অর্থাৎ পদের ক্রম বা বিন্যাস। বাক্যতত্ত্বের সংজ্ঞা নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা ভাষাতাত্ত্বিকদের গুরুত্বপূর্ণ অভিমত আছে। কেউ বলছেন বাক্যতত্ত্ব ‘analysis of constructions', কেউ বলছেন শব্দবিন্যাস পদ্ধতি। বিশদভাবে বলা চলে—বাক্যের মধ্যে পদগুলাের
পারস্পরিক সম্পর্ক, তাদের বিন্যাস এবং অবস্থানকে ভিত্তি করে কীভাবে একটা বাক্য
গড়ে উঠবে—ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখায় এসব আলােচনা করা হয়, তাকেই বাক্যতত্ত্ব
(Syntax) বলে।
বাক্যতত্ত্ব বা বাক্যের গঠনপ্রণালীর আলােচ্য বিষয় পদক্রম ও পদের অন্বয়। বাংলা-সহ অন্যান্য আধুনিক ভাষায় বাক্যগঠন পদবিন্যাস ও রূপতত্ত্ব দুটি বিষয়ের উপরই নির্ভর করে। তাই এ দুটিই বাক্যগঠনের
মূল উপাদান, বাক্যতত্ত্বের প্রধান আলােচ্য বিষয়। পদক্রম বা পদসংস্থান, পদান্বয়, পদরূপ প্রাচীন
ভাষাবিজ্ঞান আলােচনায় বাক্যতত্ত্বের প্রধান বিষয় হলেও আধুনিক ভাষাতত্ত্বে রূপতত্ত্বকে (Morphology) ভাষাবিজ্ঞানের আলাদা শাখা বলে গণ্য করা হয়। পদের বিন্যাস ও অন্বয়কেই বাক্যতত্ত্বের প্রধান - আলােচ্য বলে গ্রহণ করা হয়।
প্রশ্নঃ২ গঠন অনুসারে বাক্যকে ক-টি ভাগে ভাগ করা যায় এবং কী কী? প্রত্যেক ভাগের একটি করে উদাহরণ দাও?
ロ গঠনগত দিক থেকে বাক্য তিন প্রকার। যথা—সরল বাক্য, যৌগিক বাক্য ও জটিল বাক্য।
সরল বাক্য : যে বাক্যে একটি মাত্র সমাপিকা ক্রিয়া উপস্থিত থাকে তাকে সরল বাক্য বলে। ভাষা চার্য সুনীতিকুমার বলেছিলেন, সরল বাক্যে উদ্দেশ্য পদ একাধিক থাকতে পারে, কিন্তু বিধেয় পদ (অর্থাৎ
বিধেয়ের মূল সমাপিকা ক্রিয়া) মাত্র একটিই থাকবে। যেমন—
প্রীতি গান গাইছে
প্রীতি = উদ্দেশ্য (কর্তা)
গাইছে
= বিধেয় (সমাপিকা ক্রিয়া)
একাধিক কর্তা এবং একটি অসমাপিকা ক্রিয়া থাকলেও তা সরল বাক্যই হবে। যেমন—রাম
এবং লক্ষ্মণ ও সীতা বনবাসে যান।
যৌগিক বাক্য : যে বাক্য একের বেশি জটিল বা সরলবাক্য নিয়ে গঠিত হয়, তাকে যৌগিক বা সংযুক্ত বাক্য বলে। এখানে বাক্যগুলি সংযােজক অব্যয়ের সাহায্যে যৌগিক বাক্য গঠন করে। যেমন-
(১) তুমি মানুষের দুঃখের কথা ভাব এবং তাদের জন্য কাজ করাে। (২) তুমি মানুষের দুঃখের কথা ভাব এবং এ কথা বললে ভুল হবে না। যে তুমি তাদের জন্য কাজ করাে। প্রথম উদাহরণে সংযােজক অব্যয়
দিয়ে দুটি সরল বাক্য যােগে যৌগিক বাক্যগঠন করা হয়েছে। দ্বিতীয় উদাহরণে প্রথম বাক্যাংশটি সরল, দ্বিতীয়টি জটিল যাদের সংযােজক অব্যয় দিয়ে যােগ করে যৌগিক বাক্য গঠন করা হয়েছে।
যৌগিক বাক্য : যে বাক্য একের বেশি জটিল বা সরলবাক্য নিয়ে গঠিত হয়, তাকে যৌগিক বা সংযুক্ত বাক্য বলে। এখানে বাক্যগুলি সংযােজক অব্যয়ের সাহায্যে যৌগিক বাক্য গঠন করে। যেমন-
(১) তুমি মানুষের দুঃখের কথা ভাব এবং তাদের জন্য কাজ করাে। (২) তুমি মানুষের দুঃখের কথা ভাব এবং এ কথা বললে ভুল হবে না। যে তুমি তাদের জন্য কাজ করাে। প্রথম উদাহরণে সংযােজক অব্যয়
দিয়ে দুটি সরল বাক্য যােগে যৌগিক বাক্যগঠন করা হয়েছে। দ্বিতীয় উদাহরণে প্রথম বাক্যাংশটি সরল, দ্বিতীয়টি জটিল যাদের সংযােজক অব্যয় দিয়ে যােগ করে যৌগিক বাক্য গঠন করা হয়েছে।
জটিল বাক্য : যে বাক্যে একটি প্রধান বাক্যাংশ এবং এক বা একাধিক অপ্রধান বা আশ্রিত বাক্যাংশ থাকে তাকে জটিল বা মিশ্র বাক্য বলে। এই ধরনের বাক্যের গঠন যা-তা, যেমন - তেমন, যদি - তাহলে, ধরণের হয়। যেমন- যদি মেঘ করে তাহলে বৃষ্টি হবে।
মেঘ করে = আশ্রিত উপবাক্য || বৃষ্টি হবে = প্রধান উপবাক্য
প্রশ্নঃ৩ বাক্যের অব্যহত উপাদান
বলতে কী বােঝায়? উদাহরণসহ বিষয়টি আলোচনা করো?
অথবা, বাক্যের গঠন ও গঠনগত উপাদানের তুলনা করে বাক্যের অন্যতম
গঠনগত উপাদান হিসেবে
‘অব্যবহিত-উপাদান’-এর স্বরূপ ব্যাখ্যা করাে?
ロ বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান বাক্যকে ভাষার বৃহত্তর একক বলে গণ্য করে এবং ধাপে
ধাপে বিশ্লেষণ করে তাকে বৃহত্তর থেকে ক্ষুদ্রতর উপাদানে বিশ্লেষণ করে। এই
বিশ্লেষণের জন্য বাক্যের গঠন সম্পর্কে কিছু মুল ধারণা থাকা প্রয়ােজন।
অর্থপূর্ণ উপাদানে একটি বাক্যের গঠন হয় এবং যেসব অর্থপূর্ণ উপাদান বাক্য গঠনকে
সম্পূর্ণ করে তাদের গঠনগত উপাদান বলে। যে-কোনাে বাক্যের গঠনকে প্রথম যে দুটি বা
কয়েকটি বৃহত্তর অর্থপূর্ণ উপাদানে ভাগ করা যায় তাদের অব্যবহিত-গঠনগত উপাদান
বলে। যেমন- তপন যখন অস্ত মগন ভুবন ভ্রমণ শেষে, আমি তপনের স্বপন দেখিব পথিক বধূর
বেশে। এই বাক্যের পদসমষ্টি পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত এবং এদের পূর্ণাঙ্গ অর্থও
আছে। অতএব এটি একটি বাক্য। এ সমগ্র বাক্যগঠন বিশ্লেষণে দুটি বড়াে গঠনগত উপাদান
পাই-
- ক) তপন যখন অস্ত মগন ভুবন ভ্রমণ শেষে
- খ) আমি তপনের স্বপন দেখিব পথিক বধূর বেশে
- ক) ১, তপন ২. যখন অস্ত মগন ভুবন ভ্রমণ শেষে
- খ) ১. আমি ২. তপনের স্বপন দেখিব পথিক বধূর বেশে
- এক্ষেত্রে ১ ও ২ ক’ ও ‘খ’-এর অব্যবহিত-উপাদান।
⊙ ভাষা [রূপতত্ত্ব] সাজেশন প্রশ্নঃ
প্রশ্নঃ১ রূপমূল কাকে বলে? উদাহরণ-সহ
স্বাধীন ও পরাধীন রূপমূলের পরিচয় দাও?
প্রশ্নঃ২ প্রত্যয় কাকে বলে? ব্যাবহারিক
প্রয়ােগের অবস্থান অনুযায়ী প্রত্যয়ের কটি ভাগ ও কী কী? প্রত্যেক
ভাগের একটি করে উদাহরণ দাও?
⊙ ভাষা [রূপতত্ত্ব] উত্তর সেট :
প্রশ্নঃ১ রূপমূল কাকে বলে?
উদাহরণ-সহ স্বাধীন ও পরাধীন রূপমূলের পরিচয় দাও?
ロ এক বা একাধিক ধ্বনি দ্বারা গঠিত অর্থপূর্ণ ক্ষুদ্রতম একক হল রূপমূল (Morpheme) রূপমূল দু - প্রকারের—মুক্ত রূপমূল বা স্বাধীন রূপমূল (Free Morpheme) এবং বন্ধ রূপমূল বা পরাধীন রূপমূল (Bound Morpheme)। যে অর্থপূর্ণ, ক্ষুদ্রতম ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি অন্য ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টির সহযােগ
ছাড়াই স্বাধীনভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে, তাকে বলে মুক্ত বা স্বাধীন রূপমূল। আর, যে অর্থপূর্ণ, ক্ষুদ্রতম ধবনি বা ধ্বনিসমষ্টি সর্বদা অন্য ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাক্যে ব্যবহৃত হয়, কখনও স্বাধীনভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে না, তাকে বলে বন্ধ বা পরাধীন রূপ। যেমন— বেড়ালগুলাের 'বেড়াল’ হল মুক্ত রূপমূল এবং গুলাে হল বদ্ধ রূপমূল। ধাতু, মৌলিক নাম-শব্দ, অনুসর্গ হল মুক্ত রূপমূল আর, উপসর্গ, প্রত্যয়, বিভক্তি, নির্দেশক ইত্যাদি হল বদ্ধ রূপমূল ৷ তবে ধাতু --------
ロ এক বা একাধিক ধ্বনি দ্বারা গঠিত অর্থপূর্ণ ক্ষুদ্রতম একক হল রূপমূল (Morpheme) রূপমূল দু - প্রকারের—মুক্ত রূপমূল বা স্বাধীন রূপমূল (Free Morpheme) এবং বন্ধ রূপমূল বা পরাধীন রূপমূল (Bound Morpheme)। যে অর্থপূর্ণ, ক্ষুদ্রতম ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি অন্য ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টির সহযােগ
ছাড়াই স্বাধীনভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে, তাকে বলে মুক্ত বা স্বাধীন রূপমূল। আর, যে অর্থপূর্ণ, ক্ষুদ্রতম ধবনি বা ধ্বনিসমষ্টি সর্বদা অন্য ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাক্যে ব্যবহৃত হয়, কখনও স্বাধীনভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে না, তাকে বলে বন্ধ বা পরাধীন রূপ। যেমন— বেড়ালগুলাের 'বেড়াল’ হল মুক্ত রূপমূল এবং গুলাে হল বদ্ধ রূপমূল। ধাতু, মৌলিক নাম-শব্দ, অনুসর্গ হল মুক্ত রূপমূল আর, উপসর্গ, প্রত্যয়, বিভক্তি, নির্দেশক ইত্যাদি হল বদ্ধ রূপমূল ৷ তবে ধাতু --------
(যেমন—তুই বাড়ি যা) বা মৌলিক
নাম-শব্দ (যেমন—বাড়ি যাচ্ছি)। কিন্তু শূন্যবিভক্তি অর্থাৎ শূন্য রূপ
সহযােগে পদে পরিণত হয়, অর্থাৎ বাক্যে প্রবেশ করে।
প্রশ্নঃ২ প্রত্যয় কাকে বলে? ব্যাবহারিক প্রয়ােগের অবস্থান অনুযায়ী প্রত্যয়ের কটি ভাগ ও কী কী? প্রত্যেক ভাগের একটি করে উদাহরণ দাও?
ロ প্রত্যয় হল অর্থদ্যোতক ধ্বনি বা ধবনি সমষ্টি যারা শব্দ বা ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে নতুন পদ গঠন করে, কখনও পদের পরিবর্তনও ঘটায়। ব্যাবহারিক প্রয়ােগের অবস্থান অনুযায়ী প্রত্যয়ের দুটি ভাগ ---- কৃৎ
সহযােগে পদে পরিণত হয়, অর্থাৎ বাক্যে প্রবেশ করে।
প্রশ্নঃ২ প্রত্যয় কাকে বলে? ব্যাবহারিক প্রয়ােগের অবস্থান অনুযায়ী প্রত্যয়ের কটি ভাগ ও কী কী? প্রত্যেক ভাগের একটি করে উদাহরণ দাও?
ロ প্রত্যয় হল অর্থদ্যোতক ধ্বনি বা ধবনি সমষ্টি যারা শব্দ বা ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে নতুন পদ গঠন করে, কখনও পদের পরিবর্তনও ঘটায়। ব্যাবহারিক প্রয়ােগের অবস্থান অনুযায়ী প্রত্যয়ের দুটি ভাগ ---- কৃৎ
প্রত্যয় এবং তদ্ধিত প্রত্যয়। ধাতুর সঙ্গে যেসব প্রত্যয় যুক্ত হয় তাদের কৃৎ
প্রত্যয় এবং নাম শব্দের সঙ্গে যেসব প্রত্যয় যুক্ত হয়, তাদের তদ্ধিত প্রত্যয়
বলে।
কৃৎ প্রত্যয়ের উদাহরণ – কৃ + তব্য = কর্তব্য।
তদ্ধিত প্রত্যয়ের উদাহরণ পুরুষ + আলী = পুরুষালী।
⊙ ভাষা [ভাষাবিজ্ঞান] সাজেশন প্রশ্নঃ
প্রশ্নঃ১ শৈলীবিজ্ঞান বলতে কী বােঝাে? ফলিত
ভাষাবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখাগুলির মধ্যে যে কোনাে একটি শাখার আলােচনা
করাে?
প্রশ্নঃ২ ভাষাবিজ্ঞানের ধারাকে
প্রধানত কটি ভাগে ভাগ করা হয় ও কী কী? যে-কোনাে একটি ধারার সংক্ষিপ্ত
বিবরণ দাও?
⊙ ভাষা [ভাষাবিজ্ঞান] উত্তর সেট:
প্রশ্নঃ১ শৈলীবিজ্ঞান বলতে কী
বােঝাে? ফলিত ভাষাবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখাগুলির মধ্যে যে কোনাে একটি
শাখার আলােচনা করাে?
ロ নন্দনতত্ত্ব ও ভাষাবিজ্ঞানের এক অসামান্য মেলবন্ধন শৈলীবিজ্ঞান।
ভাষাবিজ্ঞানী বুঁফো বলেছিলেন “মানুষ নিজেই তার শৈলী”। ভাষাবিজ্ঞানের যে
শাখায় ভাষার বিবিধ উপকরণ যেমন ধ্বনি, শব্দ, বাক্য ইত্যাদির প্রয়ােগ
বিন্যাসের নীতিনির্দেশ আলােচিত হয়, তাকে শৈলীবিজ্ঞান বলে। কোনাে ভাষার,
কোনাে লেখকের লেখার শৈলী (style) নির্ণয় করা হয় ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখায়
তাকে শৈলীবিজ্ঞান (stylistics) বলে। ভাষার বৈচিত্র্যের নানা সম্পর্ক,
লেখকের লেখার বাক্যগঠন, শব্দপ্রয়ােগের বিভিন্নতা এবং লেখকভেদে তার
বৈচিত্র, ইত্যাদি নানা বিষয় শৈলী বিশ্লেষণের অঙ্গ।সমাজ ভাষাবিজ্ঞান: ভাষা কীভাবে সমাজে কাজ করে, সমাজ কীভাবে ভাষার উপর প্রভাব বিস্তার করে, ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখা এসমস্ত বিষয় নিয়ে আলােচনা করে, তাকে বলে সমাজভাষাবিজ্ঞান (Socio Linguistics) . সমাজ - বিজ্ঞান আর ভাষাবিজ্ঞানের যৌথ ক্ষেত্রের নানা সূত্র ও ধারণা প্রয়ােগে দেখা যায় যে ভাষার পরিবর্তন, পরিমার্জনের ক্ষেত্রে সমাজ প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে প্রভাব ফেলে। অর্থাৎ ভাষা থেকে আগত উপভাষা, শ্রেণি উপভাষা, সমাজ উপভাষা ইত্যাদির দিকে লক্ষ রাখলে মানুষের সামাজিক চরিত্র ও অবস্থান নির্ণয় সহজতর হয়। তাই সমাজবিজ্ঞান ও ভাষাবিজ্ঞানের পারস্পরিক নির্ভরতায় গড়ে ওঠে সমাজ ভাষাবিজ্ঞান।
প্রশ্নঃ২ ভাষাবিজ্ঞানের ধারাকে
প্রধানত কটি ভাগে ভাগ করা হয় ও কী কী? যে-কোনাে একটি ধারার সংক্ষিপ্ত
বিবরণ দাও?
ロ ভাষার যে শাখায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি তথা বিজ্ঞান নির্ভর বিচার বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ভাষা সংক্রান্ত আলােচনা ও চর্চা করা হয়, তাকে ভাষাবিজ্ঞান বলে।
ভাষাবিজ্ঞানের বহুল প্রচলিত শাখা তিনটি, যথা—
বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান : অর্থনিরপেক্ষভাবে সমকালীন জীবন্ত ভাষার বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণ
ロ ভাষার যে শাখায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি তথা বিজ্ঞান নির্ভর বিচার বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ভাষা সংক্রান্ত আলােচনা ও চর্চা করা হয়, তাকে ভাষাবিজ্ঞান বলে।
ভাষাবিজ্ঞানের বহুল প্রচলিত শাখা তিনটি, যথা—
- বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান
- তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান
- ঐতিহাসিক বা কালানুক্রমিক ভাষাবিজ্ঞান
ও বর্ণনা ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখায় আলােচিত হয়, তাকে বর্ণনামূলক ভাষা বিজ্ঞান
বলে। একটি নির্দিষ্ট কালের ভাষাচর্চা হয়ে থাকে বলে একে এককালিক ভাষাবিজ্ঞানও
বলে। বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের জনক ফেদিনা দ্য সােস্যুর হলেও এই শাখাকে
আরও সমৃদ্ধ করেছেন প্লীসন, হকেট, ব্লমফিল্ড প্রমুখ।
জীবন্ত ভাষার গুরুত্ব এখানে অপরিসীম।কথ্য ভাষার রূপইএর বিবেচ্য বলে এই ভাষাচর্চায় চারটি বিষয় প্রাধান্য পায়—(i) ধ্বনিবিজ্ঞান বা ধ্বনিতত্ত্ব, (ii) রূপতত্ত্ব, (iii) বাক্যতত্ত্ব, (iv) শব্দার্থতত্ত্ব।
জীবন্ত ভাষার গুরুত্ব এখানে অপরিসীম।কথ্য ভাষার রূপইএর বিবেচ্য বলে এই ভাষাচর্চায় চারটি বিষয় প্রাধান্য পায়—(i) ধ্বনিবিজ্ঞান বা ধ্বনিতত্ত্ব, (ii) রূপতত্ত্ব, (iii) বাক্যতত্ত্ব, (iv) শব্দার্থতত্ত্ব।
📢 Completed H.S Bengali Suggestion 2022 Downloading PDf File