Ray & Martin Question bank 2025 History Class 8 | Sargachi Ramakrishna Mission High School (HS) | Page No : 260
1. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :
(i) মোগল সম্রাট ফাররুখশিয়র একটি আদেশ বা ফরমান জারি করেছিলেন -
(a) ১৭১৭ সালে
(b) ১৭২২ সালে
(c) ১৭২৩ সালে
(d) ১৭২৭ সালে
(ii) ‘অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি' চালু করেছিলেন –
(a) রবার্ট ক্লাইভ
(b) ওয়ারেন হেস্টিংস
(c) লর্ড ওয়েলেসলি
(d) লর্ড ডালহৌসি
(iii) সলবাই-এর চুক্তি হয়েছিল –
(a) ১৭৬৫ সালে
(b) ১৭৭০ সালে
(c) ১৭৮২ সালে
(d) ১৮০২ সালে
(iv) ব্রিটিশ কোম্পানিকে বাংলা-বিহার-ওড়িশার দেওয়ানির অধিকার দেন-
(a) রবার্ট ক্লাইভ
(b) সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম
(c) সম্রাট ফাররুখশিয়র
(d) সম্রাট ঔরঙ্গজেব
(v) ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল –
(a) ১৭৯৩ সালে
(b) ১৮০০ সালে
(c) ১৮০২ সালে
(d) ১৮২৩ সালে
(vi) এশিয়াটিক সোসাইটি কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন -
(a) উইলিয়াম কেরি
(b) উইলিয়ম জোনস
(c) লর্ড ওয়েলেসলি
(d) লর্ড কর্নওয়ালিশ
2. ঠিক না ভুল লেখো :
(i) ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দে মূর্শিদকুলিকে বাংলার নাজিম পদ দেওয়া হয়।
➛ ভুল
(ii) মুর্শিদকুলির মতো আলিবর্দি খানও বাংলায় ইউরোপীয় বণিকদের বাণিজ্যের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিলেন।
➛ ঠিক
(iii) লর্ড ওয়েলেসলি সিভিল সার্ভিস বা অসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করেন।
➛ ভুল
(iv) ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানি দশসালা বন্দোবস্ত চালু করে।
➛ ভুল
3. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষেপে উত্তর দাও : (যে-কোনো দুটি)
(i) 'পলাশির লুণ্ঠন' বলতে কী বোঝো?
➛ পলাশির যুদ্ধের পর মিরজাফরকে বাংলার নবাব পদে বসিয়ে ব্রিটিশ কোম্পানি অবাধে বাংলায় সম্পদ লুণ্ঠন করেছিল। রবার্ট ক্লাইভসহ কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মচারীরা ব্যক্তিগতভাবে মিরজাফরের থেকে প্রায় 3 কোটি টাকার সম্পদ আত্মসাৎ করেছিল। ব্রিটিশ কোম্পানির এই অর্থ আত্মসাৎকে ব্রুকস অ্যাডামস পলাশির লুণ্ঠন বলেছেন।
(ii) দ্বৈত শাসনব্যবস্থা বলতে কী বোঝো?
➛ দেওয়ানি লাভের পর রাজনৈতিক ও নিজামতের দায়িত্ব ছিল বাংলার নবাবের হাতে। যাবতীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রয়ে গিয়েছিল নবাব নজম-উদ্ দৌলার ওপর। অন্যদিকে অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব ও রাজস্ব আদায়ের অধিকার পেয়েছিল ব্রিটিশ কোম্পানি। ফলে নবাবের হাতে ছিল অর্থনৈতিক ক্ষমতাহীন রাজনৈতিক দায়িত্ব। ব্রিটিশ কোম্পানি পেয়েছিল দায়িত্বহীন অর্থনৈতিক ক্ষমতা। বাংলায় ওই শাসনব্যবস্থাকে দ্বৈত শাসনব্যবস্থা বলা হয়।
(iii) ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দের রেগুলেটিং অ্যাক্ট-এ কী বলা হয়েছিল?
➛ রেগুলেটিং অ্যাক্ট অনুসারে মাদ্রাজ, বোম্বাই ও বাংলা প্রেসিডেন্সি তিনটির স্বতন্ত্র কার্যকলাপের উপর হস্তক্ষেপ করা হয়। গভর্নর জেনারেল বলে নতুন একটি পদ তৈরি করা হয়। ঠিক করা হয় বাংলার গভর্নরই হবেন গভর্নর জেনারেল। তাঁর অধীনেই মাদ্রাজ ও বোম্বাইয়ের বাণিজ্যিক ঘাঁটিগুলির গভর্নরেরা থাকবেন। গভর্নর জেনারেল পদের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। চারজন সদস্য নিয়ে তৈরি হবে একটি গভর্নর জেনারেলের কাউন্সিল। বস্তুত, এই আইনের ফলে কলকাতা ভারতে ব্রিটিশ শাসনের রাজধানীতে পরিণত হয়।
(iv) পিটের ভারত শাসন আইনে কী বলা হয়েছিল?
➛ ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী উইলিয়ম পিট (যাঁকে William Pitt, the younger বলা হতো) নতুন একটি আইন বানান। সেই আইনকে পিট প্রণীত বা পিটের ভারত শাসন আইন বলা হয়। ১৭৮৫ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি ঐ আইনটি বলবৎ হয়। এর ফলে ভারতে ব্রিটিশ কোম্পানির কার্যকলাপের উপর ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নজরদারি নিশ্চিত হয়েছিল। পিট প্রণীত আইন মোতাবেক একটি বোর্ড অফ কন্ট্রোল তৈরি করা হয়। সেই বোর্ডকে কোম্পানির সামরিক ও অসামরিক শাসন ও রাজস্ব ব্যবস্থা পরিচালনার পুরো দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাশাপাশি, ঐ আইনে স্পষ্ট বলা হয়েছিল যে, ভারতে কোম্পানির সমস্ত প্রশাসনিক কর্তাই গভর্নর জেনারেলের কর্তৃত্ব মেনে চলতে বাধ্য।
4. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও : (যে-কোনো দুটি)
(i) দেওয়ানি লাভের (১৭৬৫ খ্রি) গুরুত্ব লেখো।
➛ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছিল একটি বিদেশি শক্তি। সেই প্রথম কোনো বিদেশি বণিক কোম্পানির হাতে একটি সুবার দেওয়ানির অধিকার ন্যস্ত হয়েছিল। ক্রমে দেখা যায় নিজেদের বাণিজ্য চালানোর প্রয়োজনে ব্রিটিশ কোম্পানির ব্রিটেন থেকে মূলধন নিয়ে আসার পরিমাণ হ্রাস পেতে থাকে। বাংলার রাজস্বই কোম্পানির ব্যবসায় লগ্নি করা হয়। বস্তুত ১৭৫৭ থেকে ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার প্রধান শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়। তার ফলে ধীরে ধীরে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তারের ভিত তৈরি হয়েছিল। ‘বণিকের মানদণ্ড’ ক্রমে ‘রাজদণ্ডে’ পরিণত হয়েছিল।
অথবা এভাবেও লিখতে পারো ☞ কোম্পানির দেওয়ানি লাভ ভারত ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা- ① দেওয়ানি লাভের ফলে কোম্পানির সার্বভৌমত্বের ভিত্তি সুদৃঢ় হয় এবং কোম্পানি একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়। ② দেওয়ানি লাভের ফলে কোম্পানি বাংলা সুবার রাজস্ব আদায় ও দেওয়ানি বিচারের অধিকার পায়। এর ফলে সমকালীন রাজন্যবর্গ ও জনসাধারণের চোখে কোম্পানির মর্যাদা বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।
(ii) স্বত্ববিলোপ নীতির প্রয়োগ কোম্পানির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় কী ভূমিকা নিয়েছিল?
➛ স্বত্ববিলোপ নীতি ১৮৪৭ সালে লর্ড ডালহৌসি কর্তৃক প্রবর্তিত হয়েছিল। স্বত্ববিলোপ নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে ব্রিটিশ কোম্পানির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ চূড়ান্ত রূপ পেয়েছিল। এই নীতির প্রয়োগে লর্ড ডালহৌসির আমলে (1848-1856) কোম্পানির আগ্রাসী রূপ প্রকট হয়েছিল। এই নীতিতে বলা হয় যে, কোম্পানির আশ্রিত বা সাহায্যপুষ্ট কোনো ভারতীয় রাজা নিঃসন্তান হলে তিনি কোনো দত্তক পুত্র গ্রহণ করতে পারবেন না। নিঃসন্তান অবস্থায় কোনো রাজা মারা গেলে তাঁর রাজ্য সরাসরি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত হবে। স্বত্ববিলোপ নীতি প্রয়োগ করে ডালহৌসি সাতারা, নাগপুর, জয়েতপুর, বাঘাট, সম্বলপুর, ঝাঁসি, জয়েতপুর প্রভৃতি রাজ্যগুলিকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। এইভাবে 1897 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে লর্ড ডালহৌসির নেতৃত্বে ভারতীয় উপমহাদেশের 60 ভাগেরও বেশি অঞ্চলে ব্রিটিশ কোম্পানির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল।
(iii) টীকা লেখো : ‘মেকলে মিনিট্স'।
➛ ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রারম্ভে টমাস ব্যাবিংটন মেকলের নাম নিঃসন্দেহে স্মরণীয়। তিনি ছিলেন লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের আইনসচিব ও ‘জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন' বা জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি। ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন অনুযায়ী ভারতীয়দের শিক্ষার জন্য বার্ষিক এক লক্ষ টাকা ব্যয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এই টাকা প্রাচ্য না পাশ্চাত্য শিক্ষাখাতে ব্যয়িত হবে এই নিয়ে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদীদের মধ্যে তুমুল মতানৈক্য দেখা দেয়। এমতাবস্থায় লর্ড উইলিয়ম বেন্টিঙ্কের আইনসচিব পাশ্চাত্য শিক্ষানুরাগী মেকলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাপ্রসারের পক্ষে যে মিনিট বা প্রস্তাব পেশ করেন, তাকে ‘মেকলে মিনিট’ বা ‘মেকলে প্রস্তাব' বলা হয়।
মেকলে প্রস্তাব দ্বারা প্রাচ্য-পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে। মেকলে বলেন, উচ্চ ও মধ্যবিত্ত ভারতীয়দের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষা বিস্তৃত হলে তা ‘ক্রমনিম্ন পরিশ্রুত নীতি' (Down ward Filtration Theory) অনুযায়ী ধীরে ধীরে চুঁইয়ে চুঁইয়ে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। মেকলের লক্ষ্য ছিল সাংস্কৃতিক বিজয়। তিনি বলেন যে পাশ্চাত্য শিক্ষার ফলে এমন এক ভারতীয় গোষ্ঠী তৈরি হবে যারা ‘রক্তে ও বর্ণে হবে ভারতীয়, কিন্তু রুচি, মত, নৈতিকতা এবং বুদ্ধিমত্তায় হবে ইংরেজ। তারাই পরে জনগণের মধ্যে নতুন জ্ঞান প্রচার করবে এবং ইংরেজি শিক্ষার ফলে ভারতে নব জাগ্রতি আসবে।’
(iv) ঔপনিবেশিক প্রশাসনের গৃহীত শিক্ষানীতির উদ্দেশ্য কী ছিল?
➛ ঔপনিবেশিক প্রশাসনের তরফে গৃহীত শিক্ষাবিস্তার নীতির কতগুলি জরুরি দিক ছিল। ওই শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশ্যই ছিল সমাজের কিছু সংখ্যক মানুষকে শিক্ষিত করে ঔপনিবেশিক প্রশাসনিক কাঠামোর সঙ্গে সংযুক্ত করে নেওয়া। বাস্তবে সার্বিক গণশিক্ষার কোনো পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। তা ছাড়া উচ্চ শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজি ভাষাকে নির্দিষ্ট করে দেওয়ার ফলে শিক্ষাবিস্তারের গণমুখী চরিত্র তৈরি হয়নি। পাশাপাশি উপযুক্ত প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ বা হাতেকলমে শেখার ব্যবস্থা যথেষ্ট না থাকায় কেবল পুঁথিগত চর্চার উপরেই শিক্ষার বিস্তার নির্ভর করেছিল। তাছাড়া পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতি অনেক ক্ষেত্রেই নির্বিচার সমর্থনের ফলে ভারতীয় প্রচলিত শিক্ষার চর্চা ক্রমে অবলুপ্তির মুখোমুখি হয়েছিল। প্রথমদিকে নারীশিক্ষার বিষয়টিকেও অবহেলা করা হয়েছিল ঔপনিবেশিক শিক্ষানীতিতে। ব্যক্তিগত কয়েকজনের উদ্যোগে নারীশিক্ষার বিস্তার শুরু হয়। তার মধ্যে অন্যতম প্রধান ছিল বীটন সাহেব (বেথুন)-এর উদ্যোগে তৈরি হওয়া বেথুন স্কুল।
5. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও : (যে-কোনো দুটি)
(i) অষ্টাদশ শতকে ভারতে প্রধান আঞ্চলিক শক্তিগুলির উত্থানের পিছনে মোগল সম্রাটের ব্যক্তিগত অযোগ্যতাই কেবল দায়ী ছিল? তোমার বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তি দাও।
➛ অনেকক্ষেত্রেই মুঘল সাম্রাজ্যের অবনতিকে মুঘল সম্রাটের ব্যক্তিগত দক্ষতা-ব্যর্থতা দিয়ে ব্যাখ্যার চেষ্টা করা হয়। যদিও একটি সাম্রাজ্য তথা শাসনব্যবস্থা শুধুমাত্র ব্যক্তি সম্রাটের দক্ষতা-যোগ্যতার ওপর নির্ভর করে না। এক্ষেত্রে মুঘল সাম্রাজ্যের অবনতির জন্য আরও বেশ কিছু কারণকে দায়ী করা যায়। মুঘল সম্রাটদের মধ্যে ঔরঙ্গজেবের পরবর্তী সময়ে শাসকগণ ছিলেন অযোগ্য। আসলে মুঘল শাসনকালের শেষের দিকে নানা কারণে মুঘল শাসন কাঠামোয় সমস্যা দেখা দিয়েছিল। জাহাঙ্গির ও শাহজাহানের সময় থেকে শুরু হয় এই সমস্যা যা ঔরঙ্গজেবের আমলে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ঔরঙ্গজেবের পরবর্তীকালের সম্রাটরা সামরিক সংস্কার না করায়, জায়গিরদারি ও মনসবদারি সংকট, কৃষি সংকট প্রভৃতির মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়ায় আঞ্চলিক শক্তিগুলি মাথা চারা দেয়। মুঘল শাসনকাঠামোর দুর্বলতার সুযোগে বাংলা, হায়দরাবাদ ও অযোধ্যার মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলি প্রায় স্বাধীন হয়ে ওঠে। সবশেষে বলা যায়, ঔরঙ্গজেবের শাসনকাল থেকে মুঘল সম্রাটের উত্তরাধিকারীদের দুর্বলতা ও অযোগ্যতার পাশাপাশি এই সমস্ত কারণগুলিও মুঘল সাম্রাজ্যের অবনতি ঘটাতে সাহায্য করেছিল।
(ii) পলাশির যুদ্ধ ও বক্সারের যুদ্ধের মধ্যে কোটি ব্রিটিশ কোম্পানির ভারতে ক্ষমতা বিস্তারের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল? তোমার বক্তব্যের সপক্ষে যুক্তি দাও ৷
➛ ভূমিকা : পলাশির যুদ্ধে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি জয়ী হয়ে ভারতে তাদের জয়যাত্রার সূচনা ঘটায়। অপরদিকে বক্সারের যুদ্ধে জয়ী হওয়ার পর এদেশে কোম্পানির রাজনৈতিক আধিপত্য সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।
① ভাগ্য নির্ণায়ক যুদ্ধ হিসেবে পলাশি নয়, বক্সারের যুদ্ধই ছিল ভারতের ইতিহাসের ভাগ্য নির্ণায়ক যুদ্ধ। এই যুদ্ধের ফলাফল যদি ইংরেজদের প্রতিকূলে যেত, তাহলে ভারতের ইতিহাস অন্যরকমভাবে লেখা হত। ② পলাশির যুদ্ধে জিতে কোম্পানি ভারতে ঔপনিবেশিক শাসনের প্রথম ধাপ অতিক্রম করেছিল। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধে জিতে কোম্পানি ঔপনিবেশিক শাসনকে দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করে। ③ বাংলায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় পলাশির যুদ্ধে জিতে বাংলায় ইংরেজ কোম্পানির জয়যাত্রার সূচনা ঘটে। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের পর ব্রিটিশ শক্তিকে বাধা দেওয়ার মতো আর কোনো শাসক রইল না। ফলে বাংলায় কোম্পানির আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পথ নিষ্কণ্টক হয়। ④ পলাশির যুদ্ধে জয়লাভের পর কোম্পানির বাংলার অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করে। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের পর বাংলার বাণিজ্য ও অর্থনীতির ওপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলায় কোম্পানির অবাধ অর্থনৈতিক লুণ্ঠন শুরু হয়।
(iii) লর্ড উইলিয়ম বেন্টিঙ্কের সংস্কারগুলি লেখো।
➛ লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের সংস্কার ভারতের ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। তাঁর আমলে লর্ড কর্নওয়ালিশ প্রবর্তিত শাসনব্যবস্থার নানা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যায়।
❐ প্রশাসনিক সংস্কার : ① বেন্টিঙ্ক কতগুলি জেলা নিয়ে একটি ডিভিশন বা বিভাগ গঠন করেন। প্রতিটি ডিভিশনে 'কমিশনার' নামে একটি নতুন পদের সৃষ্টি করেন। ② কমিশনাররা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা জজ ও পুলিশের কাজের তত্ত্বাবধান করতেন। ③ বেন্টিঙ্কই প্রথম উঁচু পদগুলিতে ভারতীয়দের নিয়োগের অনুমতি দান করেন। ④ বেন্টিঙ্ক ভারতীয় আইন বিধিগুলিকে সংকলন করে ভারতীয় আইন বিধি বা ইন্ডিয়ান পেনাল কোড' রচনা করেন।
❐ বিচারবিভাগীয় সংস্কার : বেন্টিঙ্ক, কর্নওয়ালিশ প্রবর্তিত বিচারব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করেন। যেমন- ① তিনি কর্নওয়ালিশ প্রবর্তিত ভ্রাম্যমাণ বিচারালয় ও প্রাদেশিক আদালতগুলি বাতিল করে দেন। ② ফৌজদারি বিচারের দায়িত্ব জেলা বিচারকদের ওপর অর্পিত হয়। কালেক্টরদের আবার ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। ③ তিনি উচ্চ আদালতগুলিতে ফারসির পরিবর্তে ইংরেজি এবং নিম্ন আদালত গুলিতে স্থানীয় ভাষা ব্যবহারের রীতির প্রবর্তন করেন। কাজের সুবিধার জন্য তিনি এলাহাবাদে সদর দেওয়ানি ও সদর নিজামত আদালত স্থাপন করেন।④ বিচারক পদে ভারতীয়দের নিয়োগ করে তিনি তাদের পদমর্যাদা, ক্ষমতা ও বেতন বৃদ্ধি করেন।
❐ উপসংহার : ঐতিহাসিক ফন্টন বেন্টিঙ্কের শাসনকালকে 'blank of achievements' বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু মেকলের মতে, বেন্টিঙ্ক ‘প্রাচ্যদেশীয় স্বৈরতন্ত্রের মধ্যে ব্রিটিশ স্বাধীনতার আদর্শের অনুপ্রবেশ ঘটান।
(iv) লর্ড কর্নওয়ালিশের সংস্কারগুলি সংক্ষেপে লেখো।
➛ ① কর্নওয়ালিশের সংস্কার কর্নওয়ালিশ কলকাতা, ঢাকা, মুরশিদাবাদ ও পাটনায় চারটি ভ্রাম্যমান আদালত স্থাপন করেন। ② কর্নওয়ালিশ আইন বিধিবদ্ধ করে বিচারব্যবস্থার শাখাগুলিকে পৃথক করার ব্যবস্থা করেন। ③ কর্নওয়ালিশের আমলে সমস্ত আদালতেই প্রধান বিচারপতি হতেন ইউরোপীয়রাই। কালেক্টরের পরিবর্তে 'জজদের বিচারক পদে নিয়োগ করা হত । ④ কর্নওয়ালিশ সদর নিজামত আদালতকে মুরশিদাবাদ থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করেন। সেখানকার বিচারের ভার ছিল গভর্নর জেনারেলের হাতে।

প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন – ২০২৫
1. Sargachi Ramakrishna Mission High School (HS)
2. Ramakrishna Mission Vidyabhavan (HS), Midnapore
3. Kamarpukur RK Mission MP School (HS)
4. Balurghat High School & Kanchrapara Indian Girls' High School
5. Bankura Christian Collegiate School & Malda Zilla School
6. Moyna Vivekananda Kanya Vidyapith & Alipurduar Newtown Girls' High School
7. Nabadwip Siksha Mandir & Sailendra Sircar Vidyalaya (Govt Sponsd)
8. Santamayee Girls' High School & Memari VM Institution, Unit I