Class 4 Bengali Book Patabahar Question Answer 2022 (চতুর্থ শ্রেণি পাতাবাহার)

Patabahar Question Answer (চতুর্থ শ্রেণি পাতাবাহার)

এখানে , টি অধ্যায় প্রশ্নও উত্তর সমাধান করে দেওয়া আছে। 
▻ সবার আমি ছাত্র বইয়ের পৃষ্ঠা - ২,৩
▻ নরহরি দাস বইয়ের পৃষ্ঠা - ৮,৯,১০,১১,১২
▻ কোথাও আমার বইয়ের পৃষ্ঠা - ১৪

patabahar class 4 question answer west bengal board

প্রথম পাঠ চতুর্থ শ্রেণি পাতাবাহার সবার আমি ছাত্র প্রশ্নও উত্তর সমাধান

 ❍ সবার আমি ছাত্র কবিতার লেখক পরিচিতি :
সুনির্মল বসু (১৯০২–১৯৫৭) সুনির্মল বসু (১৯০২–১৯৫৭) : বিহারের গিরিডিতে জন্মগ্রহণ করেন। প্রধানত ছোটোদের জন্য তিনি ছড়া, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক ইত্যাদি লিখেছেন। ছবি আঁকাতেও তিনি ছিলেন সমান দক্ষ। তাঁর লেখা বইগুলি হলো – ছানাবড়া, ছন্দের টুংটাং, বীর শিকারি, বেড়ে মজা, হইচই, কথাশেখা ইত্যাদি।

❍ সবার আমি ছাত্র কবিতার বিষয়বস্তু আলোচনা :
আমরা স্কুলকলেজে যে লেখাপড়া শিখি তা পাঠ্যপুস্তক থেকে। শিক্ষক-অধ্যাপকের কোনো বিশেষ বিষয়ে আলোচনা থেকে আমরা জ্ঞান অর্জন করি। কিন্তু কবি ‘সবার আমি ছাত্র’ কবিতায় আমাদের বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন যে, স্কুল কলেজের শিক্ষাগ্রহণই যথেষ্ট নয়। বেঁচে থাকার জন্য আমাদের সবসময়ই ঘরে বাইরে প্রত্যেক ব্যক্তি বা বস্তুর কাছ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করা উচিত। কবি বলেছেন, যে পরিবেশে আমরা জন্মগ্রহণ করেছি তা থেকে শেখার আছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি শিক্ষা। আকাশের কাছ থেকে কবি উদার হতে শিখেছেন। বায়ুর কাছ থেকে কর্মী হতে শিখেছেন। কবি শিখেছেন পাহাড়ের কাছ থেকে মৌন মহান হতে, খোলা মাঠের কাছে দিলখোলা হতে, সূর্যের কাছে আপন তেজে জ্বলতে, চাঁদের কাছে মধুর কথা বলতে। কবি শিখেছেন সাগরের কাছে রত্নাকরের মতো হৃদয় গড়তে, নদীর কাছে আপন বেগে চলতে। তিনি আরও শিখেছেন মাটির কাছে সহিমু হতে, পাষাণের কাছে আপন কাজে সুদৃঢ় হতে, ঝরনার কাছে সংগীত শিখতে, শ্যামবনানীর কাছে সরসতা লাভ করতে কবি এই বিশ্বজোড়া প্রকৃতির এই পাঠশালার ছাত্র হয়েছেন। তিনি পাঠ্য বইয়ের পাতায় পাতায় দিনরাত শুধুমাত্র কৌতূহল নিয়েই শিক্ষা অর্জন করেছেন। কিন্তু পৃথিবীর পাতা বিরাট। সেই পাতা থেকে শিখতে হবে জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত।
  
 ✐ হাতে কলমে :
১. সুনির্মল বসুর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ সুনির্মল বসুর লেখা দুটি বইয়ের নাম ‘ছন্দের টুংটাং’,‘বীর শিকারি।
২. তিনি ১৯৫৬ সালে কী পদক পেয়েছিলেন?
উত্তরঃ ভুবনেশ্বরী পাদক পেয়েছিলেন।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
৩.১ কার উপদেশে কবি দিলখোলা হন?
উত্তরঃ খোলা মাঠের উপদেশে।
৩.২ পাষাণ কবিকে কী শিক্ষা দিয়েছিল?
উত্তরঃ আপন কাজে কঠোর হওয়ার শিক্ষা দিয়েছিল।
৩.৩ কবি কার কাছ থেকে কী ভিক্ষা পেলেন?
উত্তরঃ শ্যামবনানীর কাছ থেকে সরসতার ভিক্ষা পেলেন।
৩.৪ কে কবিকে মধুর কথা বলতে শেখাল?
উত্তরঃ চাঁদ কবিকে মধুর কথা বলতে শেখাল।
৩.৫ নদীর কাছ থেকে কী শিক্ষা পাওয়া যায়?
উত্তরঃ নদীর কাছ থেকে আপন বেগে চলার শিক্ষা পাওয়া যায়।

৪. সন্ধি করে লেখো :
  1. রত্ন + আকর = রত্নাকর।
  2. মেঘ + আলোক = মেঘালোক। 
  3. কমলা + আসনা = কমলাসনা।
৫. সমার্থক শব্দ লেখো : চাঁদ, সূর্য, পাহাড়, বায়ু, নদী, পৃথিবী, সাগর।
  1. চাঁদ ➙ চন্দ্র, শশাঙ্ক, শশী, সুধাকর।
  2. সূর্য ➙ দিবাকর, দিননাথ, সুরজ, অংশুমান, জ্যোতির্ময়।
  3. পাহাড় ➙ পর্বত, ভূধর, গিরি, শৈল।
  4. বায়ু ➙ বাতাস, হাওয়া, পবন, অনিল।
  5. নদী ➙ প্রবাহিনী, তরঙ্গিনী, কল্লোলিনী।
  6. পৃথিবী ➙ ধরিত্রী, ধরণি, ধরা, বিশ্ব, জগৎ।
  7. সাগর ➙ সমুদ্র, সিন্ধু, পারাবার, রত্নাকর।
৬. বাক্যরচনা করো :
  1. উদার➙দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের হৃদয় ভীষণ উদার ছিল।
  2. মহান➙ আমাদের দেশে অনেক মহান ব্যক্তি জন্মেছিলেন।
  3. মন্ত্রণা➙ কারও কাছ থেকে কু-মন্ত্রণা নিতে যেয়ো না।
  4. শিক্ষা➙ শিশু প্রথম শিক্ষা লাভ করে মায়ের কাছ থেকেই।
  5. সহিঞ্চুতা➙ শান্তিপূর্ণ জীবন চাও তো সহিঞ্চুতা অবলম্বন করো।
  6. সন্দেহ➙ লোকটাকে দেখে পুলিশ সন্দেহ করে ধরে নিয়ে গেল।
  7. কৌতূহল➙ যতই কৌতূহল বাড়বে ততই শিখতে পারবে।
  8. ঝরনা➙ হিমালয় পর্বতে প্রচুর ঝরনা দেখতে পাওয়া যায়।
৭. নীচের বিশেষণ শব্দগুলির বিশেষ্য রূপ লেখো :
  1. কর্মী➙কর্ম। 
  2. মৌন➙মৌনতা। 
  3. মধুর ➙মাধুর্য, মধুরতা। 
  4. কঠোর ➙ কঠোরতা। 
  5. বিরাট ➙ বিরাটত্ব।
৮. নীচের বিশেষ্য শব্দগুলির বিশেষণ রূপ লেখো :
  1. শিক্ষা➙শিক্ষিত। 
  2. মন্ত্র➙মন্ত্রণা। 
  3. বায়ু➙বায়বীয়। 
  4. মাঠ➙মেঠো। 
  5. তেজ➙তেজি।
৯. কবিতা থেকে সর্বনাম শব্দগুলি খুঁজে নিয়ে লেখো : (অন্তত ৫টি)
উত্তরঃ আমায়, আমি, তাহার, আপন, আমার,।
১০. গদ্যরূপ লেখো :
১০.১. 'কর্মী হবার মন্ত্র আমি বায়ুর কাছে পাইরে।'
উত্তরঃ বায়ুর কাছ থেকে আমি কর্মী হওয়ার মন্ত্র পেয়েছি।
১০.২. 'সূর্য আমায় মন্ত্রণা দেয় আপন তেজে জ্বলতে।'
উত্তরঃ সূর্য আমাকে আপন তেজে জ্বলার মন্ত্রণা দেয়।
১০.৩. 'ইঙ্গিতে তার শিখায় সাগর, অন্তর হোক রত্নআকর।'
উত্তরঃ সাগর ইঙ্গিত দিয়ে শেখায় অন্তর রত্নআকর হোক।
১০.৪. 'শ্যামবনানী সরসতা আমায় দিল ভিক্ষা।'
উত্তরঃ আমাকে শ্যামবনানী সরসতার ভিক্ষা দিল।
১০.৫. 'শিখছি সে সব কৌতূহলে সন্দেহ নাই মাত্র।'
উত্তরঃ কৌতূহলে সেসব শিখছি মাত্র সন্দেহ নেই।

১১. 'বিশ্বজোড়া পাঠশালা' বলতে কবিতায় কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তরঃ কবিতায় আকাশ-বাতাশ-পাহাড়-প্রান্তর, সূর্য-চন্দ্র-সাগর-নদী এবং মৃত্তিকা-পাষাণ-ঝরনা ও শ্যামবনানীকে শিক্ষক বলা হয়েছে। এরাই কবিকে নানাভাবে নানান শিক্ষা দান করেছে। কবি আকাশের কাছ থেকে উদার হওয়ার শিক্ষা লাভ করেছেন। বায়ু অর্থাৎ বাতাস শিখিয়েছে কর্মী হওয়ার মন্ত্র পাহাড় শিখিয়েছে মৌন মহান হওয়ার শিক্ষা। খোলা মাঠ অর্থাৎ উন্মুক্ত প্রান্তরের কাছ থেকে পাওয়া গেছে দিলখোলা অর্থাৎ উদারচিত্ত হওয়ার উপদেশ। সূর্য মন্ত্রণা অর্থাৎ পরামর্শ দিয়েছে কীভাবে আপন তেজে জ্বলে বেঁচে থাকা যায়। চাঁদ শিখিয়েছে মিষ্টি হাসি হেসে মধুর কথা বলতে। সাগর বা সমুদ্র শেখায় অন্তরকে রত্নআকর করে গড়ে তুলতে। নদী শিখিয়েছে আপন বেগে চলতে। মাটির কাছে পাওয়া গেছে সহিষ্ণু হওয়ার শিক্ষা। পাষাণ বা পাথর দিয়েছে আপন কাজে কঠোর হওয়ার দীক্ষা। ঝরনা জাগিয়েছে মানবহৃদয়ে গানের সুর। শ্যামবনানী দিয়েছে সরসতা লাভের ভিক্ষা। এভাবে বিশ্বের প্রতিটি প্রাকৃতিক শক্তির কাছ থেকে কবিতায় শিক্ষা অর্জনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাই কবিতায় ‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা' শব্দটি বোঝানো হয়েছে।

১২. প্রকৃতির কার কাছ থেকে আমরা কীরূপ শিক্ষা পেতে পারি লেখো :

১.আকাশ উদার হওয়ার শিক্ষা আমরা পাই অসীম আকাশের কাছ থেকে।
২.বাতাস নিরন্তর বয়ে চলেছে বাতাস। তাই তার কাছ থেকে আমরা মুহূর্ত মাত্র অলস না হয়ে থেকে কর্ম করে যাওয়ার শিক্ষা অর্জন করতে পারি।
৩.পাহাড় যুগযুগব্যাপী পাহাড় মৌন হয়ে আছে। পাহাড়ের কাছ থেকে আমরা মৌন হওয়ার শিক্ষা লাভ করে ব্যক্তিত্বকে গাম্ভীর্যময় করে তুলতে পারি।
৪.খোলামাঠ খোলামাঠ অর্থাৎ উন্মুক্ত প্রান্তরে দৃষ্টি রাখলেই আমাদের অন্তর হয় প্রশস্ত। তাই খোলামাঠের কাছে আমরা উজাড় হৃদয়ে মানুষকে তথা সমগ্র জীবসম্প্রদায়কে ভালোবাসা দেওয়ার শিক্ষা পেতে পারি।
৫. সূর্য অনন্ত তেজের আকর হল সূর্য। সূর্যের কাছ থেকে আমরা তেজস্বিতা অবলম্বনের শিক্ষা লাভ করতে পারি। অর্থাৎ, অন্যায়ের প্রতিবাদ করার মতো তেজ আমরা পেতে পারি সূর্যের কাছ থেকে।
৬. চাঁদ সমাজজীবনে বাঁচতে গেলে আমাদের প্রীতিপূর্ণ সহাবস্থান চাই। অর্থাৎ, অন্যের সঙ্গে হাসিমুখে বাক্য বিনিময় করা, মধুর সুরে কথা বলা ইত্যাদি আমরা শিখতে পারি চাঁদের অপূর্ব মাধুর্য দেখে।

১৩. প্রকৃতির আরও কিছু উপাদানের কথা তুমি লেখো আর তাদের থেকে কী শিক্ষা তুমি নিতে পারো তা উল্লেখ করো।
উত্তরঃ কবিতায় কবি নিজেই আরও কিছু প্রাকৃতিক সম্পদ বলতে সাগর, নদী, মাটি, পাষাণ, ঝরনা এবং শ্যামবনানীর উল্লেখ করেছেন। মাটির কাছ থেকে আমি সহিঞ্চুতা অবলম্বনের শিক্ষা লাভ করতে পারি। জীবনে বাঁচতে গেলে আমাদের চলার পথে প্রতি মুহূর্তে হয়তো বিভিন্ন প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হবে। সুতরাং সহিষ্বতা অবলম্বন করতে না শিখলে যে-কোনো মুহূর্তে দ্বন্দ্বের মুখে পড়তে হবে। পাষাণ যেভাবে কঠোর হয়ে আছে, সেভাবে আমি নিজের কাজে কঠোর হওয়ার প্রতিজ্ঞা নিতে পারি। ঝরনা যেভাবে নিরন্তর প্রবাহিণী হয়ে মানবহৃদয়ে সংগীতের মূর্ছনা জাগায় তাতে আমি আমার হৃদয়েও সংগীতের সুর জাগিয়ে তুলতে পারি। শ্যামবনানী অর্থাৎ শ্যামল বনরাজি তার সরসতা দিয়ে মানবদৃষ্টিকে করে সজীব, সতেজ। আমি শ্যামবনানীর কাছ থেকে হৃদয়ে সরসতা অর্জনের শিক্ষা নিতে পারি। কবিতায় কবির উল্লিখিত ওই প্রাকৃতিক উপাদানগুলি ছাড়াও আরও নানাবিধ প্রাকৃতিক উপকরণ তথা বিভিন্ন প্রাণীসমূহের কাছ থেকে কিংবা বিভিন্ন গাছপালার কাছ থেকেও হাজার রকমের শিক্ষা অর্জন আমি করতে পারি।

১৪. এমন একজন মানুষের কথা লেখো যার কাছ থেকে অহরহ তুমি অনেক কিছু শেখো।
উত্তরঃ জীবনের বেশির ভাগ সময় আমি কাছে পাই আমার মাকে। আমার মায়ের কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখি। সূর্য ওঠার আগে ঘুম থেকে ওঠা, প্রাতঃকৃত্য শেষ করে নিজের কাজে মনঃসংযোগ করা আমি মায়ের কাছ থেকে শিখেছি। মাকে আমি দেখি, সকাল থেকে দুধওয়ালা, খবরকাগজওয়ালা, মাছওয়ালা, কাপড় ধোলাইকারী এদের প্রত্যেকের কাছ থেকে যা যা প্রয়োজন তা মধুর বাক্য বিনিময়ের মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার অভ্যাস। মায়ের কাছে শিখি আমি প্রফুল্ল মনে ব্যস্ত হাতে সংসারের হাজার কাজ গুছিয়ে নেওয়া। মায়ের কাছে শিখি আমি সঠিক সময়ে সব কাজ ঠিকঠাক করে নেওয়া। এভাবে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মায়ের কাছে আমি শিখি জীবনে সুস্থভাবে এবং হাসিমুখে বেঁচে থাকার আরও অনেকরকম শিক্ষা।


চতুর্থ শ্রেণি বাংলা পাতাবাহার উত্তর 2022

❍ নরহরি দাস গল্পটির বিষয়বস্তু আলোচনা :
ছোটোদের জন্য উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা ‘নরহরি দাস’ গল্পটিতে আছে জানোয়ারদের নিয়ে ভারী মজার এক ঘটনা। গভীর বনের পাশে একটা পাহাড়ের গুহায় ছিল শেয়ালের বাসা। সেখানে এক ষাঁড়ের সঙ্গে একটা ছাগলছানা ঘাস খেতে গিয়ে বেশি ঘাস খেয়ে ফেলে। অবশেষে তার নিজের বাসায় ফিরতে না পেরে সেখানেই সেই শেয়ালের বাসায় ঢুকে রাত কাটানোর চেষ্টা করে। শেয়াল তার বাসায় ফিরে ছাগলছানার দাড়িওয়ালা ছোট্ট ছুঁচোলো মুখ দেখে এবং কিছু উদ্ভট কথা শুনে ভয়ে পালায় তার বাঘমামার কাছে। তারপর সে বাঘের যুক্তিতে তার ল্যাজে বাঁধা হয়ে গর্তে লুকিয়ে থাকা ছাগলছানার কাছে আসে। তাদের দুজনকে দেখে বুদ্ধিমান ছাগলছানাটা লুকিয়ে থেকেই ফন্দি করে শেয়ালটাকে ধমক দেয়। শেয়ালকে বলে তুই একটামাত্র বাঘ ধরে এনেছিস কেন? ও তো আমার কাছে এইটুকু খাদ্য। এই কথা শুনে বাঘ খুব ভয় পেয়ে যায়। সে তক্ষুনি তার ল্যাজে বাঁধা শেয়ালকে নিয়ে প্রাণপণে দৌড়ে
পালায়। সেই সময় শেয়াল মাঠের আলে অনেক ধাক্কা খেয়ে ভীষণ কষ্ট পায়। ফলে সে আর তার বাঘমামার ওপর রাগ করে কোনোদিন তার কাছে গেল না।

❍ নরহরি দাস গল্পটির লেখক পরিচিতি :
উত্তর কলকাতার গড়পার নামক স্থানটি বাংলার শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে বিখ্যাত হয়ে আছে রায়চৌধুরী পরিবারের জন্য। বিখ্যাত চিত্রপরিচালক ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের পিতা সুকুমার রায় এবং তাঁর পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর নাম বাংলার শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই জানে। এই তিনটি নাম সকলের কাছেই জনপ্রিয়। উপেন্দ্রকিশোর জন্মগ্রহণ করেন ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে। তিনি ছোটোদের জন্য লিখে চিরকাল বাংলার বুকে অমর হয়ে থাকবেন। ১৯১৩ সালে তিনি ছোটোদের সাহিত্য বিনোদনের জন্য ‘সন্দেশ’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। তিনি এই পত্রিকার প্রচ্ছদ ও ভিতরের পাতায় অন্যান্য ছবি নিজেই
আঁকতেন। তাঁর লেখা ‘টুনটুনির বই’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘ছেলেদের রামায়ণ’ ও ‘ছেলেদের মহাভারত’ অত্যন্ত জনপ্রিয় বই। উপেন্দ্রকিশোর ছিলেন বাংলার আধুনিক মুদ্রণশিল্পের পথিকৃৎ। তিনি ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে পরলোক গমন করেন।

     ✐ হাতে কলমে :
১. উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা তোমার প্রিয় একটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ তাঁর লেখা আমার প্রিয় বই হল 'টুনটুনির বই'।
২. তাঁর লেখা গল্প অবলম্বনে তৈরি কোন সিনেমা তুমি দেখেছ?
উত্তরঃ 'গুপী গাইন বাঘা বাইন'।
৩. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
৩.১. হ্যাঁগা, তুমি কী খাও?’ – ছাগলছানা ষাঁড়কে কী ভেবে এমন প্রশ্ন করেছিল?
উত্তরঃ  ছাগলছানা ষাঁড়কে ভেবেছিল ওটাও একটা ছাগল।
৩.২. গল্পে বাঘ হল শিয়ালের মামা, আর ‘নরহরি দাস’ নিজেকে কার মামা দাবি করল?
উত্তরঃ ‘নরহরি দাস’ নিজেকে সিংহের মামা বলে দাবি করল।
৩.৩. ছাগলছানা ষাঁড়ের সঙ্গে কেন বনে গিয়েছিল?
উত্তরঃ ঢের ভালো ঘাস খাবে বলে।
৩.৪. ছাগলছানা সেদিন রাতে কেন বাড়ি ফিরতে পারেনি?
উত্তরঃ খুব ঘাস খেয়ে পেট ভারী করে ফেলেছিল বলে।
৩.৫. অন্ধকারে শিয়াল ছাগলছানাকে কী মনে করেছিল?
উত্তরঃ রাক্ষস-টাক্ষস মনে করেছিল।
৩.৬. বাঘ শিয়ালকে ফিরতে দেখে আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল কেন?
উত্তরঃ বাঘমামার কাছে শিয়াল এইমাত্র নেমন্তন্ন খেয়ে গিয়ে আবার ফিরে এসেছিল বলে।
৩.৭. শিয়াল কোন শর্তে বাঘের সঙ্গে ফিরতে চেয়েছিল?
উত্তরঃ শিয়ালকে ফেলে বাঘ পালাবে না এই শর্তে।
৩.৮. ছাগলের বুদ্ধির কাছে বাঘ কীভাবে হার মানল?
উত্তরঃ ছাগলছানা অন্ধকারে লুকিয়ে শিয়ালকে ধমক দিয়ে বলেছিল, “তোকে দশটা বাঘের দাম দিলাম, অথচ আমার খাবার জন্য একটা বাঘ বেঁধে আনলি কেন?” এই কথা শুনে বাঘ প্রাণভয়ে পালিয়েছিল। এভাবে ছাগলের বুদ্ধির কাছে বাঘ হার মানল।

৪. নীচের এলোমেলো বর্ণগুলি সাজিয়ে শব্দ তৈরি করো :
য়ানভক, শর্বসনা, তরারাসা, রন্ধঅকা, মণনিন্ত্র, নাগলছাছা।
উত্তরঃ ভয়ানক, সর্বনাশ, সারারাত, অন্ধকার, নিমন্ত্রণ, ছাগলছানা।
৫. নিজের ভাষায় বাক্য সম্পূর্ণ করো :
৫.১ যেখানে মাঠের পাশে বন আছে সেই বনের ধারে মস্ত পাহাড়ের গর্ভের ভিতরে থাকত একটা ছাগলছানা
৫.২. সেই বনের ভিতরে অনেক সবুজ ঘাস ছিল
৫.৩. ছাগলছানাটা ছিল ভীষণ বুদ্ধিমান
৫.৪. বাঘ শিয়ালকে বেশ করে নিজের লেজের সঙ্গে বেঁধে নিল
৫.৫. বাঘ ভাবে তার পিছনে বুঝি নরহরি দাস ছুটে আসছে, তাই সে আরও বেশি করে ছুটতে লাগল
৬. একই অর্থের শব্দ পাশের শব্দঝুড়ি থেকে খুঁজে নিয়ে পাশাপাশি লেখো :
       বন, ছাগল, আশ্চর্য, সাজা, তৃণ। 
☞  শব্দঝুড়ি—অবাক, ঘাস, অজ, শাস্তি, জঙ্গল।
  1. বন ➙ জঙ্গল। 
  2. ছাগল➙ অজ। 
  3. আশ্চর্য ➙ অবাক। 
  4. সাজা➙ শাস্তি। 
  5. তৃণ➙ ঘাস।


৮. নীচের কথাগুলির মধ্যে কোন্‌টি বাক্য, কোন্‌টি বাক্য নয় চিহ্নিত করো :
(বাক্য হলে ‘✔’ চিহ্ন দাও। বাক্য না হলে ‘✘’ চিহ্ন দিয়ে শুদ্ধ করে লেখো)

মাঠের পাশেই বন ✔
তাও কি হয় ✔
নরহরি দাস এসে ✘ আমার গর্তে এক নরহরি দাস এসেছে
আমি সেখানে গেলে ✘ আমি সেখানে গেলে বেটা আমাকে ধরে খাবে
ছাগলছানা বাড়ি ফিরে এল ✔

৯. এলোমেলো শব্দগুলিকে সাজিয়ে বাক্য তৈরি করো :
উত্তরঃ ৯.১. গর্ভের ভিতরে থাকত একটা ছাগলছানা।
উত্তরঃ ৯.২. তোকে দিলুম দশ বাঘের কড়ি।
উত্তরঃ ৯.৩. সে রাগ আর কিছুতেই গেল না।
উত্তরঃ ৯.৪. তাহলে তুমি তো দুই লাফেই পালাবে।
উত্তরঃ ৯.৫. এমনি করে সারারাত ছুটোছুটি করে সারা হল।


১০. বাক্যরচনা করো : মস্ত, জন্তু, চমৎকার, বুদ্ধিমান, নিমন্ত্রণ।
  1. মস্ত ➙ স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় আমি মস্ত এক ষাঁড় দেখেছি। 
  2. জন্তু ➙ গন্ডার এক ভয়ংকর জন্তু।
  3. চমৎকার ➙ আমার বাবা চমৎকার ছবি আঁকতে পারে। 
  4. বুদ্ধিমান ➙ হাতি খুব বুদ্ধিমান প্রাণী। 
  5. নিমন্ত্রণ ➙ বিয়েবাড়ির নিমন্ত্রণ খেয়ে লাল্টু হাঁটতে পারছিল না।
১১. এলোমেলো ঘটনাগুলিকে সাজিয়ে লেখো :
উত্তরঃ ছাগলছানা ষাঁড়ের সঙ্গে বনে যেতে চাইল।
একথা শুনে ষাঁড় তাকে নিয়ে বনে গেল।
খেয়ে তার পেট এমন ভারী হল যে, সে আর চলতে পারে না।
সেদিন রাতে একটা গর্ভের ভিতরে একটা ছাগলছানা থাকল।
সেই গর্তটা ছিল এক শিয়ালের।
শিয়াল ফিরে এসে গর্তের ভিতরে কে ঢুকেছে তা জানতে চাইল।
ছাগলছানাটা ভারি বুদ্ধিমান ছিল, সে বললে, ‘পঞ্চাশ বাঘে মোর এক-এক গ্রাস!’
শিয়াল গেল বাঘের কাছে নালিশ জানাতে।
শিয়াল বাঘের সঙ্গেও সেই গর্তের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছিল।
বাঘ তো শিয়ালকে বেশ করে লেজের সঙ্গে বেঁধে নিয়েছে।
ছাগলছানা বলল—দূর হতভাগা! তোকে দিলুম দশ বাঘের কড়ি,
এক বাঘ নিয়ে এলি লেজে দিয়ে দড়ি!’
সে শুনে বাঘ পঁচিশ হাত লম্বা এক-এক লাফ দিয়ে শিয়ালকে সুদ্ধ নিয়ে পালাল।
সকালে ছাগলছানা বাড়ি ফিরে এলো।

১২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর লেখো :
১২.১ এই গল্পে কাকে তোমার বুদ্ধিমান বলে মনে হয়েছে? তোমার এমন মনে হওয়ার কারণ কী?
উত্তরঃ এই গল্পে ছাগলছানাকে আমার বুদ্ধিমান বলে মনে হয়েছে। এই গল্পে ষাঁড়, শেয়াল আর বাঘের কাছে একটি ছাগলছানা খুবই তুচ্ছ প্রাণী। কিন্তু ওই ছাগলছানার প্রবল বুদ্ধি ছিল বলে বনে শেয়ালের গর্তে রাত কাটিয়েছে। আবার তার ওপর আক্রমণের উদ্দেশ্যে আসা শেয়াল ও বাঘ একসঙ্গে যেভাবে প্রাণভয়ে ছুটে পালিয়েছে তা শুধুমাত্র ছাগলছানার বুদ্ধির জোরেই।
১২.২ 'বুদ্ধি যার বল তার'—এই কথাটির সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে এই গল্পে। এরকম অন্য কোনো গল্প তোমার জানা থাকলে লেখো।
উত্তরঃ হ্যাঁ, এরকম গল্প আমার আরও একটি জানা আছে। গল্পটি এইরকম-
 বুদ্ধি যার বল তার
গ্রীষ্মের দুপুর সেদিন দারুণ গরম পড়েছিল। রোদের দাপটে পুকুর-ডোবা শুকনো হয়ে গিয়েছিল। মাঠের জমি ফুটিফাটা হয়ে গিয়েছিল। অনেক গাছের পাতা ঝরে পড়েছিল। সেই সময় একটা কাকের খুব তেষ্টা পেয়েছিল। সে ক্লান্ত হয়ে জলের আশায় কোনোরকমে উড়তে উড়তে এদিক ওদিক ঘুরছিল। অনেক ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে কাক একটি কুজো পড়ে থাকতে দেখল। কাকটা সেই কুজোর মাথায় বসে দেখল কুজোর তলায় সামান্য জল আছে। কিন্তু মুখ বাড়িয়ে খাওয়া যাবে না। কাক ভাবতে লাগল কীভাবে ওই জল পান করা যাবে। সে এদিক ওদিক দেখতে লাগল। হঠাৎ তার নজরে পড়ল সামান্য দূরে কিছু নুড়ি পাথর পড়ে আছে। সে তখন ঠোঁটে করে নুড়িগুলো এক-এক করে কুড়িয়ে এনে কুজোতে ফেলতে লাগল। এক সময় কুজোর জল ওপরে উঠে এলো। খুব সহজে কাক এবার মনের সুখে প্রাণভরে জল পান করল। তারপর সেখান থেকে উড়ে চলে গেল।

১৩. গল্প থেকে অন্তত পাঁচটি সর্বনাম খুঁজে নিয়ে লেখো এবং সেগুলি ব্যবহার করে একটি করে বাক্য লেখো।
উত্তরঃ গল্প থেকে পাওয়া পাঁচটি সর্বনাম হল— আমি, তোমাকে, সে, তার, তুমি। সর্বনামগুলি থেকে তৈরি বাক্য নিম্নে লিখিত হল।
  1. আমি➙ বেলা দশটায় আমি রোজ স্কুলে যাই।
  2. তোমাকে➙ রোজ রোজ তোমাকে একটা কথা শেখাতে পারব না।
  3. সে➙ তিনদিন আগেই সে এখানে এসেছিল।
  4. তার➙ কেউ তার খবর জানে না।
  5. তুমি➙ কষ্ট করে তুমি একটিবার এসো।
১৪. কারণ কী লেখো :
১৪.১. ছাগলছানা গর্তের বাইরে যেতে পেত না।
উত্তরঃ কারণ সে তখনও বড়ো হয়নি।
১৪.২. ষাঁড় এসে বলল, ‘এখন চলো বাড়ি যাই।
উত্তরঃ কারণ তখন সন্ধে হয়ে গেছে।
১৪.৩. সে (শিয়াল) ভাবল বুঝি রাক্ষস-টাক্ষস হবে।
উত্তরঃ কারণ ছাগলছানা কালো ছিল বলে।
১৪.৪. 'বাবা গো’! বলে সেখান থেকে (শিয়ালের) দে ছুট!
উত্তরঃ কারণ গর্তের ভিতর থেকে ছাগলছানাটা বলেছিল, সে এক-এক গ্রাসে পঞ্চাশটা বাঘ খেতে পারে।
১৪.৫. বাঘ ভয়ানক রেগে বললে, 'বটে, তার এত বড়ো আস্পর্ধা!’
উত্তরঃ কারণ সে তার শেয়াল-ভাগ্নের মুখে শুনেছিল নরহরি দাস অর্থাৎ সেই ছাগলছানাটা নাকি এক-এক গ্রাসে পঞ্চাশটা বাঘ খেয়ে ফেলে।

১৫. নীচের বাক্যগুলিতে কোন কোন ভাব প্রকাশ পেয়েছে তা লেখো :
(বিস্ময়/ইচ্ছা/প্রশ্ন/বিবেক/উপদেশ/পরামর্শ বা নির্দেশ/ভয়)
১৫.১. হ্যাঁগা, তুমি কী খাও?
উত্তরঃ প্রশ্ন।
১৫.২. আমাকে সেখানে নিয়ে যেতে হবে।
উত্তরঃ পরামর্শ বা নির্দেশ।
১৫.৩. যাসনে ! ভালুকে ধরবে, বাঘে নিয়ে যাবে, সিংহে খেয়ে ফেলবে!
উত্তরঃ উপদেশ।
১৫.৪. এখন চলো বাড়ি যাই।
উত্তরঃ ইচ্ছা।
১৫.৫. শুনেই তো শিয়াল, ‘বাবা গো!' বলে সেখান থেকে দে ছুট।
উত্তরঃ ভয়।
১৫.৬. 'কী ভাগনে, এই গেলে, আবার এখুনি এত ব্যস্ত হয়ে ফিরলে যে?
উত্তরঃ প্রশ্ন।

১৬. গল্পটিতে কে কোন সময়ে কী করেছিল তা লেখো :
  1. ছাগলছানার মা
  2. ছাগলছানা
  3. ষাঁড় 
  4. শিয়াল 
  5. বাঘ
ছাগলছানার মা : ছাগলছানা যখন গর্তের বাইরে যেতে পেত না তখন তার মা বলেছিল, ‘যাসনে! ভালুকে ধরবে, বাঘে নিয়ে যাবে, সিংহে খেয়ে ফেলবে।'
ছাগলছানা : ভালো ঘাস খাওয়ার জন্য ষাঁড়ের সঙ্গে অন্য বনের ভিতরে গিয়েছিল। তারপর অনেক ঘাস খেয়ে পেট এত ভারী করে ফেলেছিল যে, আর সে চলতে না পেরে সেখানে এক শিয়ালের গর্তে ঢুকে পড়েছিল। রাতে শিয়াল তার গর্তের কাছে এলে ছাগলছানাটা তাকে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছিল। তারপর দ্বিতীয়বার শিয়াল তার বাঘমামাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে এলে আবার ছাগলছানা তাদের এমন ভয় দেখিয়েছিল যে তারা প্রাণভয়ে ছুটে পালিয়েছিল। সকাল হলে ছাগলছানা বাড়ি ফিরে এলো।
ষাঁড় : ছাগলছানাটা ভালো ঘাস খাবে বলে তার কাছে আবদার করেছিল তাই ষাঁড় তাকে অন্য বনে নিয়ে গিয়েছিল।
শিয়াল : রাতে বাঘমামার বাড়িতে নেমন্তন্ন খেয়ে তার গর্তে ফিরে এলো। সে অন্ধকারে কালো ছাগলছানাটাকে দেখে খুব ভয় পেয়ে গেল। ছাগলছানাটাকে রাক্ষস-টাক্ষস মনে করে বাইরে থেকে ভয়ে ভয়ে তার গর্তে তার পরিচয় জানাতে চাইল। উত্তরে সে যা শুনল তাতে সে প্রাণপণে ছুটে পালিয়ে তার বাঘমামার কাছে গিয়ে সব জানাল। তারপর বাঘমামার যুক্তিতে তার ল্যাজে বাঁধা হয়ে তার গর্তের কাছে একবার আবার এলো। কিন্তু এবার গর্ত থেকে এমন ভয়ংকর কথা শুনল যে ভাগ্নেকে ল্যাজে বেঁধে বাঘমামা জোরে ছুটল। ফলে বাঘমামার ল্যাজে বাঁধা অবস্থায় শিয়ালকে জমির আলে ভীষণ ঠোক্কর খেতে হল। সেই থেকে শিয়াল প্রতিজ্ঞা করল যে সে আর বাঘমামার কাছে আসবে না।
বাঘ : নেমন্তন্ন খেয়ে চলে যাওয়ার পর তার শেয়ালভাগ্নে আবার তার কাছে ফিরে আসার জন্য সে তাকে জিজ্ঞাসা করল, 'কী ভাগনে, এই গেলে, আবার এখুনি এত ব্যস্ত হয়ে ফিরলে যে? উত্তরে বাঘ যা শুনল তাতে তার খুব রাগ হল। সে শিয়ালের সঙ্গে তার গর্তে বীরদর্পে হাজির হল। তারপর যখন নরহরি দাসের মুখে অর্থাৎ, ছাগলছানারমুখে শুনল যে নরহরি একসঙ্গে দশখানা বাঘ খেতে চাইছে তখন ভয়ে তার প্রাণপাখি উড়ে গেল। সে পঁচিশ হাত এক-এক লাফ দিয়ে তার বাসায় ফিরে এলো।

১৭. শক্তি, বুদ্ধি ও কাজের বিচারে বাঘ, শিয়াল ও ছাগলছানার আচরণ কেমন তা লেখো।
বাঘ : বাঘ সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাণী। তবে সে একেবারেই বোকা। তাই সে প্রথমেই তার ভাগ্নে শিয়ালের কথায় নিবোর্ধের মতো ভীষণ রেগে গেল। ভাগ্নেকে ল্যাজে বেঁধে নিয়ে ভাগ্নের বাসায় হাজির হল। কিন্তু সেখানে নরহরি দাস রূপী ছাগলছানার ছলনাময় কথা শুনে প্রাণের ভয়ে তক্ষুনি পঁচিশ হাত এক-এক লাফ দিয়ে তার বাসায় ফিরে এলো। একটা বাঘের পক্ষে এই কাজ অত্যন্ত নিন্দনীয়।
শিয়াল : প্রাণীসমূহের মধ্যে সবচেয়ে চালাক হল শিয়াল। কিন্তু এই গল্পে সেও তার বাঘমামার মতো মারাত্মক বোকামি করেছে। প্রথমে তার গর্তে লুকিয়ে থাকা কালো ছাগলছানাকে দেখে সে রাক্ষস-টাক্ষস মনে করেছে। পরে আবার বাঘমামার পরামর্শে তার ল্যাজে বাঁধা হয়ে সে তার গর্তে এসেছে এবং বাঘ ভয় পেয়ে গেলে ফিরে পালানোর সময় তার ল্যাজে বাঁধা অবস্থায় শিয়াল জমির আলে মারাত্মক ঠোক্কর খেয়েছে। এটাও এক হাস্যকর ঘটনা এবং শিয়ালের কাছে লজ্জাজনক কাজ।
ছাগলছানা : শক্তির বিচারে ছাগল সবচেয়ে দুর্বল। কিন্তু তা সত্ত্বেও সে যে উপায়ে আত্মরক্ষা করেছে তাতে তার অসাধারণ দ্ধির পরিচয় পাওয়া যায়। এমন কাজ প্রশংসার যোগ্য।

১৮. নিম্নলিখিত অংশে উপযুক্ত ছেদ ও যতিচিহ্ন বসাও :
উত্তরঃ খেয়ে তার পেট এমন ভারী হলো যে, সে আর চলতে পারে না। সন্ধে হলে ষাঁড় এসে বলল, 'এখন চলো বাড়ি যাই'। কিন্তু ছাগলছানা কী করে বাড়ি যাবে? সে চলতেই পারে না। তাই সে বললে, 'তুমি যাও আমি কাল যাব'।
১৯. নীচের শব্দগুলির বিপরীতার্থক শব্দ লেখো : 
মস্ত, বাইরে, লম্বা, ব্যস্ত, নিশ্বাস, সর্বনাশ, দূর।
উত্তরঃ মস্ত➙ ক্ষুদ্র। বাইরে➙ ঘরে, ভিতরে। লম্বা➙ বেঁটে, খাটো। ব্যস্ত➙ ব্যস্ততাশূন্য। নিশ্বাস➙ প্রশ্বাস।
সর্বনাশ➙ সর্বপ্রাপ্তি। দূর➙ নিকট।

২০. এই গল্পে শিয়ালকে নাকাল হতে দেখা গেছে। তুমি আরও এমন দুটি গল্প সংগ্রহ করো যেখানে একটিতে শিয়াল তার বুদ্ধির জোরে জিতে গেছে এবং অন্যটিতে সে তা পারেনি।
উত্তরঃ হ্যাঁ, আমার এরকম দুটি গল্প জানা আছে একটি গল্পে শিয়াল তার বুদ্ধির জোরে জিতে গেছে। আবার, অন্য একটি গল্প আছে যেখানে শিয়াল তার বুদ্ধি খাটিয়েও তার উদ্দেশ্য সফল করতে পারেনি।
কাক ও শিয়ালের গল্প
একবার একটি দুষ্টু কাক কোনো এক মাংসের দোকান থেকে এক খণ্ড মাংস ছোঁ মেরে তুলে নিল। তারপর বনের মাঝে একটা গাছের ডালে গিয়ে বসল। সেই গাছের নীচ দিয়ে যাচ্ছিল একটা শিয়াল। শিয়ালটার হঠাৎ নজর পড়ল গাছের ডালে সেই কাকের ওপর কাকের মুখে মাংস দেখে তার ভীষণ লোভ হল। সে চিন্তা করতে লাগল কীভাবে কাকের কাছ থেকে ওই মাংসের টুকরো কেড়ে নিতে পারবে। হঠাৎ তার মাথায় বুদ্ধি খেলে গেল। সে কাকের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করল। ওপর দিকে মুখ তুলে সে বলল কাক ভায়া তুমি দেখতে খুব সুন্দর। তোমার মতো সুন্দর পাখি আমি আর কোথাও দেখিনি। এসো আমরা দুজন বন্ধু হয়ে যাই। কাক কোনো উত্তর দিল না। শিয়াল বলল- কাক ভায়া তুমি অনেকদিন গান শোনাওনি। তোমার গান শুনতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। একবার তোমার মধুর সুর শোনাবে কি? কাক এবারও কোনো সাড়া দিল না।

শিয়াল বলল আমি কোকিলের গান শুনেছি, কিন্তু যে যতই বলুক তার গান ভালো, আমি তবু বলব তুমি যত সুন্দর তোমার গানও তত সুন্দর। কাক এবার চিন্তা করল, সত্যই হয়তো তার কণ্ঠস্বর সুন্দর হয়ে উঠেছে। তাই সে খুশি হয়ে একবার কা-কা করে শিয়ালকে গান শোনাতে চাইল। সঙ্গে সঙ্গে তার মুখ থেকে মাংসের টুকরো মাটিতে পড়ে গেল। চালাক শিয়াল মাংস খণ্ডটা মুখে তুলে নিয়ে গভীর বনে চম্পট দিল।

শিয়ালের সাজা
একবার এক শিয়ালের দারুণ খিদে পেয়েছিল। খাবারের খোঁজে সে তখন বন থেকে বেরিয়ে গ্রামের ভিতরে রাতের অন্ধকারে লোকালয়ে ঢুকে পড়ল। ঘুরতে ঘুরতে সে হঠাৎ এক ধোপার বাড়ির উঠোনে ঢুকে পড়ল। ধোপার বাড়িতে ছিল পোষা এক কুকুর। সে শিয়ালকে দেখতে পেয়ে তাড়া করল। প্রাণভয়ে শিয়াল দৌড়ে পালাতে গিয়ে ধোপার বাড়ির নীলগোলা জলের গামলায় উলটে পড়ল। সারা শরীরে নীল রং মাখানো হয়ে শিয়ালের একটা অদ্ভূত রূপ হয়ে দাঁড়াল। মনের দুঃখে শিয়াল আবার বনের ভিতর ফিরে গেল। দূর থেকে তার বিচিত্র চেহারা দেখে অন্যান্য শিয়াল এবং অন্যান্য প্রতিটি প্রাণী ভয়ে পালাতে লাগল। এমনকি বাঘ-ভালুক-সিংহ—এরাও চিন্তা করল, এ নিশ্চয় ভয়ংকর শক্তিশালী কোনো জানোয়ার, এটা আমাদের জঙ্গলে ঢুকে পড়েছে। এই বুঝে বাঘ, সিংহ, ভালুক সকলেই ভয়ে ভয়ে খানিক দূরে দূরে সরে দাঁড়াল। বুদ্ধি খাটিয়ে শিয়াল বলল, শোনো ভাই সকলে। আমাকে বনদেবী এখানে পাঠিয়েছেন তোমাদের প্রত্যেকের মঙ্গল করার জন্য। তোমাদের সকলের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তা লক্ষ রাখার জন্য। আমি এখন থেকে এই বনের রাজা। তোমরা আমার আদেশ মেনে চলবে।

 সমস্ত পশু তখন তার সামনে হাজির হল এবং সকলে তার আদেশ মেনে চলবে বলে স্বীকার করল। এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেল। কিন্তু ধীরে ধীরে শিয়ালের চালচলন দেখে অন্যান্য শিয়ালদের মনে একটু একটু করে সন্দেহ দানা বাঁধতে লাগল। একদিন এক বুড়ো শিয়াল গোপনে অন্যান্য শিয়ালদের সঙ্গে একটা আলোচনা করল। বলল, ওই রাজা সেজে বসা প্রাণীটা সত্যি সত্যিকে তা যাচাই করা দরকার। এই যুক্তি করে তারা অকস্মাৎ বনের এক কোণে গিয়ে সদলবলে হুক্কাহুয়া রব করে উঠল। রাজা সেজে বসা নীলবর্ণ শিয়াল নিজেকে আর সামলে রাখতে না পেরে প্রাণপণে হুক্কাহুয়া বলে উঠল। আর সঙ্গে সঙ্গেই সে যে একটা শিয়াল তা ধরা পড়ে গেল। বাঘ, সিংহ, হাতি সকলে খুব রেগে গিয়ে এবার তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। শিয়াল মরে গেল।

২১. গল্পে কোন্ কোন্ প্রাণীর নাম খুঁজে পেলে? এদের খাদ্য ও বাসস্থান এবং স্বভাব উল্লেখ করো।
উত্তর : গল্পে ছাগল, ষাঁড়, শিয়াল এবং বাঘের নাম খুঁজে পাওয়া গেল। ছাগল গৃহপালিত প্রাণী। এরা মানুষের সঙ্গে থাকে। এরা তৃণভোজী। অর্থাৎ, এরা সবুজ ঘাস খেতে ভালোবাসে। এরা খুবই নিরীহ স্বভাবের প্রাণী। ষাঁড় গৃহপালিত প্রাণী। এরা মানুষের সঙ্গে থাকে। এরাও তৃণভোজী প্রাণী। ঘাস পাতা ছাড়াও এরা খড়, ধানের ভূষি, খইল ইত্যাদি খায়। ষাঁড় একটু রাগী প্রকৃতির হয়। তবে সহজে কারও অনিষ্ট করে না। কেউ এদের ক্ষতি করতে চাইলে শিং বাগিয়ে তেড়ে আসে। শিয়াল বনের পশু। বনে বাস করে। গর্তের ভিতর লুকিয়ে থাকে। মাঝে মাঝে খাবারের খোঁজে রাতের অন্ধকারে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এরা মাংস খায়। শিয়ালকে বলা হয় সবচেয়ে চালাক পশু। এরা খুব দুষ্টু স্বভাবের হয়। বাঘ থাকে গভীর বনে। মাংসাশী প্রাণী। এরা বনের অন্যান্য প্রাণী অর্থাৎ, হরিণ, জেব্রা, বুনো মহিষ, জিরাফ এদের হত্যা করে মাংস খেয়ে বেঁচে থাকে।

২২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
২২.১. ছাগলছানার মা তাকে কীভাবে সাবধান করত? তার ভয় কাটল কীভাবে?
উত্তরঃ ছাগলছানা তখনও বড়ো হয়নি, তাই গর্তের বাইরে যেতে পেত না। বাইরে যেতে চাইলেও তার মা তাকে সাবধান করে বলত—যাসনে! ভালুকে ধরবে, বাঘে নিয়ে যাবে, সিংহে খেয়ে ফেলবে!’ এরপর ছাগলছানা একটু বড়ো হল, তার ভয়ও কেটে গেল।
২২.২. বনে সন্ধে হয়ে এলে সেখানে কোন পরিস্থিতি তৈরি হল?
উত্তরঃ  ষাঁড়ের সঙ্গে অন্য বনে গিয়ে ছাগলছানা অনেক ঘাস খেয়ে ফেলল। সে এত বেশি ঘাস খেয়ে ফেলল যে সে আর চলতে পারল না। সন্ধে হয়ে এলো। ষাঁড় এসে তাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে চাইল। কিন্তু ছাগলছানা চলতে না পেরে বলল, ‘তুমি যাও, আমি কাল যাব।' ষাঁড় চলে গেলে ছাগলছানা একটা গর্ত দেখতে পেয়ে তার ভিতরে ঢুকে রইল।
২২.৩. ছাগলছানাকে শিয়াল ভয় পেল কেন?
উত্তরঃ শিয়াল তার বাঘমামার বাড়িতে রাতে নেমন্তন্ন খেয়ে ফিরে দেখল তার গর্তে কীরকম একটা জন্তু ঢুকে রয়েছে। ছাগলছানাটা কালো ছিল। শিয়াল অন্ধকারের ভিতর তাকে ভালো করে দেখতে পেল না। সে ভাবল সেটা বুঝি রাক্ষস-টাক্ষস হবে। এই ভেবে সে দারুণ ভয় পেয়ে গেল।
২২.৪. বাঘের উপর শিয়ালের রাগ হওয়ার কারণ লেখো।
উত্তরঃ  ভয় পেয়ে শিয়াল তার বাঘমামার কাছে নালিশ জানাতে গিয়েছিল। বাঘ খুব বীরত্ব দেখিয়ে শিয়ালকে তার ল্যাজে বেঁধে শিয়ালের গর্তের কাছে গিয়েছিল। গর্তে লুকিয়ে থাকা নরহরি দাস অর্থাৎ ছাগলছানাটার গায়ের জোর পরীক্ষা করতে এসেছিল। কিন্তু দশটা বাঘের মূল্য নিয়ে শিয়াল মাত্র একটা বাঘ ধরে এনেছে দেখে গর্তের ভিতর থেকে নরহরি দাস গর্জন করে উঠল। ফলে বাঘ পিছন ফিরে পঁচিশ হাত এক-এক লাফ দিয়ে ছুটে পালাল। বাঘের ল্যাজে বাঁধা অবস্থায় শিয়াল জমির আলে খুব ঠোক্কর খেতে খেতে বাড়ি ফিরল। সেই থেকে বাঘের ওপর শিয়ালের এমনিই রাগ হল যে, সে রাগ আর কিছুতেই গেল না।

২৩. ছবির সঙ্গে মানানসই বাক্য লিখে গল্পটি সম্পূর্ণ করো।


ছবি-১ গর্ভের ভিতর ছাগলছানা তার মায়ের সঙ্গে থাকত।


ছবি-২ একটু বড়ো হলে ছাগলছানা ষাঁড়ের সঙ্গে অন্য বনে অনেক বেশি ঘাস খেতে গেল।


ছবি-৩ খুব ভারী পেট নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবে না বলে ছাগলছানা শিয়ালের গর্তে ঢুকে পড়ল।


ছবি-৪ নেমন্তন্ন খেয়ে শিয়াল তার গর্তে ফিরে কালোছাগলকে চিনতে না পেরে ভীষণ ভয় পেয়ে গেল।


ছবি-৫ মুখ বের করে থাকা কালো ছাগলছানাকে রাক্ষস-টাক্ষস মনে করে শিয়াল ভয়ে পালাল।


ছবি-৬ শিয়ালকে ল্যাজে বেঁধে নিয়ে বাঘ শিয়ালের গর্তে নরহরি দাসকে দেখতে এলো।


ছবি-৭ বাঘ প্রাণ ভয়ে দৌড়ে পালাতে গেলে তার ল্যাজে বাঁধা শিয়াল জমির আলে ঠোক্কর খেতে লাগল।


ছবি-৮ সকাল হলে ছাগলছানা বাড়ি ফিরল।



❍ কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার  কবিতা বা গান  বিষয়বস্তু আলোচনা :
আমাদের সকলেরই মন আছে। মনে মনে আমরা অনেক কিছুই ভাবি। এক-এক জনের ভাবনা এক-এক রকম। ‘ভাবি—অনেক লেখাপড়া শিখে শিক্ষক হব, ডাক্তার হব, ব্যারিস্টার হব, ইঞ্জিনিয়ার হব, পাইলট হব ইত্যাদি ইত্যাদি। যত মানুষ তত রকম ভাবনা। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ভাবনা আর-এক রকম। তাঁর মনে কল্পনার রং। কল্পনায় মানুষ চাঁদটাকে হাতে ধরতে চায়। কবিগুরু তার থেকেও অনেক বেশি ভেবেছেন। তিনি বলছেন, মনে মনে তাঁর কোথাও হারিয়ে যাওয়ার মানা নেই। তিনি গানের সুরের
ডানা মেলে দিয়ে রূপকথার দেশে চলে যান। তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে সেই রূপকথার দেশ আছে। অনেক দূর গিয়ে পথ ভুল করে ফেললে তিনি খানিকক্ষণ চুপ করে থাকেন। তারপর মনে মনে পারুল বনের চাঁপার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়ে যায়।

কবি মনে মনে ভাবেন, সূর্য যখন অস্তাচলে যেতে চায় তখন তিনি মেঘে মেঘে আকাশ-ফুল তোলেন। তারপর সাতটি সাগরের ফেনায় ফেনায় মিশে বহুদূর দেশে চলে যান। চলে যান পরিদের দেশে। তাদের বন্ধ দুয়ারে হানা দেন। প্রকৃতপক্ষে, আমরা যে গান করি বা গান শুনি তার মধ্যে কিছু কথা থাকে বাস্তব, আবার কিছু কথা থাকে কল্পনা মেশানো। কল্পনা আমাদের আনন্দ দেয় বেশি। ‘কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার’ কবিতা তথা গানটিতে আছে শুধুই কল্পনার আনন্দ। কবিতা তথা গানটিতে আছে অফুরন্ত কল্পনা, আছে অফুরন্ত কল্পনার আনন্দ। আমরা প্রত্যেক মানুষ প্রতিমুহূর্তে কিছু না কিছু আনন্দ পেতে চাই। সুতরাং কল্পনা যতই অবিশ্বাস্য হোক, কল্পনার আনন্দ নিতে তো দোষ নেই! মনে মনে পরির দেশে গিয়ে তাদের দরজায় হানা দেওয়ার মতো আনন্দও তো খুব কম নয়!

➢ এই অধ্যায়ঃ থেকে প্রশ্ন উত্তর প্র্যাকটিস সেট 
১। শূন্যস্থান পূরণ করো :
(ক) কোথাও আমার ______যাওয়ার নেই মানা।
উত্তরঃ  হারিয়ে।
(খ) ______পাথার পেরোই রূপ-কথার।
উত্তরঃ তেপান্তরের।
(গ) ______চম্পারে মোর হয় জানা।
উত্তরঃ পারুলবনের।
(ঘ) সূর্য যখন অস্তে পড়ে________।
উত্তরঃ ঢুলি।
(ঙ) পরির দেশে বন্ধ_______দিই হানা।
উত্তরঃ দুয়ার।

২। বাক্যরচনা করোঃ ফেনা, হানা, সুর, মানা, অস্ত।
  1. ফেনা➙ সমুদ্রের জলের ফেনা দেখতে অপরূপ। 
  2. হানা➙ পুলিশ ডাকাতের আড্ডায় হানা দিতেই বিপদ।
  3. সুর➙ সুর ছাড়া গান হয় না। 
  4. মানা➙ বড়োরা মানা করলে মানতে হয়। 
  5. অস্ত➙ সূর্য অস্ত গেলে সব অন্ধকার হয়ে যায়।

Type Here ....

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন