B.ED 2nd Semester Course - VIII (1.2.8.A) Mark - 2 Notes

b.ed semester 2 notes

B.ED 2nd Semester Course - VIII (1.2.8.A) Knowledge and Curriculum Notes

Mark - 2 Notes b.ed 2nd Sem Suggestion

Q1. প্রশিক্ষণ কাকে বলে?
▻ প্রশিক্ষণ বলতে বোঝায় মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণীর আচরণকে নিয়ন্ত্রণ বা নির্দেশিত করার পদ্ধতিগত কর্মসূচি যা নির্দিষ্ট আচরণ সম্পাদনের উদ্দেশ্যে করা হয়ে থাকে। শিক্ষার্থীর দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যই প্রশিক্ষণেরও প্রয়োজন হয়। এটিও নির্দেশনার মতো শিক্ষণের একটি অংশমাত্র। প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে Robertson. E. (1992) বলেছেন, "The focus of training is on the development of skills, on knowing how
rather than knowing that... Sometimes training is reserved for use in the context of the teaching of routine tasks which allow total mastery, but this is by no means always the case."

Q2. জ্ঞান ও তথ্যের মধ্যে পার্থক্য দুটি লিখুন।
▻ জ্ঞান ও তথ্যের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল— (i) তথ্য হল process data। অপর দিকে জ্ঞান Set of information’-এর সঙ্গে যুক্ত। তথ্য হল অর্থপূর্ণ data, ব্যবহারযোগ্য তথ্য (useful information) হল জ্ঞান।
(ii) তথ্য সত্য-মিথ্যা কিম্বা সঠিক-ভুল উভয়ই হতে পারে। তথ্য পরীক্ষিত (Verfied) নয়। কিন্তু জ্ঞান হল পরীক্ষিত সত্য ও নির্ভুল।

Q3. দক্ষতা কাকে বলে?
▻ Merriam Webster Dictionary-এর মতে দক্ষতা হল – “The ability to do something that comes from training experience or practice.” অর্থাৎ, কার্যক্ষেত্রে জ্ঞানের প্রয়োগের ক্ষমতা হল দক্ষতা।

Q4. শিক্ষণ কাকে বলে?
▻ শিক্ষাবিদ্N. L. Gage (1962)-এর মতে, Teaching is a form of interpersonal influence aimed at changing the behaviour potential at another person.” অর্থাৎ শিক্ষণ হল এক ধরনের আন্তঃসম্পর্কিত প্রভাবের একটি রূপ যার লক্ষ্য হল অন্য ব্যক্তির আচরণগত দক্ষতার পরিবর্তন।

Q5. বিশ্বাস কাকে বলে? (What is Belief?)
▻ বিশ্বাস হল সম্পূর্ণরূপে মানসিক ক্রিয়া। জ্ঞানবিদ্যায় (Epistemology) দার্শনিকরা বিশ্বাস বলতে বোঝায় Personal attitude associated with true or false ideas or concept.´। কেউ কেউ বলেন বিশ্বাস হল অনুমিত সত্য। এই জগৎ ও জগতের বিভিন্ন বিষয় বা ঘটনা সম্বন্ধে আমাদের প্রত্যেকের কিছু না কিছু অনুমান আছে, এই অনুমান হল বিশ্বাস। এই বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে মানুষের মূল্যবোধ (Value system)। মানুষের দেখা (Observation), শোনা (Hearing), পড়া (Reading), চিন্তাভাবনা (Thinking) ও অভিজ্ঞতা (Experience) প্রভৃতি থেকে গড়ে ওঠে মানুষের বিশ্বাস।

Q6. জ্ঞান ও দক্ষতার মধ্যে দুটি পার্থক্য লিখুন।
▻ জ্ঞান ও দক্ষতার মধ্যে পার্থক্যগুলি হল— (i) জ্ঞান হল তাত্ত্বিক (Theoritical) এবং দক্ষতা হল তত্ত্বের বাস্তব প্রয়োগ এবং প্রত্যাশিত ফললাভ। জ্ঞান হল তথ্য আহরণের প্রক্রিয়া এবং প্রয়োজনে এই তথ্যের
ব্যবহার বা প্রয়োগকৌশল হল দক্ষতা। (ii) শিখন ও অভিজ্ঞতার (Learning and experience) মাধ্যমে জ্ঞান অর্জিত হয়। এই জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে মস্তিস্ক (Brain)-এর ভূমিকা প্রধান। অপরদিকে প্রশিক্ষণ
(Training) ও অনুশীলনের (Practice) মাধ্যমে অর্জিত হয় দক্ষতা। দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে অনুশীলনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

Q7. বিশ্বাস ও যুক্তির মধ্যে পার্থক্য দুটি লিখুন। 
▻ বিশ্বাস ও যুক্তির মধ্যে পার্থক্যগুলি হল— (i) বিশ্বাস বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে তত্ত্বগত। কিন্তু যুক্তির একটি ব্যাবহারিক দিক আছে। (ii) বিশ্বাসের সঙ্গে ধর্মের একটি যোগাযোগ আছে। অনেক বিশ্বাসের উৎস হল
ধর্ম। অপরদিকে যুক্তি (Reason) হল বুদ্ধিপ্রসূত (Intellect), এটি ধর্ম-বিরোধী।

Q8. গান্ধিজির মতে শিক্ষা কী?
▻ গান্ধিজির মতে, শিক্ষা বলতে শুধু আক্ষরিক জ্ঞান অর্জন করাকে বোঝায় না। ব্যক্তিত্বের শিক্ষাই হল প্রকৃত শিক্ষা। শিক্ষা হল মানুষের অন্তর্নিহিত দৈহিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক শক্তির প্রকাশ। শিক্ষার কাজ হবে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্বের সর্বপ্রকার সত্তার পূর্ণাঙ্গ বিকাশ। তাই গান্ধিজি বলেছেন, “By education, I mean an allround drawing out of the best in child and man- body, mind and spirit."

Q9. গান্ধিজির শিক্ষাদর্শনের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করুন।
▻ গান্ধিজির শিক্ষাদর্শনের দুটি বৈশিষ্ট্য হল- (i) অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা : শিক্ষার্থীকে অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণরূপে গড়ে তোলা শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। অর্থাৎ শিক্ষার কাজ হবে শিক্ষার্থীকে কোনো একটি বৃত্তির উপযোগী করে গড়ে তোলা। তাই তিনি কর্মকেন্দ্রিক শিক্ষার কথা বলেছেন। কর্ম-অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিক্ষার্থী বৃত্তি বা পেশাগত দক্ষতা লাভ করবে। শিক্ষার চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হল যুবক ও যুবতিদের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বনির্ভরশীল করে তোলা।
(ii) স্বাবলম্বন বা আত্মনির্ভরতা : শিক্ষার একটি অন্যতম লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীকে স্বাবলম্বী রূপে গড়ে তোলা। শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য স্বনির্ভরতা অর্থাৎ অন্যের ওপর নির্ভর না করা একান্ত প্রয়োজন। গান্ধিজির শিক্ষা পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষা ও অর্থ উপার্জন (Earning while Learning) পাশাপাশি চলবে এবং এই উপার্জনের অর্থ দিয়ে শিক্ষার ব্যয়ভার মিটবে।

Q10. বিবেকানন্দের মতে শিক্ষার অর্থ কী?
▻ জীবনের লক্ষ্য হল পূর্ণতালাভ। প্রতিটি মানুষের মধ্যে রয়েছে পূর্ণতালাভের সম্ভাবনা। বিবেকানন্দের মতে শিক্ষা হল এই পূর্ণতার বহিঃপ্রকাশ। তাই তিনি বলেছেন Education is the manifestation of the perfection already in man" বিবেকানন্দের মতে, শিক্ষার কাজ হবে কৃত্রিম নিয়ন্ত্রণ ও বাইরের হস্তক্ষেপ ছাড়া শিশুর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও স্বাতন্ত্র অনুযায়ী স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিকাশের উপযুক্ত ব্যবস্থা করা। তার মতে বিশ্বের সমস্ত জ্ঞান মানুষের মনে বা অন্তরে সুপ্ত অবস্থায় আছে। শিক্ষার কাজ হবে আত্মোপলব্ধির মধ্যে দিয়ে এই জ্ঞান সংগ্রহ করা।

Q11.‘যুক্তি ও বিশ্বাস’-এর সম্পর্ক ব্যক্ত করুন।
▻ যুক্তি ও বিশ্বাসের মধ্যে যে সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায় তা হল—
(i) সত্যকে অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে যুক্তি ও বিশ্বাস একই পর্যায়ে পর্যবসিত
(ii) যুক্তি ও বিশ্বাস উভয়ই মানব প্রকৃতি ও দর্শন বিষয়ের বৈশিষ্ট্য বহন করে।
(iii) যুক্তি ও বিশ্বাস-এই দুটিই হল পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া।
(iv) বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে যুক্তি প্রধান ভূমিকা পালন করে।

Q12. শিক্ষণ ও প্রশিক্ষণের মধ্যে দুটি পার্থক্য লিখুন।
▻ শিক্ষণ ও প্রশিক্ষণের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল- (i) শিক্ষণের লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীর কাঙ্ক্ষিত আচরণ পরিবর্তনে সহায়তা করা। আচরণের পরিবর্তনের তিনটি উদ্দেশ্য হল — জ্ঞানমূলক, অনুভূতিমূলক ও
মানবিক ক্রিয়ার গতিসংক্রান্ত। অন্যদিকে প্রশিক্ষণের লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীর দক্ষতা লাভের বিকাশে সহায়তা করা। (ii) শিক্ষণের ক্ষেত্র হল জ্ঞানমূলক, অনুভুতিমূলক ও মানসিক ক্রিয়ার গতি সংক্রান্ত
এর জন্য বুদ্ধিবৃত্তির প্রয়োজন অনেক বেশি। অন্যদিকে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্র হল মানসিক ক্রিয়া গতিসংক্রান্ত। প্রশিক্ষণের জন্য সামান্য বুদ্ধিবৃত্তির সঙ্গে অনুশীলনের প্রয়োজন অনেক বেশি।

Q13.জ্ঞানবিদ্যার সংজ্ঞা দিন? 
▻ দর্শনের একটি অপরিহার্য ও অন্যতম শাখা হল জ্ঞানবিদ্যা। জ্ঞানবিদ্যার ইংরেজি প্রতিশব্দ হল ‘Epistemology"। সাধারণত দর্শনের যে শাখা জ্ঞানের উৎপত্তি, প্রকৃতি, সীমা ও বৈধতা নিয়ে আলোচনা করে তাকে বলা হয় জ্ঞানবিদ্যা বা জ্ঞানতত্ত্ব।

Q14. জ্ঞান বলতে কী বোঝায়?
অথবা, জ্ঞানের সংজ্ঞা দিন ?

▻ জ্ঞান হল যে-কোনো বিষয় (Subject) সম্বন্ধে তাত্ত্বিক ধারণা (Theoritical In- formation)। কোনো ব্যক্তি যখন বই, বৈদ্যুতিন মাধ্যম, গণমাধ্যম, বিশ্বকোষ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ও অন্যান্য মাধ্যমে (Source) বা উৎস থেকে কোনো বিষয় সম্পর্কে ধারণা (Concept), নীতি (Principles), তথ্য (Information) লাভ করে, (Knowledge)। Merriam Webstre Dictionary-এর মতে জ্ঞান হল ‘Awareness of something, the state of being aware of something.

Q15. জ্ঞান ও দক্ষতার মধ্যে সম্পর্ক ব্যক্ত করুন। 
▻ শিক্ষাক্ষেত্রে পঠন-পাঠনের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থী কোনো বিষয় সম্পর্কিত কিছু কিছু শব্দ, সংজ্ঞা, ধারণা সম্পর্কে প্রাথমিক পরিচিতি লাভ করে। অর্থাৎ, অর্জিত হয় জ্ঞান। প্রাথমিক পর্যায়ে অর্জিত সেই জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে চলতে থাকে চর্চা বা অনুশীলন এবং তার ফলে ব্যক্তি সেই বিষয়ে নানা সূত্র ও সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে পারে, যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়। অর্থাৎ, জ্ঞান উন্নীত হয় বোধে। এই
জ্ঞান ও বোধের ওপর ভিত্তি করে ব্যক্তি তার অনেক সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হয়। অর্থাৎ, ব্যক্তি তার বোধকে প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়। জ্ঞান ও বোধের পর প্রয়োগে এই উন্নীতকরণের পর পর্যায় ক্রমিকভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে ব্যক্তি দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হয়।

জ্ঞান ও বোধের পর প্রয়োগে এই উন্নীতকরণের পর পর্যায়ক্রমিকভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে ব্যক্তি দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। ব্যক্তি প্রয়োগধর্মীতা অর্জন করতে সক্ষম হলে যে সমস্ত কাজগুলি সহজে সম্পাদন করতে পারে। সেগুলি হল—তথ্য যাচাইকরণ, সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ, বিকল্প পদ্ধতি উদ্ভাবন, কার্যকরণ-ব্যাখ্যাকরণ, তথ্যের পর্যাপ্ততা যাচাইকরণ ইত্যাদি। এরপর অন্তিমপর্যায়ে দক্ষতা লাভের পর ব্যক্তি (শিক্ষার্থী) জ্ঞানের বিষয় সম্পর্কিত সরল চিত্র অঙ্কন, মানচিত্র অঙ্কন, চিত্রের বা মানচিত্রের নির্দিষ্ট কোনোকিছু চিহ্নিতকরণ করে। সুতরাং, জ্ঞানের তত্ত্বমূলক দিক ব্যবহারিক কার্যকারীতায় সার্থকতা লাভ করে দক্ষতায়।

Q16. শিক্ষাক্ষেত্রে স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের দুটি অবদান লিখুন।
▻ শিক্ষাক্ষেত্রে স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের দুটি অবদান হল— (i) 1908 খ্রিস্টাব্দে Calcutta Mathematical Society স্থাপন করা। (ii) 1916 খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ কলকাতায় সাউথ সাবারবান কলেজ (South Suburban College) প্রতিষ্ঠা করেন। যা 1924 খ্রিস্টাব্দে পুনঃনামকরণে আশুতোষ কলেজ নামে অভিহিত হয়।

Q17. জন ডিউই প্রস্তাবিত শিক্ষণ পদ্ধতিটি ব্যক্ত করুন।
▻ ডিউই ছিলেন বাস্তববাদী দার্শনিক। বহুবছর ধরে তিনি তাঁর শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে বাস্তবক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ডিউই-এর শিক্ষা পদ্ধতির মূল ভিত্তি হল- সক্রিয়তার নীতি। তিনি কর্মকেন্দ্রিক ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার পক্ষপাতী ছিলেন। নিষ্ক্রিয় পঠন-পাঠনের পরিবর্তে সক্রিয়তার মাধ্যমে বা কাজের মাধ্যমে অর্থাৎ কাজের দ্বারা শিক্ষালাভ (Learning by doing)-এর কথা বলেন। এটি সমস্যা সমাধান (Problem solving method) পদ্ধতি নামে খ্যাত।

Q18. শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্বায়নের সুবিধাগুলি লিখুন।
▻ শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্বায়নের সুবিধাগুলি হল- (i) বিশ্বায়নের ফলে আন্তর্জাতিক স্তরে শিক্ষার্থী সচলতা (Student Mobility) ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। Kim (2008)-এর মতে, 2000 সাল থেকে 2025 সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক ছাত্র বৃদ্ধির সংখ্যা দাঁড়াবে 1.8 মিলিয়ন (2000) থেকে 7.6 মিলিয়ন (2025)। এর অর্থ হল এই যে এই সময়কালের মধ্যে (2000-2025) বছরে আন্তর্জাতিক ছাত্র বৃদ্ধি পাবে 6% যা বিগত দুই দশকে ছিল 4%। (ii) শুধু শিক্ষার্থী সচলতা নয়, শিক্ষক সচলতা (Teacher Mobility) ও বিশ্বায়নের ফলে বৃদ্ধি পায়। উৎকৃষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির উৎকর্ষতা বজায় রাখতে বিদেশ থেকে উৎকৃষ্ট মানের শিক্ষক-শিক্ষিকা আমদানি করা হয়। প্রসঙ্গত পশ্চিমবঙ্গের প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলা যায়। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য বিদেশ থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়ে আসার পরিকল্পনা গৃহীত হয়। ফলে আন্তর্জাতিক স্তরে মানব সম্পদের আদানপ্রদান ঘটে। ফলে সারা বিশ্বব্যাপী উচ্চশিক্ষার মানের সমতা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়।

Q19. ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দের অর্থ কী?
▻‘ধর্মনিরেপক্ষতা’ (Secularism) শব্দটি নানাদিক থেকে অর্থবোধক। স্বাভাবিক ভাবেই এই ব্যাখ্যা করা হয় নানাভাবে। Secularism শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন জর্জ জেকব 1851 খ্রিস্টাব্দে। জর্জ জেকব ধর্মের কোনোরকম সমালোচনা ছাড়া, সমাজে শৃঙ্খলা আনার জন্য তার এই ধর্মনিরেপক্ষতার ধারণা প্রকাশ করেন। জেকব এই মতবাদকে বিস্তৃত করে বলেন যে, “ধর্মনিরপেক্ষতা খ্রিস্টধর্মের বিরুদ্ধে কোনো মতবাদ নয়। এটি একটি স্বাধীন সত্তা। ধর্মের অস্তিত্ব নিয়ে এটি কোনো প্রশ্ন তোলে না, কিন্তু অন্যদের
ধর্মনিরপেক্ষ হতে উৎসাহিত করে।

Q20. সমাজে নিরপেক্ষতার আদর্শের প্রসারে শিক্ষার দুটি ভূমিকা উল্লেখ করুন।
▻ সমাজে নিরপেক্ষতার আদর্শের প্রসারে শিক্ষার দুটি ভূমিকা হল— (i) শিক্ষার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক হানাহানির চেয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির খবরকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরা যায়। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক বিভাজনের সুদূরপ্রসারী ফলাফল সম্বন্ধে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা যায়, যা সমাজে নিরপেক্ষতার আদর্শ প্রসারে বেশ ফলপ্রসূ। (ii) নিরপেক্ষতার আদর্শ প্রসারে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ভুল তথ্য প্রচার বা গুজব একটি অন্যতম অন্তরায়। শিক্ষার মাধ্যমে এই ধর্মীয় সম্প্রদায় সম্পর্কে ভুল তথ্যের প্রচার বা গুজব ছড়ানো বন্ধ করা সম্ভব।

Q21. নিরক্ষরতার কারণগুলি বর্ণনা করুন।
▻ নিরক্ষরতার কারণগুলি হল- (1) দারিদ্র্য (Poverty) : দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। দারিদ্র্য যেমন নিরক্ষরতার ফল তেমনি নিরক্ষরতার মূলে দারিদ্র্যের ভূমিকা অপরিসীম। পৃথিবীর অনুন্নত দেশ যথা— ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, প্রভৃতি নিরক্ষরতার হার তুলনামূলকভাবে বেশি। সুতরাং নিরক্ষরতার মূলে দারিদ্র্যের ভূমিকাকে অস্বীকার করা যায় না। (2) আঞ্চলিক বৈষম্য (Geographical / Regional Disparity) : ভারতবর্ষ হল বিশাল দেশ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উন্নয়নের ধারার হার সমান নয়। কিছু কিছু রাজ্যের অঞ্চলগুলি শাসকগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক দিক থেকে কেন্দ্র ও রাজ্যসরকার অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার। ফলে এই সমস্ত অঞ্চল (বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল) অর্থনৈতিক ও শিক্ষার দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে। এছাড়া সুযোগসুবিধার দিক থেকে শহরের তুলনায় গ্রামগুলি পিছিয়ে রয়েছে। এই সব কারণে গ্রামে ও অনুন্নত রাজ্যগুলিতে সাক্ষরতার হার কম ও নিরক্ষরতার হার বেশি।

Q22. সমাজের উপর নিরক্ষরতার দুটি প্রভাব ব্যক্ত করুন।
▻ সমাজের উপর নিরক্ষরতার দুটি প্রভাব হল- (i) নিরক্ষর ব্যক্তিরা নিজেরা আধুনিক উৎপাদনকৌশল প্রয়োগ করতে পারেনা, বরং অপরে প্রয়োগ করতে চাইলে বাধাদান করে। ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতীয় উৎপাদনের হার কমে যায়, যা দেশের অগ্রগতি ব্যাহত করে। (ii) নিরক্ষর মানুষ সাধারণত নানা বিষয়ে অন্ধ, কুসংস্কারচ্ছন্ন ও রক্ষণশীল হন। ধর্ম, জাতি, বর্ণ ইত্যাদির মধ্যে জীবনকে সীমাবদ্ধ রেখে কলহ, বিবাদ লিপ্ত থাকেন এতে জাতীয় সংহতি বিনষ্ট হয়।

Q23. ভারতে সামাজিক দিক থেকে পশ্চাদপদ গোষ্ঠী বলতে কাদের বোঝানো হয়?
অথবা, সমাজে পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠী / সম্প্রদায় কাকে বলে?
▻ ভারতবর্ষের যে সকল মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে অত্যাচার, অবিচার ও উৎপীড়নের শিকার হয়েছে এবং সবরকমের সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, সেই সমস্ত হতভাগ্য মানুষের সমষ্টিকে পশ্চাদপদ গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় বলে।

Q24. বহুসংস্কৃতিবাদ বলতে কী বোঝায়? 
অথবা, বহুসংস্কৃতিবাদ কী? 
▻ যখন একটি বৃহৎ সমাজে সাংস্কৃতিক ভিত্তির ওপর নির্ভর করে ছোটো ছোটো দল গুলি নিজেদের অভিনব সাংস্কৃতিক পরিচিতি, মূল্যবোধ ও ধারা সমাজের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে বজায় রাখতে পারে এবং সমাজে যখন তাদের কর্তৃত্বপূর্ণ সংস্কৃতির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় না, তখন তাকে বহুসংস্কৃতিবাদ বলে।

Q25. স্থিতিশীল উন্নয়নের দুটি বৈশিষ্ট্য লিখুন।
▻ স্থিতিশীল উন্নয়নের দুটি বৈশিষ্ট্য হল- (i) স্থিতিশীল উন্নয়ন সর্বদা সম্পদের পরিকল্পনামাফিক ও বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভর করে।  (ii) এর মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদের গুণমান ও কার্যকারিতা বজায় রেখেও সর্বাধিক অর্থনৈতিক সুবিধা আদায় করা যায়।

Q26. বিশ্বায়ন এর সংজ্ঞা দিন।
অথবা, বিশ্বায়ন কী?

▻অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বিশ্বায়ন এর সংজ্ঞায় বলেছেন-“বিশ্বায়ন হল মানবিক মিথস্ক্রিয়া প্রক্রিয়ার ঘনীভবন, যার মধ্যে জড়িত রয়েছে, ভ্রমণ, বাণিজ্য, অভিবাসন জ্ঞানের প্রসার, যা হাজার বছর ধরে পৃথিবীর অগ্রগতিকে একটি নির্দিষ্ট আকার প্রদান করেছে।" বিশ্বায়ন বলতে আমরা যা বুঝি তা হল বিশ্বের সকল দেশ, তাদের ব্যাবসাবাণিজ্য,বাজার ব্যবস্থা এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও পারস্পরিক নির্ভরশীলতা। এটি অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত উপাদানের সমষ্টি।


Q27. বহুকৃষ্টি সমন্বিত শিক্ষা কী? 
▻ বহুকৃষ্টি সমন্বিত শিক্ষা হল এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা যেখানে একাধিক সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত শিক্ষার্থীরা পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের মাধ্যমে নিজ সংস্কৃতি  বজায় রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষাগ্রহণ করে। Slecter এবং Grant (2009) Multicultural Eduation' শব্দটিকে ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করেন। তাঁদের মতে, বিভিন্ন জাতি, ভাষা, সামাজিক স্তর, সংস্কৃতি পূর্ণ শিক্ষার্থী, এমনকি বিভিন্ন প্রকার প্রতিবন্ধী ও লিঙ্গগত বৈষম্যপূর্ণ শিক্ষার্থীরা যখন একত্রে শিক্ষাগ্রহণ করে তখন তাকে বলে বহুকৃষ্টি সমন্বিত শিক্ষা (Multicultural Education)। আবার Banks (2010), Gollnick এবং Chinn-এর (2009)-এর মতে বহুকৃষ্টি সমন্বিত শিক্ষা (Multicultural Education) হল একটি শিক্ষামূলক কৌশল যেখানে প্রতিটি শিক্ষার্থীর সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট গুরুত্ব সহকারে বিচারবিবেচনা করা হয় কার্যকারীভাবে নির্দেশনা দানের জন্য।

Q28. ভারতের প্রেক্ষাপটে ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ লিখুন।
▻ ভারতীয় সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল—ধর্মনিরপেক্ষতা। সংবিধানের 25-28 নং ধারায় ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার স্বীকৃত হয়েছে। Secularism প্রথাটির বাংলা প্রতিশব্দ ধর্মনিরপেক্ষতা। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলতে বোঝায় সরকার কোনো শেষ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করবে না বা গুরুত্ব দেবে না।
ভারতের 42 তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষ বা Secular শব্দটি যুক্ত হয় এবং এর মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষতা কথাটি সাংবিধানিক জাতীয় মূল্যবোধ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

Q29. IIED-এর পুরো নাম কী?
▻ IIED এর পুরো নাম হল- International Institute for Environment and Development.

Q30. বিশ্বায়নের দুটি উদ্দেশ্য বা বৈশিষ্ট্য লিখুন।
▻ বিশ্বায়নের দুটি বৈশিষ্ট্য হল— (i) বিশ্বায়ন প্রচলিত সামাজিক সম্পর্কগুলিকে বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে এবং নতুন সম্পর্ক স্থাপন করে চলেছে। এর ফলে চিরাচরিত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, কৃষ্টিগত এবং ভৌগোলিক সীমা অতিক্রান্ত হচ্ছে। (ii) সামাজিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Q31. স্থিতিশীল উন্নয়নের সংজ্ঞা দিন।
অথবা, স্থিতিশীল উন্নয়ন কী?
▻ আর্নেস্ট সিমোনিস ইউকো (Earnest Simonis Euco 1983)-র মতে, “স্থিতিশীল উন্নয়ন বলতে সেই উন্নয়ন প্রকল্পকে বোঝায়, যার মাধ্যমে দীর্ঘকাল যাবৎ প্রাকৃতিক গুণগত মান ও কার্যকারিতা অক্ষুণ্ণ রেখে সর্বাধিক অর্থনৈতিক সুবিধা আদায় করা যায়”।

Q32. পাঠক্রমের আধুনিক ধারণাটি লিখুন। 
অথবা, পাঠক্রমের সংজ্ঞা দিন।

▻ আধুনিক লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতি রেখে পাঠক্রম সম্পর্কিত ধারণায় পরিবর্তন এসেছে। আধুনিক ধারণা অনুযায়ী পাঠক্রম হল সেই সমস্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিজ্ঞতার সমষ্টি,যা শিক্ষার্থী শিক্ষকের তত্ত্বাবধান ও সহায়তায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে লাভ করে। এই অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীকে সুষম ব্যক্তিত্বের (Integrated personality Development) অধিকারী হতে সাহায্য করবে। শ্রেণিকক্ষের মধ্যেকার পঠন-পাঠন এবং শ্রেণিকক্ষের বাইরে বিভিন্ন সহ-পাঠক্রমিক কার্যাবলি পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত হবে। পাঠক্রমে তাত্ত্বিক ও
ব্যাবহারিক উভয় দিক থাকবে এবং পাঠক্রম অবশ্যই শিক্ষার লক্ষ্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও গতিশীল হবে।

Q33. সহগামী আনুষঙ্গিক পাঠক্রম কাকে বলে?
▻ যে সকল অভিজ্ঞতা পরিবার থেকে শিশু তথা শিক্ষার্থী লাভ করে থাকে তাকে বলা হয় সহগামী আনুষঙ্গিক পাঠক্রম বা প্রাসঙ্গিক পাঠক্রম (Concomitant Curriculum)। এগুলি পরিবার দ্বারা অনুমোদিত, সামাজিক আচরণ শিক্ষা, নৈতিক শিক্ষা, মূল্যবোধের শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা এর অন্তর্ভুক্ত। 

Q34. সমন্বিত পাঠক্রম কাকে বলে?
▻ বিষয়কেন্দ্রিক পাঠক্রম প্রবর্তনের ফলে ধীরে ধীরে পাঠ্য বিষয়ের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এই সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য সমন্বিত পাঠক্রমের জন্ম। তাত্ত্বিকভাবে সমন্বিত বা সুসংহত পাঠক্রম হল এমন একটি পরিকল্পনা যেখানে বিষয়ভিত্তিক বিভাজন প্রাধান্য পায় না। বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে পারস্পরিক সমন্বয় করে সমন্বিত পাঠক্রম রচনা করা হয়। এটি সক্রিয়তাভিত্তিক ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক পাঠক্রমের পরিমার্জিত রুপ। এই পাঠক্রম দৃঢ়ভাবে মনোবৈজ্ঞানিক তত্ত্বের ওপর প্রতিষ্ঠিত, এর উপযোগিতা প্রশ্নাতীত।

Q35. কেন্দ্রীয় পাঠক্রন বলতে কী বোঝেন?
▻ বিষয়কেন্দ্রিক পাঠক্রমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ কেন্দ্রীয় পাঠক্রমের জন্ম হয়। 1930-40-এর দশকে আমেরিকাতে অপরিহার্যতাবাসের (Essentialism) বিশ্বাসী শিক্ষাবিদরা মনে করেন কিন্তু অপরিহার্য জ্ঞান
অর্জন করা উচিত। এটিই হল কেন্দ্রীয় বা অভিন্ন পাঠকনের মূলনীতি। অর্থাৎ শিক্ষার্থীর বিকাশ ধারার সঙ্গে সংগতি রেখে পাঠক্রমের মধ্যে কিছু মৌলিক বিষয়ের সমাবেশ  গণিত, লেখা ও পড়া পাঠক্রমের মধ্যে ঘটানো প্রয়োজন।ভারতে প্রথাগত শিক্ষার প্রথম দশ বছর (মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত) অভিন্ন বা
কেন্দ্রীয় পাঠক্রমের প্রচলন আছে। শৈশবকাল থেকে কেশোরকাল (6-15) বা কেন্দ্রীয় পাঠক্রমের ভিত্তিতে শিক্ষা পরিচালিত হয় এই ধরনের পাঠক্রমকে মৌলিক পাঠক্রম (Basic Curriculum) বলা হয়ে থাকে।

Q36. নেতিবাচক পাঠক্রম কী?
▻ বিদ্যালয় পাঠক্রমের যে অংশটি অবহেলা করে পড়ানো হয় না সেটি নেতিবাচক পাঠক্রম (Null curriculum). আসলে বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট সময় কালের মধ্যে পাঠক্রমের সবকিছু পড়ানো যায় না বা শেখানো সম্ভব হয় না। লিখিত পাঠক্রমের কোনো কোনো বিষয়ের কিছু অংশ বাদ দেওয়া হয়। অর্থাৎ শিক্ষক শিক্ষিকা পাঠক্রমের যে অংশটা পড়ান না বা শেখান না সেই অংশটি নেতিবাচক পাঠক্রম (Null curriculum) -এর অন্তর্ভুক্ত, এর দ্বারা শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষার্থীদের এই বার্তা দেন যে এই অংশটি অপ্রয়োজনীয়, অপ্রাসঙ্গিক ও বাস্তব জীবনে এর কোনো মূল্য নেই, সামাজিক ও শিক্ষার দিক থেকে এটি তাৎপর্যহীন।

Q37. প্রথাগত বা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার বৈশিষ্ট্যগুলি লিখুন।
▻ প্রথাগত শিক্ষার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল— (i) সামাজিক চাহিদা-নির্ভর, (ii) নির্দিষ্ট শিক্ষার লক্ষ্য, (iii) নির্দিষ্ট শিক্ষার পাঠক্রম, (iv) নির্দিষ্ট শিক্ষকের উপস্থিতি, (v) নির্দিষ্ট শিক্ষার্থীর উপস্থিতি।

Q38. অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষার বৈশিষ্ট্যগুলি লিখুন।
▻ অনিয়ন্ত্রিত-শিক্ষার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল- (i) শিক্ষার প্রধান উপাদান চারটি—শিক্ষার্থী, শিক্ষক, পাঠক্রম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। (ii) শিক্ষার্থী ব্যতীত শিক্ষার অন্যান্য উপাদান অনির্দিষ্ট। (iii) প্রাসঙ্গিক জ্ঞান অর্জনের সহায়ক। (iv) শিক্ষক-নির্ভর নয়। (v) পূর্ব-পরিকল্পিত বা পূর্ব-নির্ধারিত নয়। (vi) নির্দিষ্ট পাঠক্রম অনুসরণ করে না।

Q39. প্রথা বহির্ভূত শিক্ষা কী?
▻ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জে. পি. নায়েক (JP Naik) প্রথাবহির্ভূত শিক্ষার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন - “নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার বাইরে গিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে যে শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলন করা হয়, তাকে প্রথাবহির্ভূত বা বিধিমুক্ত শিক্ষা বলে”।

Q40. পরিবার কাকে বলে?
▻ সমাজবিদ ব্যালার্ড (Ballard)-এর মতে, “Family is the original social institution from which all other institutions developed.” অর্থাৎ পরিবার হল, পরস্পরের মধ্যে রক্তের সম্পর্কের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা ব্যক্তিবর্গের একটি গোষ্ঠী যেখানে পারস্পরিক সহনশীলতা, নির্ভরতা, আন্তরিকতা ও সহযোগিতা বিদ্যমান।

Q41. লুক্কায়িত বা সুপ্ত বা অব্যক্ত পাঠক্রম কী? 
▻ ব্যক্ত বা লিখিত (Overt or Explicit or wirtten) পাঠ্যক্রমের বিপরীত হল অব্যক্ত বা লুক্কায়িত পাঠক্রম (Hidden Curriculam)। সাধারণভাবে লুক্কায়িত বা অব্যক্ত পাঠক্রম বলতে বোঝানো হয় কতকগুলি নিয়ম বা বিধি বা নির্দেশিকা (a set of rules or guideline)  হয় সাধারণ মানুষ এগুলির সঙ্গে পরিচিত। এই ধরনের পাঠক্রমে কতকগুলি সামাজিক যা সচরাচর প্রত্যক্ষভাবে শেখানো হয় না, কিন্তু ধরে নেওয়া দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা পর্যবেক্ষণ বা সামান্য ইঙ্গিতের (social cues) মাধ্যমে শেখে। বয়স, লিঙ্গ, পরিবেশ ও সংস্কৃতি ভেদে লুক্কায়িত বা অব্যক্ত পাঠক্রমের (Hidden curriculam) এর তারতম্য ঘটে।

Q42. পাঠক্রম রচনার দুটি মৌলিক নীতি সম্পর্কে লিখুন।
▻ পাঠক্রম রূপরেখা রচনার দুটি মৌলিক নীতি হল— (i) পাঠক্রমের চাহিদা (Need of the Curriculum) : পাঠক্রমের চাহিদা বলতে পাঠক্রমের প্রয়োজনীয়তাকে বোঝায়। নতুন কোর্সের সূচনা বা নতুন বিষয়ের পঠন পাঠনের উদ্যোগ, নতুন বিষয়ের সংযোজন, পুরোনো পাঠক্রমের সংস্কার, শিক্ষার্থীদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন কোনো সম্ভাবনাময় বিষয়ের কোর্সের শুরু করা প্রভৃতি কারণে পাঠক্রমের প্রয়োজন হতে পারে। পাঠক্রমের নকশা বা রূপরেখা তৈরির সময় চাহিদার প্রসঙ্গটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চাহিদার উৎস বিষয়গুলি হল – ⦾ কাদের জন্য পাঠক্রম? ⦾ পাঠক্রম প্রয়োগ করার সময়সীমা।⦾ পাঠক্রমের উদ্দেশ্য বা কেন পাঠক্রমটি প্রয়োজন? ⦾ পাঠক্রমের স্থায়িত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা। ⦾ পাঠক্রমের রচনার পদ্ধতিগত দিক। 
(ii) নির্দিষ্ট শিক্ষার্থী দল (Target Group of Learner) : পাঠক্রমের রূপরেখা বা নকশা তৈরির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠক্রমটি তৈরি হবে তাদের প্রকৃতি, বয়স ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে তথ্য আহরণ করা।

Q43. অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষা কাকে বলে?
অথবা, অপ্রথাগত শিক্ষা কাকে বলে? 

▻ সাধারণভাবে বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রিত পরিবেশের বাইরে থেকে শিক্ষার্থী যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করে তাকে অনিয়ন্ত্রিত বা অ-প্রথাগত শিক্ষা বলা হয়। এটি হল অপরিকল্পিত শিক্ষা ব্যবস্থা। গৃহ বা পরিবার, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, গণমাধ্যম, প্রাকৃতিক পরিবেশ প্রভৃতি হল অনিয়ন্ত্রিত বা অ-প্রথাগত শিক্ষার মাধ্যম বা সংস্থা।

Q44. শিক্ষার চারটি স্তম্ভ কী কী?
অথবা, শিক্ষার চারটি স্তম্ভ কী?

▻ 1996 সালে প্যারিসে UNESCO-এর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে জ্যাকস ডেলরের নেতৃত্বে একুশ শতকের শিক্ষার ওপর (Learning The Treasure Within) একটি প্রতিবেদন পেশ করা হয়। এই প্রতিবেদনে জীবনব্যাপী শিক্ষার চারটি উদ্দেশ্য বা শিক্ষার চারটি স্তম্ভের কথা উল্লেখ করা হয়। এই চারটি স্তম্ভ হল—(i) জানার জন্য শিক্ষা (Learning to know), (ii) কর্মের শিক্ষা (Learning to do),
(iii) একত্রে বাঁচার শিক্ষা (Learning to live together) ও (iv)  মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষা (Learning to be) 

Q45. পাঠক্রমের দুটি প্রয়োজনীয়তা লিখুন।
▻ পাঠক্রমের দুটি প্রয়োজনীয়তা হল— (i) শিক্ষা হল একটি উদ্দেশ্যমুখী প্রক্রিয়া। এর কতকগুলি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আছে। আধুনিক শিক্ষার লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীর সার্বিক বা সুষম বিকাশ। পাঠক্রম হল এ লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথ। অর্থাৎ পাঠক্রম শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশে সহায়তা করে অর্থাৎ পাঠক্রম শিক্ষার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে। (ii) পাঠক্রম হল কতকগুলি সুনির্বাচিত বিষয়বস্তুর সমষ্টি বা তালিকা। এই বিষয়বস্তু চর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জ্ঞানলাভ করে ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাস্তব জীবন সম্বন্ধে বোধ জাগ্রত হয়। পরবর্তীকালে শিক্ষার্থীরা এই জ্ঞান বাস্তবজীবনে প্রয়োগ করে সফলতা লাভ করে।

Q46. প্রাক্‌ প্রাথমিক শিক্ষার দুটি বৈশিষ্ট্য লিখুন।
▻ প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার দুটি বৈশিষ্ট্য হল— (i) শিশুকে সামগ্রিকভবে তৈরি করতে হবে জীবনকে অর্থবহ ও সুন্দর করে তোলার জন্য, কোনো বিশেষ পরীক্ষার জন্য নয়। (ii) বিদ্যালয়ের সঙ্গে পরিচয়ের সূচনাটি হবে আনন্দময় ও সুদূরপ্রসারী, সেই আনন্দটুকুকে পাথেয় করে সে যেন আগামী দিনের পথ চলতে পারে, সেদিকে বিশেষ লক্ষ রাখতে হবে। ভবিষ্যতে মাঝপথে বিদ্যালয় ছেড়ে যাওয়ার ঘটনা যাতে আমাদের দেখতে না হয়, এখন থেকেই সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

Q47. প্রাথমিক শিক্ষা কাকে বলে?
▻ শিক্ষার গোড়ার কথা হল প্রাথমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়টি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের দেশে এটি বুনিয়াদি শিক্ষা নামে খ্যাত (6-11)। বর্তমানে এটি শিক্ষার গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার। প্রাথমিক শিক্ষা বলতে 6-11 বছর বয়সি অর্থাৎ প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিশুদের শিক্ষাকে বোঝানো হয়।


B.ed  2nd Sem Course 1.2.8a Note PDF Download 


Type Here ....

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন