উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন ২০২১ Question & Answer



স্নেহের ছাত্র-ছাত্রীরা এবার যারা 2020-2021 সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চলেছ তোমাদের সুবিধার্থে এখানে নতুন সিলেবাস অনুযায়ী অধ্যায়ভিত্তিক সাজেশন গুলি দেওয়া হয়েছে নিচে । এখানে ভালো করে বুঝে নাও তোমাদের মোট পাঁচটি অধ্যায়ের থেকে পাঁচটি প্রশ্ন অর্থাৎ কোশ্চেন পরীক্ষায় লিখতে হবে সেগুলি নম্বর হবে ৮ (Mark) মানের আর প্রতিটি অধ্যায়ে থেকে দুটি করে প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে মাস্ট  8 x 5 = 40


মোট ৫ টা প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে যার মূল্য ৮ নাম্বার করে থাকবে

Total Answer Page [1] [3]

আর উত্তর গুলি দেখতে এখানে ক্লিক করুন


নিচের এই টপিক গুলি থেকে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে কারেকশন সিলেবাস অনুযায়ী .....


  • প্রথম অধ্যায়ঃ- অতীতকে স্মরণ
  •  তৃতীয়  অধ্যায়ঃ- ঔপনিবেশিক আধিপত্যের  প্রকৃতি  
  • চতুর্থ  অধ্যায়ঃ-  সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া
  • পঞ্চম  অধ্যায়ঃ- ঔপনিবেশিক ভারতে শাসন
  • ষষ্ঠ  অধ্যায়ঃ- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও উপনিবেশসমূহ

অভিজ্ঞ শিক্ষকের দ্বারা ক্লাস ১২ ইতিহাস পরীক্ষার সাজেশন ২০২১ বড়ো প্রশ্ন গুলি তৈরি করা হয়েছে আশাকরি এখান থেকে কমন পাবেই .... ধন্যবাদান্তে এম . এ. (বি.এড) সায়াম চট্টোপাধ্যায়

  প্রথম অধ্যায়ঃ- অতীতকে স্মরণ

এই চ্যাপ্টার থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন গুলি হল :

প্রশ্নঃ মিথ কিংবদন্তি লিজেন্ড স্মৃতিকথা এবং লোককথার সংজ্ঞা বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব আলোচনা করো? **

প্রশ্নঃ জাদুঘর কাকে বলে? জাদুঘর এর প্রকারভেদ গুলো কি কি অতীতের পুনর্গঠনে জাদুঘরের ভূমিকা আলোচনা করো?

অথবা

প্রশ্নঃ আধুনিক ইতিহাস রচনার উপাদান বা ইতিহাস লিখন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করো? ***


তৃতীয়  অধ্যায়ঃ- ঔপনিবেশিক আধিপত্যের  প্রকৃতি 


এই চ্যাপ্টার থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন গুলি হল :


প্রশ্নঃ ক্যান্টন বাণিজ্য বলতে কী বোঝা ? ক্যান্টন বাণিজ্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি কি ছিল? ক্যান্টন বাণিজ্যের অবসান কেন ঘটেছিল? ***

 প্রশ্নঃ চীনের ওপর আরোপিত বিভিন্ন অসম চুক্তি গুলি সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও?

প্রশ্নঃ ভারতে রেলপথ প্রবর্তন এর উদ্দেশ্য এবং প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করো? **


 চতুর্থ  অধ্যায়ঃ-  সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া


এই চ্যাপ্টার থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন গুলি হল :


প্রশ্নঃ মুসলিম সমাজের অগ্রগতিতে স্যার সৈয়দ আহমেদ খান এবং আলীগড় আন্দোলনের ভূমিকা আলোচনা করো? ***

প্রশ্নঃ বাংলা নবজাগরণের প্রকৃতি ও সীমাবদ্ধতা কি ছিল তা লেখ?

 প্রশ্নঃ চীনের ৪ মে আন্দোলনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য আলোচনা করো?


 পঞ্চম  অধ্যায়ঃ- ঔপনিবেশিক ভারতে শাসন


এই চ্যাপ্টার থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন গুলি হল :

প্রশ্নঃ ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের প্রেক্ষাপট ও শর্তাবলী আলোচনা করো এই আইনের গুরুত্ব কী ছিল? ***

প্রশ্নঃ জালিয়ান ওয়ালাবাগের হত্যাকান্ড প্রেক্ষাপট কি ছিল ? এই হত্যাকাণ্ডের গুরুত্ব আলোচনা করো?

প্রশ্নঃ রাওলাট আইনের উদ্দেশ্য কী ছিল ? গান্ধীজী কেন এই আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন? **

প্রশ্নঃ লখনৌ চুক্তির শর্ত গুলি উল্লেখ করো এই চুক্তির গুরুত্ব কী ছিল? ***


ষষ্ঠ  অধ্যায়ঃ- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও উপনিবেশসমূহ


এই চ্যাপ্টার থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন গুলি হল :

প্রশ্নঃ ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু এবং আজাদ হিন্দ ফৌজের অবদান আলোচনা করো? ***

প্রশ্নঃ ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে নৌ বিদ্রোহের কারণ ও তাৎপর্য আলোচনা করো? ***


অথবা

প্রশ্নঃ হো -চি -মিনের নেতৃত্বে ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধ একটি বিবরণ দাও? *



 : (H.S) উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন - ২০২১  উত্তর সেট :

 প্রথম অধ্যায়ঃ- অতীতকে স্মরণ

অথবা
প্রশ্নঃ আধুনিক ইতিহাস রচনার উপাদান বা ইতিহাস লিখন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করো? ***
  ইতিহাস রচনা পদ্ধতি যুগের ভাবধারার ওপর নির্ভর করে, তবে আধুনিক ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে পরিধি, পদ্ধতি সবকিছুই জটিল, বিশ্লেষণমূলক ও বিস্তৃত হয়ে উঠেছে। আধুনিক ইতিহাস রচনার কার্যপদ্ধতি নিচে আলােচিত হল-
  • (ক) ইতিহাস রচনায় ঘটনা নির্বাচন : সব ঘটনাই ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন নয়, ইতিহাস লেখার সময় ঐতিহাসিককে সেকথা বুঝে নিতে হবে। সিন্দবাদ নাবিকের সমুদ্রযাত্রা ও কলম্বাসের সমুদ্রযাত্রার মধ্যে দ্বিতীয়টি ঐতিহাসিক।
  • (খ) আধুনিক ইতিহাস রচনায় সমসাময়িক ইতিহাস পর্যবেক্ষণ : সমগ্র ইতিহাস, সমসাময়িক কালের ইতিহাস। অতীত ও বর্তমান পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। আজ যা বর্তমান কাল তা অতীত। ইতিহাস অতীত-মধ্য-আধুনিক এই গন্ডিবদ্ধ নয়। যা প্রাচীন তাই আধুনিক, অতীতকে বাদ দিয়ে বর্তমান হয় না। অতীতের ইতিহাস বর্তমানেও প্রাসঙ্গিক। বুদ্ধের অহিংসা নীতি গান্ধীজী মেনেছেন—বর্তমানেও শান্তি ও অহিংসার বাণী বজায় রাখার চেষ্টা করেন গুণী ব্যক্তিগণ । সুতরাং আলাদা বিভাগ নয় সমসাময়িক ইতিহাস পর্যবেক্ষণের মধ্যেই রচিত হওয়া প্রয়ােজন—আধুনিক ইতিহাস।
  • (গ)  আধুনিক ইতিহাস রচনায় প্রধান মাধ্যম তথ্য : ইতিহাস রচনার মূল ভিত্তি প্রামাণ্য তথ্য। রচনা যত তথ্যসমৃদ্ধ হবে, তার গুরুত্ব তত বেশি। তথ্য হিসাবে বিশেষ উল্লেখযােগ্য হল—শিলালেখ, মুদ্রা, প্রাচীন লিপি, দলিল, সাহিত্য, লােকসংস্কৃতি, ধ্বংসস্তুপ ইত্যাদি বহু বিষয়; যা ইতিহাস রচনাকে সমৃদ্ধ করে তােলে। আর এর সাথে নির্ভর করে ঐতিহাসিকের সত্য চেনার জ্ঞান।
  • (ঘ) আধুনিক ইতিহাস রচনা মানব সমাজের সামগ্রিক আলােচনা : রাজনৈতিক বিষয়, বিশেষত রাজার যুদ্ধ, কূটনীতি, রাজকাহিনী ইত্যাদি ছিল ইতিহাস রচনার মূল বিষয়, কিন্তু আধুনিক ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে—সমাজনীতি, ধর্ম, সংস্কৃতি, মানবনীতি, রাজনীতি ইত্যাদি সব মিলিয়ে একটা সামগ্রিক রূপ তুলে ধরা হয় আধুনিক ইতিহাসের মধ্যে।
  • (ঙ ) আধুনিক ইতিহাস রচনায় উপযুক্ত কারণ অনুসন্ধান : উপযুক্ত কারণ অনুসন্ধান ঐতিহাসিকের মুল কর্তব্য। যে কোনাে ঐতিহাসিক ঘটনার পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে, কিন্তু তার মধ্যে উপযুক্ত কারণকেই বেছে নিতে হবে। ফরাসী বিপ্লব, কিংবা মুঘল সাম্রাজ্যের পতন, কিংবা ভারতের সিপাহী বিদ্রোহ ইত্যাদি যে কোনাে ঘটনার মূল কারণ অনুসন্ধান করেই লেখা হবে আধুনিক ইতিহাস।
  • (চ) ঐতিহাসিকের বিশ্বব্যাপী অভিজ্ঞতা : আধুনিক ইতিহাস রচনায় ঐতিহাসিকের বিস্তৃত জ্ঞান বা অভিজ্ঞতাও ছাপ ফেলে। নিজের দেশের সীমাবদ্ধতার বাইরেও ইতিহাসবিদকে জ্ঞানসমৃদ্ধ হতে হবে।
  • স্বাধীনতা আন্দোলনের তুলনামূল আলােচনায়—আমেরিকা, ভিয়েতনাম বা চিনের আন্দোলন আলােচিত হলে—সেই ইতিহাস অনেক বেশি সমৃদ্ধ হবে।
  • (ছ) পক্ষপাতশূন্য রচনা : আধুনিক ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিককে পক্ষপাতশূন্য হয়ে লেখার চেষ্টা করতে হবে। কারণ ইতিহাসকেও অনেকে বিজ্ঞান মনে করেন। সুতরাং তারা চান ইতিহাস হবে নির্মোহ, নৈব্যক্তিক ও বস্তুনিষ্ঠ। কিন্তু সামাজিক মানুষ হিসাবে ঐতিহাসিক এই নীতি অনেক সময় মানতে পারেন না।

উপসংহার : আধুনিক ইতিহাস রচনার পদ্ধতি অনেক বেশি বিজ্ঞান সম্মত এবং আরও হওয়া উচিত। রচনা পদ্ধতি ও বিষয়বস্তুও বহুবিধ, দেশ-কাল-পাত্ৰ-আদর্শ ইত্যাদি বহুবিধ বিষয় ঐতিহাসিককে প্রভাবিত করে। তার মধ্যেও ঐতিহাসিক তার জ্ঞান-ব্যক্তিত্ব-ভাবনা-চিন্তা- আদর্শ ইত্যাদি সব নিয়ে উপযুক্ত রূপ দিতে পারলে—ইতিহাস রচনা সার্থক হয়ে উঠবে।
            

প্রশ্নঃ মিথ কিংবদন্তি লিজেন্ড স্মৃতিকথা এবং লোকগাথার সংজ্ঞা বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব আলোচনা করো? **
  মিথ বা উপকথা : গ্রিক শব্দ ' Muthos' থেকে 'Myth' শব্দটি এসেছে। প্রাচীনকালে মানুষ বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনা বা কাহিনি রচনা করে এবং পরবর্তী সময় প্রজন্মব্যাপী সেগুলি প্রচারিত হতে থাকে এগুলিকেই বলা হয় মিথ বা উপকথা। শুধু ভারতই নয়, চিন, ব্যাবিলন, মিশর প্রভৃতি দেশেও পৌরাণিক কাহিনির উল্লেখ পাওয়া যায়। উপকথার প্রধান চরিত্রগুলি মূলত দেবদেবীকেন্দ্রিক এবং অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন। পৌরাণিক কাহিনিগুলি ধর্মকেন্দ্রিক হওয়ায় পূজা, প্রার্থনা, লােকাচার প্রভৃতির ভিত্তিতে গড়ে ওঠে উপকথা।
লিজেন্ড বা পুরাকাহিনি : কোনাে বিশেষ ব্যক্তি বা ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে কল্পকাহিনি বা বীরগাথা বিভিন্ন দেশে প্রচলিত আছে তাকে লিজেন্ড বা পুরাকাহিনি বা কিংবদন্তি বলা হয়। 'Legend' কথাটি এসেছে লাতিন শব্দ 'Legenda' থেকে। বেশকিছু ঐতিহাসিক মনে করেন, মানবসমাজে ইতিহাসবােধ সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই এই সকল কাহিনিগুলি গড়ে উঠতে শুরু করে। সপ্তদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে পাশ্চাত্যের প্রােটেস্টান্টগণ প্রথম কিংবদন্তি শব্দটির ব্যবহার করেন বলে অনেকে মনে করেন। কোনাে ঘটনার গুরুত্ব বােঝানাের জন্য তারা এটি করতেন বলে জানা যায়। যেমন—ভারতবর্ষে মৌর্য সম্রাট অশােক, শিবাজি প্রমুখকে কেন্দ্র করে অনেক কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। 

স্মৃতিকথা: বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ঘটনার বিবরণ তাদের স্মৃতিকথা গুলিতে আলোচনা করেন । ঐতিহাসিক তথ্যের সত্যতা অনেক বেশি থাকে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বর্বর পাক বাহিনী পূর্ববঙ্গের সাধারণ মানুষের উপর যে নৃশংস ভাবে অত্যাচার ও হত্যালীলা চালিয়েছিল তার গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক উপাদান গুলি হল স্মৃতিকথা । এছাড়াও ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার দাঙ্গার ঘটনা বলি বিভিন্ন ব্যক্তির স্মৃতি কথায় পাওয়া যায় ।


লোকগাথা ও তার বৈশিষ্ট্য : লােকগাথা হল কল্পনা করে রচনা করা গল্প। এগুলি কোনাে অতীত ঘটনাকে কেন্দ্র করে হতে পারে। প্রাচীন ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে লােকগাথার গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। বিভিন্ন গল্পের মধ্যে দিয়ে লােকগাথা প্রচারিত হয় এবং জনপ্রিয়তা পেয়ে থাকে।


চরিত্রে বৈচিত্র্য: লােকগাথাগুলি লক্ষরলে একদিকে যেমনরাজা,রানি,রাজপুত্র,মন্ত্রীপুত্র,রাজকন্যাইত্যাদি চরিত্র দেখা যায়। জাতক বা পতন্ত্রের গল্পগুলিতে আবার বিভিন্ন পশুপাখিদের মধ্যে মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আরােপ করা হয়েছে।

কল্পনাধর্মী: লােকগাথার গল্পগুলির মধ্যে কল্পনার মেলবন্ধন লক্ষ করা যায়। লােকগাথায় যে রাস,
দৈত্য, পরি প্রভৃতির উল্লেখ পাওয়া যায় তাদের কোনাে বাস্তব অস্তিত্ব নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও লােকগাথার এইসব কাল্পনিক চরিত্রগুলি পাঠকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়।


কিংবদন্তির গুরুত্ব:- মৌখিক ইতিহাসের উপাদান হিসেবে কিংবদন্তির গুরুত্ব অপরিসীম সেগুলি হল

  • (ক) আনন্দদান: ও কিংবদন্তির ঘটনাগুলি অতীত কাল থেকে মানুষের মুখে মুখে প্রচারিত হয়ে লােকসমাজকে আনন্দ দিয়ে যাচ্ছে। কিংবদন্তিতে আনন্দদায়ক উপাদান আছে বলেই এগুলি বংশপরম্পরায় বর্তমানকালে এসে পৌঁছেছে। সেই সূত্রেই কিংবদন্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্র বর্তমানে আমরা জানতে পারি।
  • (খ) শিক্ষাদান : বর্তমানকালের মানুষকে কিংবদন্তির ঘটনাগুলি অতীতের নৈতিকতা, বীরত্ব প্রভৃতি বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করে। এগুলি থেকে বর্তমানকালের মানুষ নৈতিকতার শিক্ষা লাভ করতে পারে এবং জীবনে চলার পথে সাবধানতা অবলম্বন করতে পারে। 
  • (গ) ঐতিহাসিক ভিত্তি: কিংবদন্তির কাহিনি রুপকথার কাহিনির মতাে সম্পূর্ণ কাল্পনিক নয়। বহু ক্ষেত্রেই কিংবদন্তির কাহিনিগুলির একটি বাস্তব ভিত্তি আছে। বাংলার কিংবদন্তি চরিত্র রঘু ডাকাতের কালী পুজোর ভিত্তিতে আজও একটি কালী মন্দিরকে চিহ্নিত করা হয়। তাই কিংবদন্তি থেকে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি যথার্থ ঐতিহাসিক উপাদান পাওয়া সম্ভব।

    
প্রশ্নঃ জাদুঘর কাকে বলে? জাদুঘর এর প্রকারভেদ গুলো কি কি অতীতের পুনর্গঠনে জাদুঘরের ভূমিকা আলোচনা করো?

 সাধারণ অর্থে জাদুঘর হলাে বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপাদানের সংগ্রহশালা, যেখানেঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, বৈজ্ঞানিক, শিল্প-বিষয়ক প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন সংরক্ষণ করে তা জনসাধারণের উদ্দেশ্যে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। এক কথায়, বিভিন্ন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ করে সেগুলি যেসব প্রতিষ্ঠান বা ভবনে সংরক্ষণ করে রাখা হয় সে সব প্রতিষ্ঠান বা ভবনকে জাদুঘর বলে।

জাদুঘরের প্রকারভেদ গুলো  সাধারণত ৪ প্রকারের হয় –
  • (১) ঐতিহাসিক জাদুঘর:  এখানে আদিম মানুষের জীবন ও কর্ম এবং মানুষের জীবনের বিবর্তন প্রদর্শিত হয়।
  • (২) শিল্প জাদুঘর: এখানে মানুষের সৃষ্টিকর্ম, নান্দনিক বিষয় প্রদর্শিত হয়ে থাকে।
  • (৩) বিজ্ঞান জাদুঘর: এখানে বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় প্রদর্শিত হয়।
  • (৪) শিশু বিষয়ক জাদুঘর: এখানে শিশুজগৎ প্রদর্শিত হয়।
জাদুঘরের উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি সেগুলি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত বিভিন্ন জাদুঘরের উদ্দেশ্যও বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। তবে জাদুঘরের প্রধান উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি হলো -

(১) সংগ্রহ :  জাদুঘরের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ও কাজ হলাে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন দুর্লভ ঐতিহাসিক নিদর্শন খুঁজে বের করা এবং সেগুলি সংগ্রহ করা। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি সংগ্রহ করে ইতিহাস রচনার দরজা খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে জাদুঘর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(২) প্রকাশনা:  জাদুঘরের একটি প্রধান কাজ হলাে বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশনার ব্যবস্থা করা। জাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন সম্পর্কে গবেষণালব্ধ তথ্য, সাম্প্রতিককালে যথেষ্ট আলােচিত কোনাে ঐতিহাসিক বিষয়, কোনাে সাধারণ ঐতিহাসিক পত্রিকা প্রভৃতি বিষয়ে এই প্রকাশনার ব্যবস্থা হতে পারে।
(3) প্রাণবন্ত ইতিহাস: জাদুঘরের ঐতিহাসিক উপাদানগুলিতে ইতিহাসের তাত্ত্বিকতার স্থান নেই, আছে অতীত ইতিহাসের বাস্তব অস্তিত্ব। জাদুঘর তার ঐতিহাসিক উপাদানগুলির সাহায্যে ইতিহাসকে প্রাণবন্ত করে তােলে।

3 মন্তব্যসমূহ

Type Here ....

  1. উত্তরগুলি
    1. প্রশ্নঃ ক্যান্টন বাণিজ্য বলতে কী বােঝা? ক্যান্টন বাণিজ্যের
      প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি কি ছিল? ক্যান্টন বাণিজ্যের অবসান
      কেন ঘটেছিল? ***

      মুছুন
    2. ➺ পাশ্চাত্য দেশগুলাের সঙ্গে চিনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনে ক্যান্টন বন্দর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। নিংপাে, অ্যাময় ইত্যাদি অন্যান্য বাণিজ্য বন্দর থাকলেও ক্যান্টন বন্দর ছিল বেশি আকর্ষণীয়। কারণ, সমুদ্রের সহজসাধ্য যােগাযােগ আর চিন সরকারের এই বন্দরকে কেন্দ্র করেই আগ্রহ অর্থাৎ ক্যান্টন বন্দরের নাম অনুযায়ীই এই বাণিজ্য 'ক্যান্টন বাণিজ্য’ নামে উল্লেখযােগ্য।


      ☉ ক্যান্টন বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্য : ক্যান্টন বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ ও কো-হং’ সংঘ নামে একটি বণিক-সংঘ ক্যান্টন বন্দরের বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। এরা চিনা সম্রাটের অধীনস্ত ছিলেন। পণ্যের পরিমাণ নির্দিষ্ট করা, বাজারের জিনিসপত্রের মূল্য স্থির করা, বিদেশী বণিকদের সাধারণ কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ এবং 'কো-হং’ কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে বিদেশীরা পণ্য বিক্রয় বা ক্রয়ের ক্ষেত্রে বাধ্য ছিল। ক্যান্টন বাণিজ্যে হােপ্পো নামক শুল্ক কমিশনারের দুনীর্তি ‘কো-হং’ ক্যান্টন বাণিজ হােপ্পোরা প্রচণ্ড দূনীতিপরায়ণ ছিলেন। আর এঁদের দুনীর্তির ফলস্বরূপ ‘কো-হং’ বণিকরাও দূনীতির পথে নেমেছিলেন। ক্যান্টন বাণিজ্যে অন্যান্য বিবিধ শর্তাবলী ছিল যে , প্রাচীর বেষ্টিত ক্যান্টন শহরের মধ্যে বিদেশীদের প্রবেশ নিষেধ ছিল। কোনাে চিনা ভৃত্য নিয়ােগ করতে পারতেন না বিদেশীরা বিদেশী বণিকদের পত্নী বা পরিবারের মহিলারাও ক্যান্টন শহরে প্রবেশ করতে পারতেন না।


      ☉ ক্যান্টন বাণিজ্যের অবসান : (i) উনবিংশ শতাব্দীর সূচনায় ইউরােপে শিল্পবিপ্লব শুরু হলে পশ্চিম ইউরােপীয় দেশগুলিতে পুঁজিবাদী অর্থনীতির চূড়ান্ত বিকাশ লক্ষ করা যায়। ফলে ইউরােপীয় দেশগুলি অবাধ বাণিজ্যের সমর্থক হয়ে ওঠে। (ii) চিনের বাণিজ্য সম্পর্কিত রুদ্ধ দ্বার নীতি ছিল ইউরােপীয় বণিকদের পক্ষে যথেষ্ট অপমানজনক। তাই ইউরােপীয় বণিকরা চিনা সরকারের এই নিয়ন্ত্রণকে শিথিল করার বদ্ধপরিকর ছিল। (iii) ব্রিটিশ সরকার ক্যান্টন বাণিজ্যের শর্তাবলি ও নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার জন্য চিন সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব জানিয়েছিল। সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হলে সামরিক শক্তি প্রয়ােগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। (iv) 1859 খ্রিস্টাব্দের পর থেকে ক্যান্টন বন্দরে সংঘটিত ব্রিটিশদের যাবতীয় বাণিজ্যিক কার্যাবলি হংকং কে কেন্দ্র করে সম্পাদিত হতে থাকে। বেজিং, গ্র্যান্ড ক্যানাল ও পীত নদী থেকে হংকংয়ে নৈকট্য পশ্চিমি বণিকদের কাছে তার গুরুত্ব বৃদ্ধি করেছিল। প্রথম আফিম যুদ্ধে ব্রিটেনের জয় ক্যান্টন বাণিজ্যের অবসানের প্রধান কারণে পরিণত হয়েছিল।


      উপসংহার : উনবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে ব্রিটিশ বণিকগণ ভারত থেকে চোরাপথে চিনে আফিম

      রপ্তানি করতে শুরু করে। এর ফলে ক্যান্টন বাণিজ্যে চারিত্রিক গঠনে পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। পরবর্তী প্রথম আফিম যুদ্ধের পর চিনের বেশকিছু বন্দর বিদেশি বণিকদের জন্য খুলে গেলে ধীরে ধীরে ক্যান্টন বাণিজ্যের সমাপ্তি ঘটে।

      মুছুন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
নবীনতর পূর্বতন