ঘুমপাড়ানি ছড়া স্বপনবুড়ো প্রশ্ন উত্তর | Class 4 Bangla Chora | Pathabahar All Question Answer

ঘুমপাড়ানি ছড়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর
 

Class- IV Pathabahar All Question Answer | Class 4 Bangla Patabahar Lesson Answer

   
       আরো পড়ুনঃ

পাতাবাহার বাংলা চতুর্থ শ্রেণি | নবম পাঠ প্রশ্নও উত্তর সমাধান
▻ ঘুম পাড়ানি ছড়া
▻ মায়াদ্বীপ
▻ ঘুম ভাঙানি

ঘুমপাড়ানি ছড়া কবিতাটির লেখক পরিচিতি :
‘স্বপনবুড়ো’ এই নামে তিনি সর্বাধিক পরিচিত। প্রকৃত নাম অখিলবন্ধু নিয়োগী। ১৯০২ সালে তাঁর জন্ম হয়।শিশুদের জন্য এবং কিশোরদের জন্য তিনি অজস্র ছড়া, কবিতা, গল্প, নাটক এবং গান লিখে গেছেন। ছাত্রাবস্থায় তাঁর লেখা ‘বেপরোয়া’ নামক উপন্যাসটি ‘শিশুসাথী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ধন্যি ছেলে, ভুতুড়ে দেশ, বাবুই বাসা বোর্ডিং,বাস্তুহারা প্রভৃতি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা। যুগান্তর পত্রিকায় তিনি ‘ছোটোদের পাততাড়ি’ সম্পাদনা করতেন। তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি ছোটোদের ‘সব পেয়েছির আসর’ প্রতিষ্ঠা। এই খ্যাতনামা শিশুসাহিত্যিকের জীবনাবসান ঘটে ১৯৯৩ সালে।

ঘুমপাড়ানি ছড়া স্বপনবুড়ো কবিতার বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ :
সন্ধ্যার ফুল ফুটেছে, কিন্তু মুঠি ভরে কুড়িয়ে নেওয়ার কেউ নেই, কেননা ঘুমের মাসি পিসি গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে আসছে ছোট্ট শিশুদের চোখে ঘুমের কাজল বুলিয়ে দিতে। রাত যত বাড়ছে, ঘুম তত এগিয়ে আসছে, ঘুমে চোখদুটি বুজে আসছে। সারা পৃথিবী ঘুমের দেশে পরিণত হয়েছে। পুতুল খেলা ছেড়ে এবার তারা ঘুমের দেশে প্রবেশ করেছে। চারদিকে ঝিঁঝিঁ পোকারা ছড়া শোনাচ্ছে। সেই ছড়া শুনে খোকা-খুকুরা ঘুমিয়ে পড়বে। চাঁদও আকাশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে সরে যাচ্ছে। ক্রমশ তার আলো ম্লান হয়ে যাচ্ছে; বোধহয় তাঁরও ঘুম এসেছে। সন্ধ্যাতারা সবার চোখে স্বপ্ন বুনে দিচ্ছে। কবি বলছেন প্রকৃতি মা ছড়া বলতে বলতে সন্তানদের ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছেন। এবার সেও ঘুমিয়ে পড়বেন তার শেষ ছড়াটি বলে।

ঘুমপাড়ানি ছড়া প্রশ্ন উত্তর পৃষ্ঠা - ১৫১
        🖉 হাতে কলমে :
১. অখিল নিয়োগী শিশুদের কাছে কী নামে পরিচিত? 
উত্তরঃ অখিল নিয়োগী শিশুদের কাছে ‘স্বপনবুড়ো’ নামে পরিচিত।
২. তাঁর লেখা একটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর : তাঁর লেখা অন্যতম বই হল 'ধন্যি ছেলে’।
৩. ঠিক শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো :

উত্তর : কা ল, স চ্ছ তা,   স্ব প ন, পু তু ল, খে র।
৪. কবিতাটি পড়ে কত জোড়া অন্ত্যমিল খুঁজে পেয়েছ লেখো :
⦿মাসি-পিসি
    দাঁতে মিশি
⦿পুতুল যত
     শুনবে কত
⦿আকাশ কোণে
    স্বপন বোনে
⦿ নয়ন দুটি
    মুঠি মুঠি
    গুটি গুটি

৫. কবিতায় ‘মিশি’ শব্দটি একটি দ্রব্যের নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এই শব্দটিকে ক্রিয়াপদ হিসেবে ব্যবহার করে তুমি কতগুলি অর্থে প্রয়োগ করতে পারো লেখো।
উত্তর : ‘মিশি’ শব্দটিকে ক্রিয়াপদে ব্যবহার করে :
মিশি (মিশ্রণ)➛ তেলে জলে কোনোদিন মিশ হয় না।
মিশি (মিলিত)➛ দেশবন্ধু রোড এবং শরৎচন্দ্র রোড আমাদের বিদ্যালয়ের সামনে এসে মিশেছে।
মিশি (লীন বা বিলীন হয়ে যাওয়া ) ➛ গ্যাস বেলুনটা দূরে আকাশে মিশে গেল।


৬. আমরা আমাদের প্রতিদিনের কথাবার্তায় এরকম শব্দবন্ধ ব্যবহার করে থাকি। যেমন: দুধের সর, গাছের পাতা, পুকুরের জল। তোমরা এরকম আরও কয়েকটি শব্দবন্ধ যা আমরা প্রতি দিনের কথাবার্তায় ব্যবহার করে থাকি, লেখো।
উত্তর : বই-এর পাতা, মাছের ঝোল, পুজোর জামা, জুতোর ফিতে, দাদুর চশমা, বাবার ব্যাগ ইত্যাদি।
৭. পরের পঙ্ক্তিটি লেখো :
ঘুমপাড়ানি মাসি-পিসি ➛ ওই যে দিয়ে দাঁতে মিশি।
ঘুমিয়ে পড়ে খেলাঘরের পুতুল যত ➛ রাত বাড়ে, আর ঝিঁঝিঁর ছড়া শুনবে কত?
চাঁদ যে ঝিমায় আকাশ কোণে ➛ সন্ধ্যাতারা স্বপন বোনে।


৮. ‘ছড়া’ শব্দটি কবিতায় ‘পদ্য’ এই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এই অর্থ ছাড়া ‘ছড়া’ শব্দটি তুমি আর কী কী অর্থে ব্যবহার করতে পারো, বাক্যে প্রয়োগ করে দেখাও :
উত্তর : ছড়া শব্দটির ভিন্ন প্রয়োগ -
ছড়া (ছড়ানো)➛ আমাদের উঠোনটা এখন শিউলিফুলে ছড়াছড়ি
ছড়া (ছাল উঠে যাওয়া)➛ খেলতে গিয়ে ভাইয়ের পা ছড়ে গেল।
ছড়া (গুচ্ছ)➛ মেলা থেকে এক ছড়া মালা আনবে।
ছড়া (ছিটিয়ে দেওয়া)➛ ঠাকুমা রোজ সকালে উঠোনে গোবর ছড়া দেয়।


mayadip class 4

মায়াদ্বীপ লেখক পরিচিতি :
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। অধুনা বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায় ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। অনেক ছোটোবেলায় তিনি কলকাতায় চলে আসেন। তাঁর লেখায় কলকাতা এবং বাংলাদেশের বহু চিত্র পাওয়া যায়। ‘নীললোহিত’ ছদ্মনামে তাঁর বেশকিছু লেখা প্রকাশিত হয়। ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি। তাঁর অন্যতম রচনা—সেইসময়, কাকাবাবু সমগ্র, কিশোর অমনিবাস, সপ্তম অভিযান ইত্যাদি। উপন্যাস, গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ-সাহিত্যের সকল দিকেই তাঁর ছিল অবাধ যাতায়াত। ২০১২ সালে এই প্রতিভাবান উজ্জ্বল নক্ষত্র চিরবিদায় নেন।

মায়াদ্বীপ বিষয়বস্তু :
কিশোরমন স্বভাবতই ভ্রমণপিপাসু। লেখক তার ব্যতিক্রম নন। তাই নৌকো চেপে মামাবাড়ি বেড়াতে যাওয়া ছিল খুবই আনন্দের। যাওয়ার পথে বাতাসি, পিংলা নদী এবং নদীর বিচিত্র শোভা লেখককে মুগ্ধ করে দেয়। কিন্তু সবচেয়ে আকর্ষণীয় ঘটনা হল পিংলা নদীর মায়াদ্বীপ। এই দ্বীপটি সারাবছর দেখা যায় না। নদীতে যখন জল বেশি থাকে তখন দ্বীপটি অদৃশ্য হয়ে যায়। আর যখন জল কম থাকে তখন দৃশ্যগোচর হয়। শুধু তাই নয়, এই দ্বীপ কিশোর বয়সে লেখকের মনে এক মায়াবী আবেশ সৃষ্টি করে। সে সেই দ্বীপে একটি ফুটফুটে মেয়েকে দেখতে পায়। কিন্তু অন্য সকলে তার কথা বিশ্বাস করতে চায় না। কিন্তু তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল সে যে একটি ‘জলকন্যা’ দেখেছিল।


মায়াদ্বীপ প্রশ্ন উত্তর পৃষ্ঠা - ১৫
        🖉 হাতে কলমে :
১. সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সৃষ্ট কাকাবাবু চরিত্রটির আসল নাম কী?
উত্তর : সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সৃষ্ট কাকাবাবু চরিত্রটির আসল নাম—রাজা রায়চৌধুরী।
২. পাঠ্যরচনাটি তাঁর কোন বই থেকে নেওয়া?
উত্তর : পাঠ্যরচনাটি তাঁর ‘বড়োরা যখন ছোটো ছিল' গ্রন্থ থেকে নেওয়া।
৩. সংক্ষিপ্ত ও যথাযথ উত্তর দাও :
৩.১ ‘মায়াদ্বীপ’ গল্পের কথকের নাম কী?
উত্তর : মায়াদ্বীপ গল্পের কথকের নাম সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, বাড়ির সকলের নীলু।
৩.২ কোন ঋতুতে তার মামাবাড়ি যাওয়ার পথের বর্ণনা গল্পে রয়েছে?
উত্তর : বর্ষাকালে তার মামাবাড়ি যাওয়ার পথের বর্ণনা রয়েছে।
৩.৩ কথকের মামাবাড়ি যেতে হলে কোন কোন নদী পেরিয়ে যেতে হবে?
উত্তর : কথকের মামাবাড়ি যেতে হলে বাতাসি ও পিংলা নামক দুটি নদী পেরিয়ে যেতে হত।
৩.৪ গল্পে উল্লিখিত বানভাসি দ্বীপটির নাম কী ছিল? 
উত্তর : গল্পে উল্লিখিত বানভাসি দ্বীপটির নাম মায়াদ্বীপ।
৩.৫ কথকের মায়ের অনেক শুশুক দেখা হয়ে ওঠে না কেন?
উত্তর : কথকের মা সঠিক সময়ে তাঁর চশমাটি খুঁজে পেতেন না, তাই তাঁর অনেক শুশুক দেখা হয়ে উঠত না।
৩.৬ নাদের আলির চেহারার কীরূপ বিবরণ গল্পে রয়েছে?
উত্তর : নাদের আলির মাথায় ঝাঁকড়া-ঝাঁকড়া চুল, গালে কাঁচাপাকা দাড়ি, এবং তিনি সবসময় হাসিখুশি থাকতেন।
৩.৭ পিংলা নদীর মাঝের সেই দ্বীপে সবচেয়ে লম্বা গাছটি কী ছিল?
উত্তর : পিংলা নদীর মাঝের সেই দ্বীপের সবচেয়ে লম্বা গাছটি ছিল শিমুল।
৩.৮ ছোটোকাকা কথককে মারমেডদের সম্পর্কে কী জানিয়েছিল?
উত্তর :  কথক তাঁর ছোটোকাকার কাছ থেকে মারমেড বা জলকন্যা সম্পর্কে জেনেছিল। তাদের চেনার বৈশিষ্ট্য হল কোমরের নীচ থেকে দেখা যায় না, আর মানুষের দৃষ্টি এদের সহ্য হয় না।
৩.৯ কথকের মামাবাড়িতে পৌঁছে ছোটোকাকা অম্লান বদনে কী বলেছিলেন?
উত্তর : মামাবাড়ি পৌঁছে ছোটোকাকা অম্লানবদনে বলেছিল কথকের দেখা জলকন্যা বা মারমেড তিনি দেখেননি এবং মারমেড বলে কিছু হয় না।
৩.১০ মায়াদ্বীপের বর্তমান কোন পরিস্থিতির কথা গল্পে রয়েছে?
উত্তর : গল্পে মায়াদ্বীপটি এখন একেবারেই জলের তলায় চলে গেছে। শিমুল গাছটিও আর নেই।
৩.১১ এই গল্পে কী কী গাছের নাম পেয়েছ তার একটি তালিকা প্রস্তুত করো।
উত্তর : এই গল্পে উল্লিখিত গাছগুলি হল— শিমুল গাছ, কলাগাছ।

৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৪.১. গল্পকথকের কাছে গাড়ি, ট্রেন বা এরোপ্লেনের চেয়েও নৌকোয় যাওয়া অনেক আরামের মনে হয়েছে কেন?
উত্তর : নৌকো করে যাওয়ার মধ্যে একটা অন্যরকম আনন্দ আছে, জলের শব্দ শুনতে শুনতে ঘুম ঘুম ভাব চলে আসে। এ ছাড়া নদীর পাড়ের দৃশ্য দেখে মন ভরে যায় — যা ট্রেন, গাড়ি বা এরোপ্লেনে অনুভব করা যায় না।
৪.২ ‘প্রত্যেক বাড়িতে থাকত নিজস্ব নৌকো।'— এমন বন্দোবস্তের কারণ কী ছিল?
উত্তর : বাংলাদেশ মূলত নদীপ্রধান; তাই যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হল নৌকো। এই কারণে প্রত্যেক বাড়িতে নিজস্ব নৌকো থাকত।
৪.৩. 'সেখানে সবসময় অনেক নৌকোর ভিড়।'—কোন স্থানের কথা এখানে বলা হয়েছে?
উত্তর : কথকের বাড়ির কাছের ছোটো নদীটির ঘাটের পাশে বাজার থাকায় সেখানে সবসময় অনেক নৌকো ভিড় করে থাকে।
8.8. গল্পকথকের মামাবাড়ি থেকে যে নৌকো তাঁদের নিতে আসত, সেটির কথা তিনি কীভাবে স্মরণ করেছেন?
উত্তর : কথকের মামাবাড়ি থেকে আসা নৌকোটি ছিল আকারে বড়ো, হলুদ রঙের পাল। তিনজন মাঝি, তার মধ্যে প্রধান মাঝির নাম নাদের আলি যিনি কথকদের নানারকম গল্প শোনাতেন।
৪.৫. ‘বাতাসি’ নদীতে নৌকো চড়ে যেতে যেতে আশপাশের কীরূপ দৃশ্য দেখা যেত?
উত্তর : ‘বাতাসি’ নদীর নামের মধ্যেই রয়েছে মিষ্টিভাব। এর দুই পাড়ের ছবিও মনোরম। অচেনা মানুষজন। বিচিত্র ধরনের পুরোনো গাছ, মন্দির, মসজিদ, জমিদারবাড়ি এমনকি ঘাটবাঁধানো শ্মশানও কথকের চোখে পড়েছে।
৪.৬. কতক্ষণে পিংলা নদী আসবে তার জন্য আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম।'— এমনভাবে অপেক্ষা করার কারণ কী?
উত্তর : পিংলা নদীতে অনেক শুশুক দেখা যেত, তাই কথকরা অপেক্ষা করত পিংলা নদীতে শুশুক দেখার জন্য।
৪.৭. এই নিয়ে প্রতিযোগিতা হতো।'—কোন্ প্রতিযোগিতার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : প্রত্যেকে যেকটা শুশুক দেখেছে তা গণনা করার প্রতিযোগিতার কথা বলা হয়েছে।
৪.৮. লোকমুখে কোন দ্বীপটি ‘মায়াদ্বীপ’ নামে পরিচিত? তার এমন নামকরণের সম্ভাব্য কারণ বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : পিংলা নদীটি যেখানে দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে সেইখানে ঘরবাড়িহীন, গাছগাছালিতে ভরপুর একটি দ্বীপ চোখে পড়ে। এই দ্বীপটি লোকমুখে ‘মায়াদ্বীপ' নামে পরিচিত। এই দ্বীপটি সবসময় লক্ষিত হয় না। যখন নদীতে জল বেশি থাকে অর্থাৎ, বন্যা হয় তখন দ্বীপটি জলের তলায় চলে যায়, অদৃশ্য হয়ে যায়। আবার, জল কমলে জেগে ওঠে। তাই দ্বীপটির নামকরণ হয়েছে মায়াদ্বীপ।
৪.৯. ‘মায়াদ্বীপে ওনারা থাকেন।'—কাদের প্রসঙ্গে একথা বলা হয়েছে?
উত্তর :  এখানে ‘ওনারা’ বলতে অশরীরী আত্মাদের বলা হয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছে যারা ‘ভূত’ নামেই বেশি পরিচিত।
৪.১০. আমার আজও দৃঢ় বিশ্বাস’— কোন দৃঢ় বিশ্বাসের কথা কথক শুনিয়েছেন? ঘটনার এত বছর পরেও কোন ছবি তিনি ভুলতে পারেননি?
উত্তর : কথকের আজও দৃঢ় বিশ্বাস যে তিনি একটি জলকন্যাকে দেখেছিলেন এবং জলকন্যাটি কথকের দিকে তাকিয়েছিল। ঘটনার এত বছর পরেও কথক জলকন্যার হিরের মতো জ্বলজ্বলে চোখদুটি ভুলতে পারেননি।


৪.১১. এই গল্পে কতজন মানুষের চরিত্র রয়েছে এবং গল্পে তারা কে কোন ভূমিকা পালন করেছেন তা পৃথক পৃথক অনুচ্ছেদে লেখো।
উত্তরঃ এই গল্পে কথক ছাড়াও কথকের মা, ছোটোকাকা, নাদের আলি, রাঙামাসির উল্লেখ আছে। গল্পে তাদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। যেমন—
কথক➛ কথকের মুখ থেকে আমরা ‘মায়াদ্বীপ’ গল্পটি শুনি এবং অন্যান্য চরিত্রগুলির সঙ্গে পরিচিত হই।
কথকের মা➛ কথকের মা গল্পে তেমন কোনো ভূমিকা পালন না করলেও তিনি মাঝে মাঝে বিশেষত প্রয়োজনের সময় চশমা হারিয়ে ফেলতেন। তার ফলে কথকের দেখা দৃশ্যের সঙ্গে তাল মেলাতে পারতেন না।
ছোটোকাকা➛ ছোটোকাকা এই গল্পের অন্যতম প্রধান চরিত্র। তাঁর সঙ্গে কথকের খুনসুটি লেগেই থাকত। সে কিছুতেই হার মানত না। কথক পাঁচটা শুশুক দেখলে সে দেখত এগারোটা। স্বভাবতই কথকের সন্দেহ থাকত তাকে ঘিরে। তিনিই কথককে মারমেড বা জলকন্যার সম্পর্কে পরিচিত করিয়ে তিনিই সকলের সামনে জলকন্যার অস্তিত্ব বিষয়ে অস্বীকার করে কথকের কাছে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেন। বলা যায়, ছোটোকাকাই শিশুমনে যে-কোনো বিষয়ের প্রতি আগ্রহ জাগিয়ে তুলতে পারতেন।
নাদের আলি➛ নাদের আলি ‘মায়াদ্বীপ’ গল্পের প্রধান পার্শ্বচরিত্র। তিনি বড়ো নৌকোর হেড বা প্রধান মাঝি। তাঁর কোঁকড়ানো চুল, মুখ কাঁচাপাকা দাড়িতে ভরপুর। কিন্তু স্বভাবে সে সর্বদা হাসিখুশি। বাচ্চাদের মজার গল্প শোনাতে সে ওস্তাদ। তার মধ্যে সংস্কার পূর্ণমাত্রায় বিরাজমান। তাই সে ভুত-প্রেতে বিশ্বাসী।
রাঙ্গমাসি➛ রাঙামাসি কথকের জলকন্যা দেখাকে গুল 'বলেছিলেন, এবং কথক যে নীলু নামে পরিচিত তাও রাঙামাসির মুখ থেকে জানতে পারি। রাঙামাসির জন্যই ছোটোকাকার বিশ্বাসঘাতক রূপটি কথকের সামনে ধরা পড়ে।

 

৪.১২ এই গল্পে মানুষ ছাড়া যে সকল প্রাণীর কথা রয়েছে তাদের নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ লেখো।
উত্তর : গল্পে যে যে প্রাণীর নাম রয়েছে, সেগুলি হল--শুশুক, সাপ, কুমির।
শুশুক➛ একপ্রকার জলজ প্রাণী। সাধারণত নদীর জলে দেখা যায়। এই প্রাণী দেখতে অনেকটা শুয়োরের মতো। মুখ থ্যাবড়া। নদীর জলের ওপরে মাঝে মাঝে হঠাৎ মুখ তুলে মুহূর্তে আবার এরা গভীর জলে ডুবে যায। গঙ্গা নদীর জলে হামেশাই এগুলোকে দেখা যায়।
সাপ➛ সাপ সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। দড়ির মতো লম্বা। বনে জঙ্গলে, ঝোপে লুকিয়ে থাকে। কীটপতঙ্গ খায়, ইঁদুর খায়। সাপ দুই প্রকার। বিষধর এবং বিষহীন। ময়াল, ঢোঁড়া সাপ, মেটেলি সাপ, লাউডগা ইত্যাদি হল বিষহীন সাপ। গোখরো, কেউটে, শাঁকামুঠি, শঙ্খচূড় ইত্যাদি মারাত্মক বিষধর সাপ। বিষধর সাপের কামড়ে প্রতি বছর গ্রামাঞ্চলে অসংখ্য লোক মারা যায়।
কুমির➛ জলজ প্রাণী। সাধারণত এরা থাকে নোনাজলের নদীতে। পশ্চিমবাংলার সুন্দরবনের নদীগুলিতে প্রচুর কুমির আছে। এরা সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। এরা ডিম পাড়ে। কিন্তু মাংসাশী প্রাণী। এরা নদীর জলে মরার মতো পড়ে থাকে। স্থলের কোনো প্রাণী না জেনে তার কাছাকাছি গেলে তাকে দাঁতে তুলে নদীর গভীর জলে ডুব দেয়। লম্বাটে মুখে প্রচুর দাঁত থাকে। দাঁত দিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলে। এরা খুব শক্তিশালী। অনেকসময় বনের বাঘ জল খেতে নামলে বাঘের পা কামড়ে ধরে জলে টেনে নিয়ে যায়।

 
৫. নীচের শব্দগুলির বর্ণবিশ্লেষণ করে ব্যঞ্জনবর্ণগুলি কোনটি কোন বর্গের— তা ছক করে তার ঠিক ঠিক ঘরে বসাও :
বর্ণবিশ্লেষণ ক বৰ্গ চ বৰ্গ ট বর্গ ত বর্গ প বর্গ
নদী–ন্ + অ + দ্ + ঈ ন, দ
মাথা—ম্ + আ + থ্ + আ
মতন—ম্ + অ + ত্ + অ + ন্ + অ ত,ন
অনেক—অ + ন্ + এ+ ক্ + অ
ছোটোকাকা—ছ+ও+ট্+ও+ক্+আ+কৃ+আ
ডানদিক—ড্+আ+ন্+অ+দ্+ই+ক্+ অ


৬. তুমি কিছুটা রেলপথে, কিছুটা জলপথে এবং কিছুটা হাঁটাপথে কোথাও বেড়াতে গিয়েছিলে। এই বেড়ানো তোমার কেমন লেগেছে তা তোমার ডায়ারির পাতায় দিনলিপির আকারে লেখো।
উত্তর : আমি গিয়েছিলাম মামার বাড়ি। মেদিনীপুরের একটি গ্রাম। গ্রামের নাম ত্রিলোচনপুর, থানা ডেবরা। বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে ট্রেন ধরলাম। গ্রামের রেলপথের ওপর দিয়ে ট্রেন ছুটছে। গাছপালাগুলো যেন প্রাণপণে ছুটে যাচ্ছে। বেশ মজা লাগছে দেখতে। কোলাঘাট স্টেশনে নামলাম। সেখানে নেমে এবার নৌকায় উঠলাম। এই নৌকা যন্ত্রের সাহায্যে চলে। নৌকায় প্রায় জনা ত্রিশেক যাত্রী। নদীর জল কেটে কেটে নৌকা ভেসে চলেছে। সে এক আরও আনন্দের ভ্রমণ। নৌকাটা মিনিট কুড়ির মধ্যে পৌঁছে দিল। মনে হল, আরও কিছুক্ষণ নৌকায় থাকলে খুব ভালো লাগত। সেখান থেকে আধঘণ্টা মাঠের মধ্যে আলপথ ধরে প্রত্যন্ত গ্রামে গেলাম মামাবাড়ি। হাঁটাপথেও গ্রামের
দৃশ্য দেখার মতো। তিনদিন মামাবাড়িতে থেকে ফিরে এলাম আমরা ওই পথেই। আবার কবে যার মামাবাড়ি ভাবছি।


৭. দুটি করে বাক্যে যুক্ত হয়ে বাক্যগুলি তৈরি হয়েছে। তুমি ৰাক্যদুটিকে আলাদা করে লেখো :
উত্তর : ৭.১. হঠাৎ হঠাৎ হুস করে মাথা তোলে। আবার জলে ডুবে যায়।
উত্তর : ৭.২. নদীর মধ্যে দ্বীপ থাকে। তা অনেকেই জানে না।
উত্তর : ৭.৩. নাদের আলি আবার চোখ খুলল। তারপর আমি তখন জিজ্ঞেস করলাম।
৮. ‘মারমেড’–এর মতো অলৌকিক কিংৰা বাস্তবে যাঁদের অস্তিত্ব নেই— যারা থাকে শুধু কল্পনায়— এমন কিছুউদাহরণ তুমি সংগ্রহ করে লেখো।
উত্তর : নিজে লেখো।
৯. নীচের শব্দগুলির বিপরীতার্থক শব্দ লেখো ও তা দিয়ে বাক্যরচনা করো :
(ঘুম, ভিড়, অধীর, হিংস্র, প্রবল, স্পষ্ট, দৃঢ়)
  1. ঘুম➛ জাগা। আমার ১ বছরের ছোট্ট ভাইটি সারারাত জাগা থাকে।
  2. ভিড়➛ফাঁকা। এবার করোনা আতঙ্কের জন্য পুজো প্যান্ডেলগুলি বেশ ফাঁকা।
  3. অধীর➛স্থির/শান্ত। আমি বন্ধুর জন্য স্টেশনে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলাম।
  4. হিংস্র➛নিরীহ। গোরু খুব নিরীহ পশু।
  5. প্রবল➛সামান্য। অঙ্কে তার সামান্য আগ্রহ আছে।
  6. স্পষ্ট➛অস্পষ্ট। রানার কথা খুব অস্পষ্ট, বোঝা যায় না।
  7. দৃঢ়➛ভঙ্গুর/নড়বড়ে। ঝড়ে শিউলিফুলের গাছটার শিকড়টা ভঙ্গুর হয়ে গেছে।
১০. সর্বনামের প্রয়োগ রয়েছে এমন পাঁচটি বাক্য গল্পটি থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো।
উত্তর : (i) সে কতরকমের গল্প শোনাত আমাদের। (ii) আমরা বলি মায়াদ্বীপ। (iii) যে বছর খুব বৃষ্টি কিংবা বন্যা হয়, সে বছর দ্বীপটা চলে যায় জলের তলায়। (iv) সে ফুলগাছে হাত বুলোচ্ছে। (v) তুমি ছোটোকাকাকে জিজ্ঞেস করো।
১১. ‘হেড-মাঝি’— শব্দবন্ধটিতে ইংরেজি ও বাংলা শব্দের সমন্বয় ঘটেছে। এমন পাঁচটি শব্দ তুমি তৈরি করো।
উত্তর : (i) হেড়—মাস্টার, (ii) হেড—মিস্ত্রী। (iii) হেড—পণ্ডিত। (iv/v) হেড—ক্লার্ক, মাস্টারমশায়।
১২. নীচের বাক্যগুলিতে বিশেষণ চিহ্নিত করো :
উত্তর :১২.১ আমাদের জন্য মামাবাড়ি থেকে আসত একটা বড়ো নৌকো।
উত্তর :১২.২ সবচেয়ে কম দেখতে পান মা।
উত্তর :১২.৩ ভালো নাম দিয়েছে।
উত্তর :১২.৪ প্রচুর সাপ, একেবারে কিলবিল করছে।
উত্তর :১২.৫ শুধু মাথা উঁচু করে থাকে শিমুল গাছটা।
উত্তর :১২.৬ আমার আজও দৃঢ় বিশ্বাস আমি একটি জলকন্যাকেই দেখেছি।

১৩. ঘটনাগুলির পাশাপাশি কারণ খুঁজে নিয়ে লেখো :
ঘটনা কারণ
১৩.১ মামাবাড়ি থেকে আসত একটা বড়ো নৌকো। কথকদের নিজস্ব নৌকোটি ছিল ছোটো।
১৩:২ ছোটোকাকার কথায় আমাদের সবসময় সন্দেহ থেকে যেত। ছোটোকাকা সবসময় বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলত। কথকরা পাঁচটা শুশুক দেখলে ছোটোকাকা বলত সে দেখেছে এগারোটা।
১৩.৩ ছোটোকাকা বলল, 'না না, ওখানে নামা যাবে না। ওখানে প্রচুর সাপ কিলবিল করছে।
১৩.৪ নাদের আলিকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘সত্যিই ওখানে সাপ আছে? ছোটোকাকা সবসময় একটু বাড়িয়ে বলে।
১৩.৫ অন্য দুজন মাঝিও চোখ বুজে ফেলেছে। কারণ জলকন্যাদের দেখতে নেই।

১৪. শব্দযুগলের অর্থপার্থক্য দেখাও :
দ্বীপ➛চারদিকে জলবেষ্টিত স্থলভাগ।
দীপ➛প্রদীপ।
অন্য➛ভিন্ন।
অন্ন➛চাল/ভাত।
বান➛বন্যা/জলোচ্ছ্বাস।
বাণ➛তির/শর।
কাচা➛কাপড়চোপড় পিটিয়ে ধোয়া।
কাঁচা➛অপক্ব।
ভাল➛কপাল।
ভালো➛উত্তম।
সাপ➛সর্প, সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী।
শাপ➛কুপ্রার্থনা/অভিশাপ।

১৫. ‘রাস্তা-টাস্তা’— শব্দবন্ধে প্রথম অংশে যেমন নির্দিষ্ট অর্থ রয়েছে, পরের অংশের তা নেই। তুমি এমন পাঁচটি শব্দবন্ধ তৈরি করো।
উত্তর : (1)চা—টা (2) টিকিন—টুফিন (3) শাড়ি—টাড়ি (4) মিষ্টি—টিষ্টি (5) ঘুম—টুম।
১৬. ‘পাল’ ও ‘ঘাট’ এই শব্দদুটিকে পৃথক অর্থে ব্যবহার করে বাক্যরচনা করো :
পাল➛ দূর থেকে জমিদারি নৌকোর মস্ত বড়ো লালরঙের পাল দেখা যাচ্ছে।
ঘাট➛ গ্রামের মধ্যে ঘোষালদের পুকুরের বাধানো ঘাট সবচেয়ে বড়ো।


১৭. নীচের কোন বাক্যে কোন ভাব প্রকাশ পেয়েছে লেখো :
উত্তর : ১৭.১ কী যে ভালো লাগত! (বিস্ময়)
উত্তর : ১৭.২ সে নদীটার নামও খুব মিষ্টি, বাতাসি। (প্রশংসা)
উত্তর : ১৭.৩ অনেকটা যেন মানুষের মতো। (সংশয়)
উত্তর : ১৭.৪ যা চশমাটা কোথায় গেল? (প্রশ্ন)
উত্তর : ১৭.৫ না, না, ওখানে নামা যাবে না। (নিষেধ)

১৮. নীচের চারটি ছবি আছে। এই চারটি ছবিকে নিয়ে তুমি নিজের ভাষায় একটি অনুচ্ছেদ লেখো :
উত্তর : ছবিটি তোমার বইয়ের পৃষ্ঠা - ১৬১ দেখো। একটি নদীতে পাল তুলে নৌকো যাচ্ছে। আর একটা ছই দিয়ে ঘেরা একটি নৌকো যাচ্ছে। নৌকোতে যাত্রীরা বসে এঁকেবেঁকে এগিয়ে চলেছে। নদীর আরেক তিরে একটি বড়ো গাছের ও ঝোপের পিছনে একটি মেয়েকে দেখা যাচ্ছে। গাছে অনেক পাখি আছে।


ghum bhangani class 4




➧ঘুম ভাঙানি কবিতাটির লেখক পরিচিতি :
কবি মোহিতলাল মজুমদার ১৮৮৮ সালে হুগলি জেলার বলাগড়ে জন্মগ্রহণ করেন। হুগলি জেলার বলাগড় গ্রামে কবি মোহিতলাল মজুমদারের আদি বাড়ি। তাঁর পিতার নাম নন্দলাল মজুমদার। রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক কালে যাঁরা এক স্বতন্ত্র ধারার খোঁজে নতুন ধরনের কবিতা লিখেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কবি মোহিতলাল মজুমদার। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল বিস্মরণী, স্মরগরল, হেমন্ত গোধূলি, ছন্দ চতুর্দশী, স্বপনপসারী ইত্যাদি। তাঁর লেখা প্রবন্ধগুলি হল ‘আধুনিক বাংলা সাহিত্য’, ‘জীবনজিজ্ঞাসা’, ‘সাহিত্য বিচার' ইত্যাদি। কবি মোহিতলাল মজুমদার শেষ জীবনে কিছুদিন ‘বঙ্গদর্শন’ ও ‘'বঙ্গভারতী’ নামক সাময়িকপত্র সম্পাদনা করেছিলেন।

➧ঘুম ভাঙানি কবিতাটির বিষয়বস্তু :
কবিতাটি পড়ে মনে হচ্ছে লেখক স্বপ্ন দেখছেন। জ্যোৎস্না রাতে লেখক বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছেন। তিনি অনুভব করছেন কারা যেন ঝিমি ঝিমি ঝুমঝুম করে গান গাইছে। ছোট্ট লক্ষ্মীমেয়েকে পিটি-পিটি করে না চেয়ে উঠে পড়তে বলছেন। বলছেন চাঁদ মিটিমিটি চাইছে, বনভূমি নিঝঝুম হয়ে আছে। ফাল্গুন এলেই পরিরা বনে বনে ফুল বোনে। তোমরা ভাইবোনে এসো। চোখে তোমাদের ঘুম কেন? জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে লেখক দেখছেন জ্যোৎস্নার রাত। পাতাগুলো যেন স্নান করেছে জ্যোৎস্নার আলোতে। সবুজ পাতা রুপালি হয়ে গেছে। কান পেতে শুনলে মনে হবে যেন আমরা গান গাইছি। ছোটো ছোটো লণ্ঠন গায়ে গায়ে ঠন ঠন করে দুলছে। চারদিকে যেন আলোর রোশনাই লেগেছে। আবছায়া কবি ভালোবাসেন ঘুরে ঘুরে উড়ে উড়ে গান গাইতে চাইছেন। দিল কখন খুঁশ হয়ে গেছে, হুঁশ নেই। চুপি চুপি ভয়ে ভয়ে জ্যোৎস্নার আবছা আলোতে জুতো মোজা পায়ে দিয়ে যেই গেছে অমনি কোথা থেকে যেন সব রোশনাই চলে গেল। পরিরা হারিয়ে গেল। গান, সুর কিছুই আর খুঁজে পাওয়া গেল না। বাইরেটা পুরো ফ্যাকাশে হয়ে এসেছে। শ্যামাপাখি ডানায় শিশির মেখে ভোরের আলোয় ডাকাডাকি করছে। এদিকে ভোর হয়ে এসেছে আকাশে।

ঘুম ভাঙানি কবিতাটির প্রশ্ন উত্তর পৃষ্ঠা - ১৬৪
        🖉 হাতে কলমে :
১. মোহিতলাল মজুমদারের লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর : মোহিতলাল মজুমদারের লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থ হল – হেমন্ত গোধূলি, স্মরগরল।
২. তাঁর সম্পাদিত দুটি পত্রিকার নাম লেখো। 
উত্তর : তাঁর সম্পাদিত দুটি পত্রিকা হল বঙ্গদর্শন ও বঙ্গভারতী।
৩. পূর্ণিমায় ফুটফুটে জোছনা যেমন, তেমনই ঘুটঘুটে অন্ধকার, অমাবস্যায়।
৪. ‘পিটিপিটি’ ও ‘মিটিমিটি’ তাকানোর অর্থ হল পিটপিট করে চাওয়ামিটমিট করে চাওয়া।
৫. ‘লক্ষ্মীটি’ শব্দটি কবিতায় যে অর্থে ব্যবহার হয়েছে কোনো শিশুকন্যার উদ্দেশ্যে
৬. কবিতায় কিছু শব্দ উচ্চারণে তার মূল চেহারা থেকে বদলে গেছে। বদলে যাওয়া চেহারার পাশাপাশি মূল শব্দগুলি লেখো :
উত্তর: জোছনা—জ্যোৎস্না। বিছনা—বিছানা। আবছায়—আবছা। নিবে—নিভে। নিঝঝুম—নিঃঝুম।
শ্যামা-পাখি—শ্যামাপাখি।

৭. কবিতা থেকে ধ্বন্যাত্মক শব্দগুলি খুঁজে নিয়ে তা দিয়ে স্বাধীন বাক্য রচনা করো :
ফুটফুটে➛ ফুটফুটে বাচ্চাদের সবাই ভালোবাসে।
ঝুম ঝুম➛ ঝুম ঝুম নূপুর বাজে।
ঝিমিঝিমি➛ ঝিমি ঝিমি বাজনা বাজে।
বনে বনে➛ বনে বনে নানা পাখি ডাকে।
ঘুম ঘুম➛ ঘুম ঘুম চোখে মা বিছানা ছেড়ে উঠে এলেন।
ছোটো ছোটো➛ ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরা মাঠে খেলা করছে।
গায়ে গায়ে➛ কলকাতায় অনেক বাড়ি গায়ে গায়ে ঠাসা।
ঠন ঠন➛ ঠন ঠন করে কাঁসর বাজে।
ঘোর ঘোর➛ ঘোর ঘোর রাস্তা হাটতে বিরক্ত লাগে।
চুপি চুপি➛ চোরটা চুপি চুপি ঘোষবাবুদের বাড়িতে ঢুকে পড়ল।
ভয়ে ভয়ে➛ ভয়ে ভয়ে থাকলে মানুষ আরও চেপে ধরে।
ফুর ফুর➛ ফুর ফুর দখিণা বাতাস বয়।
ডাকাডাকি➛ বেশি ডাকাডাকি করে লাভ নেই ওর ঘুম ভাঙবে না।
মিটি মিটি➛ চাঁদ মিটি মিটি হাসে।


৮. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :
৮.১. কবিতায় কোন ঋতুর কথা রয়েছে?
উত্তর : কবিতায় বসন্তকালের কথা বলা হয়েছে।
৮.২. গান গেয়ে কারা ডাকে?
উত্তর : লণ্ঠনরা গান গেয়ে ডাকে।
৮.৩ জানালায় মুখ বাড়িয়ে বাইরে কী দেখা গেল?
উত্তর : জানলায় মুখ বাড়িয়ে বাইরে সাদা জ্যোৎস্না দেখা গেল।
৮.৪. পাতাগুলোকে রুপোলি লাগছে কেন?
উত্তর : পাতাগুলির গায়ে জ্যোৎস্নার আলো পড়ে সাদা হয়ে রয়েছে তাই পাতাগুলি রুপালি লাগছে।
৮.৫. ‘ওঠো শোনো কান পেতে’—কান পাতলে কী শোনা যাবে?
উত্তর : কান পাতলে গান শোনা যাবে।
৮.৬. চুপি চুপি ভয়ে ভয়ে' কবিতার কথক কোন কাজ করতে চায়?

উত্তর : ‘চুপি চুপি ভয়ে ভয়ে’ কথক জোছনার আবছায় বাইরেটা দেখতে চায়।
৮.৭. তাঁর উদ্দেশ্য সফল হল কি? 
উত্তর : না, তার উদ্দেশ্য সফল হয়নি।
৯. ভিজে জবজবে-র মতো আর কোন কোন শব্দ পাশাপাশি পাতায় লিখতে পারো তা কবিতাটি থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো।
উত্তর : ফুটফুটে জোছনায়। চাঁদ চায় মিটিমিটি। ফাল্গুনে বনে বনে। চোখে কেন ঘুম ঘুম। গায়ে ঠন ঠন। চুপি চুপি ভয়ে ভয়ে। শোনা যায় ফুর ফুর। বাতাসের ঝুর ঝুর। করছিল ডাকাডাকি।
১০. নীচের পঙ্ক্তিগুলিতে ‘বনে’, ‘বোনে’, ‘বোনে’ শব্দ তিনটি উচ্চারণে এক হলেও অর্থে আলাদা। এই তিনটি শব্দের অর্থ লেখো এবং তা দিয়ে বাক্যরচনা করো।
ফাল্গুনে বনে বনে➛ এই বনের অর্থ হল জঙ্গলে।
জঙ্গল➛ গভীর জঙ্গলে বাঘ, সিংহ থাকে।
পরিরা যে ফুল বোনে➛ এই বোনে মানে তৈরি করে।
তৈরি করে➛ কুমোর মাটির নানারকম জিনিস তৈরি করে।
চলে এসো ভাই বোনে➛ এই বোনে মানে ভগিনী।
ভগিনী➛ ভগিনীরা ভাইকে ভাইফোঁটা দেয়।

১১. গায়, চায়, বাসি, নায়, ঘোর, সুর— এই শব্দগুলিকে দুটি অর্থে ব্যবহার করে আলাদা আলাদা বাক্য লেখো।
গায়➛ আমার বাবার গায় নতুন জামা।
গায়➛ মেয়েটি সুন্দর গান গায়।
বাসি➛ বাসি খাবার খেতে নেই।
বাসি➛ আমি আমার বোনকে খুব ভালোবাসি।
চায়➛ মেয়েটি আমার বাড়ি থাকতে চায়।
চায়➛ বিড়াল পিটি পিটি চায়।
নায়➛ মাঝিরা নায় নিয়ে মাছ ধরতে যায়।
নায়➛ ছেলেরা পুকুরে নায়।
ঘোর➛ ঘুমের ঘোরে সে পড়ে গেল।
ঘোর➛ পাহাড়ের ঘোর ঘোর পথ আমার খুব ভয় করে।
সুর➛ হাতির সুর খুব লম্বা হয়।
সুর➛ মেয়েটির গলায় গানের সুর আছে।

১২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১২.১ কবিতায় কথক রাত জেগে বাইরে কী দেখে?
উত্তর : কবিতায় কথক রাত জেগে বাইরে দেখে জোছনার রুপোলি আলোয় গাছের পাতা রুপালি হয়ে গেছে।
১২.২ কবিতায় বর্ণিত বনভূমি নিঝঝুম কেন?
উত্তর : জ্যোৎস্না রাতে চাঁদ মিটি মিটি চাইছে। রাত তখন অনেক সবাই ঘুমোচ্ছে। বনভূমিও ঘুমোচ্ছে। তাই বনভূমি নিঝঝুম।
১২.৩ ‘মোরা আছি গানে মেতে’—এখানে ‘মোরা’ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? তারা গান গেয়ে কী বলছিল?
উত্তর :  এখানে ‘মোরা’ বলতে লণ্ঠনদের কথা বলা হয়েছে। তারা বলছিল ঝকঝকে পল্টন, আমোদের রোশনাই।
১২.৫ কথক চুপি চুপি জুতোমোজা পায়ে দিয়ে বাইরে যেতে কী ঘটনা ঘটল তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর : কথক চুপি চুপি জুতো মোজা পায়ে দিয়ে বাইরে যেতে তিনি দেখলে কোথাও সুর নেই, গান নেই। আমোদের রোশনাই নিবে গেছে, পরিদের কোনো খোঁজ নেই। শোনা যাচ্ছে বাতাসের ফুরফুর শব্দ। আকাশটা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। শ্যামা পাখি ভোর হয়েছে জানান দিচ্ছে মাঠের মধ্যে।
১২.৬ এমনই কোনো এক জ্যোৎস্না রাতে জানালা দিয়ে চাঁদের আলো এসে তোমার বিছানায় পড়ছে। তোমার ঘুম আসছে না। এই জ্যোৎস্না রাতে তোমার নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তুমি কয়েকটি বাক্য লেখো।
উত্তর : এমনই জ্যোৎস্নারাতে আমি বিছানায় একদিন শুয়ে আছি। জানালাটা খোলা। মুখের মধ্যে জ্যোৎস্নার আলো এসে পড়েছে। আমাদের বাড়ির পাশেই ছিল ছোট্ট একটা উঁচুনীচু মাঠ। আর ছিল ছোট্ট একটা পুকুর। ছিল গাবভেরেন্ডার ছোটো ছোটো ঝাড়। হঠাৎ আমার মনে হল একটু বাইরে যাব। তখন বেশি রাত হয়নি। ঠাকুমাকে বললাম ‘আমাকে একটু বাইরে নিয়ে যাবে'। ঠাকুমা আমাকে বাইরে বলতে ওই পুকুরপাড়ে মাঠের ধারে নিয়ে গিয়েবসলেন। মাঠে একটা মাদুর পাতলাম। ঠাকুমা আমাকে চাঁদ সম্বন্ধে অনেক গল্প বললেন। পুকরে  চাঁদটার ছবি আমাকে মোহিত করেছিল। মাঝে মাঝে জল নড়ে, চাঁদটাও নড়তে থাকে। কখন জানিনা ঠাকুমার কোলেই ঘুমিয়ে পড়লাম। যখন ঘুম ভাঙলো তখন দেখলাম সকাল হয়ে গেছে, বিছানায় শুয়ে আছি।




Related Tags: class 4 bangla,class 4,class 4 mayadip golpo,class 4 bengali question answer,totto chan adventure class 4,patabahar class 4,class 4 bangla narhari das,class 4 bengali kabita malgari,class 4 bangla kobita - নইলে,class 4 bangla kobita question answer,class 4 bangla,class 4 bengali,class 4 patabahar,class 4 bangla question,class 4 bangla patabahar,class 4,patabahar class 4,bangla cartoon,class 4 bangla boner khabor story,,boner khabor class 4,dakshin meru abhijan class 4,class 4 bangla boner khabor story question answer,bangla golpo,class 5 bangla,patabahar,class 4 bengali amar mar baper bari

Type Here ....

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন