উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন - ২০২১ উত্তর সেট | H.S Suggestion History West Bengal Student


Total Answer Page [1]  [3]
আর উত্তর গুলি দেখতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্নঃ রাওলাট আইনের উদ্দেশ্য কী ছিল ? গান্ধীজী কেন এই আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন?

口 প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন করভার, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, সীমাহীন বেকারত্ব ব্রিটিশ শাসনের প্রতি ভারতীয়দের বিদ্বিষ্ট করে তােলে এবং স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতেহিংসাত্মক আন্দোলনে মেতে ওঠেন তারা। এমতাবস্থায় হিংসাত্মক ও জাতীয়তাবাদী। কার্যকলাপ দমন করার জন্য ব্রিটিশ সরকার বিচারপতি সিডনি রাওলাট -এর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে যা সিডিশন কমিটি বা রাওলাট কমিটি নামে পরিচিত।


উদ্দেশ্য বা শর্ত : এই কমিটির সুপারিশক্রমে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় আইনসভায় একটি দমন মূলক বিল উত্থাপিত হয় - সরকারবিরােধী যে কোনাে প্রচারকার্য দণ্ডনীয় বলে বিবেচিত হবে। সন্দেহভাজন যে কোনাে ব্যক্তিকে বিনা পরােয়ানায় এবং বিনা বিচারে গ্রেফতার বা আটক করা যাবে। সাহায্য ছাড়াই এবং কোনাে প্রকার সাক্ষ্যপ্রমাণের তােয়াক্কা না করে বিচারকরা বিচারকার্য পরিচালনা করতে পারবেন।এই রায়ের বিরুদ্ধে কোনাে আপিল চলবে না।সংবাদপত্রের কণ্ঠও রােধ করার ব্যবস্থা হয়। কেন্দ্রীয় আইনসভার সরকারি ও বেসরকারিসকল ভারতীয় সদস্যের সমবেত প্রতিবাদ উপেক্ষা করে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই মার্চ বিলটি আইনে পরিণত হয়। এই আইনটি রাওলাট আইন’ নামে পরিচিত। এককথায়, এই স্বৈরাচারী আইন জারি করার ফলে ভারতবাসীর ব্যক্তিস্বাধীনতা বলতে আর কিছু অবশিষ্ট রইল না।


গান্ধীজীর ভূমিকাঃ এই আইনের বিরুদ্ধে দেশময় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ৩০শে মার্চ গান্ধিজি সমগ্র দেশব্যাপী ধর্মটের ডাক দেন—পরে অবশ্য তারিখ পরিবর্তিত করে ৬ই এপ্রিল ধার্য করা হয়। ভারতবর্ষে এটিই প্রথম সর্বভারতীয় ধর্মঘট। নির্দিষ্ট অঞলে সীমাবদ্ধ কোনাে স্থানীয় আন্দোলন, দুর্বল প্রতিবাদ বা নিছক নিন্দা প্রকাশ নয়—সরকারের বিরুদ্ধে ভারতব্যাপী হরতাল। দুর্বল বাগাড়ম্বর বা নিছক বক্তৃতাসর্বস্ব রাজনীতি নয়—এবার শুরু হল সক্রিয় প্রতিরােধের রাজনীতি ("It was the politics of action, not of talk”)। উপযুক্ত সময়ে সংবাদ না পাওয়ায় ৩০শে মার্চ-ই দিল্লি, মুলতান, লাহাের ও অমৃতসরে ধর্মঘট পালিত হয়। দিল্লিতে হাকিম আজমল খাঁ ও আর্যসমাজি নেতা স্বামী শ্ৰদ্ধানন্দের নেতৃত্বে ধর্মঘট বিপুল সাফল্য অর্জন করে।


দিল্লিতে পুলিশের গুলিতে আট জন নিহত ও প্রায় একশাে জন আহত হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সাতদিন দিল্লির সব দোকানপাট—এমনকি রেলচলাচলও বন্ধ থাকে। এই হত্যাকাণ্ড সারা ভারতে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় দিল্লিতে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য ছিল অভূতপূর্ব। এ সময় হিন্দু-মুসলিম একে অন্যের হাতে জল খেতে শুরু করে। হিন্দু নেতা স্বামী শ্ৰদ্ধানন্দকে জামা মসজিদের বেদি থেকে ভাষণ দিতে দেওয়া হয়। যাই হােক, দিল্লির ভয়ংকর পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য দিল্লির নেতৃবৃন্দ গান্ধিজির কাছে আবেদন জানান।৭ এপ্রিল তিনি দিল্লি অভিমুখে যাত্রা করেন কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর দিল্লী ও পাঞ্জাব প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই আদেশ অমান্য করলে ১০ই এপ্রিল দিল্লির কাছে পালওয়াল স্টেশনে তাঁকে গ্রেফতার করে বােম্বাই পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে সারা দেশ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। বােম্বাইয়ে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ শুরু হয়। আমেদাবাদের পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। জনতা-পুলিশে সংঘর্ষ বাধে,সুতাকলের ধর্মঘট শ্রমিকরা ১টি সরকারি বাড়ি ভস্মীভূত করে এবং রেললাইন তুলে ফেলে দুটি সৈন্যবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত করে। এই শহরে সামরিক আইন জারি করা হয়।পার্শ্ববর্তী শহর বিরামগাঁও-এ জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ শুরু হয়।


 বলা বাহুল্য, আন্দোলনের চেহারা সর্বত্র এক রকম ছিল না। মধ্যপ্রদেশের মারাঠি-ভাষী অঞলে এই আন্দোলন তেমন সফল হয়নি। মাদ্রাজেও এর তেমন কোনাে প্রভাব পড়েনি। বাংলার কয়েকটি জেলায় ধর্মঘট হয় কলকাতায় কিছু দোকানপাট বন্ধ ছিল মাত্র। বিহারের পাটনা, ছাপরা, মুঙ্গের, গয়া প্রভৃতি শহরে হরতাল পালিত হয়। জম্মু, কাশ্মীর ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে কোনাে ধর্মঘট হয়নি।এই সংগ্রামকে কেন্দ্র করেই ভারত ইতিহাসে শুরু হয় নতুন সংগ্রাম, নতুন নেতৃত্ব ও নতুন যুগ ।



প্রশ্নঃ লখনৌ চুক্তির শর্ত গুলি উল্লেখ করো এই চুক্তির গুরুত্ব কী ছিল? **


口 প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ভারতে জাতীয় আন্দোলন অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়েছিল। হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ই পারস্পরিক বিরোধ ভুলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে উদ্যোগী হয়ে ওঠে। আর এই উদ্যোগকে বাস্তবায়িত করার জন্য ১৯১৬  খ্রিস্টাব্দে লখনৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইতােপূর্বে ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে বােম্বাই (মুম্বাই)-তে কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ একসুরে ব্রিটিশ সরকারের বিবিধ নীতির সমালােচনা করে এই চুক্তির ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল।


লখনৌ চুক্তির শর্তাবলি : ১৯১৬  খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেসের লখনৌ অধিবেশনে নরমপন্থী ও চরমপন্থী গােষ্ঠীর মধ্যেকার পারস্পরিক দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে। একদিকে ঐক্যবন্ধ কংগ্রেস এবং অপরদিকে

মুসলিম লিগ পরস্পরের অনেকটা কাছে চলে আসে। এক্ষেত্রে বাল গতাধর তিলক এবং মহম্মদ আলি

জিন্নার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। চরমপন্থী হিসেবে পরিচিত তিলক নরমপন্থীদের সঙ্গে আলােচনার মাধ্যমে সুদৃঢ় করতে সচেষ্ট হন। এ ছাড়া তিনি আন্তরিকভাবে হিন্দু-মুসলিম বিভেদের অবসানও চেয়েছিলেন। অন্যদিকে মুসলিম লিগের নেতারাও বুঝতে পেরেছিলেন, ব্রিটিশ বিরােধী আন্দোলনের ক্ষেত্রে জাতীয় কংগ্রেসের সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ ।


লখনৌ চুক্তির মূল কথা ছিল—প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন, বিকেন্দ্রীকরণ, ভারতীয়করণ ইত্যাদি। জাতীয় কংগ্রেস এবং মুসলিম লিগের যৌথ উদ্যোগে গঠিত এই শর্তগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য ছিল-

  • পৃথক নির্বাচনের ভিত্তিতে জাতীয় কংগ্রেস মুসলিমদের প্রতিনিধিত্বের দাবিগুলি মেনে নেবে।কংগ্রেসের স্বরাজ্যের দাবিকে মুসলিম লিগ সমর্থন করবে।

  •  কেন্দ্রীয় আইন পরিষদ ও প্রাদেশিক আইনসভার সদস্যদের এক-তৃতীয়াংশ হবে মুসলিম প্রতিনিধি।

  •  তবে সংরক্ষিত আসন ছাড়া মুসলমানরা কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক অন্য কোনাে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারত না।

  • ভারত-সচিবের দুজন সহকারীর মধ্যে একজন হবেন ভারতীয়।

  • ভারত-সচিবের বেতন বহন করবে ব্রিটিশ সরকার।

  •  ডােমিনিয়নের মর্যাদা ও প্রতিনিধিত্ব ভারতকেও দিতে হবে। ও সামরিক বাহিনীতে ভারতীয়দের নিয়ােগ করার দাবি তােলা হয়।


লখনৌ চুক্তির গুরুত্ব: ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের লখনৌ চুক্তি হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে ঐক্যের পরিবেশ সৃষ্টি-করেছিল। এই চুক্তির বাস্তবায়ন প্রমাণ করে ইংরেজদের বিরুদ্ধে তাদের যৌথ আন্দোলন কোনাে কাল্পনিক-ভাবনাচিন্তা নয়। ঐতিহাসিক বিধান চন্দ্র-এর মতে, লখনউ চুক্তি হল হিন্দু-মুসলিম ঐক্য স্থাপনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

এই চুক্তির গুরুত্বগুলি হল—

  •  এই চুক্তির দ্বারা অল্প সময়েই হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল। এই চুক্তি স্বাক্ষর করে বাল গঙ্গাধর তিলক এবং মােহম্মদ আলি জিন্নার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়।

  • লখনৌ চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য গড়ে ওঠায় জনমানসে এর সদর্থক প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে ব্যাপক উদ্দীপনার সঞর ঘটে।

  • লখনৌ চুক্তির দ্বারা গড়ে ওঠা হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের সুফল খিলাফত আন্দোলনে ও দেখতে পাওয়া যায়। ওই আন্দোলনে হিন্দুরা কিন্তু মুসলমানদের সমর্থন জানিয়েছিল। গান্ধিজি স্বয়ং খিলাফত আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন।

  • অপরদিকে অসহযােগ আন্দোলনেও প্রচুর মুসলমান অংশ ও লখনৌ চুক্তিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা হিন্দু মুসলমানদেরঐক্যে ব্রিটিশ সরকার চিন্তা করতে থাকে।


 উপসংহার : লখনৌ চুক্তি সার্বিকভাবে ভারতে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য গঠন করতে পারেনি। মুসলিমদের

জন্য পৃথক নির্বাচন নীতি মেনে নিয়ে কংগ্রেস ঠিক করেনি বলে অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন।

রমেশচন্দ্র মজুমদার-এর মতে, লখনৌ চুক্তি ছিল কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের অদূরদর্শিতার পরিচায়ক। এই চুক্তির দ্বারা যুক্তপ্রদেশের মুসলিমদের স্বার্থরক্ষার জন্য বাংলা ও পাঞ্জাবের মুসলিমদের স্বার্থ ক্ষুন্ন করা হয়। ড, অমলেশ ত্রিপাঠী-র মতে, এই চুক্তি ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ প্রসারে সহায়ক ছিল না। লখনৌ চুক্তি হিন্দু-মুসলিম ঐক্যে ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলেও এর দ্বারা পরবর্তীকালে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি সৃষ্টির সম্ভাবনা থেকে যায়।


          

ষষ্ঠ  অধ্যায়ঃ- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও উপনিবেশসমূহ


প্রশ্নঃ ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু এবং আজাদ হিন্দ ফৌজের অবদান আলোচনা করো? ***


口 ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এক উজ্জ্বল ধ্রুবতারা। তার ত্যাগ, তিতিক্ষা, দেশপ্রেম, বিপ্লবনিষ্ঠা, অদম্য মনােবল আজও অবিস্মরণীয়। সর্বোপরি, তার নেতৃত্বে 'আজাদ হিন্দ ফৌজ’-এর মহান আত্মত্যাগ ও অবদান ভারত ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়।

  • সুভাষচন্দ্রের রাজনৈতিক জীবনের প্রাথমিক পর্যায় :  ছাত্র অবস্থা থেকেই সুভাষচন্দ্রের শিরায় শিরায় জাতীয়তাবাদীচেতনা ব্যাপক বিস্তার ঘটে । ১৯২১ সালে তিনি I.C.S  চাকরি ছেড়ে স্বদেশি আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েন। এরপর তিনি অসহযােগ আন্দোলন, দেশবন্ধুর নেতৃত্বে স্বরাজ্য দলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ, বঙ্গীয় কংগ্রেসের সম্পাদনা ও কংগ্রেসি আন্দোলনে অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতার পরিচয় দেন। পর পর দু'বছর তিনি হরিপুরা ও ত্রিপুরি অধিবেশনে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন।
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ- দেশত্যাগ:  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রারম্ভে সুভাষচন্দ্র বহিঃশক্তির সহায়তায় ভারতের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের কথা ভাবতে থাকেন। এ সময় ব্রিটিশ পুলিশের সশস্ত্র প্রহরায় নিজগৃহে অন্তরীণ সুভাষচন্দ্র ছদ্মবেশে ব্রিটিশ পুলিশের চোখে ধুলাে দিয়ে আফগানিস্তানের মধ্যে দিয়ে রাশিয়ায় চলে যান। এরপর সুভাষচন্দ্র জার্মানিতে হিটলার এবং ইতালিতে মুসােলিনির সাথে সাক্ষাৎ করেন। সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি পান।
  • আজাদ হিন্দ বাহিনীর গঠন ও তার নেতৃত্ব দান:  হিটলারের অনাগ্রহ ও হিটলার কর্তৃক রাশিয়া আক্রমণের পরিকল্পনা সুভাষকে বিরক্ত করে তােলে। তাই তিনি জাপানের সাহায্যের প্রতি আকৃষ্ট হন। অবশ্য জার্মানিতে তিনি 'Free India Centre গড়ে তােলেন। জার্মানিতে ভারতীয় বন্দি সেনাদল সুভাষকে নেতাজি’ আখ্যায় ভূষিত করে।সিঙ্গাপুরের এক বিশাল জনসভায় রাসবিহারী বসু সুভাষচন্দ্রের হাতে ‘India Inde-pendence League' -এর সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে আজাদ হিন্দ বাহিনীর নেতৃত্ব তুলে দেন এবং এই বাহিনীকে পুনর্গঠিত করেন।
  • আজাদ হিন্দ সরকার স্থাপন : ১৯৪৩ সালে ২১শে অক্টোবর সুভাষ আজাদ হিন্দ সরকার স্থাপন করেন। এরপর সুভাষচন্দ্র আজাদ হিন্দ বাহিনী নিয়ে ১৯৪৪-এর জানুয়ারিতে ভারত অভিযান শুরু করেন। তিনি সেনাদের উৎসাহ ও আত্মবিশ্বাস বাড়ানাের জন্য বলেন, 'Give me blood, I will give you freedom. এছাড়া তিনি শােনালেন উপনিষদের ‘চরৈবেতি মন্ত্র দিল্লির পথ স্বাধীনতার পথ, এ পথের ধুলা পবিত্র... দিল্লি চলাে জয় হিন্দ । ইংরেজ সেনা ও আমেরিকান বিমানবাহিনীর যৌথ আক্রমণ, বর্ষা, খাদ্য ও সরঞ্জামের অভাব এবং আরও নানা প্রবল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে গৌরবময় সংগ্রাম চালাতে থাকেন এবং জীবন মৃত্যু পায়ের ভৃত্য করে আজাদ হিন্দ ফৌজের সেনারা। কিন্তু ইতিমধ্যে ২য় বিশ্বযুদ্ধে জাপান পিছু হটতে থাকলে যুদ্ধের গতি বদলায়। শেষ পর্যন্ত আমেরিকার আণবিক বােমায় বিধ্বস্ত জাপান আত্মসমর্পণ করলে আজাদ হিন্দ ফৌজের সেনাদল বাধ্য হয় আত্মসমর্পণে—বীর্যবত্তার এক ট্রাজিক উপসংহার। কিন্তু নেতাজি আত্মসমর্পণ করলেন না সুভাষ রণাঙ্গন ছেড়ে ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট মারিয়া অভিমুখে যাত্রা করেন। তারপর ঘটে বিমান দুর্ঘটনা যা এখনও বহু বিতর্কিত ও সন্দেহের বিষয়। এ প্রসঙ্গে 'Daily News’ লিখেছেন, 'There is no doubt about his death, but there is no doubt that he remains immortal....


আজাদ হিন্দ বাহিনীর ব্যর্থতার কারণ ও গুরুত্ব গুলি হলো - 

  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়।

  •  জাপানি সেনাবাহিনীর অন্তর্দ্বন্দ্ব ও ভ্রান্ত রণকৌশল এই বিপর্যয়কে ত্বরান্বিত করেছিল।

  • আজাদ হিন্দ বাহিনীর সৈনিকদের উন্নত যুদ্ধঅস্ত্রের অভাবে এই বাহিনী ব্যর্থ হয়।

  •  আজাদ হিন্দ বাহিনী উত্তর-পূর্ব সীমান্তের ১৫০ বর্গ মাইল এলাকা স্বাধীন করতে সক্ষম হন।

  • তাদের কার্যকলাপ ব্রিটিশ-কে বুঝিয়ে দেয় ভারতে তাদের দিন শেষ।


উপসংহার ;  অপূর্ণ রয়ে গেল নেতাজির স্বপ্ন কিন্তু  তার সেনাদলের সশস্ত্র সংগ্রাম, অন্যোন্য আত্মত্যাগ তাে ভােলবার নয়। দুর্ভাগ্যক্রমে জাপানের পরাজয় না ঘটলে ভারতের ইতিহাস হয়তাে অন্যরূপে লিখতে হতাে। নেতাজিকে আমরা লাভ করতাম অন্যরূপে, অন্য মহিমায়  আজও মনকে নাড়া দিয়ে যায় তাদের গান—

‘কদম কদম বঢ়ায়ে যা খুশিকে গীত গায়ে যা।

ইয়ে জিন্দেগি হ্যায় কৌম কী/তু  কৌমপে লুটায়ে যা....


প্রশ্নঃ ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে নৌ বিদ্রোহের কারণ ও তাৎপর্য আলোচনা করো? **


口 সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ আজাদ হিন্দ ফৌজের সংগ্রামী ভূমিকায় সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে ছিলো । ১৯৪৫-৪৬ সালে রাজদ্রোহের অপরাধে আজাদ হিন্দ ফৌজের কয়েকজন অফিসারের বিচার শুরু হয়। এর প্রতিক্রিয়া হিসাবে ভারতব্যাপী প্রবল প্রতিবাদ ও গণবিক্ষোভ দেখা দেয়। ব্যাপক গণবিক্ষোভে জনমতে আলােড়নের সৃষ্টি হয় অভিযুক্ত স্বদেশপ্রেমি সৈনিকদের প্রাণরক্ষায় ভারতবর্ষ উত্তাল হয়ে ওঠে। তেজ বাহাদুর সপু, ভুলাভাই দেশাই, জওহরলাল নেহেরু প্রভৃতি কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ তাদের পক্ষে আদালতে আইনজীবী হিসাবে দাঁড়ান।


বিদ্রোহের কারণ ও তাৎপর্য - আজাদ হিন্দ ফৌজের সেনানায়কদের বিচারকে কেন্দ্র করে সারা দেশ জুড়ে সাম্রাজ্যবাদ বিরােধী যে গণসংগ্রাম গড়ে ওঠে তা সশস্ত্র বাহিনীর লােকজনদেরও যথেষ্ট  প্রভাবিত করে। বিনা শর্তে আজাদ হিন্দ ফৌজের অফিসারদের মুক্তি দেওয়ার দাবিতে এবং ব্রিটিশ কল্পক্ষের জাতি – বিদ্বেষ ও নিকৃষ্ট ধরণের খাদ্য সরবরাহ ইত্যাদির প্রতিবাদে ১৯৪৬ সালের ১৮ ফ্রেব্রুয়ারি বােম্বাই পােতাশ্রয়ে অবস্থিত তলােয়ার জাহাজের নৌ – সেনারা সর্বপ্রথম বিদ্রোহের পতাকা উত্তোলন করেন। তার ২৮ ঘন্টার ভিতরেই বিদ্রোহ পােতাশ্রয়ের আরও ২০ টি জাহাজে ছড়িয়ে পড়ে। বােম্বাইয়ে ২০০০০ নৌ - সেনা এই বিদ্রোহে যােগ দেয়। নৌ - সেনাদের অর্থনৈতিক দাবীদাওয়ার সংগ্রাম রাজনৈতিক সংগ্রামে পরিণত হয়। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের ধ্বংস সাধন, আজাদ হিন্দ ফৌজের সমস্ত সেনা এবং রাজনৈতিক বন্দীদর মুক্তি প্রভৃতি দাবীর প্রতিবাদে নৌ - সেনারা ফেটে পড়েন।


বিদ্রোহীরা একটি বিপ্লবী কমিটি গঠন করে। এই কমিটির হাতে বিদ্রোহ চালনার সমস্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়,

নো- সেনারা নিজেদের জাহাজের মাস্তুল থেকে ব্রিটিশ পতাকা নামিয়ে দিয়ে কংগ্রেস মুসলিম লীগ এবং কমিউনিস্ট পার্টির পতাকা উড়িয়ে দেন। দিল্লী ,বিশাখাপত্তনম, কলিকাতা প্রভৃতি জায়গায় ক্রমশ নৌ – সেনারা এই বিদ্রোহে জোগদান করে। নৌ সেনাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমন করার জন্য ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ ক্যাসেল ব্যারাকের উপর গুলি চালালে আন্দোলন রূপ নেয়। বিদ্রোহী নৌ-সেনারা দীর্ঘ সাত ঘন্টা ব্যাপী-সস্ত্র সংগ্রাম পরিচালনা করেন। বিপ্লবী কমিটি সংগ্রামী বিদ্রোহীদের সমর্থন করার জন্য ভারতের জনগণ ও ভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে আবেদন জানান। সমস্ত বােম্বাই এই আবেদনে সাড়া দিয়ে নৌ-সেনাদের সমর্থনে পূর্ণ হরতাল পালন করে। হাজার হাজার শ্রমিক সাম্রাজ্যবাদ রােধী ধ্বনি দিতে দিতে শহর পরিক্রমায় বেড়িয়ে পড়েন। শান্তিপূর্ণ শােভাযাত্রার উপর বিনা প্রোরােচনায় পুলিশ গুলিবর্ষণ করলে জনগণ বাধ্য হয়ে প্রত্যক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ২২ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৬ -এর মধ্যে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৭০ জন লােক প্রাণ হারায়  প্রায় ২০০০ জন লােক আহত হন।


পরিশেষে দেখা যায় যে ,  জনগণের এই প্রত্যক্ষ সংগ্রামে শহরে যে হিংসাত্মক আন্দোলন চলে নেহেরু ও

প্যাটেলের মতাে প্রথম সারির নেতৃবৃন্দ ২৬ শে ফেব্রুয়ারি বােম্বাইয়ে এক বিশাল জনসভায় তার নিন্দা করেন। যাই হােক, পরিশেষে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের পরামর্শে বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণের সময় বিপ্লবী কমিটির সভাপতি ঘােষণা করেন, “ব্রিটেনের কাছে নয়, আমরা ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করছি”। এভাবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর সংযােগসাধিত হওয়ায় সাম্রাজ্যবাদীদের দিন ঘনিয়ে আসে। ভারতকে স্বাধীনতা দেওয়া ছাড়া তাদের সামনে আর কোন পথ থাকে না। ব্রিটিশ কতৃপক্ষ  নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় আতঙ্কত হয়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।  ঐতিহাসিক রজনী পাম  দত্ত  বলেন   - "It showed that the movement had reached to the arme forces and that therefore the basis of British rule was no longger secure."


ভারতবর্ষে সাম্রাজ্যবাদ বিরােধী আন্দোলনের ক্ষেত্রে ভারত ছাড়াে’আন্দোলনের চুড়ান্ত মধ্যায়ের পর ভারতের বাইরে থেকে নেতাজী সুভাসচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজের সংগ্রাম ও নৌ-বিদ্রোহের সংগ্রামী ভূমিকা ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে এক গৌরবােজ্জ্বল অধ্যায়ের সূচনা করেছিল।


                          অথবা


প্রশ্নঃ হো -চি -মিনের নেতৃত্বে ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধ একটি বিবরণ দাও? ***


口 ষােড়শ শতাব্দী থেকে সমাজবাদী দেশ গুলি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় রাজনৈতিক সম্প্রসারণের সূচনা করে। কয়েক শতাব্দীর মধ্যেই থাইল্যাল্যান্ড ব্যতীত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় সর্বত ইউরােপীয় রাষ্ট্রের উপনিবেশ স্থাপিত হয়। এই উপনিবেশগুলি প্রায় বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত স্থায়িত্বলাভ করেছিল। ফলে বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে জাতীয়তাবাদী সংগ্রামের সূত্রপাত এবং বিস্তৃতি লক্ষ করা যায়। বিশেষত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন এবং যুদ্ধোত্তরকালে ইন্দোচিন তথা ভিয়েতনামের স্বাধীনতা যুদ্ধ ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে। এই যুদ্ধ ছিল একদিকে উপনিবেশবাদ বিরােধী সংগ্রাম ও অন্যদিকে এশিয়ার ভূখণ্ডে ঠান্ডা লড়াই রাজনীতির নির্লজ্জ বহিঃপ্রকাশের দৃষ্টান্ত। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ইন্দোচিনের মানুষের মুক্তিসংগ্রামের পরিপন্থী ছিল ঔপনিবেশিক ফরাসি শক্তি। বিংশ শতাব্দীর সূচনা থেকেই ভিয়েতনামের সূচনা করেন। এই আন্দোলনের ভিত্তি ছিল চিন ও জাপানের মডেল।ফলে জাপান ও চিনে পাঠরত ইন্দোচিনের ছাত্রগােষ্ঠী এই মুক্তি আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা নেন। তারা এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলির কাছে সাহায্য প্রার্থনা করার পাশাপাশি টোকিওতে ‘পুনঃস্থাপন সমিতি’ বা ‘Restoration Society'-র একটি শাখা প্রতিষ্ঠা করেন। 1911 খ্রিস্টাব্দে চিনে সংঘটিত সান-ইয়াৎ-সেনের প্রজাতান্ত্রিক আন্দোলনও ভিয়েতনামের ছাত্রসমাজকে অনুপ্রাণিত করেছিল।


হাে-চি-মিন-এর ভূমিকা : এই পরিস্থিতিতে ভিয়েতনামে নগুয়েন-আই-কুয়ােক নামে একজন জননেতার আবির্ভাব হয় যিনি পরবর্তীকালে হাে-চি-মিন নামে প্রসিদ্ধ হন। 1929–30 খ্রিস্টাব্দে ভিয়েতনামে মহামন্দার কারণে চাল ও রবারের মূল্য হ্রাস পাওয়ায় কৃষকগণ কঠোর দারিদ্র্যের সম্মুখীন হয়েছিল। তারা ফরাসি সরকারের আন্দোলন শুরু করলে সরকার কঠোরভাবে সেই আন্দোলন দমন করেন। এই অবস্থায় হাে-চি-মিন দেশের বিভিন্ন গােষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করে 1930 খ্রিস্টাব্দে ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট দল প্রতিষ্ঠা করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত পৃথিবীর অন্যান্য অংশের মতাে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়ও ব্যাপক রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। জার্মান বাহিনীর হাতে ফ্রান্সের ক্রমাগত  পরাজয়ের ফলে ইন্দোচিনে ফরাসি সাম্রাজ্যবাদী কর্তৃত্ব অনেকটাই শিথিল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু জাপান ওই সময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির প্রতি আগ্রাসী নীতি গ্রহণ করে। এই অবস্থায় হাে-চি-মিন ভিয়েতনামের মুক্তিযােদ্ধাদের নিয়ে গঠন করেন ভিয়েতনামি স্বাধীনতা লিগ বা ভিয়েতমিন (1941 খ্রিস্টাব্দ)। এই লিগের লক্ষ্য ছিল সমগ্র ইন্দোচিনকে জাপানের অধীনতা থেকে মুক্ত করা।

 1945 খ্রিস্টাব্দে জাপানের পরাজয় ভিয়েতমিন মুক্তিযােদ্ধাদের উৎসাহিত করে। এই সুযােগে হাে-চি-মিন হ্যানয় দখল করেন। 1945 খ্রিস্টাব্দের 2 সেপ্টেম্বর হাে-চি-মিনের নেতৃত্বে একটি অস্থায়ী গণতান্ত্রিক সরকারের আনুষ্ঠানিক পত্তন হয়। আন্নামের সম্রাট বাওদাই সিংহাসন ত্যাগ করলে হাে-চি-মিন আন্নাম, টংকিং, কোচিন-চিন নিয়ে ভিয়েতনাম প্রজাতন্ত্র দখল করেন।


 ইন্দোচিনে ফরাসি শাসনের বিরুদ্ধে মুক্তিসংগ্রাম ব্যাপক আকার ধারণ করলে ফ্রান্সের অবস্থা ক্রমশই সংকটজনক হয়ে ওঠে। হাে-চি-মিন, জেনারেল গিয়াপ প্রমুখ নেতৃবৃন্দের দক্ষতা ভিয়েতমিন মুক্তিযােদ্ধাদের ক্রমশ জয়লাভের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। সবশেষে 1953 খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি দিয়েন-বিয়েন-ফু-র পতন হলে ভিয়েতনামে ফরাসি সাম্রাজ্যবাদের অবসান ঘটে। 1954 খ্রিস্টাব্দে জেনেভায় ইন্দোচিন সমস্যার সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহূত হয়। ওই সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুসারে ভিয়েতনামের বিভাজন সম্পাদিত হয়। উক্ত ভিয়েতনামে হাে-চি-মিনের নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং দক্ষিণ ভিয়েতনামে নির্বাচনে মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।


 উপসংহার : জেনেভা সম্মেলন প্রকৃতপক্ষে ইন্দোচিন সমস্যার একটি সাময়িক সমাধান ঘটিয়েছি মাত্র। কারণ ফ্রান্সের পতন ঘটলেও আমেরিকা ও রাশিয়া ক্রমাগত ইন্দোচিনের বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে থাকে। এর ফলে ঠান্ডা লড়াইয়ের রাজনীতির প্রভাব থেকে ভিয়েতনাম মুক্তি না পাওয়ায় পরবর্তীতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।

Type Here ....

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন