Class 12 Bengali Suggestion Notes 2022

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২২ আগের পৃষ্ঠাতে যেতে হলে ক্লিক করো >>>

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন পরিবর্তিত সিলেবাস অনুযায়ী সূচীপত্রএখানে সাজেশন তৈরি করা হয়েছে। 

গল্প :
ভাত
ভারতবর্ষ
কবিতাঃ
রূপনারানের কূলে
মহুয়ার দেশ
আমি দেখি
ক্রন্দনরতা জননীর পাশে
নাটকঃ
বিভাব
নানা রঙের দিন
আন্তর্জাতিক কবিতা ও গল্পঃ
অলৌকিক
পূর্ণাঙ্গ সহায়ক গ্রন্থঃ
গারো পাহাড়ের নীচে
ছাতির বদলে হাতি
হাত বাড়াও
পূর্ণাঙ্গ সহায়ক গ্রন্থঃ
গারো পাহাড়ের নীচে
📢 Bengali Suggestion PDf No -1 Download Link 📥

📢 সাজেশন পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড উপরে লিংক দেওয়া আছে 

ছাতির বদলে হাতি সাজেশন

১ প্রশ্নঃ “কিন্তু সেই মহাজনের পন্থা আজও টিকে আছে।” মহাজনের পন্থাটি কী? ছাতির বদলে হাতি রচনা অবলম্বনে এ কথার সত্যতা নিরূপণ করাে?
অথবা,'ছাতির বদলে হাতি’ প্রবন্ধ অবলম্বনে গারাে পাহাড়ের অধিবাসীদের উপর মহাজনদের শােষণের যে-গল্পটি  বর্ণনা করাে?
২ প্রশ্নঃ “তাতে চেংমানের চোখ কপালে উঠল” – চেংমান কে? তার চোখ কপালে ওঠার কারণ কী?
অথবা, “... চেংমানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে”-চেংমান কে? কেন তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল কেন?
অথবা “নতুন ছাতি মাথায় দিয়ে মহাফুর্তিতে বাড়ির দিকে সে চলল”—কার কথা? সে নতুন ছাতি কীভাবে পেল?
৩ প্রশ্নঃ “সে একদিন ছিল বটে।”—কার লেখা কোন্ রচনার অন্তর্গত? সে এক দিন বলতে কোন দিনের কথা বলা হয়েছে? সেদিনের পরিচয় দাও?

ছাতির বদলে হাতি সাজেশন উত্তর সেট

১ প্রশ্নঃ “কিন্তু সেই মহাজনের পন্থা আজও টিকে আছে।” মহাজনের পন্থাটি কী? ছাতির বদলে হাতি রচনা অবলম্বনে এ কথার সত্যতা নিরূপণ করাে?
অথবা,'ছাতির বদলে হাতি’ প্রবন্ধ অবলম্বনে গারাে পাহাড়ের অধিবাসীদের উপর মহাজনদের শােষণের যে-গল্পটি  বর্ণনা করাে?
ロ পদাতিক কবি সুভাষ মুখােপাধ্যায় রচিত ‘আমার বাংলা' গ্রন্থের ‘ছাতির বদলে হাতি’ প্রবন্ধে দরিদ্র প্রজাদের উপর মহাজনি নির্যাতনের নির্মম কাহিনি নিখুঁতভাবে চিত্রায়িত হয়েছে। দরিদ্র প্রজাদের অসহায়তা বুঝে তাদের সাহায্য করার নাম করে মহাজন মারফত আসলে বিপুল পরিমাণ সুদ-সহ তার সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার ঘৃণ্য প্রথাটিকেই লেখক ‘মহাজনি পন্থা বলেউল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেছেন—সে সময় বন্ধকি-তেজারতির তেজ এতই জোরালাে ছিল যে, মহাজনদের মৃত্যুর পরও মহাজনি পন্থা টিকে থাকত। মহাজনি অত্যাচারের প্রথম কাহিনি চেংমানকে নিয়ে। হালুয়াঘাট বন্দরে সওদা করে ফেরার সময় চেংমান বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে মনমােহন মহাজনের দোকানের ঝাঁপির নীচে আশ্রয় নেয়। বৃষ্টি না থামলে স্বয়ং মনমােহন মহাজন তার কলকাতা থেকে আনানাে নতুন ছাতা চেংমানকে দিয়ে দেয় ও পরবর্তী বেশ কয়েকদিন চাষি দাম মেটাতে এলেও সে দাম নেয় না। কয়েক বছর পর মহাজন চেংমানকে ধরে সুদসমেত ছাতার দাম হাজার টাকা ধার্য করে।যা প্রায় ছত্রিশ বিঘা জমির দামের তুল্য। পাশাপাশি উল্লেখ্য কুটিশ্বর সাহার কাহিনি। কুমারগাঁতির নিবেদন সরকার তার মুদিখানায় দু-দশবছর ধারে মশলাপাতি কিনলে মহাজন কুটিশ্বর তার কাছ থেকে ছেষট্টি বিঘা জমি কেড়ে নেয়। অন্যদিকে আর-এক ধুরন্ধর মহাজন এক চাষিকে সামান্য কোদাল দিয়ে, তার বদলে পনেরাে বিঘা জমি নিয়ে নেয়। এভাবে মহাজনি শােষণে আক্রান্ত সাধারণ মানুষেরা অতিষ্ঠ উঠেছিল।

২ প্রশ্নঃ “তাতে চেংমানের চোখ কপালে উঠল” – চেংমান কে? তার চোখ কপালে ওঠার কারণ কী?
অথবা, “চেংমানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে”-চেংমান কে? কেন তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল কেন?
অথবা “নতুন ছাতি মাথায় দিয়ে মহাফুর্তিতে বাড়ির দিকে সে চলল”—কার কথা? সে নতুন ছাতি কীভাবে পেল?
ロ সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের ‘ছাতির বদলে হাতি’ প্রবন্ধের এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হল চেংমান নামক গারাে চাষি, যে ধূর্ত মহাজনের কৌশল না বুঝতে পেরে সর্বহারা হয়েছিল।হালুয়াঘাট বন্দরের মনমােহন মহা -জনের বন্ধকি-তেজারতির ফাঁদে পড়েই সর্বস্বান্ত হয়েছিল গারাে চাষি চেংমান। হালুয়াঘাট বন্দরে সওদা করতে এসে মুশলধারে বৃষ্টিতে আটকে গেলে মহাজনের দোকানের ঝাঁপির নীচে আশ্রয় নেয় সে।

চেংমানের বিপদদের দুরবস্থা দেখে করুণার অবতার হয়ে মনমােহন খাস কলকাতা থেকে আনা আন কোরা নতুন একটা ছাতা তাকে দিয়ে দেয়। ঘটনার আকস্মিকতায় চেংমান হতবাক হলেও, মনমােহন তাকে ভরসা দিয়ে বলে সুবিধামতাে পয়সা দিলেই হবে। সরলহৃদয় চেংমান মহাজনের কৌশল না বুঝে বাড়ি চলে যায়। বারবার পাওনা মেটাতে গেলে মহাজন আমল দেয় না দেখে ক্রমে চেংমান ভুলে যায় ধারের কথা। কয়েক বছর পর মনমােহন তাকে ধরে চুড়ান্ত পরিণাম, ধার মেটাতে চাইলে হিসাব দেখে চেংমান অবাক হয়।।সামান্য ছাতার বদলে মহাজন দাবি করে হাজার খানেক টাকা। চক্রবৃদ্ধি সুদের হারে যা প্রায় হাতির দামের সমান। এই ঘটনায় সামান্য গারাে চাষি চেংমানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।

৩ প্রশ্নঃ “সে একদিন ছিল বটে।”—কার লেখা কোন্ রচনার অন্তর্গত? সে এক দিন বলতে কোন দিনের কথা বলা হয়েছে? সেদিনের পরিচয় দাও?
ロ আলােচ্য উদ্ধৃতিটি সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের লেখা 'ছাতির বদলে হাতি’ প্রবন্ধের অন্তর্গত। ‘সে এক দিন’ বলতে অবিভক্ত বাংলার সেইসব দিনকে বােঝানাে হয়েছে, যেখানে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ
ক্ষমতাশালীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। গারাে পাহাড়ের পাহাড়ি এলাকার জনজাতিরা সিংহসম প্রতাপশালী জমিদার, জোতদার, মহাজন ও ব্রিটিশ শাসনের পদানত। অক্ষয়কুমার দত্ত তাঁর ‘পল্লীগ্রামস্থ প্রজাদিগের দুরবস্থা রচনায় বলেছিলেন যে-কোনাে কোনাে প্রদেশে প্রজাদের জীবন যেন তাদের হয়েও নয়। সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের ছাতির বদলে হাতি’ অংশে গারাে পাহাড়ের আদিবাসীদের জীবনকথা সে মন্তব্যই স্মরণ করায়। ডালু, হাজং, গারাে প্রভৃতি প্রান্তীয় মানুষেরা একাধারে জমিদার, জোতদার, ও ব্রিটিশ শাসকের
বহুমুখী শােষণের চাপে সর্বহারা হয়ে পড়েছিল। দ্বিগুণ সুদ-সহ হাজার রকম অতিরিক্ত করভারে তাদের জীবন ছিল জর্জরিত। এ ছাড়াও ছিল নানকার প্রথার অভিশাপ এবং পারস্পরিক জাতিগত বিভেদ। খাজনা না দিলে অকথ্য দৈহিক নির্যাতন, সম্পত্তি নিলাম ছিল নিত্যসঙ্গী। তাদের মতে ‘লালনিশান’ খুঁটি গাড়ার আগে তারা ছিল অন্ধের জাত। সাম্যবাদী চেতনা উদ্ভবের আগে পর্যন্ত তারা ভাবত ক্ষমতাশালীর দাপটের বেড়াজালে বংশপরম্পরায় এভাবেই চলতে থাকবে তাদের চিরকালীন জীবনপ্রবাহ।

পূর্ণাঙ্গ সহায়ক গ্রন্থঃ
হাত বাড়াও সাজেশন

১ প্রশ্নঃ “সেই দুটি জ্বলন্ত চোখ শান্তি চায়।”- কোন চোখের কথা বলা হয়েছে? সে কীরুপ শান্তি চায়? ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লেখক কী উপলব্ধিতে উপনীত হয়েছিলেন?***
অথবা, “সেই দুটি জ্বলন্ত চোখ শান্তি চায়।” – কার কথা বলা হয়েছে? লেখক তাকে কীভাবে এবং কেন সাহায্য করতে বলেছেন?
২ প্রশ্নঃ “তােমরাও হাত বাড়াও, তাকে সাহায্য করাে” - লেখক কাকে, কীভাবে কেন সাহায্য করতে বলেছেন?***
৩ প্রশ্নঃ “সরু লিকলিকে আঙুল দিয়ে সেই সব খুনীদের করছে।” – এখানে খুনীদের’ বলতে লেখক কাছে বুঝিয়েছেন? ‘সে শনাক্ত করেছে’ বলার কারণ কী?***
৪ প্রশ্নঃ লেখক সুভাষ মুখােপাধ্যায় পঞ্চাশের মন্বন্তরের এক সকালে কী দৃশ্য দেখেছিলেন? সেই দৃশ্যের তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও?***

হাত বাড়াও সাজেশন উত্তর সেট

১ প্রশ্নঃ “সেই দুটি জ্বলন্ত চোখ শান্তি চায়।”- কোন চোখের কথা বলা হয়েছে? সে কীরুপ শান্তি চায়? ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লেখক কী উপলব্ধিতে উপনীত হয়েছিলেন?***
অথবা, “সেই দুটি জ্বলন্ত চোখ শান্তি চায়।” – কার কথা বলা হয়েছে? লেখক তাকে কীভাবে এবং কেন সাহায্য করতে বলেছেন?
ロ লেখক সুভাষ মুখােপাধ্যায় তার ‘আমার বাংলা’ গ্রন্থের হাত বাড়াও’ রচনায় খুনী বলতে ইংরেজ সরকার ও দেশীয় আড়তদার মজুতদারদের বুঝিয়েছেন, যাদের স্বেচ্ছায় তৈরি দুর্ভিক্ষের কবলে বাংলার অসংখ্য মানুষ পড়েছিল। এই গুটিকয়েক মানুষের লােভ কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করে নিজেদের উদর পরিপূর্ণ করতে চেয়েছিল। এখানে এদেরই ‘খুনী’ বলা হয়েছে।

মার্কসবাদী লেখক সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের কাছে দুর্ভিক্ষ কবলিত সেই কিশােরের মায়াময় জ্বলন্ত দৃষ্টি শান্তি ও সাম্যের লক্ষ্যে এক ধারাবাহিক বিপ্লবের প্রতীক হয়ে উঠেছে। লেখক বলেছেন, ছেলেটি শান্তি চায়। সে চায় দুর্ভিক্ষ, দাঙ্গা, যুদ্ধ বন্ধ হােক। বাংলা পুনরায় গােলাভরা ধান, মাঠভরা শস্যে পরিপূর্ণ হয়ে উঠুক। প্রত্যেক মানুষ অন্নের অধিকারী হােক, আর কাউকে যেন অনাহারে মৃত্যুবরণ করতে না হয়
লেখক উপলদ্ধি করেছেন, ছেলেটি তার ভাঙা মাজা নিয়েও উঠে দাঁড়ানাের চেষ্টা করছে। তার এই উঠে দাঁড়ানাের প্রচেষ্টা আসলে সামাজিক অবক্ষয় থেকে মুক্তি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। সংবেদনশীল লেখক মনে করেছেন, উদাসীন উচ্চবিত্ত ও স্বার্থপর মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের সচেতনতা এই সামাজিক অসুখ সারাতে সক্ষম। তাই লেখক সকলকে সচেতন, সংবেদনশীল হওয়ার বার্তা জানিয়েছেন। সকলকে সাহায্যের হাতবাড়িয়ে দিতে বলেছেন সেই মন্বন্তরে প্রতীক কিশােরের দিকে।

২ প্রশ্নঃ “তােমরাও হাত বাড়াও, তাকে সাহায্য করাে” - লেখক কাকে, কীভাবে কেন সাহায্য করতে বলেছেন?***
ロ সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের ‘আমার বাংলা গদ্য গ্রন্থের হাত বাড়াও' রচনা থেকে উদ্ধৃতিটি গৃহীত। আলােচ্য অংশে পঞ্চাশের আকালে বুভুক্ষু বারাে- তেরাে বছরের সম্পূর্ণ উলঙ্গ অনাহারী এক কিশােরকে সাহায্য করার কথা বলা হয়েছে। দুর্ভিক্ষ আর মন্বন্তর সেই ছেলেটির মধ্যে এনে দিয়েছে এক ভয়ংকর জান্তব বিকৃতি। তার জ্বলন্ত দুটো চোখ সন্ধান করছে সেইসব খুনীদের, যাদের ষড়যন্ত্রে শস্য-শ্যামলা বাংলা অনাহারের শ্মশানে পরিণত হয়েছে। সে শান্তি চায়। সে দুর্ভিক্ষকবলিত হয়েও বেঁচে থাকার, উঠে দাঁড়ানাের স্বপ্ন দেখে। আমাদের সকলের সাহায্যের হাত তার দিকে বাড়িয়ে দিতে হবে।

উদাসীন উচ্চবিত্ত আর স্বার্থপর মধ্যবিত্তের সমাজের এই বৃহত্তর অসুখ সারাতে সক্ষম। মার্কসীয় আদর্শে বিশ্বাসী লেখকের স্পর্শকাতর মন তাই প্রতিটি মানুষের মনে ছড়িয়ে দিতে চায় সংবেদন, গড়ে তুলতে চায় সচেতনতা। আকালের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, পরস্পর হাত মিলিয়ে অসহনীয় সেই
পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দেন লেখক। তাই তিনি চান বাংলার বুকজোড়া সােনালি ফসলে, চাষির গােলাভরা ধানে, কারখানার অসংখ্য বলিষ্ঠ হাতের বন্ধনমুক্ত আন্দোলনে বাংলায় সুখ-শান্তি ফিরে আসুক। সমবেত সাহায্যের হাত যুদ্ধ আর দুর্ভিক্ষের অন্ধকার থেকে ‘অমৃতের পুত্র মানুষকে আলাের উৎসে ফিরিয়ে এনে শ্রেণিহীন সমাজ গড়ে তুলবে।

৩ প্রশ্নঃ “সরু লিকলিকে আঙুল দিয়ে সেই সব খুনীদের করছে।” – এখানে খুনীদের’ বলতে লেখক কাছে বুঝিয়েছেন? ‘সে শনাক্ত করেছে’ বলার কারণ কী?
ロ সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের ‘আমার বাংলা গদ্য গ্রন্থের 'হাত বাড়াও’রচনা থেকে গৃহীত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও  ৫০ মন্বন্তরে বিপর্যস্ত বাংলার দুর্ভাগ্যগ্রস্ত অসহায় মানুষদের প্রতিনিধিরূপে বারাে-তেরাে বছরের এক শীর্ণকায় উলঙ্গ ছেলে তার সরু লিকলিকে আঙুল দিয়ে সেইসব খুনীদের শনাক্ত করছে।‘সেইসব খুনী’ বলতে যাদের ষড়যন্ত্র আসমুদ্রহিমাচল সােনা ছড়ানাে শস্যশ্যামল বাংলাদেশকে যুদ্ধ আর দুর্ভিক্ষের ঘনায়মান অন্ধকারে অনাহারের শ্মশানে পরিণত করেছিল তাদের বােঝানাে হয়েছে।

১৩৫০ বঙ্গাব্দে প্রকৃতির অক্ষমতা আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ইংরেজ সরকার-সহ কিছু আড়তদার-মজুতদারের বানিয়ে তােলা বৃহত্তর আকালের পরিস্থিতির কাছে অসহায় যাদের, যে কারণে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল বাংলার সিংহভাগ শ্রমজীবী মানুষ। গুটিকয়েক মানুষের লােভ তথা লাভের নেশা অধিকাংশ মানুষকে অনাহারী বানিয়ে তুলেছিল। এইসকল পুঁজিপতিরা শ্রমের যথাযথ মূল্য না দিয়ে কৃত্রিমভাবে অভাব সৃষ্টি করে। হাঁটতে না পারা, মাজা পড়ে যাওয়া শীর্ণকায় ছেলেটি এইসকল অসহায় মানুষের প্রতিনিধি, সে তার সরু লিকলিকে আঙুল দিয়ে শনাক্ত করেছে সেই মানুষগুলিকে যারা গ্রাম বাংলার মানুষের স্বপ্নকে খুন করেছে।

৪ প্রশ্নঃ লেখক সুভাষ মুখােপাধ্যায় পঞ্চাশের মন্বন্তরের এক সকালে কী দৃশ্য দেখেছিলেন? সেই দৃশ্যের তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও?***
ロ সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের 'হাত বাড়াও’ রচনায় আমরা দেখি যে, ‘পাতলা কুয়াশায় ঢাকা পঞ্চাশের আকাল-এর এক সকাল’-এ রাজবাড়ির বাজারে বসে লেখক ফরিদপুরের ট্রেনের জন্য অপেক্ষা কর- ছিলেন। সেই সময়েই তিনি একটু দূরে থাকা মিলিটারি ছাউনি-সংলগ্ন স্টেশন রােডে এক অদ্ভত জন্তু
দেখতে পান। চারপায়ে এগিয়ে-আসা সেই জন্তুটির সঙ্গে চেনা কোনাে জন্তুরই মিল খুঁজে পাননি লেখক। কুয়াশাতে ওর চোখদুটো জ্বলজ্বল করছিল আর, ওই চোখদুটোতে এমন এক মায়া ছিল, যা লেখকের বুকের রক্ত হিম করে দিচ্ছিল। কিন্তু সেটি সামনে আসতেই লেখক স্তম্ভিত হয়ে যান। দেখেন যে, মাজা-পড়ে যাওয়া, বারাে-তেরােবছরের এক উলঙ্গ বালক চারপায়ে চলতে চলতে রাস্তা থেকে খুঁটে খুঁটে চাল আর ছােলা খাচ্ছে। তার হাতের আঙুলের আগাগুলাে সরু সরু, শরীরে লােমের লেশমাত্র নেই দুর্ভিক্ষ পীড়িত এই প্রতিবন্ধী মানবশিশুর ভয়ংকর চেহারা ও ক্রিয়াকলাপের দৃশ্যই দেখেছিলেন লেখক।

সুজলা-সুফলা শষ্যশ্যামলা বাংলাদেশে লেখক প্রত্যক্ষ করেছেন মন্বন্তরের করাল ছায়া দেখেছেন ‘অমৃতস্য-পুত্র’ মানবশিশু চারপেয়ে জন্তুর মতাে রাস্তায়-পড়ে থাকা চাল আর ছােলা খুঁটে খুঁটে খাচ্ছে। দুর্ভিক্ষের ভয়ংকরতা এই প্রতিবন্ধী কিশােরের চোখ দিয়ে যেন লেখকের সামনে ধরা পড়েছে। এই
বীভৎস-দর্শন ছেলেটিকে দেখেই লেখক দুর্ভিক্ষের কারণ অনুসন্ধানে ব্রতী হয়েছেন। পরবর্তীতে তাই তার মনে হয়েছে, ছেলেটি যেন তার সরু লিকলিকে আঙুল দিয়ে সেইসব খুনিদের শনাক্ত করছে যারা গ্রাম শহরে জীবনের গলায় মৃত্যুর ফাস পরাচ্ছে, মানুষের মাথা উঁচু করে-বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে।

📢 Bengali Suggestion PDf No -2


⊙ বাঙালির চিত্রকলা
⊙ বাংলা চলচ্চিত্রের কথা
⊙ বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা
⊙ বাঙালির ক্রীড়া সংস্কৃতি
⊙  ভাষা

Type Here ....

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন